🧟 ভয়ানক জম্বি‌র‌ আক্রমণ 🧟 (পর্ব ৭)

পাপিয়াদের বিপদ যেন কোনভাবে কমছেই‌ না ,,, তাদের গাড়ির পিছন পিছন অনেকগুলো জম্বি‌ আসতে লাগলো তারমধ্যে  প্রিয়ার হাত কেটে গাড়ির মধ্যে কয়েক ফোঁটা রক্ত পড়ে গিয়েছে । ওই রক্তের ঘ্রাণ জম্বিরা পেয়েছে । তাদের পিছন যেন কোনভাবে ছাড়ছেই‌ না‌ জম্বিরা।

আর ওদিকে সাবরিনা মহা বিপদে পড়ে আছে ,,, জম্বিদের মাঝখানে ,,,

সাবরিনা ‌ : পাপিয়া তাড়াতাড়ি আমাকে বাঁচা ,,, আর কিছুক্ষণ আমি এভাবে দাঁড়িয়ে থাকলে জম্বিগুলো আমাকে ছিরে খেয়ে ফেলবে ।

পাপিয়া ‌ : খুব সাবধানের সাথে দাঁড়িয়ে থাক আমি আসছি‌ ,,,

পাপিয়া ‌ : গাড়ির দরজা খুব শক্ত করে আটকে মনিকে সাবধানে রেখে তোরা বসে থাক কোন প্রকার শব্দ করবি না ,,, গাড়িতে রাখা অবশিষ্ট পানির বোতলের‌ পানি দিয়ে প্রিয়ার রক্তগুলো ধুয়ে ফেল ।

কোন প্রকার কথা বা‌ শব্দ গাড়ির ভেতর করবি না মনে থাকে যেন,,, আমি যে পর্যন্ত আসবো না সেই পর্যন্ত গাড়ির‌ দরজা খোলবি‌ না‌ ।

মিনা ‌ : পাপিয়া তোর জন্য আমাদের অনেক ভয় লাগছে ,, খুব সাবধানে ওদের সাথে লড়াই করবি ,, আমি কি তোকে সাহায্য করার জন্য তোর‌ সাথে বাহিরে আসবো ।

পাপিয়া ‌ : একদমই না ,, আমি একাই পারবো ,, আমার দাদা আমাকে তলোয়ার চালানো শিখিয়ে দিয়েছে ,,, একাই কিভাবে ১০ জনের‌ সাথে তলোয়ার দিয়ে লড়াই করা যায় ‌ ।

আর এই জম্বি গুলো চোখে দেখতে পারেনা আমি খুব সাবধানের‌ সাথে ওদের সাথে মোকাবেলা করবো‌ ,, আমি নিজের জন্য টেনশন করি না আমি আমার বাবার জন্য টেনশন করি । না জানি আমার বাবার অবস্থা কি রকম হয়েছে যখন শুনতে পেল আমাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না তখন ।

এত কথা বলার টাইম এখন নেই যে কোন সময় সাবরিনার ক্ষতি হয়ে যেতে পারে ,,,

এই কথা বলে পাপিয়া গাড়ি থেকে নেমে গেল তলোয়ার হাতে নিয়ে ,,, জম্বি গুলো পাপিয়ার পায়ের শব্দেই পাপিয়াকে কামুড়‌ দেওয়ার‌ জন্য তিরে আসছে ,,, কিন্তু পাপিয়া অনেক সাবধানের সাথে জম্বি‌ গুলোর ঘাড় থেকে মাথা আলাদা করে ফেলছে‌ ।

কচু শাকের মতো করে দাঁড়ালো তলোয়ার দিয়ে পাপিয়া জম্বিদের ঘার‌ থেকে মাথা আলাদা করে করে‌ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

তাও তখন রাত 10 টার‌ মতো বাজে,, কিন্তু এই জায়গাটাতো‌ বইমেলা ছিল সকালেও ,, এর জন্য চতুর সাইটে বড় বড় লাইট লাগানো । দিনের মতো আলোকিত ওই মাঠটা । পাপিয়া অনেক কষ্টে সাবরিনাকে ঔ পিকআপ গাড়ি থেকে উদ্ধার করে সুস্থভাবে পাপিয়াদের গাড়িতে চলে গেল ।

সবাই এখন অনেক খুশি ,, গাড়ির সামনে তিনটি জম্বি দাঁড়িয়ে আছে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গাড়ির মধ্যে থাপড়াচ্ছে ,,,,

পাপিয়া আর কোন কথা না বলে জম্বি গুলোকে গাড়ি দিয়ে মাটিতে পিষিয়ে ফেলছে ,, কিন্তু এই জম্বিগুলোর কোন কিছু হচ্ছে না ,,, গাড়ি দিয়ে পিসিয়ে ফেলার পরেও তারা আবার উঠে স্বাভাবিকভাবে হাঁটাচলা করছে । তাদেরকে মারা যেন একদম অসম্ভব ,,, একমাত্র বুদ্ধি জম্বিদের‌ গলা কেটে ফেলা ,, শরীর ছাড়া তো আর কাউকে কামড় দিতে পারবে না । জম্বিদের মানুষের উপর আক্রমণ মানেই‌ হাতে এবং ঘাড়ে কামড়ে দেওয়া ।

আর জম্বিদের‌ কামড় খাওয়ার ১০ মিনিট পরেই‌ ওই জম্বির শরীরের ভাইরাস সুস্থ মানুষের ভেতরে ঢুকে যায় । ১০ মিনিটের মধ্যে ঔ‌ মানুটির‌ সরাশরীরে‌ ভাইরাস ঢুকে যায় এরপর ওই মানুষটি জম্বিতে রূপান্তরিত হয় ।

গাড়ি চালিয়ে পাপিয়া সামান্য একটু নিরাপদ জায়গায় গাড়িটি নিয়ে গেল ,,, যেমন দুই দিকে গাড়ি তাদের গাড়ির মুখটি দুই গাড়ির মাঝখানে ঢুকিয়ে দিল যাতে করে জম্বিগুলো তাদের জানালার কাছে আসতে না পারে ,,, পাপিয়াদের‌ গাড়ির তিন সাইড এখন ফিলাপ শুধু পিছন সাইটটি জম্বিগুলো দেখতে পাবে ,, কিন্তু ওই সাইট থেকে গাড়ির মধ্যে আঘাত করলেও গাড়ির কোন ক্ষতি হবে না ।

সাবরিনা ‌ : পাপিয়া তুই এত সাহস কোথা থেকে পাস‌ ,,, আমাদের পক্ষে তো এগুলো একদম অসম্ভব । জম্বি গুলোর মুখের দিকে তাকালেই তো ভয়ে শরীর আটকে উঠে , জম্বিদের‌ দেখে মনে হচ্ছে তাদের শরীর পচে যাচ্ছে ,,, শরীরের মাংসগুলো যেন পচে গলে শরীর থেকে ঝরে যাচ্ছে ,,, আর চোখ গুলো দেখছিস মনে হয় ভেতর থেকে উল্টে কালো হয়ে যাচ্ছে । অনেক সামনে থেকে জম্বিগুলোকে‌   আমি দেখে‌ এসেছি‌ ।

দাঁতগুলো অনেক বড় হয়ে গিয়েছে স্বাভাবিকের থেকে অনেক বড় ,,, সব সময় তারা হা করে থাকে ,, তাদের খাবার যেন আমাদের মত মানুষের রক্ত । জানিস এলিনাও‌ আমাকে খাওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছিল ‌ । এলিনাকে দেখে‌ আমি একদম ইমোশনাল হয়ে গিয়েছিল । মনে হল এলিনাকেউ আমাদের সাথে নিয়ে আসি ,, আজকে সকালে কত হাসি খুশি ছিল মেয়েটি‌ ,, একটু সময়ের ব্যবধানে কি হয়ে গেল ‌।

পাপিয়া ‌ : শুধু একজনের জন্য এমন আক্ষেপ করছিস ,, জানিস এখানে যেগুলো জম্বি আছে‌ ,, সবগুলো কারো না কারো আপনজন আমাদের আপনজন যেমন এলিনা । তেমনি অনেক মানুষ তাদের প্রিয় মেয়ে বা মা অথবা কারো বাবা সবাইকে তাদের চোখের সামনে জম্বি হতে দেখেছে এরপর তারা তাদেরকে রেখেই চলে গিয়েছে নিজেদেরকে রক্ষা করার জন্য।

এলিনার কথা আমাদের ভাবলে‌ কোন লাভ হবে না,,, অন্য সব মানুষের আপনজনদের কথাও আমাদের ভাবতে হবে ,,,

মিনা ‌ : পাপিয়া পাপিয়া ,,,

পাপিয়া ‌ : কি হয়েছে এভাবে ডাকছিস কেন ?

মিনা ‌ : আমাদের গাড়ির পিছন দিকেও‌ কয়েকটি জম্বির গলা কাটা লাশ পড়ে আছে ,,, এগুলোকে তো তুই মারিস নি ,, তাহলে এগুলোর গলা কে কাটলো ?

পাপিয়া ‌ : তুই গাড়ির সামনের‌ দিকে আসতো আমি পিছনে যেয়ে দেখে আসি ,, এই কথা বলে পাপিয়া গাড়ির পিছনের দিকে আসলো ,,, সত্যিই তো এগুলোর মাথা কে কাটলো ? আমি তো এই সাইটে গাড়ি থেকে নামিনি ,,, আর মাথাগুলো তো হাঁটতে পারেও না যে‌ এখানে এসে পড়বে? আমি কিছু বুঝতে পারছি না ,,

প্রিয়া‌ : আমার মনে হচ্ছে ,,, আমাদের ছাড়াও এখানে কেউ আছে ,,,,যে‌ এই জম্বি গুলোর মাথা কেটে ফেলেছে ,, সেও হয়তো আমাদের পাপিয়ার মতো সাহসী , এবং শক্তিশালী ।

মনি‌ : আন্টি তোমরা আমার মায়ের কাছে নিয়ে যাও আমাকে ,,, এখানে আমার অনেক ভয় লাগছে ,,,,

পাপিয়া ‌ : তোমার বাড়ি কোথায় ? তোমার মায়ের নাম তোমার বাবার নাম কি ?

মনি‌ :‌ আমার মায়ের নাম কমল আর আমার বাবার নাম সুরুজ ,,, আমার বাড়ির‌ নাম কদমপুর‌ । আমি আর কিছু জানি না আমি শুধু আমার মায়ের কাছে যেতে চাই । এই কথা বলে মনি‌ কান্না করতে লাগলো ,,,,,

পাপিয়া ‌ : কান্না করিও না মামনি আমরা খুব তাড়াতাড়ি তোমাকে তোমার মায়ের কাছে নিয়ে যাবো ,,, এখন রাত হয়ে গিয়েছে একটি‌ আপেল খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ো । আচ্ছা তোমার মায়ের কোন পিক কি তোমার কাছে আছে‌ ,,,

পাপিয়া যখন মনিকে‌ তাদের গাড়ি থেকে উদ্ধার করেছিল তখন সাথে করে মনি‌ তার কাঁধে থাকা ছোট ব্যাগটিও‌ নিয়ে এসেছে ,, আর ছোট বাচ্চারা এমন‌ই হয় যাই হয়ে যাক না‌ কেনো ,, তাদের প্রিয় জিনিসগুলো হাতছাড়া করবে না ।

মনি‌ : হ্যাঁ আন্টি আছে ,,,,

পাপিয়া ‌ : দেখাও তো তোমার মায়ের পিক ,,,

মনি‌ তার ব্যাগ‌ থেকে তার মায়ের একটি পিক বের করে দিল‌ ,,,

পাপিয়া তো মনির মায়ের পিক দেখে একদম হতাশ হয়ে গেল ,,,,

আজকে এই পর্যন্তই থাক ❤️ ❤️ ❤️

চলবে,,,,,,,