🧟 ভয়ানক জম্বি‌র‌ আক্রমণ 🧟 পর্ব,,5

পাপিয়ারা‌ এখনো‌ গাড়িতে বসেই আছে অনেক আসায়‌,,     কারণ তারা মনে করছে তাদের চারজনকে‌ কেও‌ না কেউ এখানে উদ্ধার করতে আসবেই‌ । কিন্তু তারা এটা জানে না এই বইমেলার বাহিরে যত‌ মানুষজন‌ আছে এমনকি তাদের পরিবারের সবাই তাদেরকে মৃত ভেবে নিয়েছে ‌ । সবাই জানে পাপিয়ারা‌ও এখন জম্বি‌ ।

এভাবে রাত‌ গনিয়ে‌ আসলে গাড়িতেই তাদের ,,, প্রিয়ার আবার খিদে লেগে গিয়েছে খিদেতে ছটফট করছে ,,, তাদের কাছে অবশিষ্ট যে খাবারগুলো আছে সেগুলো শুধু রাতে খেলেই ফুরিয়ে যাবে ,,, কালকে সকালের মধ্যে তাদেরকে যদি কেউ উদ্ধার করতে না আসে তাহলে না খেয়েই তাদের গাড়িতেই থাকতে হবে ।

জম্বি‌ গুলো যেন ক্লান্ত হচ্ছে না ,,, এই রাতেও তারা আঁকাবাঁকা হয়ে হেলে দুলে হেটে যাচ্ছে ওদিকে এদিকে ‌।

হঠাৎ করে পাপিয়ারা এক বাচ্চার চিৎকারের শব্দ শুনতে পেল,,,

পাপিয়া ‌ : ওই তোরা চুপ কর ,,, আমি যা শুনতে পাচ্ছি তোরা ও কি তাই শুনতে পাচ্ছিস ।

প্রিয়া ‌ : হ্যাঁ শুনতে পাচ্ছি সেটা আমার পেটের ভেতর ভোট ভোট করে শব্দ‌ করে ডাকছে খিদেতে‌ ।

পাপিয়া ‌ : তুই এখনো খাবারের টেনশন এ আছিস আমরা কিভাবে এখান থেকে বের‌ হব সেই চিন্তায় পাগল হয়ে যাচ্ছি ,,, আর তুই খাওয়ার চিন্তায় আছিস ,,, যতই খেয়ে থাকিস না কেন,,,যদি জম্বির একটি কামড় খাস‌ তাহলে‌  তোর‌ও অবস্থা এলিনার মত হবে ।

মিনা ‌ : পাপিয়া আমার কানেও কেমন যেন বাচ্চার কান্নার শব্দ ভেসে আসছে ,,,

পাপিয়া ‌ : হে আমার কানেও ,,, কিন্তু এখানে কান্নার শব্দ কোথা থেকে আসবে ? আমরা বাদে সবাই তো জম্বি, জম্বিরাতো আর কান্না করতে বা কথা বলতে পারেনা  । তাহলে কি আমরা ছাড়াও এখানে মানুষ আছে ‌‌ ।

আর মেয়েটি যেভাবে কান্না করছে না জানি জম্বি কখন তার ওপর আক্রমণ করে বসে‌ । আমাদের যে করেই হোক ওই বাচ্চাটাকে উদ্ধার করতে হবে ।

প্রিয়া ‌ : তুই কি পাগল হয়েছিস নাকি ,,, আমরা নিজেরা কিভাবে উদ্ধার হবো সেটা এখন পর্যন্ত ঠিক করতে পারলাম না ,,, তুই অন্য মানুষকে উদ্ধার করার জন্য লেগে পড়েছিস‌।

পাপিয়া ‌: এমন স্বার্থপরের মতো কথা বলিস না ,,, এমন স্বার্থপর হলে আমাদের হবে না ,,, মানুষকে সাহায্য করতে হবে ,, আমরা যদি একজন একজনকে সাহায্য না করি তাহলে আমরা কেউ বাঁচতে পারব না । যদি এখান থেকেও বের হতে পারি হয়তো অন্য কোথাও আমাদের জম্বির কামড় খেতে হবে । না হয় আমাদের আপনজনদেরকে চোখের সামনে জম্বি হতে দেখতে হবে ।  আমরা শুধু নিজেরা বাঁচার চেষ্টা করবো না এখন থেকে আশপাশের মানুষকেও বাঁচানোর চেষ্টা করব ‌ । আমার এ কথাতে আমার সাথে কে কে একমত ,, যদি কেউ একমত হয়ে থাকিস তাহলে আমার কাজে জয়েন দিতে পারিস ।

তোদের ইচ্ছে যদি তোদের ইচ্ছে না হয় তাহলে আমি একাই ঔ বাচ্চাটাকে বাঁচাবো ।

মিনা , প্রিয়া ,সাবরিনা ওরাও পাপিয়ার সাথে একমত হলো‌ ‌ ,, তারা একসাথে হয়ে সিদ্ধান্ত নিল আশপাশের মানুষকে সাহায্য করবে ।

পাপিয়া ‌ : বাচ্চাটি অনেক শব্দ করে কান্না করছে, যে কোন সময় জম্বিরা আক্রমণ করে বসবে । মিনা আমাদের গাড়িতে টস লাইট আছে দেখ তো কোথায় ,,,

মিনা তাড়াহুড়ো করে টস লাইটটি খুঁজে বের করে দিল ,,, তাদের গাড়িতে তেমন কোন জায়গা নেই অনেক জিনিসপত্র রেখেছে মেলায় থেকে কিনে ।

পাপিয়া টস লাইট দিয়ে গাড়ির ভেতর থেকে দেখার চেষ্টা করছে‌ কোথায় থেকে বাচ্চাটি কান্না করছে ‌ ,,, এভাবে লাইট দিয়ে এদিক ওদিক দেখতে সময়,দেখতে পেয়ে গেল বাচ্চাটির কান্নার শব্দ কোথায় থেকে আসছে সেইটা ,,,

সাবরিনা ‌ : কিরে পাপিয়া কিছু কি দেখতে পেলি ,,,?

পাপিয়া ‌ : দেখতে পেয়েছি কিন্তু বাচ্চাটির জন্য অনেক কষ্ট লাগছে ,,, মনে হচ্ছে দৌড়িয়ে যেয়ে নিয়ে আসি । জানিস আমাদের সামনে ৫ নাম্বার যে গাড়িটি আছে ওই গাড়িটির ভেতরে হয়তো বাচ্চাটি । 15 থেকে 20 টি‌ জম্বি‌ হবে বাচ্চাটির গাড়ির চারিপাশে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গাড়ির কাঁচ ভাঙ্গার চেষ্টা করছে ,,, গাড়ির গ্লাসটি ভেঙ্গে ফেলতে পারলেই জম্বি গুলো বাচ্চাটিকে ‌স্বীকার করে ফেলবে । এখন কি করবো আমার মাথা‌ই‌  কাজ করছে না ‌।

আস্তে আস্তে আরো জম্বি ওই গাড়ির কাছে যেতে লাগছে বাচ্চাটির কান্নার শব্দে । আর কিছু জম্বি‌ যদি এক‌ হয়ে‌ গাড়ির মধ্যে আঘাত করে তাহলে নিশ্চয় ‌গাড়িটি ভেঙ্গে ফেলতে পারবে ।

সাবরিনা ‌ : আমার মাথায় একটি আইডিয়া এসেছে ,,,

পাপিয়া ‌ : তাড়াতাড়ি বল আমাদের হাতে বেশি টাইম নেই ,,, এভাবে আমাদের চোখের সামনে আর কাউকে জম্বি‌ হতে দেখতে পাবো না ।

সাবরিনা ‌ : যেদিকে শব্দ হয় জম্বিগুলো তো সেই দিকেই যায় ,,, আমাদের অন্যদিকে শব্দ করতে হবে যাতে করে‌ ঔ‌ বাচ্চাটির কাছ‌ থেকে জম্বি‌ গুলো চলে যায় ‌ ।

পাপিয়া ‌: কিন্তু কিভাবে বল‌ ,বাচ্চাটির‌ কান্নার শব্দ থেকে বেশি শব্দ আমরা করবো ,,,।

সাবরিনা ‌ : যদি ওই মেয়েটিকে আমরা বলতে পারতাম আর কান্না করিও না । তাহলে হয়তো জম্বি গুলোকে তাড়াতাড়ি অন্য জায়গায় নিতে পারতাম । আমাদের গাড়িতে‌ তো‌ অনেক জিনিস আছে শব্দ করার মতো  । অনেক কিছু কিনেছিলাম‌ সেইচগুলো আমরা একটি‌ একটি করে ফেলবো ,, অনেক শব্দ করার জন্য ।

মিনা ‌ : আরে‌ গাদা‌ তাহলে তো‌ জম্বি গুলো আমাদের গাড়ির উপর আক্রমণ করবে ‌।

পাপিয়া ‌ : আমাদের মধ্যে যেকোনো একজনকে গাড়ি‌ থেকে নেমে পাশের বড়‌ টাক‌ গাড়ির উপর‌ উঠতে‌ হবে‌ । ওখান থেকে শব্দ করতে হবে‌ ,,,জম্বিগুলোকে‌ তার কাছে নিয়ে যেতে হবে ‌ ।

এরপর আমাদের গাড়িটি ওই বাচ্চার গাড়িটির কাছে নিয়ে যেতে হবে । এরপর অনেক সাবধানের সাথে বাচ্চাটিকে আমাদের গাড়িতে তুলে নিয়ে আবার এই পিকাবের কাছে আসতে হবে ।

প্রিয়া ‌ : অনেক অনেক ভয়ংকর ব্যাপার,, আমার এই‌ কথা গুলো শুনেই অনেক ভয়‌ লাগছে‌ ,, আমাদের মধ্যে কারো এই গাড়ি থেকে নামা মানে জম্বির আক্রমণে পড়া ,,, এটা কোনভাবেই সম্ভব না ।

পাপিয়া ‌ : তোরাই গাড়ির ভেতর থাক আমি ওই পিকাবের উপর উঠবো‌ ,,, উঠে অনেক জোরে জোরে শব্দ করব যখন জম্বি‌ গুলো আমার কাছে আসবে তখন  তোরা যেয়ে‌ ওই বাচ্চাটিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসবি । বাচ্চাটিকে আমাদের গাড়িতে উঠানোর সাথে সাথে আমাদের গাড়িটি  পিছনের দিকে পিছাতে থাকবি ,,, আর ওই বাচ্চাটির গাড়িটি স্টার্ট করে  চালিয়ে রেখে‌ আসবি‌ ,,, যাতে করে সামনের গাড়ির সাথে একের‌ পর‌  এক গাড়ির ধাক্কা লাগে । এতে করে অনেক অনেক জুরে শব্দ হবে ,, তখন আমি শব্দ করা বন্ধ করা‌ বন্ধ‌ করে দিবো‌ ,, এরপর তোরা এসে আমাকে উদ্ধার করবি‌ ,,আর জম্বি গুলো ওই গাড়ির শব্দের পেছনে পেছনে যাবে ।

যেভাবে বললাম তাড়াতাড়ি করা শুরু করে দে‌ ,,, গাড়ি কে চালাবি ঠিক কর ?  আর‌ আমাদের গাড়িতে থাকা শব্দ করার মত বারি বারি জিনিস সবগুলো একটি ব্যাগে‌ ভরে‌ আমাকে দে‌ ,,,

মিনা ‌ : পাপিয়া সব ঠিক আছে ,,, কিন্তু আমরা তিনজনের কেউ গাড়ি চালাতে পারি না ।

পাপিয়া হতাশ হয়ে গেল ,,,

পাপিয়া ‌ : তাহলে কেমন হবে ‌? এই কথা বলে পাপিয়া কান্না করতে লাগলো বাচ্চাটির জন্য ।


আজকে এই পর্যন্তই থাক ❤️ ❤️ ❤️

চলবে,,,,,,