জুয়া ( পর্ব 9 )

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
শাজাহান :‌ কখন‌ আমার আসতে‌ হবে‌ ,,।

বেগম :‌  যখন‌ আমি ফো‌ন‌ দিবো‌ তখন সবই ফোনে বলবো‌ ,,, এখন চলে‌ যা‌ ,,,, ।

শাজাহান : আমি‌ যাচ্ছি‌‌।কিন্তু ধরা‌ পড়লে‌ কিন্তু তোমার নাম‌ বলে দিবো‌ ,,,।

বেগম‌  :‌ আমার নাম‌ বলবি‌ কেনো? আমিতো তোকে‌ টাকা‌ দিয়েছ শাজাহান ।

শাজাহান ‌ :  নাহ‌ নাহ‌ তা‌ হবে‌ নাতো‌,,টাকা দিছো তাতে কি হয়েছে,,, আমি কি ফাসঁবো  একাই নাকি ফাসলে‌ তোমাকে নিয়েই ফাসঁবো‌ ।

বেগম :‌ বেগম ভাবতে লাগলো,,, এখন কি হবে এদিকে যদি শাজাহানকে রাজি না করাতে পারি,,, তাহলে তো জামাল আমার বাড়িতেই আগুন লাগিয়ে দিবে । এগুলো চিন্তা করতে করতে বেগম‌ সিদ্ধান্ত নিল ।

বেগম ‌ :‌ যা এখন ধরা পড়লে বলে দিস তাও আমার কাজ এখন করে দে,,, ।

শাজাহান : আফা তোমাকে আমি‌ যতো‌ টুকু‌ খারাপ ভাবছিলাম কিন্তু তুমি এর থেকেও বেশি খারাপ ‌। তুমি কেন আছিয়ার‌ ক্ষতি করতে চাচ্ছ ‌। বেগম ধমক দিয়ে বলল তোকে কি এত কথা বলতে বলছি আমি ‌। যা করতে বলব তাই কর ,যা ঠিক মত কাজ করতে পারলে তোকে সাত হাজার টাকা দিব।

শাজাহানও হলো একটা বাটপার লোক সে তো খুশিতে বুলবুলা ,,

শাজাহান ‌ :‌  আচ্ছা তাহলে কিন্তু 7000 টাকায় ফাইনাল ‌।

বেগম : আচ্ছা রে ভাই এখন যা খেয়ে দেয়ে রেডি হও‌,, এরপর শাজাহান চলে গেল ‌। আর এদিকে বেগম তো অট্টহাসিতে মেতে উঠলো ‌। বেগম যেন অনেক খুশি আজকে ‌ ।

("আসলে জানেন কি বেগমের মতো বহু বহু লোক আছে যারা মানুষের ক্ষতি করার জন্য লেগে থাকে। মানুষের ক্ষতিতে যেন তারা আনন্দিত হয়। একদিন হয়তো এদের‌ ও বিচার হবে‌ । আল্লাহ ঠিকি‌ এদেরকে‌ও  শাস্তি দিবেন‌ ,,, সাথে থাকেন বেগমেরও ক্ষতি দেখার জন্য ‌।‌ ")

আর ঐদিকে ‌ আছিয়া‌ মেয়েদেরকে নিয়ে খেয়ে দেয়ে,,, এশার নামাজ পড়ে বসে বসে গল্প করছে,,, জারার কালকেও পরীক্ষা‌ আছে,,, এর জন্য পড়তে বসছে‌‌ ,, নিষ্পাপ আছিয়া এত কিছু না জেনে মেয়েদেরকে নিয়ে একটু আনন্দে আছে ‌। আছিয়া প্রতিদিনই দরজা চাপিয়ে রাখে ‌। দরজা আটকায় না রাতে ‌।

("কেন দরজা আটকায় না সেই ঘটনাটা বলি,,, এক বছর আগে আছিয়া রাতে‌ দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে ছিল,, রাত তখন প্রায়‌ 1 টা‌ সময় ,,,জামাল ,,মদ,,খেয়ে‌ এসে দরজার মধ্যে অনেক জোরে জোরে লাথি মারলো ‌,,,মাএ‌ 10 সেকেন্ড দেরি‌ হয়েছিল‌ দরজা‌ টা‌ খোলতে‌ এরজন্য,,, জামালের‌ লাথিতে‌  দরজার ‌ খিল‌  ভেঙ্গে গিয়েছিল ‌ ।

ঘরে যেয়ে‌ জামাল আছিয়াকে‌ প্রচুর মারছিলো‌ ,,,এই‌ সামান্য অপরাধে‌ দরজা খুলতে 10‌ সেকেন্ড  দেরি হয়েছিল বলে,,, সেই থেকে আছিয়াদের ঘরের দরজার খিল‌ ছারাই আছে,,,, অনেক বার আছিয়া‌ জামালকে‌ বলছে দরজা‌টা‌ ঠিক‌ করে‌ দেওয়ার‌ জন্য । কিন্তু জামাল ‌ এখনো ঠিক করে দেয়নি,,, এক বছর হয়ে গেল। ঠিক করে দিতে বললে বলে তোর ঘরে কে আসবে‌‌ আমি‌ ছাড়া‌ । এর জন্য এখনো এভাবেই আছে‌ দরজা‌ টা‌ । এখন অতীত থেকে বর্তমানে আসা যাক‌।")

আছিয়া‌ সারাকে‌ ঘুম আনালো‌  তখন রাত আটটা বাজে‌,,


জারাও : মা আজকে আমার অনেক ঘুম পাচ্ছে ‌। আজ না পড়লে হয় না মা,, ।

আছিয়া :‌ আচ্ছা তাহলে আজকে ঘুম আসো‌ ,, খুব ভোরে কিন্তু উঠে পড়বে ‌ ।

জারা  :‌ আচ্ছা মা‌ ,,তোমাকে ডাকতে‌ হবে না সকালে‌ ,,আমি তোমাকেই ডেকে তুলব সকালে দেখবে‌ ,,, আছিয়া মেয়েকে আদর করে বলল আমার সোনা মা,,। মেয়ের কপালে একটি চুমু দিয়ে তাকেও‌ ঘুম আনিয়ে‌ দিল‌। রাত‌ আটটার সময় আছিয়াও ঘুমানোর জন্য শুয়ে আছে‌। আর ওইদিকে জামাল চুমকির ঘরে‌ সুয়ে‌ আছে‌ ।

‌ আর‌ হ্যা‌ চুমকির ঘরে তো‌  টাকা ছাড়া আসা যায় না,,,তাই‌ তো‌ ভাবছেন‌‌ ?  ,, জামাল টাকা পেলো‌ কোথাই‌? ,,,আছিয়ার‌ বাবা দিয়ে‌ গিয়েছিলো‌ ,,500 টাকা‌ আর‌ এক‌ জনের‌ কাছ‌ থেকে‌ ধার‌ নিয়ে‌ ছিল,,500 টাকা‌ ,,এই‌ মোট‌ 1000 টাকা‌ নিয়েই‌ এসেছে চুমকির‌ ঘরে‌ । চুমকির সাথে বসে বসে আড্ডা দিচ্ছে‌ জামাল ‌,,

জামাল বলছে‌ চুমকিকে‌ তোকে আমি‌ অনেক ভালোবাসি‌ ,, খারাপ চুমকিও‌ উওরে‌ বলছে‌ ,, আমিও তোকে‌ ভালোবাসি‌ ,,তোর‌ ব‌উই তো‌ আমাদের মাঝে‌ সমস্যা হয়ে‌ দাড়িয়েছে‌ ।

‌ জামাল :এই‌ সমস্যা আমি‌ সমাধান করে‌ দিবো‌ ,,,যদি‌ তুই শুধু আমার‌ই থাকিস‌ ।

চুমকি‌ : তাহলে‌ অনেক টাকা জুগার‌ করে‌ আমার কাছে জমা রাখ‌ । দুজনের‌ সুখের সংসারের‌ জন্য। জুয়াখুর‌ নেশাখুর‌ জামাল মিষ্টি হাসি‌ দিয়ে‌ বললো‌ চিন্তা করিস না‌ ,চুমকি আমার সব‌ টাকা‌ তোর‌ কাছে‌ই দিবো‌ ,,তুই‌ শুধু আমারই থাকিস‌ ,,,

এই‌ বলে‌ দুজনে‌ অট্ট‌হাসি‌ দিতে‌ লাগলো‌।‌  এভাবেই‌ তারা‌ প্রায়‌ আধা ঘন্টা গল্প‌ করলো‌ ,,,, তখন জামাল মোবাইলের দিকে‌ তাকিয়ে‌ দেখলো‌ ,,8:40 মিনিট বাঝে ,,, জামাল তাড়াহুড়া করে ওঠে বসলো‌ ।

জামাল ‌:‌ চুমকি‌ আজকে‌ আমি‌ আসি‌ হুম,, আমার অনেক দরকারি‌ কাজ আছে‌‌ একটি । আরো‌ বলে‌ গেল‌ চুমকিকে‌ ,,তুই‌ কিন্তু আর‌ কারো‌ সাথে‌ রাতে‌ থাকবি‌ না‌ ,, খারাপ‌ চুমকি‌ বললো‌ জামালকে‌ আরে‌ না‌ আমিতো‌ শুধু তোর‌ আর‌ আমি‌ আজকে এখন ঘুমাবো‌ তাহলে‌ এখন যা‌ তুই‌। জামাল চলে গেল,,আর‌ জামাল চলে‌ যাওয়ার‌ কিছুক্ষণ পর‌ দেখা‌ গেল‌ চুমকির‌ ঘরে‌ আরেক জন‌ গেল‌ ,,,

(" চুমকি‌ নামের মেয়েটা‌ অনেক খারাপ মেয়ে‌ ,,, জামাল মনে‌‌ করে‌ চুমকি‌ তার সাথে ঘর‌ বাধবে মানে‌ সংসার‌ করবে,, জামালের মন‌ আছে‌ ভাবতেই‌ পারে‌ আমাদের তাতে‌ কি‌,,) ‌

এদিকে চুমকি‌র‌ মতো চুমকি থাকুক‌ আমরা‌ গল্পে‌ এগিয়ে‌ যাই,,, জামাল বেগমের বাড়ির‌ দিকে‌ র‌ওনা‌ হচ্ছে ,,,‌

দেখি‌ ঔ‌ দিকে‌ বেগম কি‌ করে‌ ,,, বেগম শাজাহান কে‌ ফোন‌ দিয়ে‌ সব‌ কিছু বুঝাচ্ছে‌ ,,,কিভাবে‌ কি‌ করতে‌ হবে ,,,কিভাবে‌ আছিয়ার‌ ঘরে ডুকতে‌ হবে ,,,,আর‌ বেগম আগে‌ থেকেই‌ জানতো‌ যে‌ আছিয়ার‌ ঘরের দরজার খিল ভাঙ্গা ‌।‌

ফোনের ঔ‌ পাশ‌ থেকে শাজাহান‌ বেগমকে বলছে‌ কিভাবে আমি‌  আছিয়ার‌ ঘরে‌ ডুকবো‌ ??আর‌ আছিয়া‌ দরজাই‌ বা‌ খুলবে‌ কেনো আমার জন্য‌ ??

বেগম :‌  দরজা‌ সব‌ সময়‌ খোলাই‌ থাকে‌ ,,,তুই‌ শুধু আস্তে‌ আস্তে‌ দরজা‌ খুলে‌ ঘরের‌ ভিতরে‌ ডুকবি‌ ,,,ডুকে‌ চুপ চাপ খাটের নিচে‌ বসে‌ থাকবি‌  আর‌ যা‌ করার আমি‌ করবো‌ ।আর‌ যখন‌ বাহিরে‌ আমার কথা‌ শুনবি‌ তখন খাটের নিচ‌ থেকে‌ বের‌ হয়ে‌ আমার এক‌ পাশ‌ দিয়ে‌‌ বেরিয়ে‌ দৌড়ে‌ চলে‌ যাবি।  আর‌ তোর‌ মুখটি‌ গামছা‌ দিয়ে‌ বেধে‌ রাখবি‌ ,,যেনো‌ তোর‌ ফেস‌টি‌ না‌‌ দেখতে‌ পারে‌ ঔ‌ জামাল‌ ,,,বুজতে‌ পারছিস‌ শাজাহান ভাই‌ আমার।

শাজাহান :  বুঝতে‌ পারছি‌ আফা‌ ।‌ বেগম আরো বললো‌ তাড়াতাড়ি চলে‌ আসিছ‌ আর‌ বেশি টাইম‌ নেই‌ ,,,এই‌ বলে‌ ফোনটি‌ কেটে‌ দিলো‌ ।‌

ফোন‌ কেটে‌ একটা‌ খারাপ হাসি‌ দিলো‌ বেগম আর‌ মনে মনে বলতে‌ লাগলো‌ ,,আছিয়া‌ আমি বলছিলাম এই‌ জুয়া‌ খুরকে‌ ডির্ভোস‌ দিয়ে‌ আমার ভাতিজার সংসার‌ কর‌ ,, আমার কথা‌ শুনলি‌ নাতো‌ ,,আমাকে আরো‌ ওলটো‌ খারাপ‌  বললি‌ তুই। তোদের বাড়িতেও‌ যেতে‌ না‌ করলি‌ ,,,আর‌ সেদিনি‌ আমি ভেবে‌ রাখছিলাম‌ তোর এতো‌ দেমাগ আমি‌ বের‌ করবো‌ একদিন।‌


আর‌‌ আমার ফুলের মতো ভাতিজা‌ তোকে‌ ভালোবাসে‌ ,,,তুই‌ বুঝলি‌ না‌ আছিয়া‌ ,,,তোর‌ জন্য আছিয়া‌ আমার কাছে কেও‌ পোষাক বানাতে‌ দেয়‌ না‌ ।তোকে‌ আমার ভাতিজার‌ ব‌উ‌ বানিয়ে‌ ছাড়বো‌ দেখিস‌ ,, এগুলো মনে মনে ভাবছে‌ বেগম তখনই জামাল এসে‌ বেগমকে‌ ডাক‌ দিলো‌‌।

জামাল ‌ :‌ কিগো‌ চাচি‌ কি‌ খবর তোমার,,, আমার ব‌উ‌ যে‌ দুশ্চিন্তা মহিলা‌ কিভাবে তুমি প্রমান‌ দিবে‌ ,,,তাড়াতাড়ি‌ দেও‌ আর‌ না‌‌ হলে‌ সত্যি কথা আমি‌ তোমার ঘরে আগুন লাগিয়ে‌ দিবো‌ চাচি‌ । আমার মাথা‌ কিন্তু গরম‌ আছে‌ ।

বেগম :  আরে‌‌ পাগলা‌ আমি‌ কি‌ তোর‌ খারাপ চাই‌ ,,,আমি‌ তো‌ তোর‌ ভালোই‌ চাই‌ ,,,চল‌ তর‌ বাড়িতে‌ প্রমান‌ দিচ্ছি‌ ,,,,।এই‌ বলে‌ আছিয়াদের‌ বাড়িতে‌ যেতে‌ লাগলো‌ ।

কি‌ হবে‌ এবার আছিয়ার‌ ????

চলবে‌ ,,,,,,,

134 Views
2 Likes
1 Comments
5.0 Rating
Rate this: