হিংসা

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
মনটা ভীষণ ওঠে গেলো ওর ওপর থেকে। যখন বললো * আমি ওকে হিংসা করি। " ও এখন অনেক খানি সফল। অনেকটা নাম ডাক তবুও আমি ওকে হিংসা করি ও ভাবলো কি করি যেখানে আমি ওকে বিয়ে করবো বলে পাগল। জানেন আমার বিয়ে জন্য বাড়ি থেকে অনেক মেয়ে দেখছে। কিন্তু আমি স্থির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমি ওকেই বিয়ে করবো। যদিও বাড়ির লোক জন বলতো ও আমাকে কোন দিন বিয়ে করবে না। ও ভীষণ ক্যারিয়ার কনসার্ট। আমি মানি নি। জেদ করে বাবা চোখের অপরেশ করলো না। চোখটা নষ্ট হয়ে গেলো তবুও আমি ওকে কিছু বলি নি। কারণ আরো সময় চেয়ে ছিলো। অজুহাতে দিয়েছিল জোতির্বিদ না করছে বিয়ে করতে। পরের বছর বিয়ে করলেই সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে আমি ওর কথা মেনে নিয়েছিলাম। মায়া মানুষকে এতটা দুর্বল করে দেয়, যে চোখের সামনে ঠকেও কিছু বলতে পারে না।
আসলে মানুষের জীবনের সবচেয়ে অদ্ভুত অনুভূতিগুলোর মধ্যে একটি ভীষণ অনুভূতি  হলো মায়া। সম্পর্কের টানাপোড়েন, ভালোবাসা আর অভিমানের গভীরে মায়া নিজের মতো করে বাসা বাঁধে। মায়া কখনও হাসায়, কখনও কাঁদায়, আবার কখনও নিঃশব্দে চোখ ভিজিয়ে দেয়। এই মায়ার টানই মানুষকে জীবনের সবচেয়ে কাছের অনুভূতির সাথে যুক্ত করে রাখে।

ওকে ভালোবাসি না শুধুমাত্র আমি শুধু শ্রদ্ধা করি।ও একটা সগ্রামী মেয়ে। মফস্বল শহরের মেয়ে।ওর একটা ছোট্ট ইউটিউব চ্যানেল আছে।সবে বানিয়েছিল তখন।ঝর কোনো team নেই,ফটোগ্রাফার নেই,খুব শখে বানানো চ্যানেল টা।স্ক্রিপ্ট editing সব কিছু নিয়ে ঘেঁটে থাকতো ও।আমি কম বয়সে হাত খরচ চালতে সিনামা সিরিয়ালে কাজ করেছি। নিজে জীবনের অনেকটা সময় নষ্ট করেছি, স্ক্রিপ্ট রাইটার আর ক্যামেরা ম্যান হবার স্বপ্ন নিয়ে। আমি জানি এই কাজে সফলতা  পেতে কতোটা মাথার ঘাম  পায়ে ফেলতে হয়। তাই ওকে আরো সম্মান  করি।
ওর চোখে  আমি সফল ব্যাক্তি কিনা জানি না। কিন্তু আমি আমার জীবন নিয়ে সুখী। আমার যোগত্যা অনুযায়ী যা পেয়েছি তাতেই সন্তুষ্ট। লেখক কবি হিসেবে হয়তো প্রচুর নাম ডাক নেই কিন্তু ওর সাথে ই তো পরিচিত হয়েছিলাম ঐ সাহিত্য সংস্কৃতির জগৎ থেকে। আমি খুব গরীব ঘরে ছেলে। একটা ঘরে কাটিয়ে জীবনের কুড়িটা বছর। এখন বিদেশে একটা চাকরি পেয়েছি। আমি না ছাড়লে চাকরি যাবে না। আর গেলেও চাকরি পেতে অসুবিধা নেই। আট বছর বিদেশে কাজ করলাম অভিজ্ঞতা দাম তো আছে। ক্যারিয়ার নিয়ে আমার কোন চিন্তা নেই। ঘর সাজাছি এখন মা বাবা ভাইকে জীবনের সব আধুনিক সুখ দিতে চাই। কিছুটা সফল ও। এখন একটা প্রাইভেট কার হলেই মধ্যবর্তী পরিবারের স্বপ্ন পূরণ হয়ে যাবে।


জানেন  লেখক হুমায়ূন আহমেদ বলেছেন-
“মায়া সবচেয়ে বিপজ্জনক ভালোবাসা—যার মোহে পড়ে মানুষ সারা জীবন কাটিয়ে দেয়, অথচ বুঝে ওঠে না কখন সে আবদ্ধ হয়েছে।”
মায়া মানুষের হৃদয়ের সবচেয়ে বড় শিকল। তাই আসক্তি বা মায়া যত গভীর, বিচ্ছেদ তত বেশি যন্ত্রণাদায়ক। আসলে যার জন্য মায়া, তার অবহেলাও অসহ্য লাগে।সে যদি তোমার জীবনে অকারণে মায়া রেখে যায়, সে একদিন অকারণেই কাঁদিয়ে চলে যায়।মায়া ছাড়া ভালোবাসা অসম্পূর্ণ, কিন্তু অতিরিক্ত মায়া বিপদ ডেকে আনে।

হু ঠিক ভালবাসা নয়। একটা মায়ায় জরিয়ে গেছি আমি ওর সাথে। ও ওর ক্যারিয়ার নিয়ে ভীষণ চিন্তিত। ও যে পেশায় যুক্ত তাতে ও সফল। কিন্তু ও ওর স্বপ্ন টাকেই ক্যারিয়ার করতে চায়। ও ওর অতীতকে দেখাতে চায় সফল মডেল আর ইউটিউব হয়ে। যদিও আমি প্রথমে ওর সাথে বন্ধুত্ব গড়ে ছিলাম ও ইউটিউবার বলে। কারণে ওখানেই আমার স্বার্থ ছিলো।আমি ভেবেছিলাম অর্থনৈতিক কিছুটা সহযোগিতা করে ওর ছোট চ্যানেল আমার করা কিছু স্ক্রিপ্ট ওপর ছবি তৈরি করবো।কারণ যবে থেকে আমি বিদেশে চাকরি পেয়েছি, আমার স্টুডিও পাড়ার বন্ধুরা আমার গল্প কাজ করতে চায়। অথচ ক্যারিয়ার শুরুটা যখন স্ক্রিপ্ট রাইটার হিসেবে করতে চেয়েছিলাম তখন ওরা আমাকে ঠকিয়েছে।
আমি স্ক্রিপ্ট রাইটার হতে চাই মনে মনে।আসলে আমি আমার বাবাকে খুব ভালোবাসি। ছোটবেলায় বাবা খুব ভালো বাশি বাজাতেন। যাত্রাদলে অভিনয় করতেন। কিন্তু আমার ঠাকুর দা মার যাওয়া পর সংসার চালাতে শহরের চলে আসেন। তবে পরে আবার নাটক দলে যুক্ত হয়ে বছর পাঁচেক অভিনয় করেছিলেন। অনেক পুরস্কার পেয়েছিলেন। কিন্তু সংসার জীবন টাকা অভাব পূরণ করতে গিয়ে ।  তাই ছবিতে অভিনয় করতে স্ক্রিপ্ট রাইটার হিসাবে নিজে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছি অনেক বার। আর ওর সাথে প্রথম একটা গান স্কিন শেয়ার করেছিলাম ওর সাথে প্রথম আলাপেই। বেশ জনপ্রিয় হলো এ্যালবামটা আমাদের বন্ধুত্ব গাঢ় হলো। অনেকটা মনের কাছাকাছি এলাম।
আমি সমুদ্র মাঝে কাজ করি, সমুদ্রকে সৈকত থেকে  আপনার ওর আসল রূপ  বুঝতে পারেন না। জীবন এক বিশাল সমুদ্র, আর আমরা সকলেই নাবিক। কেউ ভেসে বেড়ায় অলসভাবে, কেউ ডুবে যায় হতাশায়, আর কেউ লড়াই করে তীরের ফেরার জন্য। তবে যার লক্ষ্য স্পষ্ট, তার পথ সহজ হয়। আর জীবনের লক্ষ্যের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হলো সফল ক্যারিয়ার।যারা জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে তাদের ক্যারিয়ার নিয়ে চিন্তা করে, তারাই একদিন প্রতিষ্ঠিত হয়। কারণ তারা জানে, সময় থেমে থাকে না। প্রতিটি মুহূর্ত হাতছাড়া হয়ে গেলে হারিয়ে যায় সুযোগ। তাই তারা কাজ করে অক্লান্ত পরিশ্রম দিয়ে, ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করে এবং আত্মবিশ্বাসের সাথে এগিয়ে যায় ক্যারিয়ার লক্ষ্যে।
ও ভীষণ আত্মবিশ্বাসী। আমি বিশ্বাস করি ও সফল হবেই। তবুও আমার সম্পর্কে একটা কিন্তু চলে এলো ওর বলা একটা শব্দ " হিংসা"। ও কি জানে আমার সম্পর্কে। বছর খানেক তো ও আমার জীবনে এসেছে,  যখন আমার নিজের ইউটিউব চ্যানেল টা বন্ধ হয়ে গেলো রাজনৈতিক বিতর্কিত বিষয় দেখানোর জন্য। তখন ও এসছে। যখন আমি সব কিছু ছেড়ে শুধু মাত্র টাকা রোজগার যন্ত্র হয়ে গেছি তখন ও এসেছে  আমার জীবনে।
আমি নিজে সফল মনে করি কারণ একটা ছেলে রবীন্দ্র সদন ফুটপাত কবিতার পাতা বিক্রি করতাম দুই টাকা দিয়ে। তারপর বছর দুই মধ্যে দুই বছর সাংস্কৃতিক উৎসব কমিটি কর্মকর্তা হিসেবে যুক্ত হওয়া। দুই তিনটি বানিজ্যিক পত্রিকা সম্পাদনা চাকরি পাওয়াটা কি সফলতা নয়??ক্যারিয়ার গড়া মানে শুধু চাকরি পাওয়া নয়,নিজেকে এমন এক জায়গায় নিয়ে যাওয়া, যেখানে গর্ব করার মতো কিছু থাকে।আমি সেচ্ছায় প্রবাসে চাকরি নিয়েছি কারণ কলকাতা শহরে আসেপাশে আমার অনেক স্মৃতি আছে যা আমাকে  যন্ত্রণা দেয়। ওর উপস্থিত সেই যন্ত্রণাময় স্মৃতি গুলোকে অস্পষ্ট করে দিয়েছিল বলেই আমি ওকে বিয়ে করতে চেয়েছিলাম। কারণ আমার কাছে ভালো থাকার নাম ভালোবাসা।

জীবনে সফলতা অর্জনের জন্য পরিশ্রমের বিকল্প নেই। সুন্দর একটি ফুল ফোটার জন্য যেমন রোদ, জল ও মাটি প্রয়োজন, তেমনি একজন মানুষের জীবনে সফলতার জন্য প্রয়োজন অক্লান্ত পরিশ্রম। ভালোবাসা হল শক্তি, কঠোর পরিশ্রম হল অস্ত্র, আর ব্যর্থতা হল শিক্ষা – এই তিনের সমন্বয়ে গড়ে ওঠে সফলতার সিংহাসন। কিছু দিন ও যেনো ও অ ধৈর্য্য হয়ে যাচ্ছিল।
আমি ওকে অতে বোঝাতে চেষ্টা করেছি ভাইরাল হয়ে লাভ নেই। ক্যারিয়ারে অন্যের সাথে প্রতিযোগিতা করো না, নিজের সাথে প্রতিযোগিতা করো। প্রতিদিন নিজেকে নতুন ভাবে আবিস্কার করো।ভাইরাল হওয়া এক প্রকারের অনলাইন কৌতূহল, যা একই সময়ে আনন্দ এবং হতাশার সৃষ্টি করে। ভাইরাল হওয়া একটি জটিল বিষয়, যা একই সাথে প্রযুক্তি, সৃজনশীলতা এবং মানুষের আগ্রহের উপর নির্ভর করে। এটি শুধুমাত্র একটি পোস্ট নয়, এটি একটি সামাজিক ঘটনার অংশ হয়ে যায়। ভাইরাল হতে হলে আপনাকে এমন কিছু তৈরি করতে হবে যা আপনার দর্শকদের মনে থাকা প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয় এবং তাদের সাথে একটি সংযোগ তৈরি করে। তাই এ জন্য অনেক অনুশীলন প্রয়োজন।
ওর কিছু কম বয়সী বন্ধু বান্ধব হয়েছে। ও ওর ক্যামেরা ম্যান বন্ধুর বুদ্ধিতে। কিছু সাহসী ছবি তুলতে শুরু করলো। আমি বাধা দিই নি। কিন্তু জানেন তো ভার্চুয়াল যৌন পল্লীর আমিও খদ্দের। তাই কিছু নিষিদ্ধ ওয়েব সাইটে ওর ছবি দেখে থাকতে পারলাম না। আসলে প্রথম প্রথম ভেবেছিলাম ওগুলো এই এডিটরের কারসাজি। কিন্তু ওর পোস্ট থেকে বুঝতে পারলাম। ওগুলো ওর ছবি। সরাসরি না বলতে না পারলেও আমি ওকে ওইসব লোকের সাথে কাজ বন্ধ করতে না করলাম কিন্তু প্রতিক্রিয়া একটি শব্দ "হিংসা"

মায়া এমনই এক অদৃশ্য ডোর, যা ছিঁড়ে গেলে সম্পর্কের শূন্যতা আর কোনো শব্দে ভরানো যায় না।যাকে একবার মায়া লাগে, তার ভুল গুনেও মন দোষ খোঁজে না।মায়া বাড়তে বাড়তে একদিন বোঝার বাইরে চলে যায়, আর তখনই শুরু হয় কষ্টের অধ্যায়। অনেক দূরে থেকেও যদি কারো জন্য মন কাঁদে, বুঝবে, মায়ার নামই আসলে সত্যিকারের ভালোবাসা। আমি ওকে হয়তো ভালোবাসি হিংসা করি না। ,,,

53 Views
1 Likes
1 Comments
5.0 Rating
Rate this: