আমি সাথে সাথেই সেখানে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাই।
যখন আমার চোখ খুলে তখন আমি নিজেকে চা বাগানের ভিতরেই আবিষ্কার করি। আশে পাশে কেউ নেই। আমার খুব ভয় হতে লাগলো। আমার সাথে আবার কোনো কিছু হতে যাচ্ছে নাতো। আমি আশে পাশে ঘুরাঘুরি করলাম কাউকে পাই নাকি দেখার জন্য। কিন্তু না সেখানে কেউ ছিলো না। এদিক কোন রাস্তা দিয়ে বের হব তাও জানা নেই।আমি শুধু মনে মনে বলতে লাগলাম,,,,"আল্লাহ আমাকে এ কোন পরিস্থিতিতে ফালালেন। আল্লাহ আপনি সহায় থাইকেন।" এই বলে আমি সামনে যাওয়া শুরু করলাম।এমন সময় একটা আওয়াজ আসতে লাগলো,,,,,
-সামনের দিকে যেতে থাকেন।আপনি খুব দ্রুত এখান থেকে বের হতে পারবেন।
আমি খুব ভয়ে পড়ে গেলাম।আমি মনে মনে ভাবতে লাগলাম এ আবার কে বলতে লাগলো। আমি ভয়ে ভয়ে বললাম,,,
-কে বলছেন??
কিন্তু কোনো আওয়াজ আসলো না। আমি আরো ভয় পেলাম।কিন্তু এখান থেকে তো বের হওয়া লাগবে।তাই না কিছু ভেবে অই আওয়াজ টার অনুযায়ী আমি সামনে যেতে লাগলাম।
কিছুদূর সামনে যেতেই রাস্তা দেখতে লাগলাম।আমি দৌড়ে সামনের দিকে যেতে লাগলাম।কিন্তু মনে হলো কে যেনো আমার পা দুটো ধরে রাখছে এবং সে হয়তো চায় না আমি যাই এখান থেকে। আমার এবার প্রচুর পরিমানে ভয় লাগা শুরু হলো। আমার সারা শরীর কাপতে লাগলো। আমি বুঝে উঠতে পারছি না এসব আমার সাথে হচ্ছে কি?? কে আমার পা ধরে রেখে আমাকে বাধা দিচ্ছে। তাছাড়া আমার পিছনেই বা কেন লাগলো। কিছু বুঝতে পারছিলাম না। মনে মনে শুধু প্রার্থনা করতে লাগলাম যাতে আল্লাহ সহায় থাকেন। আচ্ছা এটা আলজা নাতো আবার??। না আলজা কিভাবে হবে তাকে তো সারফারাজ সাথে করে নিয়ে গেসে। তাহলে আর কে হতে পারে?? নানান প্রশ্ন মনে ঘুরছে। কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা এখন এখান থেকে বের হওয়া লাগবে। আমি আশে পাশে জুড়ে জুড়ে চিল্লাতে লাগলাম,,,,কেউ বাচান প্লিজ। আমি এখানে আটকে পড়ে গেছি। দোয়া করে কেউ আমাকে বাচান। কিন্তু কোনোখান থেকে কোনো আওয়াজ আসলো না। কিছুক্ষন পর হঠাৎ করে একটা ছেলে আমার দিকে আসতে লাগলো। ছেলেটা দেখতে দূর থেকে অনেকটা সারফারাজের মতো লাগতে লাগলো। কিন্তু যখন সামনে আসলো দেখলাম যে সে সারফারাজ নয়। কিন্তু তার চেহারার গঠন অনেকটা সারফারাজের মতোই। সে আমার কাছে এসে দাড়ালো এবং বলতে লাগলো,,,
-আপনি মনে হয় এখানে আটকে গেছেন।
-জ্বি। আমি এখান থেকে বের হতে পারছি না। আমাকে একটু দোয়া করে সাহায্য করবেন?? অনেক কৃতজ্ঞ থাকব।
-আমি আপনাকে বাইরে বের করার জন্যই আসছি।
-কিন্তু আপনি কিভাবে জানেন যে আমি এখানে আটকা পড়ে আছি? কে আপনি?
-দেখেন,,,এত্তো কিছু বলার অনুমতি এখনও আমাকে দেয়া হয় নি। কিন্তু সঠিক সময়ে আপনি সব জেনে যাবেন। আসুন আপনাকে বাইরে বের করে নিয়ে যাই। আপনার পরিবারের সবাই আপনার জন্য অপেক্ষা করছে।
-কিন্তু আমি যাবো তো যাবো কিভাবে? আমার পা মনে হয় কে যেনো আটকে রেখেছে। আমি নড়তেও পারছি না এখান থেকে।
এটা বলার সাথে সাথেই ছেলেটা আমার পা ধরলো এবং মনে মনে কি যেনো একটা বললো সাথেই সাথেই আমি স্বাভাবিক হয়ে গেলাম। এর পর আমরা সামনের দিকে এগোতে লাগলাম। যেতে যেতে বললাম,,,
-আচ্ছা আপনি কে তা না বললেন,, কিন্তু আপনার নামটাতো জানতে পারি নাকি??
-হুম পারেন। (অনেক্ষন চুপ থাকার পর)
আমার নাম আব্দুল্লাহ।
-বাহ!! খুব সুন্দর নামতো আপনার। তো আপনি থাকেন কোথায়?
-দেখেন নামের বেশি আমি কিছুই আপনাকে বলতে পারবো না। শুধু এইটুকু জানেন আমি আশে পাশেই থাকি। আশে পাশেই আমার বাসা।এইযে নেন কথা বলতে বলতে আপনার গন্তব্য এসে গেলো। কিন্তু একটা কথা মাথায় রাখবেন আমি যে আপনার সাহায্য করেছি বা আমার ব্যাপারে আপনি কারো সাথে কিছু বলতে পারবেন না। নাহলে পরবর্তীতে আপনার ক্ষতিও হতে পারে।
এটা বলেই ছেলেটা পাশ দিয়ে যেয়ে কোথায় যেনো হারিয়ে গেলো। এদিক দিয়ে দেখলাম কাকা,কাকি এবং রাকিব আমাকে চারপাশে খুজছেন। আমি কাছে যেতেই তাদের নানান ধরনের প্রশ্ন উঠে গেলো। তারপর কাকা আমাকে বলতে লাগলেন,,,,
-কিরে মা কোথায় ছিলি তুই? আমরা তোকে সব জায়গায় খুজলাম কিন্তু পেলাম না।
-কে যেনো আমাকে থাপ্পড় মেরে বেহুশ করে দিছিল কাকা।তারপর যখন হুশ আসে আমি চা বাগানের ভিতরেই নিজেকে পেলাম। আমি আশে পাশে তাকাই কিন্তু কাওকে পাই নি। পরে একটা ছেলে আমাকে উদ্ধার করে।
এটা বলার সাথে সাথেই জিহবায় কামড় দিয়ে বসলাম। কারন আমি ভুল করে হলেও ছেলেটার কথা বলে দিয়েছিলাম যেখানে সে আমাকে বলতে নিষেধ করেছিলো।
-ছেলেটা কে??
-জানি না কাকা। আমি চিনি না।
এই বলে আমি সামনের দিকে মুখ লুকিয়ে এগোতে লাগলাম। কিন্তু কাকা হয়তো কিছুটা রহস্য বুঝতে পেরেছেন। আমরা সবাই বাসার দিকে এগিয়ে যেতে লাগলাম। কিন্তু আমি মনে মনে ভাবতে লাগলাম। ছেলেতা কে? কোথা থেকে আসলো। সেও কোন জ্বিন নাতো? আর সে জ্বিন হলেও আমাকে কেন সে সাহায্য করলো। সারফারাজ আবার..... না না তা কিভাবে সম্ভব। সারফারাজ হলেতো সে নিজেই আসতো। এরকম হাজার প্রশ্ন মনের মধ্যে জাগতে লাগলো।
চলবে,,,,,,
লেখকঃইয়াসিন আরাফাত মুবাশশির।
[বি.দ্র. গল্পটা কেমন লাগলো জানাবেন। কারন আপনারা উৎসাহ দিলেই আমার লেখার উৎসাহ বারবে। আর শারীরিক অসুস্থতার কারনে দেরি হয়েছে। কিন্তু সামনের থেকে প্রতিদিন গল্প পাবেন ইনশাআল্লাহ]
ধন্যবাদ।।।।।
জ্বিনের আছর (Season 2) Episode 2
অডিও মোড
00:00
00:00
গতি:
ভলিউম:
606
Views
32
Likes
7
Comments
4.3
Rating