...

জুয়া ( পর্ব 7 )

...
ফাতেমা আক্তার
...
23-Oct-2024, 09:16 AM
...

36

...

0

...

(0)

ক্যাটাগরি : কষ্টের গল্প

জামাল :‌ তাড়াতাড়ি‌ বলো‌ চাচী,,কি‌ বলবা,,।

বেগম‌ : তোর‌ ব‌উ‌ একজন,,দুশ্চরিএ‌ মহিলা,,, ।

জামাল : এগুলো কি‌ বলো‌ ,,, মিথ্যা বলার চেষ্টা করিও‌ না‌ চাচী,,সবাই‌ বিশ্বাস করতে‌ পারে‌ তোমার কথা‌ ,,কিন্তু আমি‌ বিশ্বাস করি‌ না‌ চাচী‌ তোমার কথা‌।

বেগম‌ কেঁদে দিলো এই‌ কথা‌ শুনে,,

বেগম ‌ : আমি‌ জানি‌ তুই‌ বিশ্বাস করবি‌ না‌ ,,তুই‌ বোকা‌ রে‌ জামাল তুই‌ একেবারে‌ বোকা‌,, একদিন বুজবি‌ ঠিকি‌ ,,,আমি‌ তোর‌ ভালো চাই‌ এর‌ জন্য বললাম ‌

("বেগম‌ এমন‌ ভাবে‌ বুঝাচ্ছে‌ জামালকে ,,যেনো‌ একদম সত্যি কথা‌ )"

জামাল :‌ চাচী‌ যদি তোমার কথা সত্যি হয়ে থাকে‌ তাহলে‌ আমি‌ আছিয়াকে‌ একে বারে মেরে‌ ফেলবো‌। তুমি কি‌ আমাকে‌ প্রমান‌ করে‌ দিতে‌ পারবে‌ যে‌ আছিয়া‌ ‌দুশ্চরিএ‌ মহিলা‌ ,, ।

বেগম : হ্যা‌ আমি‌ তোকে‌ প্রমান‌ করে‌ দিতে‌ পারবো‌।

জামাল :‌ যদি‌ প্রমান‌ করে‌ দিতে‌ না‌ পারো‌,,তাহলে‌ তোমার খবর আছে সেই কথা মনে‌ রেখো‌ ,,আমাকে‌ তো‌ তুমি চিনো‌ না‌ চাচী‌ এই‌ কথাটা‌ মনে‌ রেখো‌ ,,এই‌ বলে‌ জামাল বাড়ির‌ দিকে‌ র‌ওনা‌ হলো ‌।

আর‌ এ‌দিকে‌ বেগম যেনো‌ মহা‌ খুশি‌ ,,আছিয়াকে‌ বাড়িতে‌ যেয়ে‌ মারবে‌ এটা‌ ভেবেই‌ ।

বেগম ভাবছে‌ আরো‌ ,,আছিয়া‌কে‌ যদি‌ জামাল বাড়ি‌ থেকে বের করে‌ দেয়‌ ,,, তাহলে কত‌ই‌ না‌ ভালো হবে‌ ,,সবাই‌ তার‌ কাছেই‌ পোষাক বানাতে‌ আসবে । অনেক টাকা‌ ইনকাম করতে‌ পারবে‌ ,,, আরো‌ ভাবলো বেগম‌ আছিয়াকে‌ যদি‌‌ জামাল ডির্ভোস‌ দিয়ে‌ দেয়‌‌ ,,তাহলে‌ তার‌ ভাতিজার‌ সাথে‌ আছিয়াকে‌ বিয়ে‌ দিতেও‌ পারবে‌ ,,

এগুলো বেগম‌ ভাবছে‌ তখনই বেগমের‌ মেয়ে‌ ডাক‌ দিলো‌ ,,মা কি‌ ভাবো‌  তুমি এটা কি‌‌ করলে‌ । তুমি কিভাবে জামালকে‌ এই‌ মিথ্যা কথা‌র‌ প্রমান‌ দিবে‌ ।আছিয়া‌ ভাবি‌ তো‌ অনেক ভালো মানুষ। তুমি তাহলে‌ কিভাবে আছিয়া‌ ভাবিকে‌ ‌দুশ্চরিএ‌ মহিলা প্রমান‌ করবে‌ ,,।

,বেগম‌ : এগুলো চিন্তা তোকে‌ করতে‌ হবে‌ না সুলতানা ‌ ।আমি‌ ঠিকি‌ একটা‌ কিছু ভেবে‌ নিবো‌ ‌। বেগমের‌ মেয়ে‌ আবার বললো‌ যানিনা‌ মা‌ তোমার মাথায় কি‌ চলে‌ ,, যাই‌ তাই‌‌ করো‌ আবার যেনো‌ শেষে‌ জুয়া‌ খুর‌ জামাল আমাদের ক্ষতিই ‌না‌ করে‌ ।

বেগম‌ :  যা‌ বক‌ বক‌ না‌ করে‌ এখান থেকে দূরে‌ যা‌ ,, আমাকে ভাবতে‌ দে‌ । বেগমের মেয়ে‌ বললো‌ আচ্ছা,,এই‌ বলে‌ চলে‌ গেল‌।

আর‌ ঔ‌ দিকে‌ জামাল রেগে যেনো‌ চিতা‌ বাঘ  হয়ে‌ বাড়ির‌ দিকে‌ র‌ওনা‌‌ দিয়েছে‌ ।‌ আর‌ এ‌দিকে‌ আছিয়া‌ তার দুই মেয়েকে‌ নিয়ে‌ খুনসুটির তালেই‌ রয়েছে‌।

জামাল বাড়িতে‌ আসলো‌ ,, তখন রাত মাএ‌‌ 7:30 বাঝে ।আর‌ এই‌ টাইমে‌ যারা‌ আর‌ সারা তাদের বাবাকে‌ দেখে‌ , প্রচুর খুশি‌ শুধু খুশি‌ না‌ খুশি যেনো‌ থামছেই না‌ তাদের।

"‌ কারণ জামাল এই‌ টাইমে‌ বাড়িতে‌ আসে‌ না‌ ,,তাও‌ 2 বছরের মতো হয়ে‌ গিয়েছে‌। জুয়া‌ খেলে‌তো‌ রাতে‌ চুমকির‌ বাড়িতেই‌ থাকে‌। আর‌ আছিয়াও‌ অনেক খুশি। তার‌ স্বামী‌ এতো তাড়াতাড়ি‌ বাড়িতে‌ আসছে‌ বলে‌। আছিয়া মনে‌ মনে‌ ভাবতে‌ লাগলো‌ ,,এই‌ বুঝি আল্লাহ তার‌ কথা‌ শুনেছে‌,‌,"

জামালকে‌ দেখার সাথে‌ সাথে‌ ,,আছিয়া‌ কাছে‌ যেয়ে‌ বললো‌ কিগো‌ আজকে‌ এতো‌ তাড়াতাড়ি‌ আসছো‌ ,,এই‌ কথা বলে আছিয়া‌ যেন‌ লজ্জার‌ লাল‌ হয়ে‌ নিচের দিকে‌ তাকিয়ে‌ আছে‌ আছিয়া‌ ।

জামাল এদিক ওদিক‌ তাকাচ্ছে‌ ,,এটা‌ বুঝতে‌ পেরে‌ আছিয়া‌‌ বললো‌ কিগো‌ কি‌ খুজো‌ ,আমাকে‌ বলো‌ আমি‌ খুজে‌ দেই‌।

জামাল এখনো‌ চুপ‌ করে‌ দাড়িয়ে‌ আছে‌।

আছিয়া‌ : ওহ‌ আচ্ছা তুমি চেয়ার‌ খুজছো‌ তাইনা‌ ,,দাড়াও‌ আমি‌ ঘর থেকে‌ চেয়ার‌ নিয়ে‌ আসি‌।এই‌ বলে‌ আছিয়া‌ চেয়ার আনার‌ জন্য  ঘরে‌ চলে‌ গেল‌।‌ আর‌ দুই‌ মেয়ে‌ ধীরে ধীরে বাবার কাছে‌ এগুচ্ছে‌ । এই‌ আসায় কাছে‌ গেলেই‌ তাদের বাবা‌ তাদেরকে‌ আদর‌ করবে‌।

তখনই আছিয়া‌ চেয়ার এনে‌ জামালের সামনে‌ গেল‌ । জামাল চেয়ারটা‌ হাতে‌ নিয়ে‌ ,,,আর‌ কোন‌ কথা‌ নেই‌ চেয়ার‌ দিয়েই‌ আছিয়াকে‌ মারা‌ শুরু করলো‌ অনেক জুরে‌ জুরে‌ ।আর‌ আছিয়া‌ কান্না করতে‌ শুরু করলো‌ ,,,

আছিয়া‌ : ওহ‌ আল্লাহ আমাকে‌ বাঁচাও‌ । বাচ্চাদের ভয়ে‌ যেন‌ কোন শব্দ বেড়াচ্ছে‌ না‌ তাদের মুখ‌ দিয়ে‌ ,,,আজকে‌ আর‌ বলছে‌ না‌ আমার মাকে‌ বাঁচাও‌ বাঁচাও‌ কে‌ কোথায়‌ আছো‌।

আছিয়া‌ কোন ভাবে‌ বুঝতে‌ পারছে‌ না‌ ,,যে‌ তাকে‌ কেনো মারছে‌ জামাল ,,কিবা‌ তার দোষ।

এভাবেই কিছুক্ষণ আছিয়াকে‌ মারার‌ পর‌ জামাল না‌ খেয়ে‌ সুয়ে‌ পড়লো‌ । আর‌ আছিয়া‌ মাটিতে‌ পড়ে‌ ব্যাথায়‌ সটফট‌ করতে‌ লাগলো‌ ।

জারা‌ এসে‌ তার মাকে‌ জড়িয়ে‌ ধরলো‌ ।আর‌ ছোট সারা ভয়ে‌ কুকড়াচ্ছে‌ এখনো‌।

জামাল আজকে‌ আর‌ কোথাও গেল‌ না‌ ,,,আর‌ কোথাই‌ বা‌ যাবে‌ আজকে‌ তো‌ আর‌ চুমকির কাছে‌ যেতে‌ পারবে না ,, কারণ ঔ‌ যে‌ আজকে‌ তো‌ টাকা‌ নেই‌ ,,আর‌ টাকা‌ না‌ থাকলে‌ তো‌ চুমকির মতো মেয়েদের কাছে‌ যাওয়া‌ যায়না‌ ,,,তাই‌ আজকে‌ বাড়িতেই‌ থাকবে‌ জামাল ‌।

আছিয়ার যেনো‌ দুনিয়াটা‌ অন্ধকার লাগছে‌ ,,,জীবনটা‌ যেন‌ ছিন্ন‌ বিন্ন‌ হয়ে‌ পড়েছে‌ ,,,আছিয়া‌ মাটিতে‌ বিছানা‌ পেতে‌ মেয়েদেরকে‌ নিয়ে‌ সুয়ে‌ পড়লো‌ ,,আর‌ জামাল খাটে‌ সুয়ে‌ আছে‌ ,,,।

সারার শরীল‌ জ্বরে‌ পুড়ে‌ যাচ্ছে‌ আজকে‌ ,,,,আছিয়া‌ রাতে‌ ওঠে‌ চুলায়‌ গরম‌ পানি‌ করে‌‌ ,, সারার সারা‌ শরীর মুছে‌ দিলো‌ ,, মাথায় জল‌ পট্টিও‌ দিয়ে‌ দিলো‌।। তাও‌ যেনো‌ একটুও জ্বর‌ কমছে‌ না‌ সারার‌ ,,,কি‌ করবে‌ কিচ্ছু বুঝতে‌ পারছে‌ না‌ আছিয়া,,, জামাল কে‌ বলবে‌ যে‌ সেই‌ অবস্থাও নেই‌ আছিয়ার‌ ,,মরার‌ মতো পড়ে‌ ঘুমাচ্ছে‌ জামাল ।

আর এদিকে‌ যে‌ তার‌ মেয়ে‌ এতো‌ অসুস্থ হয়ে‌ পড়ে‌ আছে‌ সেদিকে‌ কোন হুশ‌ও‌ নেই‌। আর‌ ব‌উকে‌ যে‌ মারছে‌ সেই‌ চিন্তাও‌ নেই‌। আছিয়া‌ এভাবেই‌ সারারাত‌ ছোট‌ মেয়ে‌ সারার সেবা‌ যত্ন‌ করে‌ বসেই‌ রাত‌ পারি‌ করে‌ দিলো‌ ,,শেষ‌ রাতে‌ আছিয়া‌ একটু‌ ঘুমালো‌।

সকালে‌ ওঠে‌ আছিয়া‌ দেখলো,, জামাল বাড়িতে নেই‌ আর‌ বিছানায় সব‌ কিছু আওলা‌ যাওলা‌ ,,যেনো‌ রাতে‌ ঘরে চুর‌ আসছিলো‌ চুরি‌ করতে‌ ,,আছিয়া‌ এগুলো দেখে তাড়াহুড়া করে‌ ওঠে‌ বসলো‌ ওঠে‌ বসে‌ দেখতে‌ লাগলো‌।  আছিয়ার‌ বাবা আছিয়ার মেয়ে‌দেরকে‌ যে‌ 500 টাকা‌ দিয়ে‌ ছিলো‌ ।

সেই‌ টাকা আছিয়া‌ বিছানার‌ নিচে রাখছিলো‌ ,,আছিয়া দেখতে‌ গেল‌ ,,সে‌ টাকা সেখানে‌ আছে কিনা,, আছিয়া‌ চেক‌‌ করে  দেখলো,, সেখানে কোন টাকা পয়সা নেই। আছিয়া
সেটা দেখে মাটিতে বসে পড়লো‌ ,আছিয়া‌ বুঝতে পারলো‌ জামাল টাকাটা‌ নিয়ে‌ গিয়েছে‌।

আছিয়া‌ রাতে‌ ঠিক‌ করে‌ রাখছিলো‌ এই‌ টাকা‌ দিয়ে‌ ,,সকালে‌‌ সারাকে ডাক্তার‌ দেখিয়ে‌ আনবে‌ । সারার যে‌ এখনো জ্বর‌ কমে‌ নি‌‌ একটুও‌।

কিন্তু আছিয়া‌ এখন কি‌ করবে‌ বুঝতে‌ পারছে‌ না‌ ।,500 টাকাটাও‌ জামাল নিয়ে‌ গেল‌ । আছিয়ার কাছে‌ এখন‌ আর‌ মাএ‌ 10 টাকাও‌ নেই‌ ।

এক‌ সিট‌ পোষাক বানাতে‌ দিছে‌ একজন‌ ,,তার‌ কাছে‌ আগের‌ও‌ বাকি‌ 200 টাকা‌ পাবে‌ আছিয়া‌ ,,, কিন্তু এই‌ এক‌ সিট‌‌ পোষাক না‌ বানিয়ে‌ দিলেতো‌ টাকা‌ দিবে‌ না‌‌ আজকে বলে‌ দিয়েছে‌।‌

কিন্তু আছিয়াকে‌ রাতে‌ জামাল মারার‌ পর‌ হাত‌ পায়ে‌ অনেক ব্যাথা‌ হয়েছে‌  । কিন্তু কি‌ বা‌ করার আছে‌ মেয়েকে‌ তো‌ সুস্থ করতে‌ হবে‌।এর‌ জন্য তো‌ টাকার‌ প্রয়োজন‌। আছিয়া‌ সেলাই‌ মেশিনে‌ বসে‌ পড়লো‌ কাজ‌ করতে‌ । এভাবেই এক‌ ঘন্টা কাজ‌ করে‌‌  পোষাকটি‌ বানিয়ে‌ ফেললো‌।

আর‌ ঔ‌ দিয়ে‌ জামাল 500 টাকা‌ দিয়ে‌ নেশা‌ করে‌ ,, বেগমদের বাড়িতে আসলো‌ ,,বেগম‌ কে‌ বকাবকি‌ শুরু করলো‌ ‌ আর‌ বলছে‌ তারাতারি‌ আমাকে‌ প্রমান‌ করে‌ দে‌ নয়‌ তর‌ ঘরে‌ আগুন 🔥 লাগিয়ে‌ দিবো‌ । আমার ব‌উ‌ ‌দুশ্চরিএ মহিলা‌ এটা‌ তাড়াতাড়ি‌ প্রমান‌ করে‌ দে‌ ,,নয়‌ ঘরে‌ আগুন লাগিয়ে‌ দিলাম কিন্তু‌।

এগুলো শুনে বেগম‌ বললো‌ আজকে‌ রাতেই‌ তোকে‌ প্রথান‌ করে‌ দিবো‌‌ ।‌  তাহলে‌ তো‌ তুই‌ বিশ্বাস করবি‌  যে‌ এই‌ বেগম মিথ্যা বলে‌ না‌ । আর‌ তোর‌ ব‌উ‌ ‍‌দুশ্চরিএ‌ মহিলা কি‌ না‌‌ এটাও‌ যেনে‌ যাবি‌ ।

এবার কি‌ হবে‌ ?
আর‌ বেগম‌ আবার কোন ফাদে‌ ফেলবে‌ আছিয়াকে‌ ?

চলবে‌ ,,,,,,


মন্তব্য

রেটিং দিন

সকল পর্ব

পার্ট: 1
...
ফাতেমা আক্তার
...

14

...

3

...

4.7(9)

27-Aug-2024 , 06:28 PM
পার্ট: 2
...
ফাতেমা আক্তার
...

6

...

5

...

4.0(4)

28-Aug-2024 , 08:11 PM
পার্ট: 3
...
ফাতেমা আক্তার
...

0

...

1

...

(0)

08-Oct-2024 , 12:21 AM
পার্ট: 4
...
ফাতেমা আক্তার
...

0

...

0

...

(0)

09-Oct-2024 , 06:38 PM
পার্ট: 5
...
ফাতেমা আক্তার
...

0

...

0

...

(0)

11-Oct-2024 , 09:58 PM
পার্ট: 7
...
ফাতেমা আক্তার
...

0

...

0

...

(0)

23-Oct-2024 , 09:16 AM
পার্ট: 8
...
ফাতেমা আক্তার
...

2

...

0

...

5.0(1)

27-Oct-2024 , 07:13 PM
পার্ট: 9
...
ফাতেমা আক্তার
...

2

...

1

...

5.0(2)

07-Nov-2024 , 11:10 PM