বলো ভালবাসি

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
রোজা ভয়ে রুমে ডুকে...

আবিদ বলে ভয় পেয়েছ ম্যাডাম..

এমন ম্যাডাম বলার কারণ রোজা জানেনা। সে বললো-'
"আপনি আমাকে ম্যাডাম বলেন কেনো?"

"ভালোবেসে বলি।"

'রোজা অবাক হলো আবিদ তাকে ভালোবাসে শুনে।'
"আপনি আমাকে ভালোবাসেন?"

'আবিদ তার চশমা পড়তে পড়তে বললো-'
"অবশ্যই বউকে ভালোবাসবো না তো কাকে ভালোবাসবো। তুমি কি চাও আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি?"

'রোজা সাথে সাথে উত্তর দিলো।'
"না না আমি সেটা চাই না।"

' কাছে ঘেঁষে বসলো। রোজার কাঁধ জড়িয়ে ধরে বললো-'
"কেনো চাও না?"

"মজা করবেন না আমি এখন অসুস্থ কিন্তু।"

"হ্যাঁ তুমি অসুস্থ দেখেই তো কতো ইচ্ছা বিসর্জন দিচ্ছি।"

'রোজা তাকালো। চোখ গুলো গোল্লা গোল্লা হয়ে গেলো তার।'
"কি ইচ্ছে বিসর্জন দিচ্ছেন আপনি?"

" কতোকিছুই। শুনো কাল ডক্টর আসবে। আমার বেস্টফ্রেন্ডই বলতে পারো। তার সাথে স্বাভাবিক থেকো।"

"কেনো?"

'আবিদ বিরক্ত হলো। এটাও প্রশ্ন করা লাগে!'
"তুমি যে অসুস্থ সেটা জানো? মাঝে মাঝে তোমার এসব বিরক্তিকর কথা শুনলে রাগ হয়।"

'রোজা চুপসে গেলো। আর কথা বললো না সে। আবিদ ও কিছু বলছেনা। দু'জনেই নীরাবতা পালন করছে।
আবিদ সেই ভাবেই রোজার সাথে ঘেঁষে বসে থাকলো। কিন্তু কেউ কথা বলছে না।

কি চান আপনি বলুন তো...

ভালবাসতে চায় তোমায়,

রোজা বলে সন্ধাই আপনি আমার সাথে যা করছেন সেই টা একদম উচিৎ হয় নি...

আবিদ :ভালবাসা কি অন্যায়?

না কিন্তু আপনি অনেক অসভ্য। এগুলো ঠিক না...

আপনি যদি আবার ওমন করেন আমি কিন্তু বলে দেব সবাই কে।

মৃদু হেসে কি বলবে শুনি যে তোমার বর তোমাকে আদর করেছে। ওকে আম্মু কে বলতে পারো...

আমি কিন্তু অসুস্থ আপনি কি শুনেন না...

আচ্ছা ঠিক আছে ঘুমাও তাহলে..

পরদিন

অনেক সময় পর ক্রলিং বেল বাজলো। তাড়াতাড়ি গিয়ে দরজা খুললো। হাসি দিলো ব্যক্তিটি কে দেখে। ব্যক্তিটি হচ্ছে ইফতি মেধা।'

'মেধা হাসি দিয়ে বললো-'
"কেমন আছিস সুদর্শন পুরুষ?"

' হাসি দিয়ে বললো-'
"ভালো আছি যুবতী নারী।"

আবিদ আর মেধা এক অপরকে খুব ভালো করে চিনে।সেই কলেজ থেকে দু'জনের যাএা শুরু হয়েছে, আজও একই সাথে আছে তারা। মেধা ভিতরে ঢুকতে ঢুকতে বললো-'
"বিয়ের দাওয়াত দেসনি, আর বউ যেই অসুস্থ হয়ে পড়লো তখনই আমাকে দরকার পড়েছে।"

'আবিদ মাথা চুলকাতে চুলকাতে বললো-'
"কোন পরিস্থিতিতে বিয়েটা হয়েছে তোকে তো বললাম।"

"কোনো এক্সকিউজ শুনতে চাই না। ট্রিটটা দিয়ে দিস দয়া করে। এখন চল তোর বউকে দেখে আসি তার কি সমস্যা।"

'মেধাকে রোজার কাছে নিয়ে গেলো। রোজাকে দেখে মেধার খুব ভালো লেগেছিলো। চেহারাটা সুন্দর। তবে চোখের নিচে লাল হয়ে আছে। মেধা রোজাকে পাশে বসলো। রোজা কে হাসি একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে বললো-'

"কেমন আছো?"

'রোজা একটু ঘাবড়ে গিয়ে বললো-'
"ভালো আছি আপু। আপনি কেমন আছেন?"

"ভালো আছি। আমাকে চিনো?"

"জ্বী ওনি একটু আগে আপনার কথা বলেছিলেন।"

" ওহ বলে দিয়েছে! নাম কি তোমার?

'আস্তে করে বললো-'রোজা

'মেধা হাসলো। কন্ঠ ও বেশ সুন্দর। তবে বেশ নিরিবিলি মেয়ে মনে হচ্ছে ।মেধা আবিদের উদ্দেশ্যে বললো-'

"আচ্ছা তুই রুম থেকে যা।"

'আবিদ অবাক হয়ে বললো-'
"কেনো? আমি এখানে থাকলে কি সমস্যা?"

'মেধা কথা বেশি বাড়ালো না। এককথায় বললো-'
"কেনো রুম থেকে যেতে বলছি তুই পরে বুঝবি।"

'মেধা শরীরের তাপমাত্রা চেইক করলো। মোটামুটি ভালোই জ্বর আছে। জ্বরের জন্য কিছু মেডিসিন লিখলো। তারপর রোজার চোখ গলা দেখলো। কোথাও সমস্যা নেই।'
' ইফতি মেধা প্রেশার মাপতে মাপতে বললো-'
"তোমার এখন কেমন লাগছে?"

'আস্তে করে উত্তর দিলো।'
"একটু জ্বর জ্বর লাগছে।"

"কিন্তু জ্বর তো একটু না শরীরে। আচ্ছা তোমার পি'রি'য়'ড ক্লিয়ার তো?"

'রোজা লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে ফেললো। আবিদ সামনে দাঁড়িয়ে আছে। সে এখন কিভাবে উত্তর দিবে? আবিদের কাছে নরমাল বিষয় এগুলো কিন্তু আবিদ বুঝছে রোজা লজ্জা পাচ্ছে তাই সে রুম থেকে চলে আসলো।'
'মেধা আবারও বললো-'
"পি'রি'য়'ড ক্লিয়ার?"

'রোজা মাথা নাড়লো। মুখে কিছু বললো না।'
'মেধা বলছে-'
"ইদানীং বিবাহিত মেয়েদের সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। এগুলো পরে মারাত্মক আকার ধারন করে। যাই হোক বয়স কতো তোমার।"

'রোজা ঠোঁট ভিজিয়ে বললো-'
"ষোলো।"

'মেধা জানে বয়স। আবিদ সব খুলে বলেছে মেধাকে...

'মেধা জিগ্যেস করলো-'
"তুমি কেনো এই আবিদের মতো ত্যা'ড়া কে বিয়ে করেছো। ও তো ঠিকই বুড়ো হয়ে যাবে। তখন তুমি কিশোরী বয়স পার করবে।"

'রোজা মাথা নিচু করে বললো-'
"আমার ভাগ্যে যা লিখা আছে,তাই হবে।

'মেধা একটা ইঞ্জেকশন বের করলো। রোজার থেকে রক্ত নিবে। চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে। এটা দিয়ে কি করবে বোঝার চেষ্টা করছে। রোজার ভয় লাগা শুরু করেছে এখন।'

'রোজা আমতা আমতা করে বললো-'
"এটা দিয়ে কি করবেন?"

'মেধা হেসে বললো-'
"কিছু করবো না একটু জাস্ট ব্লা'ড নিবো।"

'রোজা ছিটকে দূরে সরে গেলো। মেধা অবাক হয়ে গেলো। এটার সুই তার শরীরে ফোটাতে দিবে না। এসবে তার ভিষণ ভয় করে।'

"মেধা হেসে বললো-'
" আরে এখানে আসো। কিছু করবো না আমি। বসো এখানে।"

'রোজা ভয়ে ভয়ে বলছে-'
না আপু ভয় করছে আমার.

ভয়ের কিছু নেই রোজা আসো....
ভয়ে ভয়ে বলছে-'
"আপনিই তো একটু আগে বললেন রক্ত নিবেন।"

"এটুকু সুই কে ভয় পাচ্ছো। যখন কিছুদিন পর বাচ্চার মা হবা তখন তো আরও কষ্ট হবে। পর পর তোমার সামনেই তোমাকে বিভিন্ন রকমের ইঞ্জেকশন দেওয়া হবে। না বলার উপায় থাকবে না তখন। এখানে আসো তুমি।"

' তাও আসলো না ভয়ে মুখ চেপে ধরে আছে। মনে হচ্ছে এখনই অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাবে। মেধা রোজার সাথে পেরে উঠছে না। তাই আবিদ কে ডাক দিলো। সাথে সাথে রুমে আসলো।'

' তাড়াতাড়ি জিগ্যেস করলো-'
"কি হয়েছে?"

'মেধা ক্লান্ত চোখে আবিদের দিকে তাকিয়ে বললো-'
"আমি তোর বউয়ের সাথে পারছি না আর। আমার ব্লাড লাগবে একটু। তুই তো তোর বউকে হসপিটালে নিতে দিবি না তাই ব্লাড নিয়ে টেস্ট করিয়ে দেখবো কি সমস্যা। জ্বরে কোথাও সমস্যা হয়েছে বা আছে কিনা!"

'আবিদ বুঝলো কথাটা। রোজাকে পিছন দিক দিয়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরলো। তারপর মেধার সামনে নিয়ে আসলো। ভয়ে রোজা আবিদের বক্ষে মুখটা লুকিয়ে রাখলো। আবিদ এক হাত দিয়ে রোজার মাথা চেপে ধরে আছে। মেয়েটা এতো ছটফট করছে। ব্লা'ড নেওয়ার সাথে সাথে শরীর একেবারে ছেড়ে দিলো। নিচে পড়ে যাওয়ার আগে আবিদ ধরে নিলো। মুলত রোজার শরীর এমনিতেও দুর্বল আরও একটা ইঞ্জেকশন ব্লা'ড নিয়েছে। যার কারণে সেন্সলেস হয়ে গিয়েছে। রোজাকে বেডে শুইয়ে দিলো।'

' ইফতি মেধা কাধে হাত দিয়ে বললো-'
"শুন মেয়েটা এখনো অনেক ছোট। এতো বেশি বুঝ জ্ঞানও হয়নি। কিছু করার আগে ভেবে চিন্তে কাজ করিস। ওর সাথে আগে ভালোমতো মিশতে শিখ তারপর অন্য কিছু ভাবিস। তুই একজন ডক্টর আশাকরি আমার কথাগুলোর মানে খুব ভালো করে বুঝতে পেরেছিস।"

'আবিদ মাথা নাড়িয়ে বললো-'
"হ্যাঁ বুঝেছি। আচ্ছা আর কোনো প্রবলেম আছে ওর?"

নোট :অবশ্যই লাইক কমেন্ট করতে ভূলবেন না।
আমার পাঠকেরা গল্প মধ্যে আবিদ আর রোজার মিল চাচ্ছে ... এখনই কি এদের মিল করানো উচিৎ বা গল্পের মোড় কি অন্য দিকে যাবে তা জানাতে পারেন ইনবক্সে ।
209 Views
6 Likes
0 Comments
3.3 Rating
Rate this: