বলো ভালবাসি

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
আপনি আমাকে কেন এতো ভালবাসেন।
আবিদ কিছুু বলল না।
রোজা কিছু বলতেই যাবে সেই মুহূর্তে
রোজাকে জড়িয়ে নিল আবিদ তার বাহুডরে।
যেন এক শিহরণ অনুভব হলো।
রোজা পুরো পাথর হয়ে আছে ...
তার গায়ে যেন কেন শক্তি নেই । রোজা কি করবে এমন সুঠাম দেহ কে সরাবে কিভাবে তারপর ও সব শক্তি প্রয়োগ করে রোজা তাকে ধাক্কা দিল...
আবিদ যেন শিটকে গেল..


এমন কার্যকলাপে রোজা লজ্জা পেলো। ইদানীং আবিদ তাকে বড্ড বেশি লজ্জা দেয়। রোজার মুখে লাল আভা ফুটে উঠেছে। সে এখন কি করবে?
মন চায় মাটি খুঁড়ে গর্ত বানিয়ে সেটাতে ঢুকে যেতে। ছিহ্ তার এমন লাগছে কেন????
আর আবিদকে দেখো সে একদম স্বাভাবিক ভাবেই আছে। যেনো কিছুই হয়নি। আর এইদিকে রোজা তো লজ্জায় শেষ। বেশি চিন্তা-ভাবনা না করে আবার আবিদকে জড়িয়ে ধরলো কারণ সেই বলেছে লজ্জা পেলে, কষ্ট হলে তার বক্ষে মাথা রাখতে। এখন একটু শান্তি লাগছে।'



'দিন দিন দু'জনের সম্পর্ক স্বাভাবিক ভাবেই এগুচ্ছে। তাদের মনে হয় প্রতিদিন খুনসুটি লেগেই থাকে। মুলত রোজাকে খুব রাগায় আর রোজা মুখটা ফোটকা মাছের মতো ফুলিয়ে রাখে বিষয়টা বেশ ভালো লাগে আবিদের।আবার রাগ ও করে কিছুক্ষণ কথা বলে না রোজা এসব ছোট্ট ছোট্ট খুনসুটি তাদের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে। এভাবেই চলছে তাদের চড়ুইভাতির মতো সংসার। আজ রোজা কে মেধার কাছে দিয়ে সে হসপিটালের কাজে দূরে কোথাও গেলো। আবার আজই এসে পড়বে। এখন মেধার কাছে...
মেধাও রোজাকে খুব ভালোবাসে ঠিক তার বোনের মতোই।'

'মেধা রোজার মাথা নিজের কোলে রেখেছে। হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো-'
"পড়াশোনা করবা না আর?"

'রোজা মাথা তুলে মেধার দিকে তাকালো-'
"করবো ওনি আমার মায়ের সাথে কথা বলেছে।"

"হ্যাঁ মেয়েদের পড়াশোনা করা উচিৎ। নিজের পায়ে দাঁড়ানো দরকার প্রতিটি নারীকে, তাদের পায়ের নিচের মাটিকে শক্ত করা দরকার।"

'রোজা খুব মনোযোগ দিয়ে কথাটা শুনলো।'
"জ্বী আপু।"

"তোমাকে যে আমি আরও বলি আবিদের সাথে স্বাভাবিক হও তার কি খবর?"

"সব তো ঠিকই আছে।"

'মেধা বিশ্বাস করলো না কারণ মেধা একজন মেয়ে হয়ে আবিদ তার সাথে কথা বলতো না ঠিকমতো, আর সেই জায়গা থেকে আবিদ তো একটা ছেলে।'

মেধা বলল..
"শুনো পরে দেখবা তোমার জামাই কে অন্য কেউ নিয়ে গিয়েছে যে অবস্থা তোমাদের সম্পর্কের।"

'রোজার বুকটা যেনো আঁতকে উঠল-'
"মানে?"

"মানে মানে করো না বেশি। এখন তো তার সব ধৈর্য তোমাকে দিয়ে রেখেছে শুধু একবার তোমার থেকে একটা ভালো,সুন্দর মেয়ে দেখুক, দেখবে তোমাকে আর ভালো লাগবে না। কারণ তুমি তো সেভাবে তাকে কোনো গুরুত্বও দাও না। ১৬ বছরের মেয়েদের কি বিয়ে হয়নি? তারা সংসার করেনি? শুধু একা তোমারই হয়েছে?

আমারও তো বিয়ে হয়েছিলো তাড়াতাড়ি, আমি কি আমার বরের সাথে সম্পর্ক ঠিক রাখিনি? সে আমাকে পড়াশোনা করিয়েছে মুলত তার জন্যই আমি ডাক্তার হতে পেরেছি। তার সাথে কি আমার সম্পর্ক স্বাভাবিক দম্পতিদের মতো না? তাহলে তুমি কেনো পারছো না এসব বাদ দিয়ে সবকিছু ঠিক করো।"

'মেধা রোজাকে বোঝানোর জন্য এগুলো বলেছে। আবিদ ভালোই ছেলে তবে রোজার এসব আচরণ কখনো একটা ছেলে সহ্য করবে না। মেধার কথা শুনে রোজা কেমন সব খালি খালি লাগছে, কথাগুলো সহ্য করতে পারছে না।'

"আপু সত্যিই কি ওনি অন্য মেয়ের দিকে তাকাবেন?"

'মেধা যেনো খুশি হলো,প মনের ভিতর এরকম একটা কথা ঢুকাতে পেরে।'
"হ্যাঁ তাকাবেই তো তাকানো উচিৎ, তুমি তো তাকে বর হিসেবে মানো না।"

'মেধার কথা শুনে রোজা এবার কান্না চলে আসলো।'
"এভাবে বলছেন আপু?"

"শুনো তোমার এসব কান্না দিয়ে কিছুই হবে না। সব কিছু মেনে নাও দেখবে তুমিও ঠিক সেও ঠিক।"

মাথা নাড়ালো।'
"জ্বী আপু আমি চেষ্টা করবো।"

"আর কতো চেষ্টা করবে, তোমার বিরক্ত লাগে না এই কথা বারবার বলতে? তুমি বলবে যে আমার বরকে আমি কাউকে হতে দিবো না। যে আমার বরের দিকে তাকাবে তার চোখ উপড়ে দিবো। আর আমার বর যদি অন্য কোনো মেয়ের দিকে তাকায় তার চৌদ্দটা বাজিয়ে দিবো।"

'রোজা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে মেধা এসব কি বলছে।'
" ঠিক আছে আপনি যা বলেছেন সেটাই হবে।"

"হু তুমি বসো আমি আসছি।"

'মেধা গেলো পদ আইসক্রিম আনতে এতোক্ষণ যতো কিছু বলেছে রোজাকে, নিশ্চয়ই তার মনটা গরম হয়ে আছে মনে তো আর পানি দেওয়া যায় না তাই আইসক্রিম খেয়ে ঠান্ডা করুক মনটা কে। মেধা রোজাকে আইসক্রিম দিয়ে বললো-'
"নেও এটা খেয়ে মনটা কে ঠান্ডা করো।"

" আচ্ছা আপু এখন কি করা লাগবে?"

" কি করতে চাও তুমি?"

" আমাদের সম্পর্ক আশেপাশের দম্পতিদের মতো হবে কিভাবে?"

" আচ্ছা আবিদ তোমাকে চু'মু দেয়?"

'মেধার কথায় লজ্জা পেলো। এই কথা উত্তর কিভাবে বলবে সে? এসব কথা না বললেও পারতো। আরও কতোকিছুই তো বলার আছে।'

" শুনো এতো লজ্জা পেলে হবে না যা জিগ্যেস করছি তা বলো।"

" হ্যাঁ মাঝে মাঝে।"

'মেধা হঠাৎ হাতে তালি দিলো।'
" তোমাকে যদি একটা দেয় তুমি দু'টো দিবে। আবার তার জন্য শাড়ি পড়বে বলবে আমাকে ঘুরতে নিয়ে যান, এটা সেটার আবদার করবে যেমন, ও হসপিটালে আসার সময় বলবে চকলেট নিয়ে আসবেন, ফুল, বই নিয়ে তারপর বাসায় আসবেন। আবার ধমকও দিবে যদি তোমার কথা না শুনে।'

'রোজা নিজের মাথা স্থির করলো। মেধা যা যা বলেছে তাই করবে। মেধা তাকিয়ে আছে ..
রোজা আইসক্রিমের চামচ নাড়ছে।'
"আচ্ছা আমি আপনার কথা শুনবো।"

'রাত ৮টায় রোজাকে মেধায় বাসা থেকে নিয়ে এসেছে আবিদ। মেধা বলেছিলো রোজা আর ও আজ থাকতে তার বাসায় কিন্তু আবিদ নিয়ে বাসায় চলে এসেছে।
আবিদ কথা বলছে বেডে হেলান দিয়ে আধশোয়া হয়ে। রোজা পাশে পাশে ঘুরঘুর করছে।
কখন কথা শেষ হবে তার অপেক্ষায় সে অধীর আগ্রহে বসে আছে এমন অবস্থা। আবিদের কথা বলা শেষে রোজাকে বললো তার পাশে বসতে। রোজাও তাই করলো গুটিসুটি হয়ে পাশে বসেছে।'

"এতোক্ষণ কি করছিলে তুমি?"

' এমন ছোট ছোট চোখে প্রশ্ন করলে রোজা ভয় পায়।'
"কোথায় কিছু করছিলাম না তো।"

"তাই বুঝি?"

"হ্যাঁ। "

' কিছু না বলে রোজার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়লো। তার মনে হলো একটু মানসিক শান্তির দরকার তাই সে কাজটা করলো। কোলে মাথা রেখে আবিদ রাজ্যের চিন্তা করতে লাগলো।'

রোজা বলল...
আমি আপনার কাছে কিছু একটা চায়বো দিবেন
আবিদ বলল
বলো কি চাও
বলতেই আবিদের ফোন বেজে উঠল
আবিদ ফোন কথা বলতে বারান্দায় চলে গেল রোজার মনে বার বার মেধার কথা গুলো ঘুরপাক খাচ্ছে যদি আবিদ অন্য কাউকে পেয়ে ছেড়ে চলে যায়।
মেধা রোজাকে শিখিয়ে দিয়েছিল আবিদকে কাছে পাবার উপায় গুলো।
রোজাও আবিদকে কাছে পেতে চায়ছিল কিন্তু আবিদকে কিভাবে বলবে বুঝতে পারছিল না আর যখন কিছু একটা বলতেই যাবে তখনই শুরু হলো কলের রিংটোন ফোনটা এ সময় না আসলেই পারতো।
ফোন কথা বলা আবার কখন শেষ হবে কে জানে....
রোজা বিরক্ত হয়ে বেডে মন খারাপ করে বসে আছে...
আর ভাবছে আবিদ কে কি কি বলবে...

নোট :গল্প দেরি করে লেখার জন্য দুঃখিত। লাইক কমেন্ট কম হলে আমি আর গল্প কন্টিনিউ করবো না এখানেই আমার লেখালেখি শেষ করে দিব ৷ রিটিং অনেক কম হচ্ছে । কমেন্ট বেশি হলে গল্প খুব তাড়াতাড়ি পাবেন ধন্যবাদ।
135 Views
8 Likes
2 Comments
3.8 Rating
Rate this: