🧟 ভয়ানক জম্বি‌র‌ আক্রমণ 🧟 (পর্ব ২)

পাপিয়া ‌ :‌ বইমেলা যেতে আরো তিন ঘন্টা টাইম লাগবে ,, সেই বই মেলাতে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসে ,, গাড়িতে গান চালিয়ে দিয়ে তারা পাঁচজন মজা মাস্তিতে মেতে আছে ।

আর গাড়িতে অনেক খাবার পাপিয়ার বাবা জোর করে দিয়ে দিয়েছিল । তার মেয়ে যেন খিদেতে  কোন প্রকার কষ্ট না করে । পাপিয়া বাবা পাপিয়াকে প্রচন্ড ভালোবাসে মা-বাবার দুইজনে‌ই‌ দায়িত্ব সে পালন করে ।

সাবরিনা ‌ : জানিস তোরা আমার মনটা আজকে অনেক ভালো লাগছে । নিজেকে অনেক স্বাধীন মনে হচ্ছে ।‌ আমরা কিন্তু অনেক মজা করবো । আমি শুনেছি অনেক মজার মজার খাবার পাওয়া যায় সেখানে এমনকি নাগরদোলা থেকে শুরু করে সব ধরনের জিনিসই সেখানে আছে ।

পাপিয়া ‌ : তুই যে এসব ধরনের কথা বলছিস কই বইয়ের কথা তো কিছু বললি না কোন কোন লেখকের বই কিনবি ।

সাবরিনা ‌ : দূর কিসের বই কিনব এটা তো শুধু বাহানা ,,, আমি তো তেমন কোন লেখক বা লেখিকার নাম‌ও‌ ভালোভাবে জানি না । ওই বইয়ের প্রতি আমার কোন আইডিয়া নেই আমি শুধু এসেছি মজা মাস্তি করার জন্য মা বাবার শাসন থেকে একটু দূরে আসার জন্য ।

সব সময় মা-বাবা বলে‌ এটা করিস না ওটা করিস না ,, এটা করলে ভালো হবে না বা এটা করলে ভালো হবে । এগুলো শুনতে শুনতে আমার আর ভালো লাগেনা ।

এলিনা ‌ : এগুলো শুনতে শুনতে তোর ভালো লাগেনা আর এগুলো শোনার জন্য আমি প্রায়ই অনেক রাত কান্না করি । খালার কাছে আমি মানুষ হয়েছি । আমার তেমন আপন‌ বলতে কেউ নেই ।

পাপিয়া ‌ : আমরা একভাবে ভাবতে গেলে পৃথিবীতে কেও সুখে নেই । আবার অন্যভাবে ভাবতে গেলে আমরা পৃথিবীতে সবথেকে সুখী । কত জায়গায় কত মানুষ রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে একমোট‌ খাবার পাওয়ার জন্য ,,, নানান মানুষ নানা ধরনের কষ্টে ডুবে আছে । হাত পা ছাড়াও মানুষ এই পৃথিবীতে অনেক আছে‌ ,, আলহামদুলিল্লাহ আমরা তাদের থেকে অনেক ভালো আছি।

মিনা ‌ : একদম ঠিক বলছিস পাপিয়া ,,। আর এক ঘন্টার মত এরপর আমরা বইমেলায় এসে পড়বো । শিক্ষামূলক অনেক বই কিনব যে বই পড়লে আমাদের জ্ঞান বৃদ্ধি হবে বা আমরা কিছু শিখতে পারবো । আমার মা তো অনেকগুলো বই কিনে‌ নিতে বলেছে ।

এভাবে তারা বহু পথ পাড়ি দেওয়ার পর মেলায় এসে পৌঁছালো ,, সুরক্ষিত এক জায়গায় তাদের গাড়ি টি রেখে ব‌ই‌ মেলা ঘুরে দেখা শুরু করে দিল ।

তখনই পাপিয়ার মোবাইল কিরিং কিরিং করে বেজে উঠলো ,,

মিনা ‌ : পাপিয়া তোর মোবাইলে আবার কে ফোন দিলো ।

পাপিয়া ‌ : কে আবার ফোন দিবে আমার বাবা ,, আমার মনে হচ্ছে আমার বাবা এই তিন ঘন্টা ধরে মোবাইল হাতে নিয়ে বসে ছিল ,,, জানে যে তিন ঘন্টা লাগবে আমাদের এখানে পৌঁছাতে ,, ঠিকমত পৌঁছে গিয়েছি কিনা সেটাই জানার জন্য ফোন দিয়েছে‌ হয়তো । তোরা এখানে দাঁড়া আমি একটু কথা বলেনেই ।

পাপিয়া তার বাবার সাথে কথা বলা‌ শেষ করলো ,,,

পাপিয়া ‌ : আমার কথা বলা শেষ হয়েছে চল‌ এবার আমরা ঘুরাঘুরি শুরু করে দেই ,,, প্রথমে বই কিনবো ,,,

এলিনা ‌ : আমি অনেকগুলো ভূতের বই কিনবো ,, সাথে জম্বির‌ও ‌ । দেখ পাপিয়া এই লোকটা শয়তানের আর জম্বির বই বিক্রি করছে ।

মিনা ‌ : তুই যেমন তুই তো সেই ধরনের বই কিনবি ।

এলিনা ‌ : তুই কি বলতে চাচ্ছিস আমি শয়তান আর জম্বি‌ ।

মিনা ‌ : এই ভয়ানক জিনিসের ব‌ই তুই কেন কিনিস সব অবাস্তব জিনিস । অন্য কোন বই কিন উপন্যাস কিন ,,,

এলিনা ‌ : আরে‌ জ্ঞানী আপু আমাকে আর তোমার জ্ঞান দিতে হবে না । আমি কি কিনব কি কিনবো না এটা একান্ত আমার ব্যাপার ।

পাপিয়া ‌ : তোরা কি এখানে ঝগড়া করার জন্য এসেছিস নাকি ,, সব সময় তোরা দুজন ঝগড়া করতে থাকিস । এভাবে ঝগড়া করলে তোদেরকে এখানেই রেখে চলে যাবো।

এলিনা ‌ : মিনা দেখ তোর পিছনে জম্বি‌ ।

মিনা একথা শোনার পর চিল্লিয়ে উঠলো‌ ।

এলিনা ‌ : ভীতুর ডিম একটা ,,, সামান্য এই কথা শুনে ভয় পাচ্ছিস সত্যি সত্যি যদি তোর সামনে কোনদিন জম্বি এসে পড়ে তাহলে সেদিন কেমন করবি‌ তুই‌ ।

মিনা ‌ : এখানে আশেপাশে তোর মত জম্বি‌ ছাড়া‌ আর কোন জম্বি‌ নেই ।

এলিনা ‌ : তুই আবার আমাকে জম্বি বললি ,, সত্যি সত্যি যদি আমি জম্বি‌ হতাম তাহলে প্রথমে আমি তোকে কামড়ে দিতাম। এভাবেই তারা দুজন ঝগড়া করছে করতে পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখলো পাপিয়ারা‌ তাদের কাছে নেই ।

মিনা ‌ : এখন ঝগড়া থামিয়ে তাড়াতাড়ি পাপিয়াকে ফোন দে ,, আবার আমরা মেলাতে হারিয়ে যাব আমাদেরকে রেখে চলে গেলে আমরা কিভাবে বাড়িতে ফিরে যাব ।

এভাবে তারা দুজন পাপিয়াদের সাথে যোগাযোগ করে আবার একসাথে হলো । তারা সর্বপ্রথম অনেকগুলো বই কিনলো তাদের প্রিয় প্রিয় লেখকের ‌। এলিনা জম্বি আরো কিছু ভয়ানক জিনিসের ব‌ই কিনলো ।

সবাই যার যার বইগুলো গাড়িতে রেখে আসলো,, কারণ এত ভারি ভারী বই পত্র‌ নিয়ে হাঁটাচলা করবে কেমন করে‌ ।

আরো কিছু খাবার কিনলো তাদের প্রিয় প্রিয় ‌ ,,, গাড়িতে খাওয়ার জন্য ,,, পাপিয়ার বাবা অনেক খাবার দিয়ে দিয়েছিল কিন্তু সেগুলো পুষ্টিকর খাবার আপেল ,কমলা ,মাল্টা,,ফল‌ ফ্রুট ‌।

আর এদের তো সেই খাবার গুলো ভালো লাগেনা এর জন্য তারা তাদের প্রিয় প্রিয় খাবার কিনে গাড়িতে রেখে আসে।

এর কিছুক্ষণ পর বই মেলা থেকে হাও‌ কাও‌ চেঁচামিচির শব্দ ভেসে আসছে তাদের কানে ‌ ।

এলিনা ‌ : এমন শব্দ ওই সাইট থেকে কেন ভেসে‌ আসছে ,, আমি শুনেছি এখানে জম্বির শুটিং হয় ‌ । চল না আমাকে নিয়ে চল আমি দেখব ,,, আমি শুটিংয়ের জম্বির সাথে একটি সেলফি তুলবো ‌। সেই সেলফি আমি ফেসবুকে ছাড়বো দেখবি অনেক লাইক পরবে‌ ।

কিন্তু কেউ আর ওই দিকে যেতে চাচ্ছে না ,, অনেক ঘুরাঘুরি হয়ে গিয়েছে এখন তারা বাড়িতে চলে যেতে চাচ্ছে কিন্তু এলিনা অনেক বায়না ধরেছে চেঁচামেচির ওইদিকে যাবে ।

সবাই বাধ্য হয়ে এলিনা কে খুশি করার জন্য সেখানে গেল কিন্তু সবাই এদিকে ওদিকে ছোটা ছুটি করছে আর বলছে জম্বি সবাই পালাও এখানে জম্বি আছে ‌।

এলিনা এটাও শুটিং মনে করছে‌ ,,,

এলিনা ‌ : পাপিয়া তোরা এখানে দাঁড়া আমি ওই জম্বিটার সাথে একটি সেলফি তুলেই এসে পড়বো ,,

মিনা ‌ : আমার যেন কেমন ভয় লাগছে ,,, এই জম্বিগুলো সত্যি সত্যি মনে হচ্ছে । দেখতে কেমন ভয়ানক । আর আশপাশে অনেক মানুষ তাদের হাত ধরে মাটিতে শুয়ে শুয়ে গড়াগড়ি খাচ্ছে । আমার মনে হচ্ছে ওগুলো ওদের হাতে সত্যি সত্যি রক্ত‌ ।

পাপিয়া ‌: আমারও কেমন যেন তাই মনে হচ্ছে ,, এলিনা তো ওই জম্বির কাছে চলে গেল ,,, এই কথা বলে পাপিয়া জুরে জুরে  চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে এলিনাকে‌ ফিরে আসতে বলছে । কিন্তু এলিনা কথা শোনার মত মেয়ে না ,,, জম্বিটির কাছে যেয়ে যখন এলিনা বলল ,, একটি সেলফি তুলতে চাই আপনার সাথে আমি আপনার বড় ফ্রেন্ড ।

এ কথা বলার সাথে সাথে জম্বিটি এলিনার ঘাড়ের মধ্যে কামড়ে ধরলো ,,,,,,।

আজকে এই পর্যন্তই থাক ❤️ ❤️ আমার ধারাবাহিকটি কেমন লাগছে আপনাদের কাছে প্লিজ রিভিউ দিয়ে জানাবেন ❤️ 💗 যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে স্টিকার দ্বারা সমর্থন করে আমাকে উৎসাহিত করবেন 💗 ❤️

চলবে ,,,,,,