মায়া জড়ানো ভালোবাসা
অডিও মোড
00:00
00:00
গতি:
ভলিউম:
(আমি বেশ কিছুক্ষণ রিয়া কে ফোন দিলাম। কিন্তু রিয়ার তো ফোন এখনও বন্ধ, ধুর ভাল লাগে না,, এই রিয়া কি বুঝে না আমি তাকে ফোন দিচ্ছি,,। আর ফোন দিবো না আর সে দিলেও ধরবো না,,।
ভাবতে ভাবতে রিয়ার ফোন। কিন্তু আমি প্রথম বার ফোন রিসিভ করলাম না। আমার ফোন দিলো তাও রিসিভ করলাম না,, কিন্তু এইবার রিসিভ করলাম....)
আমি:: হুম বলো কি হয়েসে,,?
রিয়া :: ফোন দিচ্ছি রিসিভ করছো না কেন..?
আমি-: এমনি,,..
রিয়া:- এমনি মানে,, ওহ আমি তোমাকে ফোন দিয়ে বিরক্ত করি তাই না,, ঠিক আছে কথা বলতে হবে না আমার সাথে,,,।
((আর কিছু না বলেই ফোন টা কেটে দিলো। যেইখানে আমার রাগ হওয়ার কথা সেইখানে সে উল্টো রাগ করে ফোন কেটে দিলো। ধুর ধুর,, কিসের জন্য যে এমনি বলতে গেলাম। এখন উল্টো তার রাগ ভাঙ্গাতে হবে। কিন্তু কিভাবে, কিভাবে..? হুম পাইছি,,, আমি রিয়া কে কয়েক বার ফোন দিলাম,, কিন্তু সে আমার ফোন রিসিভ করছে না। তাই তাকে sms দিলাম,,, যে
*আম্মু জেনে গেছে তোমার আর আমার বেপার টা আর আম্মুর তোমাকে খুব পছন্দ হয়েছে।*
Sms টা যাওয়ার সাথে সাথে রিয়া আমাকে ফোন দিলো,,,
রিয়া-: কি বলো তুমি, আগে বলো নি কেন..?
আমি:- বলতে দিছো কই, তার আগেই তো রাগ করে ফোন কেটে দিলা,,
রিয়া:- এই আম্মু কি বলছে বলোনা,,,
আমি:- বললাম তো যে আম্মুর তোমাকে খুব পছন্দ হয়েছে,,,।
রিয়া:- শোনো একটা কথা বলি,,,
আমি:- হুম বলো,,
রিয়া-: তোমার জ্বর আছে এখনো,,,
আমি:- না,,
রিয়া:: তাহলে কাল সকালে আমাকে তোমার আম্মুর কাছে নিয়ে যাবে,,,
আমি-: কেন? আজ তো ঘুরেই গেলে,,
রিয়া: - চুপ করো,, আজ গেছি তোমার বন্ধুর পরিচয়ে কাল যাবো তোমার বঊ এর পরিচয়ে,,
আমি:- জ্বী না তা হবে না, বিয়ের আগে তো শ্বশুর বাড়ি আসতে হবে না,।।
রিয়া:: তুমি নিয়ে যাবা কি না,,,?
আমি:: আচ্ছা ঠিক আছে।
(এরপর আমি আরো কিছুক্ষণ রিয়ার সাথে ভালোবাসার গল্প করলাম,,। সেই গল্প গুলো আপনাদের শুনতে হবে না। কেননা, গল্পের চেয়ে আপনারাই এই সব বিষয়ে ভালো জানেন।)
( পরের দিন আমি রিয়া কে আনতে তার বাসার নিচে গেলাম। রিয়া নিচে নেমে এলো। এরপর আমি রিয়াকে কে রিক্সায় উঠালাম।
রিক্সায় উঠার সময় আমি রিয়া কে বললাম,,,
আমি:- দেখো মেয়ে টা কিভাবে ছেলে টাকে আইস্ক্রিম খাইয়ে দিচ্ছে,,,।
রিয়া:: কি বললা তুমি,,?
এই যা কাম সারছে,, আমি তো ঝোকে বলে দিলাম যে ওই মেয়ের দিকে তাকিয়েছি, এখন কি হবে আমার,,,।
আমি:: - কই না না নাতো কিছু না,,,।
রিয়া:- না, তুমি একটু আগে কই তাকাইলা,,,
আমি:- কই কথাও না তো, আমি তো শুধু তোমার দিকেই তাকিয়ে আছি,,। ( বলেই দাঁত জোড়ে বের করে একটু হাসি দিলাম)
রিয়া:- মিথ্যে কথা বলার জায়গা পাওনা। তুমি নামবা নাকি আমি নেমে যাবো,,,।
আমি:: ঠিক আছে তোমাকে নামতে হবে না,,, আমিই তোমার পাশে বসছি,, হা হা হা হা.....
রিয়া:: ওই মেয়ের দিকে তাকানোর সময় মনে ছিলো না,,, এখন হয় নামবে নইলে তোমাকে রিক্সা চালাতে হবে,,,,
আমি:: - এই বাচ্চা মানুষটাকে এমন শাস্তি দিও না,,,,
রিয়া: - হি হি হি হি... বাচ্চা আর তুমি,,, ঠিক সময় মত বিয়ে দিলে....
আমি:: বিয়ে দিলে কি,,,।
রিয়া:- না কিছু না,, আমাকে না রাগিয়ে যা বলছি করো নইলে আমিই নেমে যাবো,,,
আমি:- আচ্ছা ঠিক আছে,,,।
(এই বলে আমি রিক্সা চালানো শুরু করি,,, একি আমি এতো পা চালাচ্ছি কিন্তু রিক্সা এগোচ্ছে না,,। আরে ধুর এই টা তো মটর চালিত এর তো চেইন টা খুলায় রাখছে,,,। কিন্তু চালু করে কিভাবে,,,। আমার কান্ড দেখে পিছন থেকে রিয়া মিটি মিটি হাসছে,,। আমিও জোরে জোরে বলছি,, বেঁচে থাকলে শুধু মেয়ে কেন, দাদির বয়সি আর কারো দিকেও তাকাই তাম না।। আমার এই কথা শুনে রিয়া আরো জোরে হেসে দিলো,,,।)
রিয়া - হইছে মশাই, অনেক রিক্সা চালিয়েছেন, আর চালাতে হবে না, এখন এসে বসেন,,,।
আমি:: যাক বাঁচা গেলো,,( আসতে করে বললাম, কিন্তু রিয়া শুনে ফেলেছে)
রিয়া: জ্বী না মশাই, শাস্তি এখনো বাকি আছে,,।
আমি: আবার কি করতে হবে,,
রিয়া :: আমার জন্য আইস্ক্রিম নিয়ে আসেন,, সারা রাস্তা আপনি হাত দিয়ে আমার সামনে আইস্ক্রিম ধরে
থাকবেন আর আমি খাবো,,,।
আমি:: - হায় আল্লাহ এ তুমি আমারে কার পাল্লায় ফেললা...
রিয়া : - ওই যাবা কি না,,,।
আমি:: যাচ্ছি যাচ্ছি,, এতো রাগ হওয়ার কি আছে,,,
রিয়া:: এইতো গুড বয়,,,।
(কি আর করার তার সব শাস্তি আমার মাথা পেতে নিতে হলো। এরপর আমি আইস্ক্রিম নিয়ে তার মুখের সামনে ধরে আছি,,। সে খাচ্ছে আর মিটিমিটি হাসছে,,। কিছুক্ষণ পর,,,)
রিয়া:: থাক আর ধরে থাকতে হবে না, আজ কিছু বললাম না,,
(চিন্তা করে দেখেন এতো কিছু বলার পরও নাকি বলে আজ কিছু বললাম না,,, তাই লে এতো ক্ষণ কি বললো,,, না থাক বেশি প্যাচাবো না,, নইলে আবারও ঝর শুরু হতে পারে।)
-আমি': আমার হাত ব্যাথা হয়ে গেছে, এখন টিপে দাও,
,,
রিয়া:: হুহ,, আইছে,, নিজে দোষ করছো তাই শাস্তি পাইছো, আবার এখন বলছো হাত টিপে দিতে,,,।
আমি:- আমার আসলেই হাত ব্যাথা করছে কিন্তু,,
রিয়া:: তাতে আমার কি..?
আমি:ঠিক আছে যাও দিতে হবে না,,
রিয়া:: বাহ বা,, কি অভিমান,, থাক আর কান্না করা লাগবে না এতিম টা,, দেও টিপে দিচ্ছি,,,,,
কিন্তু আমারও তো একটু ইগো আছে। এতো সহজে হার মানলে চলে,,, তাই আমিও বললাম,,
আমি:: লাগবে না, একাই হাত ব্যাথা সেরে যাবে,,।
রিয়া:: ওকে,,,
এটা কি হলো, আমি ভেবেছিলাম একটু ভাব দেখাই, এখন তো দেখি তার বিপরিত হয়ে গেলো,,। কথায় আছে,, অতি লোভে তাতি নষ্ট, আমারও তাই হলো, ধুর ধুর,,, মন চাইতেছে নিজের কপালে ফম দিয়া নিজেই দুইটা বারি মারি, অন্য কিছু দিয়া মারলে যদি ব্যাথা পাই, তাই ফম এর কথা বললাম,, যাই হোক, have a relax,,, হা হা হা.....
কিন্তু রিয়া আমার হাত টান দিয়ে নিয়ে বললো,,,
রিয়া :: তুমি যে ভাব দেখাচ্ছো সেইটা আমি বুঝে গেছি,, আর ভাব দেখাইতে হবে না,, দেও হাত টিপে দিচ্ছি,,,
যাক বাবা আর কিছু বলা যাবে না, দিচ্ছে দিক,,, কিছুক্ষণ পর রিয়া বললো,,,
রিয়া:: - এই শোনো না,,
আমি:: - হুম বলো,,
রিয়া:: প্রথম শ্বাশুড়ি আম্মার সাথে দেখা করতে যাচ্ছি খালি হাতে গেলে হবে,,।
আমি:: এখনও তাও বিয়েই হয়নি তাহলে হাত পূরণ করবো কি ভাবে,, হা হা হা...
.
রিয়া: - ধেৎ তোমার খালি সব সময় উলটা পালটা কথা,, আমি সিরিয়াসলি বলছি,,,।
আমি:: আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে,, তা কি নিতে চাচ্ছো,,,
রিয়া:: আমি ভাবছি, আম্মুর জন্য একটা জায়নামাজ, আর একটা কোর-আন শরীফ নিবো,,
আমি:: বাহ, আম্মুকে পটানোর তো পুরাই ব্যবস্থা করে ফেলেছো,,,
রিয়া:: মজা না করে বলো না, এইটা এইটা দিলে আম্মু খুশি হবেন,,,।
আমি:- শুধু খুশিই হবে না, অনেক খুশি হবে বুঝলা,,
রিয়া:: তবে আর একটা জিনিস হলে ভালো হতো,,
আমি:- কি..?
রিয়া:: - আমার যদি একটা ছোট ননদ বা দেবর থাকতো তাহলে আর জন্য আমি অনেক গুলো চকলেট নিয়ে যেতাম,,,।।
আমি:- ওরা নাই তো কি হয়েছে,, আমিতো আছি, তুমি না হয় আমার জন্য চকলেট নিও,,
রিয়া:- ইশ আইছে বুইড়া গাধা চকলেট খাবে,,
কমি:: আর তুমি, তুমি যে এখনো আইস্ক্রিম এর জন্য বায়না ধরো,,
রিয়া:: কি তারমানে তুমি আমাকে বুড়ি বললা,,,।
আমি:- আরে আমি কই বুড়ি বললাম, আমি তো এমন কিছু মুখ দিয়ে আনিই নাই,,।
রিয়া::- তুমি একদম কথা বলবা না আমার সাথে, তোমার সাথে ৩ ঘন্টার ব্রেকাপ, খালি শ্বাশুড়ি আম্মুর সাথে দেখা করতে যাচ্ছি দেখে কিছুই বললাম না,, নইলে,,,
(থাক আর কিছু জিজ্ঞাসা না করি,। চুপ করে বসে থাকাই ভালো। না জানি কখন আবার কি বলে বসে।)
-রিয়া: ওই চুপ করে বসে আছো কেন,,?
আমি: - তুমিই তো চুপ করে থাকতে বললে..
রিয়া: আমি বলছি দেখে চুপ করে থাকবে,, বুঝি তো এখন তো আর সাথে কথা বলতে তোমার ভালো লাগে না,,
আমি:: কেমন ডা লাগে, কথা বললেও দোষ না বললেও দোষ,,,
রিয়া:: তুমি আমাকে এইভাবে বলতে পারলে,,,।
আমি:: এই তুমি এতো ঝগড়ি হচ্ছো কেন শুনি, আগে তো এমন ছিলে না,,,,
রিয়া:: কি তুমি আমাকে ঝগড়ি বললে,,, নামো তোমার সাথে আমি যাবো না,,,
আমি:: আরে আমি তো তোমার সাথে মজা করছি,,।।
রিয়া:: আমি একাই তোমার বাসায় যাবো,, তারপর একাই শ্বাশুড়ি আম্মুর সাথে কথা বলে আসবো,,।
আমি:: ঠিক আছে,, কিন্তু তুমি যে আম্মুর জন্য কিছু
নিবে সেই গুলো ধরার জন্য তো আমাকে তোমার সাথে থাকতে হবে তাই না,,।।।
রিয়া:: এইটা ঠিক বলছো, যাও মাফ করে দিলাম,,,
এরপর সারা রাস্তা আর কোনো বাড়তি কোনো কথাই বলি নাই,,,। কিছু বললেই ভুল ধরে বসে মন খারাপ করে থাকে,,। তাই তার চেয়ে এখন চুপ থাকাই ভালো,। এরপর আমি আর রিয়া মিলে আম্মুর জন্য জায়নামাজ আর কোর-আন শরীফ নিলাম। নিয়ে আমাদের বাসায় গেলাম,,। আম্মুর হবু বউমা কে নিয়ে আম্মুর সামনে কিভাবে দাড়াবো এই ভেবে লজ্জা পাচ্ছি খুব,,। আবার একটু ভয়ও লাগছে। কিন্তু রিয়াতো মহা খুশি,। যাই হোক,, কলিং বেলে চাপ দিলাম,। আর আম্মু এসে দোড়জা খুলে দিলো,,,,
wait for next part.....
(আপনাদের সবাইকে অগ্রিম ইদ মোবারক)
171
Views
2
Likes
1
Comments
3.7
Rating