মায়া জড়ানো ভালোবাসা
অডিও মোড
00:00
00:00
গতি:
ভলিউম:
*******★*****★*******
ডক্টর এর কথা শুনার সাথে সাথে রিয়া আমাকে জড়িয়ে ধরে.... হয়তো মেয়ে টা তার মায়ের জন্য খুব ভয় পেয়েছিলো তাই,, রিয়া আমাকে জড়িয়ে ধরে বলে...
রিয়া:: তুমি না থাকলে আমি হয়তো আমার আম্মু কে আজ বাঁচাতে পারতাম না,,,।
আমি:: এই সব কি বলো তুমি..?
রিয়া:: আমি ঠিকি বলছি,,,,।
আমি:: - কিন্তু তুমি যে আমাকে জড়িয়ে ধরেছো সেই দিকে কি তোমার খেয়াল আছে,,,
রিয়া:: আমি ইচ্ছেই করেই তোমাকে জড়িয়ে ধরেছি,,, তুমি তো একটা হাদারাম,
আমি:: কি আমি হাদারাম,,,??
রিয়া:: নয়তো কি..? আমাকে লুকিয়ে লুকিয়ে খুব দেখতে পারো কিন্তু আমায় যে এতটা ভালোবাসো
সেইটা বলতে পারো না তাই না,,
আমি:: আসলে ভয় হতো, যদি ফিরিয়ে দিতে,,,।
রিয়া:: জানিতো তোমাকে দিয়ে কিছুই হবে না,, তাই তো আমি জড়িয়ে ধরলাম তোমাকে,,,
আমি:: ঠিক আছে, কিন্তু এখন তো ছাড়ো সবাই দেখছে তো,,।
রিয়া:: দেখছে দেখুক, আমি ছাড়বো না,,, আর বেশি ছাড়তে বললে কান্না করে দিবো,,
আমি:: আচ্ছা ঠিক আছে বলবো না,,,,
(এইভাবেই ভালোবাসায় জড়িয়ে গেলাম দুজনে,,। রিয়ার মা এর সাথে আমার একটা ভালো রিলেশনশিপ গড়ে উঠে। রিয়ার মা আমাকে ছেলের মত দেখে। রিয়ার বাবার সাথে কখনো কথা হয় নি তবে রিয়ার কাছে শুনেছি তিনি নাকি মাঝে মাঝে রিয়ার কাছে আমার কথা জিজ্ঞাসা করেন।
ভালোবাসা টা শুরু হয়ে ছিলো এইভাবেই, তারপর এই যে আজ ভালোবাসার বৃষ্টি,,। রিয়া আমাকে এতিম বলে দৌড়াতে লাগলো। যখন বৃষ্টি শুরু হলো তখন রিয়া আর আমি আমি দুইজনে হাত ধরে বৃষ্টি ভেজা পথে হাটতে থাকি,।)
আমি:: এই তুমি আমাকে মাঝে মাঝে এতিম বলো কেন..?
রিয়া ::আমি ছাড়া তো তুমি এতিম, তাই না,,, gf না থাকলে তো ছেলেরা এতিম হয় তাই,,
এইটা বলে উর্মি হাসতে থাকলো।
রিয়া:: এই শোনো না,,,।
আমি:: হুম বলো,,,।
রিয়া!:: এই বৃষ্টিতে ভিজে চা খেতে খুব ইচ্ছে করছে,,
আমি:: তাই না,,
রিয়া:: হুম, চলো না চা খেয়ে আসি,,,
আমি:: আচ্ছা ঠিক আসে,,,
এরপর আমি আর রিয়া রাস্তার পাশে টং দোকান থেকে চা খেয়ে আবার ও হাত ধরে রাস্তা দিয়ে হাটতে থাকি,,,।।
আমি:: এই রিয়া ,।-
রিয়া:: হুম বলো৷,,।
আমি:: অনেক ভিজা হয়ে গেছে, আর ভিজতে হবে না,,,
রিয়া:: আর একটু ভিজি না,,,তোমার সাথে তো আমার সারাদিন ভিজতে ইচ্ছে করে,
,
আমি:: কিন্তু মেডাম, এতো ভিজলে ঠান্ডা লেগে যাবে,, তখন.
.
রিয়া:: তখন আর কি, তুমি এসে আমাকে জড়িয়ে ধরবে...
আমি:: হয়ে গেছে অনেক জড়িয়ে ধরা, এইবার চলো.
রিয়া:: আর একটু ভিজি না,, এমন করছো কেন..
- না আর ভিজা যাবে না,,,
রিয়া:: ঠিক আছে ভিজবো না, তাহলে আমাকে আইসক্রিম নিয়ে দাও,,,
আমি:: আচ্ছা,,,,
(এরপর আমি রিয়াকে কিছু আইস্ক্রিম নিয়ে দিলাম। আর তাকে বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে আসি,,,।)
(আমি বাসায় এসে ফ্রেস হয়ে নেই। কিন্তু আমার খুব ঠান্ডা লাগছে। ধীরে ধীরে আমার শরীর তাপমাত্রা অনেক টা বেড়ে গেলো। মানে আমার জ্বর চলে আসে। এতোটাই জ্বর আসে যে আমি রিয়াকে ফোন ও দিতে পারি নি,,। ফোন টা যে হাতে নিবো সেইটাও পারছি না,৷ খুব কাপুনি দিয়ে জ্বর আসছে। মাঝে মাঝে এতো ঝাঁকুনি উঠছে মনে হচ্ছে ভুমিকম্প উঠে গেছে। অনেক্ষন পর রিয়া আমাকে ফোন দিলো,,,)
আমি:: হ্যা রিয়া বলো,,,
রিয়া:: এই তোমার গলাটা এমন শোনা যাচ্ছে কেন..?
আমি:: কই না তো, আমি ঠিক আসি
,,
রিয়া :: মিথ্যে বলছো কেন, মনে হচ্ছে তোমার জ্বর আসছে,,,।
আমি:: - ওই একটু,,
রিয়া:: আচ্ছা ফোন টা রাখো আমি আসছি,,,
আমি:: এই না,,
- টুত টুত......
(রিয়া আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই ফোন টা কেটে দিলো। আমার মনে হচ্ছে রিয়া আমাদের বাসায় আসবে,। কিন্তু সে তো আর আমার বাসা চিনে না আসবে কি করে,,, কিন্তু সে যে বললো আসছি,, আচ্ছা সে যদি সত্যি সত্যি চলে আসে, তাহলে আম্মু আব্বু কে কি বলবো,,।)
আরে ধুর সে তো আমার বাসাই চিনে না তাহলে আসবে কি করে,,,,।
(ভাবতে ভাবতে কিচুক্ষণ পর কলিং বেইল এর শব্দ,,,
আম্মু গিয়ে দৌড়জা খুলে দিল। একি এতো আবির, রিয়া আর আমার অন্য দুইটা বন্ধু। আমার আম্মু সবাইকে চিনে শুধু রিয়া কে বাদ দিয়ে। রিয়াও আমার ফ্রেন্ড এর পরিচয় দিলো। এরপর আম্মু তাদের কে আমার রুমে নিয়ে এলো।।।)
(রিয়ার তো আমার দিকে তাকিয়ে তার চোখ দুটো পানিতে ছলছল করা শুরু করে দিয়েছে। মনে হচ্ছে যে কোনো সময় বৃষ্টি নেমে যাবে। আম্মু আমাদের রেখে অন্য রুমে চলে গেলেন,। আম্মু বের হওয়ার সাথে সাথে রিয়া এসে আমাকে বন্ধুদের সামনে জড়িয়ে ধরে কাদতে শুরু করে দিলো......)
রিয়া:: সব আমার জন্য হয়েছে, আমি যদি বেশিক্ষণ বৃষ্টিতে না ভিজতে চাইতাম তাহলে আজ তোমার জ্বর আসতো না,,
আমি:: এই পাগলী কি বলো এই সব,,, আরে বাবা আমার বৃষ্টিতে ভিজার কারনে জ্বর হয়নি,,,
রিয়া:: না, আমি জানি, আমার জন্য তোমার জ্বর এসেছে,
আমি:: এই এমন করছো কেন,, তুমি এসে গেছো এখন দেখো আমি খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবো,,,
এইবার আমার বন্ধুদের মধ্য থেকে আবির বলে উঠলো,,,
আবির:: বাহ বা,, কি ভালোবাসা, এমন ভালোবাসা থাকলে পৃথিবীর যেকোনো অসুখ তারাতাড়ি সেরে যাবে,, তা এইবার আমার বন্ধুটার একটু সেবা যত্ন করো, আর কতদিন একা একা থাকবে বেচারা,,,
এ কথা শুনে রিয়া আমার বুকে মুখ লুকালো,,,
আমি:: আবির তুই কিন্তু মাইর খাবি,,,
আবির:: হুম, তুমি তলে তলে ট্যাম্পু চালাও আর আমরা বললেই হরতাল তাই না,,,
একটু পর আম্মু আমার বন্ধুদের জন্য নাস্তা নিয়ে এলো। আম্মু আমাকে দেখে বললো,,,
আম্মু:: কিরে আবির এতোক্ষণ তো জ্বরে কাঁপতেছিলি তা এখন দেখছি তোর গায়ে আর জ্বর নেই বললেই চলে,,,
আবির:: আন্টি তোমার ছেলে এমন এক মেডিসিন নিয়েছে যার জন্য জ্বর পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে,,
,
আম্মু:: তাই নাকি,, তা কি মেডিসিন, আমাকে বল আমি এনে রাখি,
আবির:: হুম আন্টি, সময় হলে সেই পুরো মেডিসিন টা তোমার ঘরে চলে আসবে,,
আম্মু::৷ মানে কি বলছো তুমি,,, আমি তো কিছুই বুঝছি না,,,
আমি:: কিছুই বুঝতে হবে না,, এইখানে বসো তো,,,
আম্মু:: আমার কি আর বসার টাইম আছে,, তোমরা গল্প করো, আর হ্যা রাতে খেয়ে তারপর যাবে কিন্তু,,,।
আবির:: কি যে বলো না, আমি কি তোমার রান্না মিস করে যাবো নাকি,, এতো টা বোকা আমি না,,
আম্মু:: বাদর একটা,,,,
(আম্মু আবির কে অনেক পছন্দ করে। বলতে গেলে আম্মু ভাবে তার দুই সন্তান এক আমি আর এক আবির,,।)
(দিন টা অনেক ভালো কাটলো আমিও রাতের আগেই একদম সুস্থ হয়ে গেলাম। আসলেই সকল রোগের সমাধান হচ্ছে ভালোবাসা। আমার ও তাই হলো,,,
এরপর রাতের খাওয়া করে এক এক করে সবাই বিদায় নিলো,,, রিয়াও চলে গেলো,,,
এরপর আম্মু এসে বললো,,,,
আম্মু:: যাই বল মেডিসিন টাকে কিন্তু আমার ভালোই পছন্দ হয়েছে,,,।
আমি:: কি মেডিসিন,, কি বলছো তুমি...?
আম্মু:: ন্যাকা,,, তুই কি ভাবছিস আমি কিছুই বুঝিনি,, শুন আমি অনেক আগেই তোর বয়স টা পার করে আসছি, বুঝলি..? তবে যাই বল মেয়েটাকে কিন্তু আমার ভিষন পছন্দ হয়েছে,,,
আমি:: কি বলছো তুমি,,,?
আম্মু:: চুপ শিকার কেন করছিস না, যে তুই মেয়েটাকে ভালোবাসিস,, তুই কি ভাবছিস আমি বোকা, তোকে যে মেয়েটা জড়িয়ে ধরলো ভাবছিস আমি কিছু দেখি নি, আর মেয়ে টা যে তোর বন্ধু না সেইটা আমি আগেই বুঝতে পেরেছি,,,
আম্মুর কথা শুনে আমি পুরাই লজ্জা পেয়ে গেলাম,,,
আম্মু :: হইছে আর লজ্জা পেতে হবে না,,,
আমি:: আম্মু সত্যি তোমার ওকে পছন্দ হয়েছে,,,
আমি:: হুম খুব পছন্দ হয়ে,, আমি তো আমার ছেলেটার জন্য এমন একটা বউই আনতে চেয়েছিলাম যে আমার বাদর ছেলে টাকে এত্তো ভালো বাসবে,,,,
আমি:: i love u আম্মু,,
আম্মু:: love u too আমার বাদর ছেলে,,,,
(এই বলে আমি আম্মু কে জড়ি ধরি,,,। ধুর আমি যা ভয় পেয়েছিলাম তা দেখি পুরোই এর বিপরীত,,। কিন্তু আমার খুব খুশি লাগছে। মনে হয় ভালোবাসার দ্বিতীয় ধাপ পার করে গেলাম আমি,,, এতো খুশি হচ্ছে যে বলে বুঝাতে পারবো না,,,,। এখনোনি রিয়াকে কে ফোন দিয়ে সব জানাতে হবে,,,।)
(আর আমি রিয়া কে ফোন দিলাম,,,। কিন্তু রইয়ার ফোন বন্ধ,,। ভাবলাম হয়তো ফোন এর চার্জ নেই। কিন্তু রিয়া বাসায় পৌছালো কি না সেইটা তো জানতে পারলাম না। তাই আমি আবির কে ফোন দিলাম,,।)
আমি:: কিরে আবির, রিয়া কে বাসায় পৌছে দিয়েছিস তো,,।
আবির:: হুম, অনেক আগেই,, কেন তোকে ফোন দেই নি,,,
আমি:: না, আমি ফোন দিচ্ছি দেখি তার ফোন টা অফ,,,।
আবির!:: হয়তো চার্জ শেষ,,।
আমি:: হবে হয়তো,,,,
আবির:: - আচ্ছা টেনসন করিস না, রিয়া একাই ফোন দিবে,,,
আমি:: আচ্ছা।।,
এরপর ফোন টা কেটে দিলাম। ধুর রিয়ার সাথে কথা হচ্ছে না। তাকে খুশির খবর টাও দিতে পারলাম না, ধুর মন টাই খারাপ হয়ে গেলো,,,,।
wait for next part......
208
Views
4
Likes
3
Comments
4.7
Rating