বলো ভালবাসি

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
সন্ধা বেলা আবিদ রুমে আসল...
মায়ের কথা গুলো ভাবছে রোজা বেডের উপর বসে আছে ...

আবিদ রোজার কাছে গেল...
তার মায়ের কথায় রাখতে রোজার হাত ধরল..

'রোজা কাচুমাচু হয়ে বসে আছে। তার ভালো লাগছে না এই স্পর্শ। রোজা আবিদের হাত সরিয়ে দিলো। আবিদ অবাক হয়ে গিয়েছে। সে রোজাকে মেনে নিতে চাচ্ছে আর রোজা এসব আচরণ করছে। নিজের কাছে নিজেই ছোট হয়ে গেলো আবিদ।'

"দুঃখিত আমি এসবে অভ্যস্থ নই"

' আবিদ বুঝলো রোজাকে। বাচ্চা মেয়ে তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে দিয়েছে, তাই হয়তো খারাপ লাগছে । আবিদ দূরে সরে আসলো রোজার কাছ থেকে।'

"সেটা নাহয় বুঝলাম তবে তোমাকে আমার সাথে মিশতে হবে, কথা বলতে হবে।"

'রোজা চুপ করে আছে। এখন সে কি বলবে সেটাই ভাবছে। মাথায় কিছু আসছেনা।

"কি বলবে খুঁজে পাচ্ছোনা তাইনা!"

'রোজা তাকালো তার দিকে। সে আশ্চর্য হয়ে গিয়েছে আবিদ কিভাবে তার মনের কথাটা বলে দিলো।'

"আচ্ছা সেগুলো না হয় বাদ দিলাম। তুমি পড়াশোনা করেছো কতদূর?"

"আমি নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছি। বিয়ে হওয়ার পর আমি তো এখানেই চলে এসেছি তাই আর"
'এটুকু বলেই রোজা থেকে গেলো। বুঝেছে মেয়েটা পড়াশোনা করতো।'

"এখন আর করবে না পড়াশোনা? মানে করতে মন চায়না?"

'' আপনারা যদি অনুমতি দিন তাহলে করবো। কিন্তু এখান থেকে আমাদের গ্রাম অনেক দূর কিভাবে যে আসবো আবার যাবো।"

"বউকে অশিক্ষিত রাখবো নাকি। এতোটাও অমানুষ না আমি। আমি তোমার মা আমার মা-বাবা সবার সাথেই কথা বলবো। তোমার ওই স্কুলে পড়তে হবেনা ঢাকার একটা ভালো স্কুল দেখে ভর্তি করিয়ে দিবো।"

'রোজা একপ্রকার লাফিয়ে উঠে বললো'-

" না না আমি ওখানেই পড়তে চাই। ঢাকা শহরের কোনো কিছুর সাথেই আমি পরিচিত নই। আমার ভয় লাগে।"

"হ্যাঁ ম্যাডাম আপনার তো সব কিছুতেই ভয় লাগে,একটু মেঘের আওয়াজ হলে,আমাকে দেখলে,আমি একটু পাশে বসলেও আপনি ভয় পান। এরকম লিখা ছিলো আমার কপালে হায় আল্লাহ।"

'রোজা একেবারে মনমরা হয়ে গেলো। ঠিকই তো একটু বেশিই ভয় পায় রোজা।'

"আচ্ছা রোজা বিয়ের আগে কখনো প্রেম করেছো?না মানে করতেই পারো। নিজের বউয়ের প্রথম ভালোবাসার কথাটা একটু শুনি।"

'রোজা থতমত খেয়ে গেল।কিসব বলছে এই লোক'
"না এসব বিষয়ে কোনো ধারণা ছিলো না আমার। আমি কখনো এসব করিনি।"

' হেসেই দিলো রোজার কথা শুনে'
"যাক তাহলে আমিই হবো তোমার প্রথম প্রেম, তোমার প্রথম ভালোবাসা কি বলো?"

'রোজা হালকা লজ্জা পেলো। ভালোবাসা,প্রেম এসব নিয়ে সে অবগত নয়।'

"আচ্ছা তুমি এখন ঘুমাও আমি তো ঘুমিয়েছি। আমি এখন একটু বাহিরে যাবো।"

'রোজা তার দিকে তাকিয়ে বললো'
"কোথায় যাবেন?"

'আবিদ হাসলো। আস্তে আস্তে রোজা ভিতরে তার বিষয়ে একটা অধিকার জন্ম নিতে শুধু করেছে। কিছুদিন পর হয়তো সবকিছু স্বাভাবিক ভাবেই মেনে নিবে দু'জনেই।'

"এইতো একটু বাহিরে যাচ্ছি। তুমি যাবা?"

'রোজা মাথা নাড়িয়ে জানালো সে যাবে না। রোজা শুয়ে পড়লো। আবিদ যাওয়ার সময় রোজাকে আবারও বলে গেলো। আর বলে দিয়েছে তার মা কিছু জিগ্যেস করলে বলতে 'সে বাহিরে গিয়েছে একটু'।


'আজ হসপিটালের সব সিনিয়র ডক্টররা সবাই দেখা করতে এসেছে এক রেস্টুরেন্টে। মুলত শুক্রবারই সবাই এমন একটা প্ল্যান করে রাখেন। সবার একসাথে আড্ডা দেওয়া খাওয়া-দাওয়া করা এটা সবাই উপভোগ করে। বিশেষ করে শানায়া কারণ সেই দীর্ঘ সময়টায় সে আবিদের পাশে পাশে থাকতে পারে। আজ শানায়া রেডি হয়ে আবিদের কল দিয়েছিলো তাকে যেনো এসে নিয়ে যায় তাই করলো। কারো কথা ফেলতে পারেনা। শানায়া মাঝে মাঝে এই আবদারটা করে আর আবিদও শানায়ার কথা রাখে। গাড়িতে উঠে শানায়া বলছিল।'

"সাদা শার্ট পড়ার কি দরকার। এমনিও সুন্দর আরও সুন্দর লাগে। কোনো মেয়ে মুখ লাগিয়ে দিতে পারে তো।"

'আবিদ ড্রাইভ করতে করতে বললো'
"তাই নাকি? এতো সুন্দর হয়ে যাচ্ছি কিভাবে বলুন তো!"

"সে আপনার রুপের রহস্য আপনি জানেন। এসব সিক্রেট কথা কি আর আমাদের বলেন নাকি?"
'বেশ একটা ভাব নিয়ে কথাটি বললো শানায়া'

"সেটাও কথা আপনি জানবেন কিভাবে?আপনার সাথে তো আর এসব নিয়ে আলোচনা করিনা।"

"আপনার সাথে আজ ম্যাচিং করে পড়লে ভালো লাগতো।"

'' ম্যাচিং পড়ার কি দরকার?"

"এটা আলাদা ব্যাপার আপনার জানতে হবেনা। কিন্তু সত্যি কথা খুবই সুন্দর লাগছে আপনাকে। কি
আর বলবো এতো বেশি ভালো লাগছে।"

"মাশাআল্লাহ বলুন নাহলে আমার আবার বিয়ে হবেনা।"

"সে আপনার এই সুন্দর চেহেরা থাকলেও হবে না থাকলেও হবে। আপনার জন্য এক সুন্দরী মেয়ে অপেক্ষা করে আছে।"

'আবিদ শুধু হেসেছে শানায়ার কথায়। তার মনে হয়েছে এসব কোনো গুরুত্বপূর্ণ কথা না উত্তর না দিলেও চলবে। রেস্টুরেন্টে শানায়া এক সাথেই ঢুকলো। কিছু কিছু মানুষ ওদের দু'জনকে দেখলে মনে করবে গা'র্ল'ফ্রেন্ড ব'য়'ফ্রেন্ড। হসপিটালের বেশ কয়েকজন ডক্টর ধরে নিয়েছে শানায়াকেই বিয়ে করবে।

খাওয়ার সময় কেউ কেউ তো বলে উঠে আবিদ আর শানায়া বিয়ে করবে কবে' এই কথাটা আবিদ থেকে শানায়ার বেশি উপভোগ করেছে।
আবিদ চুপ ছিলো সে বেশি কথা বলেনি। আর রোজার সাথে বিয়ের ব্যাপারটা একেবারে সবাই যখন গেট টুগেদারে যাবে তখন বলবে। এখন বলার সময়টা পারফেক্ট মনে হয়নি।' ডক্টর আসিফ আহমেদ বললেন'-

"আবিদ আপনি কি আসলেই শানায়াকে বিয়ে করবেন।"

'আবিদ হেসে হেসে উত্তর দিলো'
"আমার পছন্দের একটা সুন্দর মেয়ে আছে দেখি ম্যাডাম রাজি হয় নাকি নাহলে তাকেই বিয়ে করবো।"

'আবিদের পছন্দ করা মেয়ে আছে শুনে সবাই বেশ চমকে উঠলো৷ চমকে উঠার কথা কারণ আবিদের স্বভাব চরিত্রে কখনো এমনটা বোঝা যায়নি যে সে আবার একটা মেয়েকে পছন্দও করতে পারে। কথা শুনে শানায়া বেশি চমকে উঠেছিলো। শানায়ার ভিষণ কষ্ট হচ্ছে। ঠিক এই কারনেই কি আবিদ তাকে পা'ত্তা দিত না।

আবিদ আর এই টপিক নিয়ে কথা বলছেনা। এবার সবাই অন্য কথা বলছে। কিছুক্ষণ পর পর আড়চোখে শানায়ার দিকে তাকাচ্ছে। শানায়া একেবারে চুপ করে আছে। বুঝাই যাচ্ছে খুব বড় ছ্যা'কা খেয়েছে সে। শানায়া কিন্তু তার পাশেই বসেছে। প্রতিবারই সে এমন করে। সবাই যে যার মতো খাওয়া-দাওয়া করছে।

শানায়া শুধু চামচ নাড়ছে খাচ্ছেও না ঠিকমতো। অনেক রাত পর্যন্ত তারা আড্ডা দিবে বলে ঠিক করেছে। কিন্তু শানায়া চলে গেলো। সবাই ওকে থাকতে বললো তাদের সাথে কিন্তু সে চলে গেলো। এ বিষয়ে আবিদ কোনো রকম ভ্রুক্ষেপ করেনি। সে নিজের মতো ফোন চাপছিলো।

হঠাৎ বাসা থেকে কল আসলো রোজা ফোন করছে...
ফোন রিসিভ করতেই কখন বাসায় আসবেন...


নোট: আপনারা গল্প পড়ে একটি লাইক কমেন্ট এবং ফলো করে দিবেন ধন্যবাদ ।
271 Views
5 Likes
2 Comments
5.0 Rating
Rate this: