🧟 ভয়ানক জম্বি‌র‌ আক্রমণ 🧟 (পর্ব ৩)

জম্বিটি‌ এলিনার ঘাড়ের মধ্যে কামড়ে ধরলো‌ ,,, জম্বিটির কামড় খাওয়ার পরে এলিনা চিৎকার দিয়ে উঠলো ।

এই দৃশ্যটি দেখে পাপিয়া,, মিনা ,সাবরিনা প্রিয়া তারা চারজন অনেক জোরে জোরে চিল্লাতে‌ লাগলো ভয়ে‌ ,,, এলিনা জম্বির কামড় খাওয়ার পর দৌড়ে তার বান্ধবীদের কাছে আসলো ,,, বইমেলার চতুর্দিকে শুধু চিল্লাচিল্লি বেজে গিয়েছে সবাই জম্বি‌ জম্বি বলে চিল্লাচ্ছে । অনেক মানুষ জম্বির কামুর খাওয়ার পর মাটিতে পড়ে পড়ে ব্যাথাতে কোঁকড়াচ্ছে । আবার পরে থাকা অনেক মানুষ আস্তে আস্তে জম্বিতে রূপান্তরিত হচ্ছে এলিনা জম্বির কামড় খেয়েছে ১০ মিনিট হয়নি ,,,

আর সেখানকার কেউ জানে না এলিনাও জম্বি হয়ে যাবে ,, ওই টাইমে বোঝার চেষ্টাও করিনি তারা ,,এলিনাকে সাথে করে নিয়ে তাড়াও‌ দৌড়াচ্ছে ,,,

পাপিয়া ‌: এলিনা তুই কি ঠিক আছিস ,,,

এলিনা গুনগুন করে বলছে হ্যাঁ ,কিন্তু ব্যথাতে মনে হচ্ছে আমি মরে যাচ্ছি । আমাকে তোরা বাঁচা তাড়াতাড়ি হসপিটালে নিয়ে চল । তখনো পাঁচ মিনিট  হয়নি এলিনা জম্বির কামুড়‌ খেয়েছে ‌। আর তারা জানেও না ১০ মিনিট হলেই তাদের প্রিয় বান্ধবী জম্বিতে রূপান্তরিত হবে । পাপিয়া ,মিনা ওরা সবাই দৌড়াতে দৌড়াতেই এলিনাকে বকাবকি করছে তাদের কথা শুনিনি বলে ।

আর এদিকে এলিনার শরীর খারাপ হতে লাগছে , তার হাঁটা পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে ,,, এলিনার শরীরের চামড়া কুঁচকে যাচ্ছে  । তারা সবাই এলিনার দিকে তাকিয়ে আছে  ,,, পাপিয়ারা বুঝতে পারল তাদের বান্ধবী আর মাত্র কিছুক্ষণ পর জম্বি হয়ে যাবে আর সেই তাদেরকে কামড়ে দিবে ‌ ,, এলিনা অনেক জিদ‌ই‌ মেয়ে ‌। যদি এখন বলে পাপিয়া তাকে নেবে না তাদের সাথে গাড়িতে ,,তাহলে এখনই কামড়ে দেবে জম্বি‌ হওয়ার আগেই ‌ ।

পাপিয়া ‌ : এলিনা  তোর শরীর তো খারাপ তুই এখানে বসে‌ থাক,, আমাদের জন্য অপেক্ষা কর আমরা গাড়ি নিয়ে আসি । তুই তো হাঁটতে পারছিস না ‌ ।

এলিনা গুনগুন করে বলল আচ্ছা ,,, তখন প্রায় ৭ মিনিট হয়ে গিয়েছে । আস্তে আস্তে এলিনার ব্রেন কাজ করছে না ,,

পাপিয়ারা‌ চারজন এলিনার কাছ থেকে অনেকটা দূরে যেয়ে দাড়িয়ে রইল ,,,

মিনা ‌ : পাপিয়া আমরা এলিনাকে কেন রেখে আসলাম ,,, ওরতো‌ বিপদ হতে পারে ,,, তোরা চল এলিনাকে আমরা ধরে ধরে নিয়ে আসি । এলিনা তো ভয় পাবে ওখানে একা‌ একা ।

পাপিয়া ‌ : তোদের‌ও কি মরতে ইচ্ছে হয়েছে ,, তোরা বুঝতে পারছিস না এলিনা আস্তে আস্তে জম্বিতে রূপান্তরিত হচ্ছে । এলিনার মায়া আমাদেরকে ত্যাগ করতে হবে , এলিনা মারা যাচ্ছে ,, কিন্তু এলিনার শরীর অনেক ভয়ঙ্কর হয়ে যাচ্ছে ,, এলিনা‌ জম্বির কামড় খাওয়ার কারণে এলিনার শরীরে জম্বি‌ ভাইরাস ঢুকে গিয়েছে ।

সাবরিনা : না এটা হতে পারে না , এটা আমি কোনভাবে মানতে পারছি না আমাদের চোখের সামনে আমাদের বান্ধবী এভাবে মারা যাচ্ছে । তোরা চল ওকে হসপিটালে নিয়ে যাই।

পাপিয়া ‌: আমার মনে হয় তাতে কোন লাভ হবে না , মনে হয় না এই ভাইরাসের কোন ওষুধ আছে।

ওরা‌ কথা বলছে আর ঐ‌দিকে‌ এলিনা পুরো‌পুরি‌ জম্বি‌  হয়ে গিয়েছে । একটি মানুষকে ধরে এলিনা ওই মানুষটির হাতে কামড়ে দিল ।

এই দৃশ্যটা দেখার সাথে সাথে পাপিয়ারা চারজন তাদের গাড়ির কাছে যাওয়ার জন্য দৌড়ে যাচ্ছে ,,, তাদের সামনে অনেক জম্বি‌ ঘুরাঘুরি করছে তাদেরকে কামড়ানোর জন্য । তাদের গাড়ি অনেকটা দূরে ,,, চারিদিকে হাহাকার নেমে এসেছে বইমেলা যেন এখন জম্বির মেলা হয়ে যাচ্ছে । একটুর জন্য মিনাকে আরেকটি জম্বি কামড়ে দিল না ,,, এভাবে হাপাতে হাপাতে তাদের গাড়িতে চলে গেল তারা।

গাড়িতে এসে যেন তারা একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো‌ ,, চারিদিকে লাশের বন্যা বয়ে যাচ্ছে ,,, কিন্তু কোন‌ মানুষ আর‌ মাটিতে পড়ে থাকছে না ,, সবাই ভয়ংকর ভাবে দাঁড়িয়ে উঠছে । তারা নতুন স্বীকার খুজছে‌ কামড়ানোর জন্য ‌।

আর ওই দিকে সাথে সাথে ইলান শহরের সরকার সারাদেশে লকডাউন দিয়ে দিল ,,, অনেক মানুষ নিরাপদে চলে যেতে পেরেছে প্রথমেই ,, তারা পাঁচজন‌ও যেতে পারত যখন তারা মানুষের মুখে‌ জম্বি‌ জম্বি‌ বলে চিল্লানোর‌ শব্দ শুনেছিল তখন । এলিনার‌ জন্য গাড়িতে বসে বসে তারা চারজন অনেক কান্না করতে লাগলো ।

কোনভাবেই মেনে নিতে পারছে না তাদের বান্ধবী তাদের কাছে নেই ‌,,,

তারা গাড়ির জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখতে পেল প্রায় সব মানুষ‌ই পালিয়ে গিয়েছে ,, আর যারা আছে তারা সবাই বর্তমানে জম্বি ।

এলিনাও ঘোরাঘুরি করছে তার নতুন শিকারের জন্য ,,

এখন তাদের কারো কাছে মোবাইল নেই ,,, তখন ভয়ে মোবাইল কোথায় রাখছিল ,,কোথায় গিয়েছে‌ কেউ জানে না ।

পাপিয়া ‌ : আমি তো বাবার কাছে ফোন করতে পারব না ,, আমাদেরকে কে উদ্ধার করবে হয়তো সবাই জানে এখানে শুধু জম্বি আছে ,,, মেলায় ঢোকার বের‌ হ‌ওয়ার‌ যে‌ গেট‌ ওইটা তালা দেওয়া ,, সেটা এখান থেকেই দেখা যাচ্ছে আমরা  কিভাবে এখান থেকে বের হবো‌ ,,, বাহিরে গেলেই জম্বির আক্রমণে আমাদের মারা যেতে হবে ‌। আমাদের গাড়িতে বসে বসে‌ সাহায্যের আশা করতে হবে ‌। অপেক্ষায়‌ থাকা ছাড়া আমাদের কোন উপায় নেই ।

মিনা ‌ : আমার অনেক ভয় লাগছে ,, আমার মনে হয় না আমাদেরকে কেউ উদ্ধার করতে এখানে আসবে ,,, জম্বি সহ আমরা এই মেলাতে আটকে পড়লাম ‌। এ জম্বি গুলো দেখে আমার অনেক বমি‌ পাচ্ছে ‌।

সাবরিনা ‌: একদম বমি করবি না গাড়িতে তাহলে এখানে থাকা যাবে না ,, আচ্ছা তোরা বলতো জম্বিকি গাড়ি ভেঙ্গে ফেলতে পারে ,, ওরা তো আবার এখানে এসে পড়বে না ‌। তাহলে তো আমাদের চারজনকে ওরা মেরে ফেলবে । আমার যেন কেমন অনেক ভয় লাগছে । এই কথা বলে সাবরিনা কান্না করতে লাগলো ।

সাবরিনার কান্নার শব্দে একটি জম্বি গাড়ির দিকে এগিয়ে আসতে লাগলো ,,,

পাপিয়া ‌: কি করছিস এভাবে শব্দ করে কান্না করছিস কেন ? তোরা আর জামেলা বাড়িয়ে দিস না ,,, এলিনার জন্য মায়া করে যদি ওইখানে আমরা না দাঁড়াতাম তাহলে গেট বন্ধ করার আগেই হয়তো আমরা এখান থেকে পালাতে পারতাম ‌ । আমরা যতক্ষণ পর্যন্ত এখানেই দাঁড়িয়ে ছিলাম এতক্ষণে সবাই বেরিয়ে গিয়েছিল । আমাদেরকে কেউ দেখতে পায়নি ।

আমার মনে হচ্ছে‌ জম্বি‌রা‌ কিছু চোখে দেখে না ,,, ওইদিকে তাকিয়ে দেখ আবোল তাবোল করে হেঁটে চলেছে ,,, একটি জম্বিও‌ সোজা হাঁটছে‌ না‌ ।

এদের কানের গতি অনেক বেশি ,, একটু শব্দ করে কান্নার কারণে জম্বি গুলো গাড়ির কাছে আসতে লেগেছিল ,, যখন তারা কান্না করা‌  থামিয়ে দিল তাদেরকে গাড়ির ভেতর জম্বি‌গুলো‌ দেখা সত্ত্বেও পাশ কাটিয়ে হেলে দুলে চলে গেল । এর মানে তারা আমাদেরকে দেখতে পাচ্ছে না যদি দেখতে পেতো‌ তাহলে গাড়ি ভেঙ্গেই আমাদেরকে খেয়ে ফেলতো ,, আমি যেভাবে বলবো তোরা সেভাবেই থাকবি‌ ।

চিন্তা করিস না আমার বাবা আমাদেরকে এখান থেকে যেভাবেই হোক উদ্ধার করবে‌ ,,,, আমার বাবা আমাকে অনেক ভালোবাসে দরকার হলে জম্বিদের মাঝখান থেকে আমাদেরকে নিয়ে যাবে । শুধু ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের‌ অনেক সাবধানে থাকতে হবে ‌। বইগুলো ছিড়ে‌ গাড়ির কাচগুলোর মধ্যে আটকে ফেল যাতে করে গাড়ির ভেতর‌ থেকে  বাহিরে কিছু দেখা না যায় ।

যেমন কথা তেমন কাজ তারা সবাই গাড়ির জানালা গুলো বইয়ের পাতা দিয়ে আটকে ফেললো ‌।

আজকে এই পর্যন্তই থাক আমার ধারাবাহিকটি আপনাদের কাছে কেমন লাগছে প্লিজ প্লিজ রিভিউ দিয়ে জানাবেন ♥️♥️ যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে স্টিকার দ্বারা সমর্থন করে আমার পাশে থাকবেন ❤️❤️ আপনারা আমাকে উৎসাহিত করলে আমার লেখার গতি অটোমেটিক বেড়ে যায় ,,, এতে করে আপনাদেরকে অনেক সুন্দর সুন্দর ধারাবাহিক উপহার দিতে পারব ♥️♥️

চলবে,,,,,,