রহস্যময় ভালোবাসা (Mysterious Love ) Episode 5

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
কিন্তু উত্তর একটারো নেই।

আমি মিশকাতকে নিয়ে আমার বাসার দিকে রওনা হলাম।এমন সময় তিন্নির কল আসলো

-কই আপনি?
-আমি এইযে গাড়িতে।কেন?
-না এমনি।আমার কেন যেনো প্রচুর ভয় হচ্ছে।আপনি বাসায় যেয়ে আমাকে কল দিয়েন।
-আচ্চা।

এই বলে ফোন কেটে দিল।আমি মিশকাতের কথা চিন্তা করতে লাগলাম।কেনই বা হলো ওর সাথে এমন?কি এমন ভুল করলো মেয়েটা যে আজকে তাকে এই শাস্তি পেতে হচ্ছে?হাজারো প্রশ্ন ঘুরছিল।আর এসব ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পড়লাম নিজেও বলতে পারবো না।ঘুম থেকে উঠে দেখি আমি আমার গন্তব্য স্থলে পৌছে গেসি।আমি যেই মিশকাতকে ডাক দিব অমনি তাকিয়ে দেখি মিশকাত তার ছিটে নেই।আমি হেল্পার কে জিজ্ঞেস করলাম আর সে যা বললো তা শুনে আমি পুরো অবাক।সে বলে সে আমার সাথে কোনো মেয়েকেই নাকি দেখে নি।আমি একটু কড়া ভাবে জিজ্ঞাসা কিরায় সে বললো না স্যার আপনি হয়তো অন্যকিছু ভাবছিলেন আপনার সাথে কোনো মেয়েকে আমরা দেখি নি।আমি খুব অবাক হয়ে ভাবতে লাগলাম। কারন আমি ওকে নিয়ে বাসে উঠেছিলাম আর আমি ভাড়াও দুজনেরই দিয়েছিলাম। এমন সময় আবার তিন্নির ফোন আসে,,

-কই আপনি পৌছেচেন?
-হ্যা।
-রাতে এত্তগুলা কল করলাম ধরলেন না কেন?
-রাতে তো আমি তোমার সাথে কথা বলেছিলাম।
-কই আমি আপনাকে কল দিসি কিন্তু আপনি ধরেন নি।
এই কথা শুনার সাথে সাথে আমি কল কেটে দিলাম।আমি খুব চিন্তায় পড়ে গেলাম। আমার সাথে এসব কি চলছে।আমি কি তাহলে কোনো সপ্ন দেখছিলাম। সপ্ন হলেও বাস্তবতার সাথে এত্তো মিল কিভাবে।আমি তারপর আমার হাতের দিকে খেয়াল করলাম।দেখলাম গত রাতে মিশকাতকে বাচাতে গিয়ে যে ব্যাথা পেয়েছি তার দাগ এখনো আছে। তাহলে এগুলো বাস্তবে হলে এখন মিশকাত কই? আর তিন্নি এমন বললো কেন? হাজারো প্রশ্ন মাথায়।

এসব ভাবতে ভাবতে আমি বাসায় চলে আসলাম। আমি বাসায় এসে ওয়াশরুমে ঢুকলাম কাপড় চেঞ্জ করে ফ্রেশ হয়ে অফিসের জন্য রেডি হব বলে।আমি যেই শার্ট খুললাম দেখলাম,,,,,গত রাতে মিশকাতের শরীর থেকে আমার কাপড়ে যে রক্তের দাগ লেগেছিল তা এখনো আছে। তখন আমি আবার ভাবতে লাগলাম সব সত্যি হলে তাহলে আমার সাথে এসব কি চলছে।আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি নাতো। এসব ভাবতে ভাবতেই রেডি হলাম অফিসের জন্য।এমন সময় তিন্নির আবার কল আসলো,

-কি হলো অই সময় এভাবে করে কল কেটে দিলেন কেন?
-আমি কি সত্যি রাতে তোমার সাথে ফোনে কথা বলিনি?
-না বাবা।কথা বললে কি আমি এত্তো চিন্তা করি নাকি?
-ও আচ্ছা।
-কি হইছে বলেন তো আমাকে খুলে?
-না কিছু না।মনে হয় আমি ঘুমে ছিলাম তো তাই হয়তো সপ্ন দেখছিলাম।
-আচ্ছা,,,,,তো কি করেন?
-এইযে অফিসের জন্য বের হচ্ছি।
-নাস্তা করেছেন?
-না বাইরে খেয়ে নিব।
-মনে করে খেয়ে নিবেন কিন্তু?
-আচ্ছা।বায়।
-ওকে বায়।
এই বলে সে ফোন রেখে দিল।আমিও এসব মাথা থেকে ঝেরে ফেলার চেষ্টা করছিলাম আর তাই অফিসের জন্য বের হয়ে গেলাম।অফিসে যেতেই সবাই মিস্টি খুজা শুরু করলো। সবাইকে মিস্টি মুখ করালাম।তারপর স্যারের কেবিনে প্রবেশ করলাম।প্রবেশ করতেই দেখি এক অমরু সুন্দরী মেয়ে বসে আছে।আমার বুঝতে বাকি রইলো না যে তাকেই আমার প্রশিক্ষণ দিতে হবে।স্যার মেয়েটার সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিলেন।মেয়েটির নাম ছিলো নুসরাত। স্যার এবার বলে উঠেন,,,
-ফরহাদ,,,তোমার একে ভালো মতো করে সব কিছু শিখিয়ে দিতে হবে।
-জ্বি স্যার।আপনি এই ব্যাপারে নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন।
-হ্যা।আমার তোমার উপর ভরসা আসে।তাই তো তোমাকে আমি আনালাম।যাও ও এখন থেকে তোমার সেক্রেটারী হিসেবে থাকবে।
-আচ্ছা স্যার।

এই বলে আমি নুসরাতকে নিয়ে আমার কেবিনে চলে আসলাম।আমি গত রাতের সব কিছু বলতে গেলে প্রায় ভুলে গিয়েছিলাম।আমি নুসরাতকে বললাম,,,,
-আমাদের এখানে কাজ করতে হলে কিন্তু আদব কায়দার মধ্যে থাকতে হবে। সব কাজ সুন্দর ভাবে সারতে হবে।
-জ্বি স্যার।
-তোমার বাসা কোথায়?
-স্যার ক্যান্টনমেন্ট।
-ও আচ্ছা। যাই হক আমাদের এই কোম্পানি অনেক নামকরা। একটা কথা মনে রাখবে,,,এমন কোনো কাজ করবে না যার জন্য তোমার বদনাম হয় বা তোমার জন্য আমাদের প্রতিষ্ঠানের বদনাম হয়।
-জ্বি স্যার।আমি মাথায় রাখবো।

তার চোখ দুটো অনেকটা মিশকাতের মতো দেখতে চঞ্চল প্রকৃতির। তার মুখের আগেই চোখ দুটো বলে দে সব কিছু। আমি অনেক্ষন তার চোখ দুটো দেখছিলাম। এই জিনিস সে খেয়াল করেছে। এমন সময় সে গলার মধ্যে আওয়াজ করলো। আমিও লাফিয়ে উঠেছিলাম। সে আমাকে বলে উঠে,,,,

-কি ব্যাপার স্যার?আমার চোখের দিকে অমন করে কি দেখছেন?
-না কিছু না।(সরম পেয়ে)
-আমার থেকে মনে হয় আমার চোখ দুটো দেখে আপনার কাওকে হয়তো মনে পরছে।
-না তুমি কাজ কর।
মনে মনে বলতে লাগলাম,,,আসলে মিশকাতকে অনেক মিস করছি।কিন্তু গত রাতে কি হলো তা এখনো আমার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। এমন সময় তিন্নি কল দিল,,

-কি ব্যাপার স্যার? আর কল দিলেন না??
-আসলে একটু ব্যস্ত তাই সময় হয় নি।
-নাস্তা করছেন??
-হ্যা।
-কি করতাসেন এখন?
-এইতো নতুন একজন আসছে তাকে প্রশিক্ষন দেয়া লাগবে।
-আর 2 দিন বেরাতেন আম্মু অনক খুশি হতো।
-আরে বাবা আমার শশুরবারি আমি তো প্রায়ই আসবো। মাকে কষ্ট পেতে মানা কইরো।
-আচ্ছা।আপনি কাজ করেন আর কল দিয়েন। আমারতো আর আপনি ছাড়া কেউ নেই।
-আচ্ছা দিব।এখন তাহলে রাখি।
-ওকে।
কল কাটার পর নুসরাত আমাকে বলে উঠে,,,
-কি ব্যাপার স্যার?কে ছিলো ফোনে?
-আমার wife।
-কি বলেন স্যার? আপনার বিয়ে হইছে?
-হ্যা।কেন?
-না আপনাকে দেখলে কেউ বলবে না যে আপনি একজন বিবাহিত পুরুষ।
-আমার কয়েকদিন হলো বিয়ে হয়েছে।
-ও আচ্ছা।
যাই হক আমরা আবার কাজে মন দিলাম। সারাদিন কাজ শেষে ক্লান্ত শরীর নিয়ে বাসার দিকে যাচ্ছিলাম।
এমন সময় তিন্নিকে কল দিলাম,,
-কি করতাস?
-এই আপনার কলের অপেক্ষায় ছিলাম।
-ও আচ্ছা।খাওয়া দাওয়া হইছে?
-না।আপনি কই আছেন এখন?
-আমি বাসায় যাচ্ছি।
-আচ্ছা। বাসায় যেয়ে কল দিও।আমার আবার এখন ভয় লাগছে কেন যানি?
-আরে ভয় কেন পাও?
-জানি না। আচ্ছা বায় আমি নামাজ পরি।
-আচ্ছা।

কল রেখে আমি বাসার দিকে যাচ্ছিলাম।মাঝপথে মনে হলো কে যেনো আবার বলছে যে বাচাও বাচাও।আর আওয়াজ অনেকটা মিশকাতের আওয়াজের মতো। পাশে তাকিয়ে দেখলাম আবারো গত রাতের ছেলেগুলা একটা মেয়েকে ধর্ষন করছে।কাছে যেয়ে দেখি মিশকাত। কিন্তু এবার অন্যরকম কাহিনী ঘটে। কাছে যতই যাই ততই তারা দূরে যেতে থাকে।আমি কিছুদূর যাওয়ার পর দেখলাম হঠাৎ কোথায় যেনো তারা সবাই হারিয়ে গেলো। আমি খুব ভয় পাই এবং দ্রুত বাসায় চলে আসি।বাসায় আসতেই আমি বেহুশ হয়ে পরে যাই।

চলবে,,,,,,
533 Views
14 Likes
3 Comments
3.8 Rating
Rate this: