কোনো এক দিন সাগর দুপুরে খেয়ে একটু রেস্ট নিয়ে ঘুড়তে বেরিয়েছে। গ্রামের পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে চলে গেলো অনেক দুরে। যেখানে তার পরিচিত কেউ নেই। সাগরের এমন একা একা ঘোরাঘুরি করার অনেক শখ ছোট থেকেই। মাঝে মাঝেই এভাবে ঘুরতে যায়। সেদিন আকাশটা একটু একটু মেঘলা ছিল। তাই মনে করে ছাতাটা হাতে নিয়েই বেরিয়েছে।
একা একাই গহীন বিলের মধ্যে হাটছে। দু তিন কিলোমিটারের মধ্যে কোনো মানুষের অস্তিত্ব দেখা যায়না। শুধুই ধানখেত আর মাঝখানে ছোট কাঁচা রাস্তা। একটু পরে সাগর খেয়াল করলো মেঘে অন্ধকার হয়ে আসছে চারিদিক। আবার আকাশে একটু একটু বিদুৎ চমকানোর আলো।
বিদুৎ চমকানো কে সাগর খুব ভয় পেতো ছোটবেলা থেকে। তাই একটু একটু ভয় পেতে শুরু করলো। চারিদিকে তাকিয়ে কাউকেই দেখতে পাচ্ছে না। ভয়টা আরো বেশি বেড়ে গেলো। একটু পরেই শুরু হলো মুষলধারে বৃষ্টি। অনেক বেশি বিদ্যুৎ চমকাচ্ছিলো। সাগর ভয়ে ভয়ে সামনের দিকে এগোতে লাগলো।
কিছুদূর যাওয়ার পর হঠাৎ একটা বিদুৎ চমকালো। তার সামনে পুরো আলোকিত হয়ে গেলো। বিকট শব্দের পরে নিজেকে অন্য ভাবে আবিষ্কার করলো । সাগরের মনে হলো এটা তাকেই আঘাত করেছে। তাই কিছুক্ষনের জন্য ভাবলো সে এই পৃথিবীতে নেই। বিদ্যুৎ চমকানোতে সে দুনিয়া থেকে চলে গেছে। প্রায় ৪০ সেকেন্ডের মতো তার এমন ধারনা ছিল। ৪০ সেকেন্ড পর চারদিকে তাকিয়ে দেখতে লাগলো। তখন তার মনে হলো সে তো বেচে আছে। ভাবতে লাগলো এটা কি করে হলো। এমন ভাবতে ভাবতে আবার হাঁটা শুরু করলো। ২ থেকে ৩ মিনিট পরে আবার সেই একই ঘটনা ঘটলো আরেকবার । তখন ধরেই নিলো আজ সে বেচে ফিরতে পারবে না। কারন বজ্রপাত গুলো তার কাছেই পরছে। জীবনের আশা ছেড়ে দিয়ে চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে পরলো।
কিছুক্ষণ পরে সে বুঝতে পারলো তাকে কোনো এক মহিলা ডাকছে। চোখ খুলে তাকিয়ে দেখলো ৩০ থেকে ৩৫ বছর বয়সী এক মহিলা তাকে বলছে, তুমি এখানে দাড়িয়ে আছো কেনো?
তাকে দেখে কিছুটা সাহস ফিরে পেলো। উত্তরে তাকে সব বলতে লাগলো। মহিলাটা তাকে ধরে হাটতে হাটতে এক বাড়ি গিয়ে উঠলো। সাগর তো বৃষ্টি তে কিছুটা ভিজে গিয়েছে। তাই ঠান্ডায় কাপছিলো। সেই বাসার একজন কিছু কাপর নিয়ে এসে বললো ভেজা কাপড় পরিবর্তন করতে। ভেজা কাপড় পরিবর্তন করার পর বাসার তাকে খেতে দিলো। তারপর সবাই বিছানা দেখিয়ে দিয়ে ঘুমাতে বললো। সাগর ঘটনাটা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পরলো। সন্ধ্যার সময় উঠে পরলো। ওই বাসার সবার কাছ থেকে জানতে পারলো তার খুব কাছেই ছোট একটা গাছে পড়েছিল। সেই বাসার একজন পুরুষ লোক তাকে অন্য রাস্তা দিয়ে গাড়িতে করে বাসায় পৌঁছে দিয়ে চলে গেলো।
তারপর থেকে সাগর কখনোই কিছুতেই ভয় পায়না। কারণ সে ভাবে মৃত্যু যেকোনো সময় আসতে পারে। ভয় পেলেও আসবে না পেলেও আসবে। তাহলে ভয় পেয়ে লাভ কি। ওই মানুষগুলোকে সে কখনোই ভুলে যায়নি । যারা না চিনেও বিপদে তার পাশে ছিল।
Lisa
golpo ta onek valo lagloo 🙂
রনি
Thanks