🧟 ভয়ানক জম্বি‌র‌ আক্রমণ 🧟 (পর্ব 6)

পাপিয়া যেন বাচ্চাটিকে বাঁচানোর সব আশা ছেড়ে দিল ,,,

তখনই সাবরিনা বলে উঠলো ,,, আমি যাব বাহিরে শব্দ করার জন্য। পাপিয়া কান্না করিস না । তোর কাছ থেকে আমাদের অনেক কিছু শিক্ষা নেওয়া দরকার । তুই অনেক ভালো মেয়ে,কারো বিপদ তুই একটুও দেখতে পারিস না ।

আমরাও তোর মত হতে চাই ,,, আমাদের জীবন থাকতেও আমরা বাচ্চাটির কিছু হতে দেব না । আমি ওই বড় পিকআপ গাড়ির উপর যেয়ে শব্দ‌  করবো ,, আর পাপিয়া তুই গাড়ি চালিয়ে বাচ্চাটিকে উদ্ধার করে আনবি । আর আমাকে নিয়ে টেনশন করিস না ।

পাপিয়া ‌ : সাবরিনা তোর কথা শুনে আমি একদম ইমোশনাল হয়ে গেলাম ‌। এখন আর তেমন কিছু বলার বা‌ ভাবার‌ মত সময় আমাদের হাতে নেই ‌ ,,, একদম নিজেকে সুরক্ষা রাখবি । তাড়াতাড়ি তোকে উদ্ধার করার জন্য আমি গাড়ি নিয়ে এসে পড়বো । আর আমার মনে হচ্ছে ওই পিকআপের ভেতর টিনের আসভাব‌ প‌এ‌ আছে ,, এই গাড়ি থেকে কিছু নিয়ে যা আর ওই গাড়ির ভেতর যা আছে ওগুলো দিয়েই অনেক জোরে শব্দ করার চেষ্টা করবি ।

সাবরিনা রেডি‌ হয়ে গেল পিকাবে‌ উঠতে‌ ,,, তাদের বাড়ির কাছে পিকআপটি রাখা । সাবরিনা অনেক জোরে‌ দৌড়ে‌ পিকাবের‌ উপর‌ উঠে‌ পড়লো‌ । তিনটি জম্বি‌ সাবরিনার পায়ের শব্দে দৌড়ে পিকাবের‌ কাছে চলে‌ গেল।

সাবরিনা ‌ অনেক জোরে জোরে শব্দ করতে লাগলো গাড়িতে  ,, গাড়ির ভেতর থেকে অনেক বারি বারি জিনিস পত্র গাড়ির ভেতর থেকে বাহিরে শব্দ করে ফেলতে লাগলো ।

শব্দ শুনে ওই বাচ্চাটির গাড়ির কাছ থেকে জম্বি‌ গুলো সাবরিনার দিকে  যেতে লাগলো ।

এটার সুযোগ পেয়ে ,, পাপিয়া আস্তে আস্তে গাড়ি চালিয়ে বাচ্চাটির গাড়ির কাছে যেয়ে গাড়ি দাঁড় করালো ,,

পাপিয়া ‌ : বাবু কান্না করিও না এভাবে কান্না করলে ওই জম্বি গুলো আবার তোমার কাছে এসে যাবে‌ ,,, তুমি ভয় পেয়ো না আমরা তোমাকে উদ্ধার করতে এসেছি । তোমাকে তোমার মায়ের কাছে নিয়ে যাবো ।

পাপিয়ার এই কথা শুনে বাচ্চাটি কান্না থামালো ,, বাচ্চাটি একটি মেয়ে বয়স ৬ বছর।

পাপিয়া ‌ :বাবু তোমার নাম কি ? বাচ্চাটি বলল আমার নাম মনি ।

আর ওইদিকে সাবরিনাকে  ঘিরে ধরেছে অনেকগুলো জম্বি‌।

আর‌ এদিকে পাপিয়াদের‌ গাড়ি  চালানোর শব্দে ৫টি জম্বি এসে ,, পাপিয়াদের‌ গাড়ি থাপড়াচ্ছে । সবাই অনেক নিরব হয়ে গাড়ির ভেতর বসে‌ রইলো । আর ঐদিকে সাবরিনাকে‌ জম্বি গুলো প্রায় ধরেই ফেলবে । পাপিয়াও ওইখান থেকে আসতে পারছে না । বাচ্চাটির গাড়িও বদল করতে পারছে না ,, তাদের কাছে বাচ্চাটি‌ আনার সময় যদি কোন প্রকার শব্দ হয় তাহলে ওই পাঁচজন জম্বি‌ তাদের সবাইকে কামড়ে দিবে ‌ । এর জন্য নিরব হয়ে গাড়িতেই বসে আছে ,,, কখন জম্বি গুলো এখান থেকে চলে যাবে এই আশায় ।

দূর থেকে সাবরিনা এটা দেখতে পেলো ,,, সাবরিনা বুঝতে পেল পাপিয়া অনেক বিপদে পড়ে গিয়েছে ।

সাবরিনা ‌ আরো‌ জুরে‌ জুরে‌ শব্দ‌ করতে লাগলো‌  পিকাবে‌ ,,, যাতে করে জম্বি গুলো পাপিয়া দের কাছ থেকে তার কাছে চলে যায় ,,,, জম্বিরা‌ সাবরিনার দিকে‌ যাবে‌ তখনই গাড়ির ভেতর প্রিয়ার হাত কেটে গেল তলোয়ারের মধ্যে । জম্বি গুলো আবার গাড়ির কাছে ফিরে আসলো ,,,

এর কারণ হলো প্রিয়ার রক্তের গ্রান পেয়েছে জম্বিরা ,,, এখন তারা যেখানে শব্দ হচ্ছে সেখানে যাবে‌ না ওরা বুঝে  গিয়েছে তাদের শিকার এখানেই আছে । তারা আরো ভয়ঙ্কর ভাবে গাড়ির মধ্যে আঘাত করতে লাগলো ।

পাপিয়া ‌ : কি হলো জম্বি‌ গুলো আবার ফিরে আসলো কেন ?

প্রিয়া ‌ : পাপিয়া আমার হাত কেটে গিয়েছে ,,, এখানে কিসের তলোয়ার রেখে দিয়েছিস । এটার মধ্যে আমার হাত লেগে অনেক টুকু কেটে গিয়েছে ।

পাপিয়া ‌ : সর্বনাশ হয়ে গিয়েছে ,,, এই‌ রক্তের গ্রান‌ পেয়েই‌ জম্বি গুলো আবার ফিরত‌ আসলো‌ । মিনা তাড়াতাড়ি প্রিয়ার হাত শক্ত করে বেঁধে দে যাতে‌ করে আর যেন রক্ত না বের হয় ।

আমার বাবার কথা অনেক মনে পড়ছে‌ ,,, আমি হলাম আমার বাবার কলিজা ‌,,, আমি যেন নিজেকে রক্ষা করতে পারি কোন‌ বিপদে পড়লে ,,এর জন্য বাবা আমার জন্য গাড়িতে তলোয়ার রেখে দিয়েছে । যত যাবতীয় জিনিস আমার দরকার হবে কোথায় গেলে সেই সব জিনিস বাবা লুকিয়ে দিয়ে দিয়েছে আমি আনবো না এর জন্য ‌। আমি নিজেও জানিনা গাড়িতে তলোয়ার দিয়ে দিয়েছে ।‌ এটা আমার দাদার শেষ স্মৃতি । এই  তলোয়ারটা‌ দাদা মারা যাওয়ার সময় আমার হাতে দিয়ে গিয়েছিল । আর তোলোয়ার‌ চালানো সব কিছু আমাকে শিখিয়ে দিয়েছিল আমার‌ দাদা।

এখন আমি জম্বি গুলোকে মজা দেখাবো,,, আমাদেরকে এখান থেকে সুস্থ ভাবে যেতেই হবে ,,, আমার কিছু হয়ে গেলে আমার বাবা একদম মরে যাবে ,, আমার বাবার জন্য আমাকে লড়াই করতে হবে ‌।

মিনা ‌ : তুই কী করতে চাচ্ছিস আমি কিছু বুঝতে পারছি না ,,,

আর ওইদিকে সাবরিনা অনেক বিপদে পড়ে আছে ,,, পিকাপের উপরে দাঁড়িয়ে আছে ঠিকই কিন্তু জম্বি গুলো পুরা পিকাপের‌ চার দিকটা ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে। গাড়ি এত জোরে জোরে ধাক্কাচ্ছে কখন যে সাবরিনা জম্বিদের উপরে পড়ে যায় ।

পাপিয়া এগুলো দেখে নিজেকে আর শান্ত করে রাখতে পারছে না ,,আর‌ গাড়িতে থাকা বাচ্চা মেয়েটি এখনো গাড়িতেই বন্দি হয়ে আছে সেই মেয়েটি বাঁচার জন্য অনেক আকতি মিনতি করছে‌ পাপিয়ার কাছে ‌।

পাপিয়া ‌ : মিনা তলোয়ারটা আমার হাতে দে ,,

মিনা ‌ : না দিব না তুই কি করতে চাচ্ছিস আগে সেটা বলতো? দেখ জম্বি গুলো অনেক শক্তিশালী তুই ওদের সাথে লড়াই করে পারবি না ।

পাপিয়া ‌ : আমি যেটা বললাম সেইটা‌ কর ,,, তোরা ভালো করেই জানিস আমি কারো কাছ‌ থেকে জ্ঞান নিতে পছন্দ করি না । যদি আমার কিছু হয়ে যায় তোরা নিজেকে সামলিয়ে নিস । এই কথা বলে পাপিয়া তলোয়ারটি‌ হাতে নিয়ে গাড়ি র দরজা খুলে বের হয়ে পড়লো‌ একাই জম্বিদের সাথে লড়াই করার জন্য ।

মিনা আর প্রিয়া পাপিয়াকে বারবার মানা করলো এমনটা‌ না করার জন্য ।

দূর থেকে সাবরিনাও এটা‌ দেখতে পেলো‌ ,,,

পাপিয়া গাড়ি থেকে নেমে  একাই লড়াই করা শুরু করে দিলো‌ জম্বিদের‌ সাথে‌ ,,  জম্বিদের‌ শরীরে  পাপিয়া পেঁচাগ পেঁচাগ করে বারবার তলোয়ার ঢুকিয়ে দিচ্ছে ,, কিন্তু এই জম্বিদের কিছুই হচ্ছে না । তারা‌ হেঁটেই যাচ্ছে এক‌ই‌ রকম‌ করে‌ ,,, পাপিয়ার মাথায় তখন একটি‌ আইডিয়া আসলো‌ ,,, পাপিয়া সিদ্ধান্ত নিলো‌ জম্বিদের‌ ঘাড় থেকে মাথাটাই আলাদা করে দিবে‌ ,,, যাতে করে আর কাউকে কামড়াতে না‌ পারে ।

পাপিয়া তাদের ওইখানে থাকা  সব জম্বির একে একে মাথা কেটে ফেললো ,,, জম্বি গুলোর কাটা‌ মাথাগুলো মাটিতে নড়াচড়া করছে ,, কিন্তু ভালো খবর হলো আর তাদের উপর আক্রমণ করতে পারছে না জম্বি গুলো ।

আর এদিকে গাড়ির ভেতর প্রিয়া আর‌  মিনা পাপিয়াকে হা করে দেখছে ,,এমন‌ সাহসীকতা এমন শক্তি শালী‌ মেয়ে তারা‌ দেখিনি‌ আগে‌ কখনো ‌। প্রিয়া আর‌ মিনা যেভাবে পাপিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে যদি তারা ছেলে থাকতো তাহলে এখনই সত্যি সত্যি পাপিয়ার প্রেমেই পড়ে যেত । ছোট বাচ্চাটির‌ গাড়ির জানালার কাজ ভেঙ্গে বাচ্চাটিকে তাদের গাড়িতে ভালোভাবে তুলে নিল‌ ,,,, আর ওই গাড়িটি স্টার্ট করে রেখে পাপিয়া তার গাড়ি নিয়ে সাবরিনাকে উদ্ধার করতে চলে গেল ,,,,,।

আজকে এই পর্যন্তই থাক‌♥️❤️

চলবে ,,,,,