পাপিয়া ‌ : এটাই তোমার মায়ের পিক ,,,

মনি‌ : হ্যাঁ আন্টি তোমরা আমাকে আমার মায়ের কাছে দিয়ে আসো ,,, আমার মায়ের জন্য আমার অনেক কান্না পাচ্ছে ।

পাপিয়া ‌ : কান্না করিও না মনি তুমি এখন বলতো তুমি গাড়ির মধ্যে বন্দী হয়েছিলে‌ কেমন করে ? আর তোমার মা কোথায় গিয়েছিল তোমাকে রেখে ?

মনি‌ : আন্টি আমি অনেক দুষ্ট ,,, আমাকে নিয়ে মা বই কিনতে পারেনা ,,, কারণ আমি দোকানের সবকিছু এলোমেলো করে ফেলি‌ । এর জন্য আমাকে আমার প্রিয় আইসক্রিম কিনে দিয়ে আমাকে গাড়ির ভেতর তালা দিয়ে রেখে ,,, মা আর বাবা বই কেনার জন্য গিয়েছিল,,, আমার মা বই পড়তে অনেক পছন্দ করে । সব সময় আমার মা বই পড়তো । এর জন্য আমার বাবা আমাদেরকে এখানে নিয়ে এসেছিল ।

মা আর বাবা আমাকে গাড়িতে রেখে বই কিনার জন্য গিয়েছিল কিন্তু আমার বাবা আর মা ফিরে আসলোই না ,,, এরপর সব জায়গায় শুধু আমি এই জম্বি গুলোকে দেখতে পাচ্ছি ,, আমার অনেক ভয় লাগছে আমাকে তোমরা আমার মায়ের কাছে দিয়ে আসো‌ আন্টি ‌ ।

পাপিয়া ‌ : এখন তো অনেক রাত হয়ে গিয়েছে মামনি ,,, তুমি তোমার ওই আন্টির কোলে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ো ,,, সকাল হলেই আমরা তোমাকে তোমার বাড়িতে পৌঁছে দেবো।

বাচ্চা মেয়েটি তার মায়ের কাছে যাবে সকালে এই আনন্দে তাড়াতাড়ি করে গাড়িতে থাকা একটি আপেল খেয়ে ঘুমিয়ে ‌পড়লো‌ ।

প্রিয়া ‌ : বাচ্চা মেয়েটির জন্য অনেক কষ্ট লাগছেরে‌ ,,, আমরা নিজেরা এখান থেকে বের হতে পারব কিনা সেটাও জানিনা ,, এই বাচ্চা মেয়েটিকে কিভাবে তার মায়ের কাছে নিয়ে যাব ‌ ।

পাপিয়া ‌ : মনি আর কখনো তার মায়ের কাছে যেতে পারবে না ,,,,

মিনা ‌ : কেন বললি এই কথাটি পাপিয়া ‌ ।

পাপিয়া ‌ : কারণ এই মেয়েটির মা বাবা জম্বি হয়ে গিয়েছে । এমনকি তাদের মাথা এখন তাদের ঘারের মধ্যেও নেই ,, আমি মনির বাবা মাকে নিজের হাতে তাদের মাথা কেটে ফেলেছি ।

সাবরিনা ‌ : আমাদের দেশে এগুলো কি হচ্ছে ,,, আর হঠাৎ করে এই‌ ভয়ানক জম্বি‌ ভাইরাসটি কোথা থেকে এলো ? আমাদের পৃথিবীটিতে কি সব‌ মানুষ জম্বি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যাবে  ?

মিনা ‌ : আমরা তো এই স্কুল মাঠের বাইরের কোন খোঁজ খবর নিতে পারছি না ,,, কিছু জানি না‌ বাহিরে কি হচ্ছে ,,, আর এই জম্বি গুলো এই মাঠের বাহিরে আছে কিনা আমরা তাও জানিনা ?

পাপিয়া ‌ : যদি আমাদের কাছে একটি মোবাইল থাকতো তাহলে হয়তো আমাদের একটু আসা থাকতো । কিন্তু আর এভাবে বসে থাকলে হবে না ,, আমাদের কাছে এখন কোন খাবার নেই ,,, যা ছিল আমরা খেয়ে ফেলেছি ,,, আমরা যদি এখান থেকে পালাতে না পারি তাহলে আমরা না খেয়ে থেকে এমনিতেই মরে যাব । এভাবে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকার থেকে লড়াই করে বাঁচার চেষ্টা করা অনেক ভালো । সকালে আমাদের চেষ্টা করতে হবে কোনভাবে আমরা এই মাঠ থেকে বের হতে পারি কিনা ,,, বা ওই গেটের তালা ভেঙ্গে আমরা চলে যেতে পারি কিনা তা না হয় অন্য কোন আইডিয়া আমাদের মাথায় আনতে হবে ।

মিনা,,প্রিয়া আর সাবরিনা সবাই পাপিয়ার সাথে একমত হল ,,, শুধু সকাল হওয়ার অপেক্ষায় তারা আছে ,,,

আর ঐদিকে বাহিরের‌ অবস্থাও অনেকটা খারাপ হয়ে গিয়েছে ‌ ,,, ইরান‌ শহরে একদম লকডাউন ঘোষণা করে দিয়েছে সরকার । কেউ কারো রুম থেকে বের হয় না ,,, রাস্তায় কোন গাড়ি চলাচল নেই ,, অফিস আদালত সবকিছু বন্ধ হয়ে গিয়েছে সবাই ঘর‌ বন্ধি‌ সব জায়গায় শুধু একটিই আতঙ্ক এই বুঝি তাদেরকে জম্বিরা‌ আক্রমণ করবে ,,,

যে রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলাচল করতো সব সময় ,, সেই রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলাচল না করে‌ এখন জম্বিগুলো‌ হাটাহাটি করছে অনেক ভয়ংকর‌ভাবে‌ ।

অনেক মানুষ তাদের আপনজনদেরকে জম্বি আকারে‌ দেখছে আর কষ্ট পাচ্ছে ,,, তাদের আপনজনরা‌ তাদের উপর‌ই হামলা করার জন্যেই‌ ঘোরাঘুরি করছে‌ ।

আর ওইদিকে পাপিয়ার বাবার অবস্থা অনেকটা খারাপ ,,, ben stock করার সাথে সাথে হসপিটালে নিয়ে আসার কারণে অনেক বড় কোনো ক্ষতি হয়নি ,,, কিন্তু মেয়ের জন্য পাগল হয়ে যাচ্ছে ,,, কোনভাবেই মানতে পারছেনা‌ তার মেয়ে এখন জম্বিতে‌ রূপান্তরিক হয়েছে  ,,, পাপিয়ার বাবার মুখে শুধু একটিই শব্দ পাপিয়া ।

ইরান শহরের সরকার তিন দিনের ভিতর ওই স্কুল সহ ওই ব‌ই মাঠে আগুন লাগিয়ে জম্বি গুলোকে পুড়িয়ে ফেলার অনুমতি দিয়ে দিল ‌ ,,,

বাহিরের এই ঘটনা তো আর পাপিয়ারা কেউ জানে না ,,, তিন দিনের ভেতর স্কুল মাঠে আগুন লাগিয়ে দিবে পাপিয়ারাতো‌  এখনো ওখানেই বন্দী হয়ে আছে ,, যদি ওই মাঠে আগুন লাগিয়ে দেয় জম্বি গুলোকে মারার জন্য তাহলে তো পাপিয়ারাও আগুনে‌ পুরে মারা যাবে ,,,

আর ওইদিকে গাড়ির ভেতর পাপিয়া ছাড়া সবার ঘুমিয়ে পড়েছে ,,, কিন্তু পাপিয়ার চোখে কোন ঘুম নেই ,,, পাপিয়া যেন চিন্তায় ডুবে আছে কিভাবে তার বন্ধুদেরকে রক্ষা করবে আর নিজেকে রক্ষা করবে এই জম্বিদের হাত থেকে ,,,

নানা প্রশ্ন পাপিয়ার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে ,,, এখন আবার নতুন বিষয় নিয়ে ভাবতে শুরু করলো‌ পাপিয়া ,,, এখানে থাকা জম্বি‌ গুলোকে কে এমন ভাবে মারলো ? এখানে কি আরো কেউ আছে ,,,? এগুলো চিন্তা ভাবনা করতে করতে পাপিয়াও বাকিদের মতো ঘুমিয়ে পড়লো ,,,,

আর ওইদিকে স্কুলের ছাদের উপর‌ একটি ছেলে দূরবীন দিয়ে পাপিয়ার উপর নজর রাখছে ,,, পাপিয়া কিভাবে জম্বিদের‌ সাথে লড়াই করছে সেগুলোও‌ ওই ছেলেটি স্কুলের ছাদের উপর দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে ,,,,,

আজকে এই পর্যন্তই থাক ❤️ ❤️

চলবে,,,,,,