ভয়ানক জম্বি‌র‌ আক্রমণ (পর্ব ১১)

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
অচেনা ছেলেটি‌ পাপিয়াকে‌ স্কুলের ভেতর সুরক্ষিত ভাবে‌ রেখে আবার চলে গেল মনিকে রক্ষা করার জন্য ,,, খুব ভালোভাবে ওই ছেলেটি মানিকে কাটুন সহ‌ উদ্ধার  করে নিয়ে আসলো ‌ ।

এই দৃশ্যগুলি তো মিনা আর সাবরিনা হা‌ করে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখেছে ,,,

মিনা ‌ : আপনি কে ? আর আপনি এখানে কিভাবে আসলেন  ?

ছেলেটি ‌ : আমার নাম নোবেল ,,, আপনারা এখন কথা না বাড়িয়ে তাড়াতাড়ি আপনাদের বান্ধবীকে সুস্থ করে তোলেন। ওর মুখের মধ্যে পানির ছিটকা‌ দেন‌ ,,,

মিনা ‌ : আমরা এখানে পানি কোথায় পাবো ?

নোবেল ‌ : পিছনের দিকে তাকিয়ে দেখেন পানি রাখা‌ আছে।

সাবরিনা ‌ : হ্যাঁ তাইতো ,,,

তারা আর কথা না বাড়িয়ে‌ পাপিয়ার হুস ফেরানোর চেষ্টা করছে‌ ,,,

আর এদিকে প্রিয়া তার নিজের চোখ ঘসাঘসি করেই যাচ্ছে ,, কারণ তার চোখ আস্তে আস্তে ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে ,,, প্রিয়ার শরিরে আস্তে আস্তে ভাইরাস টি কাজ করছে কারণ প্রিয়ার শরীরে অত বড় কোন অ্যাটাক হয়েছিল না ,,,এর‌ কারনে প্রিয়ার শরীরে জীবাণুটি ছড়াতে অনেক দেরি হচ্ছে ,,, কিন্তু লক্ষণ গুলো দেখা দিচ্ছে খুব ভালোভাবেই । চুপচাপ বসে আছে তারা এক জায়গায় কোন কথা বলছে না ,, এমনকি পাপিয়া কেমন আছে এটাও জিজ্ঞাসা করছে না ।

পাপিয়ার হুশ‌ ফিরে আসলো‌ ,,,

পাপিয়া ‌ : আমি এখানে কিভাবে আসলাম ‌ ?‌ আমি কি জম্বি হয়ে গিয়েছি ?

মিনা হেসে ফেলল ,,,

মিনা ‌ : তুই একদম ঠিক আছিস ,,, এবং সুস্থ আছিস ।

পাপিয়া ‌ : কিন্তু আমি ওইখান থেকে কিভাবে আসলাম ,,,

এই সময় নোবেল উপরে রাখা কিছু খাবার আনতে গিয়েছে তাদের এখানে নেই ,,,

মিনা ‌ : পাপিয়া আমার মনে হচ্ছে তোর সেই নায়ক তোর কাছে এসে গিয়েছে ,, তুই যার গল্প আমাদের সবার কাছে বলতি সেই ,,,

পাপিয়া ‌ : এটা মজা করার টাইম না ,, আর মনি কোথাই মনিকি সুস্থ আছে ,,,

মিনা ‌ : হ্যাঁ মনি একদম সুস্থ আছে‌ । আর আমি মজা করছি না তুই তো আগে আমাদের সাথে গল্প করতি ,,, তোর নায়ক নাকি উড়ে আসবে তোর কাছে ,,, তুই মাথা ঘুরে পড়ে যেতে লাগবি এরপর তোকে তোর নায়কটি তোকে কোলে তুলে নিবে ,, তুই তোর নায়কের দিকে‌ অপরূপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখবি । এগুলো সব হয়েছে ,  এগুলো সব‌ মিলে যাচ্ছে  ,, কিন্তু পার্থক্য শুধু একটি তোর গল্পে জম্বি ছিল না বাস্তবে জম্বি আছে ,, তোর গল্পে তুই তাকিয়ে তাকিয়ে তোর নায়ককে দেখতি কিন্তু বাস্তবে তুই অজ্ঞান হয়ে ছিলিস তুই তোর নায়ক কে এখন পর্যন্ত দেখিস নি ।

পাপিয়া এই কথাগুলো শুনে মিনাকে অনেক জোরে করে ধমক‌ দিল‌ ,,,

পাপিয়া ‌ : তোদের মনে আনন্দ লেগেছে তাই না ,, আমরা এখান থেকে বেঁচে ফিরতে পারব কিনা সেটাই সন্দেহ আর তোরা মজা করিস ।

তখন‌ই সেখানে নোবেল আসলো ,,,

নোবেল ‌ : ঠিক আছো তুমি সাহসী মেয়ে ,,,

পাপিয়া ‌ : আপনি কে ‌ ? আর কোথা থেকে উড়ে এসে পরে বসলেন ?

নোবেল ‌ : আরে সাহসী মেয়ে আমি আপনাকে জম্বির কাছ থেকে আমার কোলে করে নিয়ে এসেছি ,, আর আপনি আমার‌ সাথেই জারি দিয়ে কথা বলছেন ।

পাপিয়া ‌ : মানে আমি আপনার কোলে করে এখানে এসেছি ,, এটা আমি  মেনে নিতে পারছি না ,,ছি আমার তো শুনেই খারাপ লাগছে ‌। এর থেকে ভালো ছিল আমি জম্বির কামড় খেতাম ,,, আচ্ছা আপনি বলেন তো আপনার এই শুকনা শরীর নিয়ে আমাকে কিভাবে কোলে নিলেন ,,,

নোবেল ‌ : এই যে  তুমি কাকে কি বলছো ,,, আমার শক্তির সম্বন্ধে তোমার কোন আইডিয়া নেই ,,, আচ্ছা তোমার যদি এত সমস্যা থাকে তাহলে তুমি উঠে দাঁড়াও আমি তোমাকে আবার পুনরায় ‌কোলে  নিয়ে সেখানেই রেখে আসি যেখান থেকে তোমাকে নিয়ে এসেছি । আর আমি তোমাকে শুধু কেন ,আমি তোমার বান্ধবী প্রিয়াকেউ কোলে নিতে পারবো‌ ,, আমাকে অপমান করা তাই না ‌ ।

পাপিয়া ‌ : এই যে শুকনাকাট‌ ,, আমি আপনাকে চিনি না আপনি আমাকে চেনেন না আপনি আমাকে তুমি করে কথা কিভাবে বললেন ।

নোবেল ‌ : এই যে তোমাকে বলছি ,, তুমি একদিনের ছোট হলেও আমার থেকে ছোট হবে ,, কোন দিক দিয়ে আমি তোমাকে আপনি করে বলবো । আমি ছোট কাউকে কখনো আপনি করে বলতে পারিনা তুমি অথবা তুই ,,, আর আমি তোমার থেকে বড় তুমি আমাকে আপনি করেই বলবে ।

পাপিয়া ‌ : আচ্ছা ঠিক আছে ,,, আপনি আমার কথায় অপমান বোধ করছেন তাহলে প্রমাণ করে দেন আপনার শক্তি ,,, আমার বান্ধবী প্রিয়াকে কোলে তুলে নিয়ে দেখান তো আপনার শক্তি।

নোবেল ‌ : হ্যাঁ আজকে প্রমাণ হয়ে যাবে ,,

, এই কথা বলে সবাই হাসতে হাসতে যখন প্রিয়ার দিকে‌ তাকালো ‌ ,, তখন তো সবাই অবাক হয়ে গেল ,,, প্রিয়ার কাছ থেকে সবাই দূরে সরে দাঁড়ালো ,,,

পাপিয়া ‌ : প্রিয়া তোকে এমন দেখাচ্ছে কেন ? তুই ঠিক আছিস তো ?

প্রিয়া‌ : আমার যেন কেমন লাগছে ?

পাপিয়া ‌ : তোকে কি কোন জম্বি কামড়ে দিয়েছে ,,,

প্রিয়া ‌ : আমি তো জানিনা ,,,


পাপিয়া ‌ : তুই সাবধানে দ্বারা‌ ,, আমরা তোকে দেখছি‌ তুই চিন্তা করিস না  ,, এই কথা বলে পাপিয়া আর মিনা প্রিয়ার সারা শরীর চেক দিতে লাগলো‌ ।

মিনা ‌ : পাপিয়া সর্বনাশ হয়ে গিয়েছে ,, প্রিয়াকেতো জম্বিরা কামড়ে দিয়েছে ,, এই যে প্রিয়ার হাতের মধ্যে জম্বির কামড়ের দাগ । এই কথা শুনে তো সবাই‌ অবাক হয়ে গেল এমনকি প্রিয়াও নিজেও‌ অবাক হয়ে গেল ,, প্রিয়া নিজেও জানতো না তাকে জম্বি কামড়ে দিয়েছে ।

কিন্তু কেউ বুঝতে পারছে না তাহলে এতক্ষণ পর্যন্ত প্রিয়া জম্বি হলো না কেন ? প্রাই বিশ মিনিটের মত হয়ে গিয়েছে  ,, পাপিয়ারা তো আগেও দেখেছে‌ জম্বি কামড়ে দেওয়ার দশ মিনিট পর ,সেই সুস্থ মানুষের ভেতরে ভাইরাস ঢুকে যাওয়ার কারণে সেই লোকটিও‌ জম্বি হয়ে যায় ‌ ।

নোবেল ‌ : আমিও দেখতে চাই প্রিয়ার আঘাতের চিহ্ন,,, নোবেল দেখতে পেয়ে বুঝে গেল পুরোপুরি ভাইরাস প্রিয়ার শরীরে ঢুকেনি এই কারণে জম্বিতে রূপান্তরিক হয়নি প্রিয়া,, এতো টাইম লাগছে ,,, কিন্তু প্রিয়ার শরীরের অবস্থা দেখে সবাই বুঝতে পেরেছে আর কিছুক্ষণের মধ্যে প্রিয়াও জম্বি হয়ে যাবে ।

কেউ বুঝে উঠতে পারছে না এখন প্রিয়াকে কি করবে ?

সবাই অনেক কান্নাকাটি  করা শুরু করে দিয়েছে প্রিয়ার‌ জন্য ‌ ,,,, আর‌ অনেক ভয় পেতে লাগলো প্রিয়াকে নিয়ে ,,।

প্রিয়া ‌ : তোরা এভাবে কান্নাকাটি করিস না ,,, তোরা আমার‌ অনেক প্রিয় ছিলিস ,,, অনেক ভালো সময় কাটিয়েছি তোদের সাথে । আমার জন্য দোয়া করিস ,,আর‌ তোরা সবাই তোদের হাতে তলোয়ার‌ নিয়ে রেডি‌ হ ,, আমি যখন পুরোপুরি জম্বি‌ হবো‌ তখন তোরা আমার‌ গাঁড় থেকে মাথাটা আলাদা করে ফেলবি  ,,, আর আমি মারা যাওয়ার পর আমার মায়ের কাছে আমার হয়ে ক্ষমা চেয়ে আসিস ।

আজকে এই পর্যন্তই থাক ❤️ ❤️ ❤️

চলবে,,,,,,

148 Views
3 Likes
0 Comments
5.0 Rating
Rate this: