গ্রামের মেয়ের ভালোবাসা

আমিঃ নিশি কোথায় ওকে দেখছি না কেন ।

আমার কথা শুনে সবাই মুখ কালো করলো । তারপর যেটা বললো সেটা শুনে এবার আমি অবাক হয়ে গেলাম । কারন তারা বললো,,,,,,,,,,,,,,,

আব্বুঃ নিশি বাসায় নেই ।

আমিঃ নেই মানে কোথায় গেছে ।

চাচ্চুঃ রেখার বাসায় গেছে ।

আমিঃ মানে বুঝলাম না ।

আম্মুঃ রেখার বিয়ে হয়ে গেছে । নিশি রেখার শ্বশুরবাড়ি বেড়াইতে গেছে ।

আমিঃ কিহহ আপুর বিয়ে হয়ে গেছে ।

আম্মুঃ হুমম ।

আমিঃ ওহহ আচ্ছা (মন খারাপ করে) ।

আমার একমাত্র আপু তার বিয়েতেই আমি উপস্থিত থাকতে পারলাম না । কত বড় হতভাগা আমি । তারপর আবার আম্মু বললো,,,,,,,,

আম্মুঃ নিশির অনেক মন খারাপ ছিল । সারাদিন রুমে বসে থাকতো । তার অনেক জেদ সেও শহরে পড়াশোনা করতে যাবে । আমরা ওকে যেতে দেই নি । তাই সবসময় চুপচাপ মনমরা হয়ে থাকে । আর তাছাড়া তোর চিন্তা তো সবসময় করেই । তাই ওর মন ভালো করার জন্য আমরাই ওকে জোর করে রেখার বাসায় পাঠিয়েছি ।

আমিঃ ওহহ আচ্ছা (মন খারাপ করে) ।

মনে মনে ভাবলাম এতো কষ্ট করে এলাম নিশির সাথে আমার দেখা হবে না তাহলে । ভাবতেই মনটা খারাপ হয়ে গেল । তারপর আমি বললাম,,,,,,

আমিঃ যাক ভালোই হলো পিচ্চিটা থাকলে আমাকে জালিয়ে মা*র*তো । কয়েকদিন তো শান্তিতে থাকতে পারবো । (মিথ্যা নাটক করলাম) ।

আম্মুঃ ও আর এখন পিচ্চি নেই । দেখলে তুই অবাক হবি ।

আমিঃ হ্যাঁ দেখা যাবে ।

আব্বুঃ আচ্ছা অনেক দূর জার্নি করে আসছিস এখন নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে রেস্ট নে । আমি আর তোর চাচ্চু বাজারে যাবো ।

আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে আব্বু ।

বলেই আমি আমার সেই চিরচেনা রুমে চলে আসলাম । রুমে ঢুকেই তো আমি পুরাই অবাক । একদম সাজানো গোছানো রুম । পরিষ্কার একটা রুম । আমি যেমন রেখে গেছিলাম তার চেয়েও সুন্দর করে রাখা ।

আমি শুধু রুমটা ঘুরে ঘুরে দেখছি । তখন পিছন থেকে আম্মু বলে উঠলো,,,,,,

আম্মুঃ এগুলো সব নিশি পা*গ*লি*র কাজ । সারাক্ষণ তোর রুমে এসে বসে থাকে আর এতো সুন্দর করে গুছিয়ে রাখে ।

আমিঃ বাহহ পিচ্চিটা তো ভালোই ঘর গোছাতে জানে ।

আম্মুঃ হুমম । আচ্ছা শোন আমি রান্না ঘরে গেলাম তুই ফ্রেশ হয়ে কিছুক্ষণ রেস্ট নে । তারপর খাবার হয়ে গেলে আমি তোকে ডেকে দিবো কেমন ।

আমিঃ ঠিক আছে আম্মু ।

বলেই আম্মু চলে গেল । আমি ওয়াশরুম থেকে গোসল করে এসে ড্রেস চেঞ্জ করে বিছানায় একটু গা এলিয়ে দিলাম ।

গা এলিয়ে দিতেই কখন যে ঘুমিয়ে গেছি নিজেও জানি না । খাবার সময় আম্মু ডাকতে এসে আমাকে ঘুমানো অবস্থায় দেখে আর ডাক দিলো না । ভাবলো আমি অনেক ক্লান্ত ।

সবাই খাওয়ার সময় আম্মু বলে উঠলো,,,,,,

আম্মুঃ রাকিবের আব্বু ?

আব্বুঃ হুমম বলো ।

আম্মুঃ নিশিকে একটা ফোন করে আসতে বলো ।

আব্বুঃ আমিও সেটাই ভাবছি ।

চাচ্চুঃ কেন ভাইজান ।

আম্মুঃ দেখো আমি জানি রেখার বাসাতেও ও মন খারাপ করেই থাকবে । তোমার মেয়েকে আমরা খুব ভালোই চিনি । যদি এখানে এসে রাকিব কে দেখে ও আমাদের থেকেও অনেক বেশি খুশি হবে ।

আব্বুঃ তাহলে কি ফোন করবো ।

চাচিঃ আমার মনে হয় করাই ভালো । কারন পরে যদি শুনে আসার পরেও তাকে জানানো হয় নি তাহলে আরেক কান্ড ঘটে ফেলবে ।

আম্মুঃ হুমম ঠিক বলেছো । তোমার মেয়েটা এমন কেন ?

চাচিঃ আমি কি করবো । তোমরাই তো ওকে আদর দিতে দিতে বাঁদর বানিয়েছো ভাবি ।

বলেই সবাই হাসতে লাগলো । তারপর সবাই খাওয়া দাওয়া শেষ করলো । খাওয়া শেষ করে আব্বু নিশিকে ফোন করলো । রিসিভ করতেই,,,,,,,,,

নিশিঃ আসসালামু আলাইকুম বড়আব্বু ।

আব্বুঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম । কেমন আছো ।

নিশিঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো । আপনারা কেমন আছেন ?

আব্বুঃ আমরাও ভালো আছি মামুনি । তবে এখন আরো ভালো আছি ।

নিশিঃ আরো ভালো কেন ?

আব্বুঃ তুমি যদি এখানে থাকতে তাহলে তুমি আমাদের চেয়েও আরো বেশি ভালো থাকতে ।

নিশিঃ তাই নাকি । ঘটনা কি বলেন তো বড়আব্বু ।

আব্বুঃ সেটা কি ফোনেই শুনবা নাকি নিজে এসে দেখবা ।

নিশিঃ আগে শুনি তারপর ভাববো যাবো কি যাবো না ।

আব্বুঃ বললে তুমি না এসে থাকতেই পারবে না ।

নিশিঃ তাহলে বলেন আগে শুনি ।

আব্বুঃ রাকিব বাসায় আসছে ।

নিশিঃ কিহহহহহহহ । রা..রা...কি...ব ভাইয়া ।

আব্বুঃ হুমম ঠিকই শুনছো ।

নিশিঃ আপনি ফোন রাখেন আমি এক্ষুণি যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছি । আল্লাহ হাফেজ ।

বলেই নিশি ফোন কেটে দিলো ।

আব্বুঃ হ্যালো । হ্যালো ।

চাচ্চুঃ কি হইছে ভাইজান ।

আব্বুঃ তোর মেয়ে শুনেই ফোন কেটে দিছে । সে রেডি হচ্ছে আসার জন্য । আর এক সেকেন্ড ও সে বরবাদ করতে চায় না তাই আমার সাথেও আর কথা বললো না । কেটে দিছে ।

চাচি আর চাচ্চু মুচকি হাসতে লাগলো । তারপর আম্মু বললো,,,,,,

আম্মুঃ বলেছিলাম না সব চাইতে বেশি ও খুশি হবে ।

তারপর আব্বু চাচ্চুকে বললো,,,,,,,
""
""
""
চলবে,,,,,,,,,,,,,,

কপি করা কঠোর ভাবে নিষেধ । পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন । ধন্যবাদ ।