রিমনের জীবন যুদ্ধের গল্প

রিমন নামের এক তরুণ ছিলো। ছোট্ট গ্রামে জন্ম, দরিদ্র পরিবারের সন্তান। তার বাবা ছিলেন দিনমজুর আর মা গৃহিণী। শৈশব থেকেই রিমন বুঝতে পেরেছিলো—জীবন খুব সহজ নয়। স্কুলে যেতে হলে তাকে অনেক কষ্ট করে বই কিনতে হতো, আর বেশিরভাগ সময়েই পুরোনো বই দিয়েই পড়াশোনা চালাতো। তবুও সে পড়াশোনায় ছিলো মনোযোগী।

একদিন স্কুলে শিক্ষক বলেছিলেন, “পরিশ্রম ছাড়া জীবনে কিছুই পাওয়া যায় না।” কথাটা রিমনের মনে গেঁথে যায়। সে ঠিক করলো, যত কষ্টই হোক, নিজের জীবনে কিছু একটা অর্জন করবেই। সকালে পড়াশোনা, বিকেলে মাঠে কাজ—এই ছিল তার প্রতিদিনের রুটিন। বন্ধুরা যখন খেলাধুলায় মেতে থাকতো, রিমন তখন মায়ের কাজে সাহায্য করতো বা রাত জেগে পড়াশোনা করতো।

সময়ের সাথে সাথে সে এসএসসি পাস করলো ভালো ফলাফলে। কিন্তু কলেজে ভর্তি হওয়ার খরচ জোগাড় করা পরিবারের জন্য ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। মা তার সঞ্চিত সামান্য গয়না বিক্রি করে দিলেন, বাবাও কয়েকদিন অতিরিক্ত কাজ করলেন। এই ত্যাগ রিমনের চোখে জল এনে দিলো। সে আরও দৃঢ় হলো।

কলেজ জীবন সহজ ছিল না। পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশনি করতো, যাতে নিজের খরচ চালাতে পারে। ধীরে ধীরে সে আত্মনির্ভর হয়ে উঠলো। একদিন তার শিক্ষক বললেন, “তুমি যদি স্বপ্ন দেখো আর তা পূরণের জন্য লড়াই করো, তবে একদিন সফল হবেই।”

কয়েক বছর পর, রিমন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলো। এখনো অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে, কিন্তু তার ভেতরে এক অদম্য শক্তি কাজ করছে। সে জানে, বাবা-মায়ের স্বপ্ন আর নিজের স্বপ্ন একসাথেই পূর্ণ করতে হবে।

রিমনের গল্প আসলে হাজারো মানুষের গল্পের প্রতিচ্ছবি। জীবনে কষ্ট আসবে, ব্যর্থতা আসবে, কিন্তু আশা আর অধ্যবসায় থাকলে সাফল্য ধরা দিতেই পারে।