গ্রামের মেয়ের ভালোবাসা

আমিঃ আসসালামু আলাইকুম মহাজন । আমি যাচ্ছি । দেখা করতে বলেছিলেন ।

মহাজনঃ একটু দাঁড়াও ।

বলেই মহাজন ভিতরে চলে গেল । কিছুক্ষণ ফিরে এসে যা বললেন শুনে তো আমি অবাক । কারন উনি বললেন,,,,,,,,,,,,,

মহাজনঃ এই নাও ।

আমিঃ কি এটা ।

মহাজনঃ এখানে কিছু টাকা আছে । তোমার কাজে লাগবে ।

আমিঃ না না আঙ্কেল আমার টাকা লাগবে না । আপনি আমার জন্য অনেক কিছু করেছেন । এই ঋনটাই আমি শোধ করতে পারবো না ।

মহাজনঃ আরে নাও । যাওয়ার সময় তোমার পরিবারের জন্য কেনাকাটা করে নিয়ে যাবে । নাও বলছি ।

আমি প্রথমে নিতে রাজি না হলেও মহাজনের অনেক জোরাজুরিতে নিয়ে নিলাম । তারপর বললাম,,,,,,,,

আমিঃ আমি এখন আসি তাহলে ।

মহাজনঃ হুমম দেখে শুনে যেও ।

আমিঃ আল্লাহ হাফেজ ।

মহাজনঃ আল্লাহ হাফেজ ।

বলেই আমি সেখান থেকে চলে আসলাম । এসে বাসার সদস্যদের জন্য কিছু কেনাকাটা করলাম । নিশির জন্য স্পেশাল কিছু কিনলাম ।

তারপর রেল স্টেশনে দাঁড়িয়ে আছি । কিছুক্ষণ পর গাড়ি আসতেই আমি আমার সিটে চলে আসলাম । গাড়ি ছুটতে লাগলো তার আপন গতিতে ।

ওদিকে,,,,,,,,,,,,,

রাইসা আঙ্কেলকে নিয়ে গ্যারেজে আসছে । আঙ্কেল বললো,,,,,

আঙ্কেলঃ রাকিব । রাকিব আছো ।

একটা ছেলে বের হয়ে এসে বললো,,,,,

ছেলেটিঃ কাকে খুঁজছেন ?

আঙ্কেলঃ এখানে রাকিব থাকে না ।

ছেলেটিঃ থাকে কিন্তু সকাল থেকে দেখছি না ভাই কোথায় ।

আঙ্কেলঃ আচ্ছা এই গ্যারেজটা কার উনার সাথে কথা বলবো ।

ছেলেটিঃ আসেন আমি নিয়ে যাচ্ছি ।

তারপর ছেলেটি মহাজনের কাছে নিয়ে গেল ।মহাজন বললো,,,,,

মহাজনঃ জ্বি কারা আপনারা ।

আঙ্কেলঃ আপনি আমাদের চিনবেন না । রাকিব কোথায় আমরা তার সাথে দেখা করবো । আপনি কি বলতৃ পারবেন সে কোথায় ?

মহাজনঃ সে আজকে সকালে গ্রামের বাড়িতে চলে গেছে ।

আঙ্কেলঃ ওহহ আসবে কবে সেটা কি বলে গেছে ।

মহাজনঃ না ।

আঙ্কেলঃ ওহহ আচ্ছা ঠিক আছে । ধন্যবাদ । (মন খারাপ করে) ।

এদিকে,,,,,,,,,,,,

আমার মনটা কেমন জানি অস্থির হয়ে আছে । কতদিন পর আব্বু আম্মু চাচ্চু চাচি নিশির মুখ দেখবো ভাবতেই মনের ভিতর এক ভালো লাগা কাজ করছে ।

যাত্রা পথ যেন শেষ ই হচ্ছে না । অবশেষে ছয় ঘন্টা জার্নি করে বগুড়া রেল স্টেশনে পৌছে গেলাম । সেখান থেকে একটা সিএনজি নিয়ে সরাসরি কাহালু চলে আসলাম ।

আর সেখান থেকে আমার সেই চিরচেনা ছোট্ট গ্রামে চলে আসলাম । কতদিন পর আমার প্রাণের গ্রামটা দেখছি । যেন চোখটা জুড়িয়ে যাচ্ছে ।

গ্রামের মেঠো পথ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি । কাঁধে একটা ব্যাগ । সাথে হাতে আরো কয়েকটা ব্যাগ । মেঠো পথ দিয়ে হেঁটে বাড়ির কাছে পৌছাতেই হার্টবিট টা কেন জানি জোরে চলতে শুরু করলো ।

আমি এখন বাড়ির মেইন গেইটে দাঁড়িয়ে আছি । দরজা খুলে প্রবেশ করতেই দেখি আমার মা জননী উঠানের নিচের ফুল গাছটায় পানি দিচ্ছে ।

আমাকে এখনো লক্ষ্য করেনি । আম্মুকে অনেক দিন পরে দেখে চোখের পানি বাঁধা মানলো না । টপটপ করে বয়ে পড়তে লাগলো ।

তারপর নিজের চোখের পানি মুছে আমি বলে উঠলাম,,,,,,,

আমিঃ আম্মু ।

আমার ডাক শুনে আম্মু আস্তে আস্তে আমার দিকে তাকালেন আর বললেন,,,,,

আম্মুঃ কে ?

তারপর আমি আম্মুর আর একটু কাছে গিয়ে বললাম,,,,,,,

আমিঃ আম্মু আমাকে চিনতে পারছো ।

আম্মু আমাকে দেখে একদম থ হয়ে গেছে । একদম পুরো অবাক হয়ে আমতা আমতা করে বললো,,,,,,,,

আম্মুঃ রা,,রা,,কি,,ব,,রাকিব ।

আমিঃ হ্যাঁ আম্মু আমি তোমার ছেলে রাকিব ।

তারপর আম্মু আর কিছু না বলে দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো আর জোরে জোরে কান্না করতে লাগলো । আর বলতে লাগলো,,,,,,,

আম্মুঃ এতো দিন কই ছিলি বাবা । একটা বার ও এই মায়ের কথা মনে পড়ে নি । একটা বার কি ফোন করাও যেত না । জানিস তোকে খুঁজতে ঢাকা পর্যন্ত গিয়েছিল । কিন্তু পায় নি । আমরা তো ভাবছি তুই.....

আমিঃ সরি আম্মু । ভুল হয়ে গেছে ।

অনেক্ষন জড়িয়ে ধরে কাঁদার পর আম্মু আমাকে ছেড়ে দিল । তারপর আমার হাত পা বুক ভালো করে দেখতে লাগলো । এসব দেখে আমি বললাম,,,,,

আমিঃ আরে আম্মু কি করছো ।

আম্মুঃ দেখছি আমি তো স্বপ্ন দেখছি না ।

আমিঃ আম্মু আমি তোমার সামনে বাস্তবে দাঁড়িয়ে আছি ।

তারপর আম্মু আমার কপালে গালে অনেক গুলো চুমু খেল । অনেক দিন পর মায়ের ভালোবাসার স্পর্শ পেলাম । তারপর আমি বললাম,,,,,,

আমিঃ আম্মু ভিতরে যাইতে দিবা না নাকি এখানেই থাকবো ।

আম্মুঃ আরে চল ভিতরে চল ।

তারপর আমি ভিতরে আসলাম আম্মুর সাথে । ভিতরে আসতেই আম্মু জোরে জোরে বলতে লাগলো,,,,,,,,

আম্মুঃ তোমরা কে কোথায় আছো দেখে যাও কে আসছে ।

আম্মুর কথায় আব্বু,,চাচ্চু,,চাচি সবাই দৌড়ে এলো । আমাকে দেখে তারাও একদম হা হয়ে দাড়িয়ে রইলো । আর সবাই একসাথে বললো,,,,,,,

সবাইঃ রাকিইইইব ।

আমিঃ কেমন আছো তোমরা সবাই ।

আমার কথার উত্তর না দিয়ে সবাই একসাথে আমাকে জড়িয়ে ধরলো । আর আম্মুর মতো সবাই একই কথা বলতে লাগলো এতোদিন কই ছিলাম ।

উনাদের কেও অনেক কথা বলে শান্ত করলাম । সবাই কে দেখলাম কিন্তু নিশিকে দেখতে পেলাম না । তারপর আমি বললাম,,,,,,

আমিঃ নিশি কোথায় ওকে দেখছি না কেন ।

আমার কথা শুনে সবাই মুখ কালো করলো । তারপর যেটা বললো সেটা শুনে এবার আমি অবাক হয়ে গেলাম । কারন তারা বললো,,,,,,,,,,,,,,,,
""
""
""
চলবে,,,,,,,,,,,,,

কপি করা কঠোর ভাবে নিষেধ । পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন । ধন্যবাদ ।