🧟 ভয়ানক জম্বি‌র‌ আক্রমণ 🧟 (পর্ব ৪)

পাপিয়ারা গাড়ির ভেতর আটকে আছে তাও তিন ঘন্টা হয়ে গিয়েছে এখনো তাদেরকে উদ্ধার করার জন্য কেউ আসলো না ,,, এর কিছুক্ষণ পর কিছু জম্বি‌ এসে‌ লাগাতার তাদের গাড়ির জানালার মধ্যে থাপড়াতে‌ লাগছে‌ ,,,

সাবরিনা ‌ : হয়তো কেউ আমাদের উদ্ধার করতে এসেছে ,, তা না হলে জানালার মধ্যে কে এভাবে শব্দ করবে ,,, আমি তাড়াতাড়ি জানালা খোলে দেই আমার আর এখানে ভালো লাগছে না ।

পাপিয়া ‌ : এই দাঁড়া একদম জানালার মধ্যে হাত দিবি না ,, বলছিনা আমি যা বলব তাই শুনবি তোরা ,,, এলিনার অবস্থা দেখেছিস প্রথমে যখন না করেছিলাম ওখানে যাস না তখন যদি শুনতো তাহলে হয়তো এমনটা হতো না । কেউ আমাদেরকে‌ কেও‌ উদ্ধার করতে আসেনি, একটু কাগজ সরিয়ে দেখ কে এসেছে ।

সাবরিনা সত্যি সত্যি কাগজ সরিয়ে দেখতে পেল পাঁচটি জম্বি‌ এসে তাদের গাড়ির মধ্যে ধাক্কাচ্ছে ,,, কারণ তারা একটু জোরে জোরে কথা বলছে ,,, হয়তো গাড়ির পাশ দিয়ে জম্বিরা হাটার সময় গাড়ির ভেতর শব্দ শুনেছে , জম্বি‌ গুলো তাদেরকে স্বীকার করার‌ জন্য উঠে পড়ে লেগেছে ।

পাপিয়া ‌ : একদম কোন কথা বলবি না সবাই চুপচাপ হয়ে বসে থাক ,,, সত্যি সত্যি সেভাবেই তারা দশ মিনিট নীরব হয়ে চুপচাপ বসে রইল । এর কিছুক্ষণ পর বুঝতে পেল‌ জম্বি গুলো চলে গিয়েছে ‌ ।

পাপিয়া ‌ : আমার অনেক খিদে পেয়েছে ,, ভাগ্যিস আগে খাবার কিনে রেখেছিলাম আর বাবা খাবার গাড়িতে দিয়ে দিয়েছিল । তা না হলে আমরা না খেয়েই  মারা যেতাম একদিনের ভিতর ,, কারণ আমরা সেই সকালে এসেছি এখন বিকেল পাঁচটা বেজে গিয়েছে কিছুক্ষণ পর অন্ধকার নেমে আসবে । সারারাত সারাদিন না খেয়ে থাকার ফলে আমাদের শরীর আরো দুর্বল হয়ে যেত ,মারাও‌ যেতে পারতাম, , ওদের মধ্যে প্রিয়া অনেক মোটা তার আবার বার বার অনেক খিদে পায় অল্প খাওয়ায় কিছু হয় না প্রিয়ার।

প্রিয়া ‌ : আমি বেশি খাবার না খেলে একদমই থাকতে পারবো না ,,, আমার প্রচন্ড খিদে পেয়েছে আমাকে তাড়াতাড়ি তোরা খেতে দে ।

পাপিয়া ‌ : তোকে নিয়েই আমাদের টেনশন ,, আমরা অল্প খেলে আমাদের পেট ভরে যায় কিন্তু তোর অল্পতেই পেট‌ ভরবে না আমাদের গাড়িতে যতগুলো খাবর আছে রাত হওয়ার আগেই তুই শেষ করে দিতে পারবি । প্রিয়া আমাদের জন্য একটু কষ্টকর হবে কিন্তু বুঝতে পারছি তোর একটু বেশিই কষ্ট হবে,,, আমি যতটুকু খাবার দেবো ততোটুকু পরিমান খাবার খাবি,, নিজের খিদেকে  একটু কন্ট্রোল করার চেষ্টা কর‌ ।

প্রিয়া ‌ : একদম চিন্তা করিস না আমি চাইনা আমার জন্য তোদের কোন ক্ষতি হোক ,,, আমাকে একদম অল্প খাবার দে ,, তাও‌ আমাকে এখন খেতেই হবে । এভাবে তারা খাওয়া দাওয়া শেষ করলো‌ ।

আস্তে আস্তে রাত গনিয়ে আসছে ,, কিন্তু কেউ তাদেরকে উদ্ধার করতে আসলো না এখনো ,, জম্বি গুলো এদিক ওদিক‌ আঁকাবাঁকা হয়ে হেঁটে চলেছে ,, এক মিনিটের জন্য যেন তারা কোথাও দাড়াচ্ছে না । বইমেলার মাঠটা ছিল একটি বিশাল বড় স্কুল মাঠ‌ । চারিদিকে বাউন্ডারি এখান থেকে বেরোনোর‌ কোন উপায় নেই ।

একদম নিরবতা‌ বিলাস করছে সেখানে ,,, জম্বিরা কথা বলতে পারে না ,,।

মিনা ‌ : আচ্ছা পাপিয়া ওরা একজন একজনকে কামড়ায় না কেন ? ওরা তো ভালো মানুষকে না কামড়িয়ে ওদেরকে‌ ওরাই আক্রমণ করতে পারে,,,

পাপিয়া ‌ :  আমিও তো তেমন কিছু জানিনা ,,মিনা পিছন থেকে এলিনার‌ কেনা‌ জম্বি বইটি দেতো ,, দেখি এদের হাত থেকে কোনরকম ভাবে বাঁচা সম্ভব কিনা ? আর আমাদের প্রশ্নটির‌ উওর পা‌ই‌ কিনা,,,

মিনা জম্বি বইটি পাপিয়ার কাছে দিল ,,,

পাপিয়া বই পড়া‌ শুরু করলো‌ : : ‌এদের দেহ জীবন্ত কিন্তু মস্তিষ্ক অচল বা মৃত। অনেক সময় কিছু ভাইরাসের কারনেও সাধারণ মানুষ জম্বিতে পরিণত হয়। এগুলোকে বলে জম্বি ভাইরাস। জম্বিদের শারীরিক এবং মানসিক কোনো অনুভূতি থাকে না। এরা রক্তের এবং মাংসের পিপাসু হয়ে থাকে। যাদের শরীরে জম্বি ভাইরাস নেই জম্বিরা তাদের আক্রমণ করে। জম্বির ভাইরাস যার শরীরে একবার প্রবেশ করে সে মানুষ জম্বিতে পরিণত হয়।

মিনা‌ : ওহ‌ এখন বুঝলাম কেন ওরা আমাদের মতো সুস্থ মানুষের পেছনে পড়ে আছে ?

পাপিয়া ‌ : আরেকটু পড়তে দে এরপর তোরা কথা বল ,,

মিনা ‌ : আচ্ছা আর কথা বলবো না ,,,

পাপিয়া আবার পড়া শুরু করলো : ধরা যাক কোনো "A" মানুষকে জম্বি আক্রমণ করেছে, এবং সেই "A" মানুষটির শরীরে রক্তের মাধ্যমে জম্বি ভাইরাস প্রবেশ করেছে, তাহলে সেই "A" মানুষটি জম্বিতে পরিণত হবে। জম্বি হওয়ার কারণে মানুষটির মস্তিষ্কের বিকৃতি ঘটবে। এবং অতঃপর যদি দেখা যায় সেই "A" মানুষটি নতুন একটি স্বাভাবিক "B" মানুষকে আক্রমণ করে, তাহলে সেই "B" মানুষটির দেহেও জম্বির বাহক ভাইরাস প্রবেশ করবে। এবং সেই ব্যক্তিটিও জম্বিতে পরিণত হবে। এইভাবে ধীরে ধীরে একটি শৃঙ্খল তৈরি হতে থাকে।

প্রিয়া ‌ : আমাদেরকে আরো সাবধানে থাকতে হবে ,, ওই জম্বি গুলোর কোন অনুভূতি নেই । আমরা ওদেরকে মারতেও পারবো না ওরা কোনো ব্যথা পাবে না ,,, ওদের শরীরে কোন ব্যথা নেই যতবারই আমরা ওদেরকে মারার চেষ্টা করব ততবারই আমাদের‌কে‌ আক্রমণ করার জন্য এগিয়ে আসবে ।

পাপিয়া ‌ : হ্যাঁ একদম ঠিক বলছিস ,,, কিন্তু বাবা এখনো আমাদেরকে উদ্ধার করতে আসে না কেন ?‌ রাত হয়ে গেল ,, এতক্ষণ তো বাবার এখানে আসার কথা ,,,

আর ওই দিকে পাপিয়ার বাবা পাপিয়ার জন্য একদম পাগল হয়ে গিয়েছে ,,, এখানে ওখানে সব জায়গায় তার মেয়েকে খোঁজার চেষ্টা করেছে কিন্তু কোন লাভ‌ হয়নি,,, এমনকি ওই দেশের সরকারের কাছেও এতক্ষণে পাপিয়ার বাবা গিয়েছিল ,, কিন্তু কোন লাভ হয়নি আরো সব আশা ছেড়ে দিয়েছে পাপিয়ার বাবা ,,, সব মানুষ বলছে মেলাতে শুধু জম্বি কোন সুস্থ মানুষ নেই ওখানে ,,, একদম মেলার‌ জায়গায় যাওয়া নিষিদ্ধ ,,, ওইখানে যে যাবে সে আর ফিরে আসতে পারবে না ,, ভয়ংকর জম্বি‌ গুলো মেলার মাঠে ঘোরাঘুরি করছে ,, এমনকি তারা হেলিকপ্টার দিয়েও বইমেলার চারিপাশ দেখেছে কোন মানুষ আছে কিনা কিন্তু সেখানে কোন মানুষ নেই শুধু জম্বিতে‌ ভরা‌ ।

আর পাপিয়াদের দেখতে পাবেই বা কেমন করে তারা তো গাড়ির ভেতর বন্দী হয়ে আছে ,,,

পাপিয়ার বাবা কোনভাবেই মানতে পারছে না তার মেয়ে জম্বি হয়ে গিয়েছে ,,,

পাপিয়ার আত্মীয়-স্বজনরা সবাই পাপিয়ার বাবাকে হসপিটালে ভর্তি করেছে কারণ সে ব্রেন স্টক করেছিল । তার মেয়েকে অনেক  ভালোবাসে‌ সেই ছোট বয়স থেকে নিজে একাই পাপিয়াকে মানুষ করেছে ,,, পাপিয়ার মা পাপিয়াকে ছোট রেখে মারা গিয়েছিল মেয়ের কষ্ট হবে এর জন্য পাপিয়ার বাবা এখন পর্যন্ত বিয়েই করেছিল না । আর সেই মেয়ের এমন খবর শুনে এখন হসপিটালে ভর্তি ‌ ।

রাষ্ট্রপতি খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিবে ঔ‌ মেলার‌  জম্বি গুলোকে তারা কি করবে ,,

সারাদেশেতেই কিছু কিছু জায়গায়‌ও  জম্বি আক্রমণ করা শুরু করে দিয়েছে ,,,,

অনেক মানুষ জম্বির কামড় খাওয়ার পরেও মেলায় থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল মিথ্যে বলে ,, সেই মানুষগুলো জম্বি‌ হয়ে‌ এখন সারা দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে ।

আর ওইদিকে পাপিয়ারা এখনো গাড়িতে বসে বসে তার বাবার জন্য অপেক্ষা করছে ,,,ওরা তো আর বাহিরের কোন খবর দিতে পারছে না ।

আজকে এই পর্যন্তই থাক ❤️ ❤️

চলবে,,,,,,