পিশাচী গজরার রাত

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
পুনে শহরের কলেজ থেকে চার বন্ধু—রোহিত, ইশিতা, আদিত্য আর মীরা—একসাথে বেরিয়েছিল এক উইকেন্ড ট্রিপে। তারা ঠিক করেছিল শহরের কোলাহল থেকে দূরে কোনো শান্ত গ্রামের পুরনো হাভেলিতে রাত কাটাবে।

অনলাইনে তারা একটা হাভেলির খোঁজ পায়—সাওয়ন্তবাড়ি হাভেলি, যেটা ভিরগাঁও নামের এক অজ গ্রামে অবস্থিত। হাভেলিটা এখন পরিত্যক্ত, তবে গ্রামের মোড়ল অনুমতি দিলে ওখানে থাকা যায়।

গ্রামে পৌঁছে তারা জানতে পারে, হাভেলিটা অভিশপ্ত। ১৯৬৫ সালে এক রাজপুত পরিবারের বধূ কমলা দেবী সেখানে গলায় গজরা বেঁধে আত্মহত্যা করেন। শোনা যায়, প্রতিটা বর্ষার রাতে যখন জুঁই ফুল ফোটে, তখন কমলার আত্মা ঘোরে গজরার ঘ্রাণ নিয়ে, আর যে মেয়েরা গজরা পরে—তাদের দখল করে সে।

বন্ধুরা মজা করে গল্পটা উড়িয়ে দেয়। রাতের খাবারের পর মীরা, গ্রামের নিষেধ অমান্য করে, স্থানীয় দোকান থেকে জুঁই ফুলের গজরা কিনে পরে নেয়। হঠাৎ বাতাস থেমে যায়। গজরার ঘ্রাণটা ধীরে ধীরে বদলে যেতে থাকে—তাজা ফুলের ঘ্রাণ যেন পচা মাংসের গন্ধে রূপান্তরিত হয়।

রাত বাড়ে। সবাই ঘুমিয়ে পড়লেও মীরার ঘুম আসে না। সে দেখে, তার ঘরের আয়নার সামনে এক মহিলা দাঁড়িয়ে—চোখে আগুন, গলায় পচা গজরা, মুখে হঠাৎ এক অশুভ হাসি। মীরা চিৎকার করে ওঠে, কিন্তু বাকিরা কিছু শুনতে পায় না।

পরদিন সকালে মীরাকে আর খুঁজে পাওয়া যায় না। তার ঘরের দরজা বন্ধ ছিল ভিতর থেকে। আয়নার সামনে শুধু পড়ে ছিল সেই গজরা—যেটা এখন পচে কালচে হয়ে গেছে।

গ্রামের মোড়ল এসে শুধু বললেন,
"পুনরাবৃত্তি হল। পিশাচী আবার ফিরে এসেছে।"

রোহিত, ইশিতা আর আদিত্য কোনোক্রমে গ্রাম ছেড়ে পালায়। তবে তারা জানে—কমলা দেবী এখন মীরার দেহে বাস করে। আর যতদিন জুঁই ফুল ফুটবে, ততদিন গজরার ঘ্রাণে মৃত্যু ছড়াবে।
54 Views
8 Likes
0 Comments
5.0 Rating
Rate this: