_সারাদিন অফিসের কাজে ব্যাস্ত থাকায় স্বামীর সাথে খুব একটা কথা বলার সুযোগ হয়না তপতীর,,,,
কিন্তু অফিস শেষে বাড়ি ফেরার সময় তার স্বামী তাকে রোজই একবার কল করবে।এমনই এক মেঘাচ্ছন্ন সন্ধ্যা বেলায় আকাশ তার তপতীকে কল করলো। অভিমানে মুখ ভারী করা বউ কল রিসিভ করেই বললো,
-- আমার খোঁজ-খবর তো আর আপনার রাখতে হবেনা।সারাদিন একা বাড়িতে কি করি না করি তাতো আপনি বুঝবেন না।থাকুন আপনি আপনার অফিস নিয়ে।
এই কথা গুলো তপতী তার স্বামী আকাশকে প্রতিদিনই শোনায়। সব অভিমান শুনে ক্লান্ত স্বামী হেসে উত্তর দিলো,
-- রাগ করিস না বউ।এইতো এখনি বাড়ি ফিরবো।
-- আচ্ছা।আমার জন্য কি নিয়ে আসবেন?
-- সারা শরীরের ঘাম আর এক পকেট ভালোবাসা।
.
খুনসুটির আলাপ শেষে বাড়ির রান্না করার জন্য টুকটাক জিনিসপত্রের নাম বললো।শেষে আকাশকে সাবধানে বাড়ি ফেরার কথা বলে কল কাটলো।
অনেক মেঘ আকাশে,বৃষ্টি আসবে কিছুক্ষনের মধ্যেই।
আকাশ খিচুড়ির সাথে অমলেট খুব পছন্দ করে এই কথা তপতীর মনে পরতেই রান্না ঘরে ঢুকে সব গুছিয়ে রান্না সেড়ে টেবিলে সাজিয়ে রাখলো।তারপর নিজে একটু পরিপাটি হয়ে চোখে কাজল আর ঠোঁটে হালকা গোলাপি রঙের লিপস্টিক দিয়ে চুল খোঁপা করে বারান্দায় বসে অপেক্ষা করে আকাশের বাড়ি ফিরে আসার।
কিছু সময় পর বাড়ির সামনে রিকশা থেকে আকাশকে নামতে দেখেই দৌড়ে নিচে চলে গেলো।আকাশের হাতের বাজারের ব্যাগটা নিয়ে একসাথে রুমে আসলো।বৃষ্টিতে আকাশের শরীর খানিকটা ভিজে গেছে। শাড়ির আঁচল দিয়ে কপালের জল মুছতে মুছতে তপতী বলে,
-- ছাতা তো আপনার সাথেই থাকে তাও ভিজে আসেন কেনো?
উত্তরে আকাশ বলে,
-- না ভিজলে তো তোমার আঁচলের গন্ধ এখন শরীরে লাগাতে পারতাম না।
তপতী লজ্জা পেয়ে সরে যেতে চাইলে হাত চেপে ধরে আকাশ বলে,
-- এখন একটু আমার পাশে বসো।সারাদিন তো বাড়ি থাকিনা এই নিয়ে তোমার অভিযোগের শেষ নেই।এখন যাচ্ছো কোথায়?
-- আপনার শার্ট ভিজে গেছে চেঞ্জ করুন তারপর অন্য কথা।যাই দেখি বাজারের ব্যাগে কি নিয়ে আসলেন।গুছিয়ে রেখে আসি।
-- না এখন যাবেনা,,,( এই বলে আকাশ পকেট থেকে টিপের পাতা বের করে তপতীর কপালে পরিয়ে দিয়ে বলে),,,গত দুইদিন তোমার কপালে টিপ দেখিনি। শেষ হয়ে গেলেও আমাকে বলোনা কেনো?
তপতী তখন মুচকি হেসে বলে,
-- আমার টিপ ছাড়া কপাল আপনার নজরে ঠিক ই পরবে আর সময় করে নিয়ে আসবেন তাও জানি।সেজন্যই বলিনা। এবার ফ্রেশ হয়ে নিন আমি টেবিলে খাবার রেডি করি।
-- আচ্ছা যাচ্ছি।
স্নান করে টেবিলে গিয়েই দেখলো আজকে খিচুড়ি আর অমলেট রান্না করে রাখা।আকাশ তখন চেয়ারে বসে থাকা তপতীকে হাত ধরে উঠিয়ে বুকে জড়িয়ে বললো,
-- এতো ভালোবাসিস কেনো বউ আমাকে?
-- আপনার চেয়ে বেশি তো বাসতে পারিনা।
-- নারে তপতী খুব কপাল করে তোর মতো বউ পেয়েছি।সারাজীবন এভাবে বুকে আগলে রাখবো।
-- হড়ছে হয়ছে।চলুন খেয়ে নি এখন।
-- আসো তপতী আজকে আমি খাইয়ে দেবো তোমাকে।
তপতী খুশি হয়ে বলে ,,,
-- আচ্ছা তাহলে তো খুব ভালো হয়।
.
কথা বলতে বলতে দুজন খেয়ে নিলো। থালাবাসন পরিষ্কার করার সময়টুকুতে আকাশ একটু ল্যাপটপ নিয়ে বসলো।সব কাজ শেষ করে তপতী রুমে এসে কপালের টিপটা আয়নাতে লাগিয়ে রাখলো।হাতের চুড়ি খুলে রাখতে রাখতে আকাশকে বলে
-- দেখুন বাইরে অনেক বৃষ্টি হচ্ছে।
আকাশ ল্যাপটপ সাইডে রেখে বলে,,
-- চলো বারান্দায় যাই।
.
বারান্দা দিয়ে দুজন একসাথে হাত বাড়িয়ে দিলো।আকাশ হাতে বৃষ্টির জল নিয়ে তপতীর মুখে ছুড়ে মারলে তপতীর চোখ বন্ধ হয়ে আসে,বাতাসে চুল এলেমেলো হয়ে যায়।মুখের উপরের চুল গুলো ভেজা হাতে সরিয়ে দিয়ে তপতীর কপালে চুমু খেয়ে বুকে জড়িয়ে রাখে।
-- চলো তপতী রুমে গিয়ে শুয়ে পরি।
-- চলুন যাই।
বাইরে প্রচন্ড বাজ পরার শব্দে স্বামীর বুকে মুখ লুকিয়ে রাখা বউকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আকাশ।
-- জানো তপতী তোমাকে যখন বুকে জড়িয়ে রাখি সারাদিনের ক্লান্তি একটুও থাকেনা,,,
সকালে ঘুম ভাঙার পর তপতী কিছুক্ষণ আকাশের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে।তারপর কপালে চুমু খেয়ে সকালের জলখাবার বানাতে চলে যায়।
জানালার পর্দা সরাতেই আকাশের ঘুম ভেঙে গেলো।তপতী পাশে এসে বসতেই আকাশ বুকে চেপে ধরে কপালে চুমু খেয়ে নিলো।
-- যান এখন স্নান করে নিন তারপর জলখাবার করবেন। অফিসের সময় হয়ে গেলো সে খেয়াল নেই তো আপনার।
জলখাবার শেষ করে এখন আকাশ অফিসের উদ্দেশ্য রওনা হবে।শার্টের বোতাম লাগিয়ে দেওয়ার সময় তপতী বলে,
-- তারাতাড়ি বাড়ি ফিরে আসবেন।সাবধানে রাস্তা পার হবেন।আর দুপুরের খাবার ব্যাগে দেওয়া আছে সময় মতো খেয়ে নেবেন।
বউয়ের গালে হাত দিয়ে কপালে চুমু খেয়ে আকাশ বেড়িয়ে গেলে আবার সেই বারান্দায় গিয়ে তপতী রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকে।দূর থেকে হাতের ইশারায় আকাশের গাড়ি ভীড়ের মাঝে হারিয়ে যায়। তপতী বারান্দায় কিছুক্ষণ চুপ করে দাঁড়িয়ে থেকে ঘরে এসে নিজের কাজ করে।আর ভাবতে থাকে আজকে হয়তো বাড়ি ফেরার সময় আকাশ তার জন্য গোলাপ ফুল নিয়ে ফিরবে।
*********************সমাপ্ত*********
very nice.
Excellent
Golpo Kahini tmn eto valo na
fariha akter
nice romantic story emn valobasa sohoje cokhe pore nh golpei sundor