পথের দিশা

গ্রামের ছোট্ট একটি মেয়ে—আরিবা। ছোটবেলা থেকেই তার মা তাকে শিখিয়েছিল নামাজ, কুরআন পড়া আর পর্দার মাহাত্ম্য। কিন্তু শহরে গিয়ে কলেজে ভর্তি হওয়ার পর ধীরে ধীরে সে বদলাতে শুরু করল। বন্ধুদের প্রভাবে সে হিজাব খুলে ফেলল, অবাধ মেলামেশা শুরু করল, অচেনা ছেলেদের সাথে আড্ডায় বসতে লাগল।

তার মা বহুবার বলেছিল,
—“মা, এ পথ ঠিক নয়। আল্লাহর হুকুম ভাঙলে আখেরাতে কঠিন শাস্তি পেতে হবে।”
কিন্তু আরিবা হেসে উড়িয়ে দিত—
—“মা, এগুলো পুরোনো কালের কথা, এখনকার সময় বদলে গেছে।”


এক রাতে আরিবা স্বপ্ন দেখল। বিশাল এক ময়দান, কোটি কোটি মানুষ দাঁড়িয়ে আছে। সূর্য মাথার ওপরে, সবাই ঘামে ভিজে যাচ্ছে, ভয়ঙ্কর চিৎকার, হাহাকার। হঠাৎ সে নিজেকেও সেই ভিড়ের মাঝে দেখতে পেল।

এক ফেরেশতা গর্জে উঠল—
—“এই মেয়েরা যারা আল্লাহর নির্দেশ ভেঙে নিজের সাজে-চলনে গুনাহর পথে চলেছে, সামনে এসো!”

হাজার হাজার নারী কাঁদতে কাঁদতে এগিয়ে গেল। তাদের শরীর আগুনে দগ্ধ হচ্ছিল, তাদের মুখ কালো হয়ে গিয়েছিল। আরিবার বুক কেঁপে উঠল—সে-ও তাদের মাঝে টেনে নেওয়া হলো।


তার সামনে এক বিশাল দাঁড়িপাল্লা। ডান দিকে তার নামাজ, সৎকাজ, কিছু দান-খয়রাত। কিন্তু বাম দিকে রাখা হলো—অশ্লীল চলাফেরা, বেপর্দা থাকা, হারাম বন্ধুত্ব, অমর্যাদা। মুহূর্তেই তার গুনাহের পাল্লা ভারী হয়ে গেল।

আরিবা চিৎকার করে উঠল—
—“হে আল্লাহ! আমাকে আরেকবার দুনিয়ায় ফেরত পাঠান, আমি এবার ঠিক হয়ে যাব।”

কিন্তু এক ভয়ংকর আওয়াজ ভেসে এলো—
—“আজ আর ফিরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। দুনিয়ায় সময় পেয়েছিলে, সতর্কবার্তা পেয়েছিলে, কিন্তু তুমি অমান্য করেছ।”


আরিবা হঠাৎ ঘুম ভেঙে উঠে বসে। শরীর কাঁপছে, মুখ ভিজে গেছে চোখের পানিতে। সে সাথে সাথে সিজদায় পড়ে গেল।
—“আল্লাহ, আমাকে মাফ করুন। আমি আর ভুল পথে চলব না।”

পরদিন থেকেই তার জীবনে পরিবর্তন এল। সে হিজাব পরা শুরু করল, নফল নামাজ আদায় করল, এবং তার বান্ধবীদেরও সতর্ক করতে লাগল—
—“বোনেরা, ইসলাম বহির্ভূত চলাফেরা সাময়িক আনন্দ দিতে পারে, কিন্তু কিয়ামতের দিনে এটি হবে ভয়ঙ্কর শাস্তির কারণ। এখনই ফিরে আসো।”