দেখতে দেখতে প্র্যাকটিসের দিন চলে এলো। অরিন আর লিওন দায়িত্বশীলতার সাথে খুব ভালোভাবে স্টুডেন্টদের প্র্যাকটিস করাচ্ছিল। অরিন খুব সুন্দর করে বন্ধুর মতো সবার সাথে মিশছিল। সিনিয়রদের যে একটা ভাব থাকে সেটা অরিনের মধ্যে দেখা যাচ্ছিলো না। অপরিচিত কারোর সাথে ভালোভাবে কথাটাও বলতে না পারা মেয়েটা সবার সাথে এভাবে সহজে মিশতে পারায় তারও কম আনন্দ হচ্ছে না।
আজ প্র্যাকটিসের প্রথম দিন। আর প্রথম দিন যে কেউ ভালো করবে না এটাই স্বাভাবিক। প্রথম দিন হওয়ায় ওরা তাড়াতাড়ি সবাইকে ছেড়ে দিল। পরের দিন সবাই নিজ ছন্দে নিজেদের কাজ করছিল। আজ থেকে সবাই নিজ নিজ জায়গায় গতকালের থেকে বেশি সিরিয়াস হয়ে গেছে। ছেলে আর মেয়েরা আলাদা আলাদা করে প্র্যাকটিস করছিল। নজরুল হাউসের মেয়েদের প্রাকটিসের জায়গার বামপাশেই নজরুল হাউজের ছেলেদের প্র্যাকটিসের জায়গা। আর তার ডানপার্শ্বে ফজলুল হাউসের ছেলেদের প্র্যাকটিসের জায়গা।
অরিন সব স্টুডেন্টদের কমান্ড দিচ্ছিল। এমন সময় অরিনের পাশে অনি এসে দাঁড়ালো। হাতদুটো পেছনে নিয়ে গিয়ে কাধ সোজা করে বললো-
- ভালো করে কমান্ড দে, ভালো করে। (অনি)
- তো আমি কি বাজে ভাবে কমান্ড দিচ্ছি? (অরিন বিরক্ত হয়ে)
- না, ঠিকই আছে। তবে আরেকটু ভালোভাবে কমান্ড দিতে হবে। (অনি)
- আয় তুই দে। (অরিন রেগে)
- না না থাক। (অনি মেকি হেসে)
অরিন আবার নিজের কাজে মন দিল।
কিছুক্ষণ পর.............
- অরিন তুই কিন্তু ভালোভাবে কমান্ড দিতে পারছিস না। (অনি)
- এই তোর নাটকের রিহার্সাল নেই? (অরিন)
- না কাল থেকে শুরু। তাইতো তোদের জ্বালাতে এসেছি। (অনি দাঁত বের করে)
- ভাই প্লিজ এখন জ্বালাস না। এমনিতে রোদের মধ্যে প্র্যাকটিস করাতে করাতে অবস্থা শেষ আমার। (অরিন)
- তাহলে তো আরো বেশি করে জ্বালাবো। (অনি হাসি প্রশস্ত করে)
- তোকে বলে লাভ নেই। যা পারিস কর। কিন্তু কালকে যখন নাটক করবি, তখন সাবধানে থাকিস। (বলে অরিন আবার কাজে মন দিল)
অনিও কিছুক্ষণ পর চলে গেল। অরিন একসময় অনুভব করলো তার মাথাটা রৌদ্রতেজে গরম হয়ে গেছে। কপাল বেয়ে ঘামও গড়িয়ে পড়ছে। সে নিজের মাথায় হাত দিল। বোধ হলো ক্যাপটা তার মাথায় নেই। পাশে লিওন প্র্যাকটিস করাচ্ছিল। সে লিওনের উদ্দেশ্যে বলল -
- ভাইয়া আমার মাথার ক্যাপটা দেখেছো? (অরিন)
- কেন একটু আগেই তো তোর মাথায় ছিল। (লিওন)
- ছিল তো। কিন্তু এখন দেখতে পাচ্ছি না। (অরিন)
- দেখ কোথাও পড়ে গেছে হয়তো, অথবা হাওয়ায় উড়ে গেছে বুঝতে পারিস নি। আশেপাশে খুঁজে দেখ। (লিওন)
অরিন তার আশেপাশে তাকালো। কোথায় তার ক্যাপ, কোথাও তো নেই। ঐদিকে কাঠফাটা রোদের মধ্যে তার গলার টুঁটি শুকিয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ প্র্যাক্টিস এর মধ্যে থাকা একটা মেয়ে বলে উঠলো -
- আপু ওই দেখো তোমার ক্যাপটা ওই ভাইয়ার মাথায় (একটি মেয়ে সামনের দিকে আঙ্গুল দেখিয়ে)
অরিন তার আঙুল লক্ষ্য করে দেখলো-অনি মাঠের মাঝখানে তার টুপি মাথায় দিয়ে ঘাসের উপর আরাম করে বসে চিপস খাচ্ছে। এটা দেখেই রমনীর মাথা গরম হয়ে গেল। কটমট করে তাকিয়ে বললো-
- অনির বাচ্চা!!!! আমি এখানে আমার ক্যাপের অভাবে রোদে পুরে প্র্যাকটিস করাচ্ছি। আর তুই আমার ক্যাপ মাথায় দিয়ে মাঠে বসে আরাম করে চিপস খাচ্ছিস। আজ তোর একদিন কি আমার একদিন!!!! অনিইইইইইইই!!! (শেষের কথাটা চিল্লিয়ে বলে অরিন ছুট লাগালো অনির দিকে)
- চাচা থুড়ি অনি আপন প্রাণ বাঁচা..(বলে অনিও তার শেষ কয়েকটি চিপস মুখে পুড়ে প্যাকেটটি মাঠে ফেলে ছুট লাগালো)
- এই শয়তান থাম, আমার ক্যাপ দে। (অনির পেছনে ছুটতে ছুটতে অরিন)
- না, না আমি এটা দিতে পারব না। আমার রোদ লাগছে। (অনি)
- শয়তান.... তোর থেকে বেশি রোদ আমার লাগছে। তাড়াতাড়ি দে আমার ক্যাপ (অরিন অনির পেছনে ছুটতে ছুটতে)
- আরে আমি কালো হয়ে গেলে কোনো মেয়ে আর আমার সাথে প্রেম করবে না। একটু বোঝ বিষয়টা। (অনি)
- ক্যাপ না দিলে তোর মুখে আজকে আমি কালি মাখিয়ে এমনি তোকে কালো করে দেবো। থাম বলছি। (অরিন)
এভাবে কিছুক্ষণ ছোটাছুটি করার পর শেষমেষ অরিন তার ক্যাপ পেল। অনি শেষে মাথা থেকে ক্যাপটা খুলে অরিনের দিকে ছুড়ে মেরে ধপ করে মাঠে বসে পড়লো। অরিনও তার ক্যাপটি পেয়ে সবুজ ঘাসের ওপর বসে জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগলো। তার মধ্যে অনিকে শাস্তি দেওয়ার কোনো আগ্রহ এখন আর দেখা গেলো না। এতক্ষণে মাঠের সবাই এদের ছোটাছুটি ভালই উপভোগ করছিল।
এভাবে তিন ঘন্টা চলে গেল। আকাশ সব হাউজের প্র্যাকটিস গিয়ে গিয়ে দেখছিল। সে দেখলো চার হাউজের মধ্যে জসীমউদ্দীন আর ফজলুল হাউস প্যারেটে অনেক ভালো করছে দুদিনেই। কিন্তু নজরুল হাউস অতটা ভালো করছে না। এটা দেখে তার মাথায় একটা দুষ্টু বুদ্ধি এলো।
সে নজরুল হাউসের মেয়েদের প্যারেটের কাছে গিয়ে দেখল -অরিন কমান্ড দিচ্ছে আর মেয়েরা তা ফলো করছে। অনেক রোদে প্র্যাকটিস করার ফলে অরিনের কানের একটু সামনে চিপ বেয়ে ঘাম পড়ছে। ফর্সা ত্বক অনেকক্ষণ রোদে থাকার কারণে লাল হয়ে গেছে। অরিন অন্য মেয়েদের মতন ঢং করার জন্য সামনের ছোট ছোট চুলগুলো ছেড়ে দেয় না।কিন্তু আজ সে নিজের কাজে এতই ব্যস্ত যে তার ছোট চুলগুলো যে ক্লিপ ছেড়ে বেরিয়ে এসেছে তা সে লক্ষ্যই করেনি। তার ছোট ছোট চুলগুলো মুখের সামনে পড়েছে। এতে তাকে আরো অপরূপা লাগছে। আকাশ ছোটখাটো তো একটা ক্রাশ খেয়েই গেল। কিন্তু পরক্ষণেই মনকে বোঝালো-আকাশ চৌধুরী কারোর উপর ক্রাশ খেতে পারে না। সে নিজের মুখটাকে গম্ভীর করে বলল-
- প্যারেটের প্র্যাক্টিস শেষ হতে আর কতক্ষণ আছে?(আকাশ)
অরিন থামলো, মেয়েদেরকেও কমান্ড দিয়ে থামিয়ে দিলো। তারপর আকাশের দিকে তাকিয়ে বললো-
- পাঁচ মিনিট। (অরিন)
- কিন্তু আপনি আরো আধাঘন্টা এক্সট্রা প্র্যাকটিস করাবেন (আকাশ)
- কেন অন্য হাউসের এমনকি নজরুল হাউস ছেলেদেরও তো ছেড়ে দিয়েছে। আপনি এক্সট্রা টাইম নিয়ে প্র্যাকটিস করাতে বলছেন কেন? (অরিন বাজখাঁই গলায়)
- আপনার বাবার সাথে আমার জমিনের দ্বন্দ্ব আছে তাই। (আকাশ)
আকাশ এই বলে চলে গেল। লিওন আর অনি এসে অরিনের পাশে দাঁড়ালো।
- ভাইয়া... (কাঁদো কাঁদো মুখ করে অরিন লিওনের উদ্দেশ্যে)
- আমার কিছু করার নেই বোন। (লিওন অসহায় মুখ করে)
- আপু আমরা কেন এক্সট্রা টাইম নিয়ে প্র্যাকটিস করব?(প্র্যাকটিসের মধ্যে থাকা একটি মেয়ে)
- ওই যে আকাশ ভাইয়ের সাথে তোমার আপুর বাবার জমিনে দ্বন্দ্ব আছে, এখন তার ফল তোমরাও ভোগ কর। (অনি মুখ টিপে হেসে)
- এই তুই চুপ করবি,নাকি ছাদে নিয়ে গিয়ে ছাদ থেকে লাথি মেরে ফেলে দেবো? (অরিন)
- আচ্ছা, আল্লাহ আমাকে ফুটবল বানাতে গিয়ে মানুষ বানিয়ে ফেলেছিল নাকি রে? সবাই আমার কথা শুনলেই লাথি মারে। (অনি)
- তুই মানুষটাই লাথি খাওয়ার মতন। আচ্ছা যাই হোক, আমি যাই দেখি আকাশ কোথায় গেল। তুমি প্র্যাকটিস করাও। (শেষের কথাটা অরিন এর উদ্দেশ্যে বলে লিওন চলে গেল)
অনি কিছুক্ষণ মুখ টিপে হেসে চলে গেল। লিওন একটু সামনে যেতেই আকাশকে পেয়ে গেলো।
- আকাশ চল তো ঐদিকে যাই, Dance practice দেখে আসি (লিওন)
- গেলে মন্দ হয় না। অনেকক্ষণ কাজ করছি। এখন নাচ দেখে একটু মাইন্ডটা ফ্রেশ করে আসি চল। (আকাশ)
দুজনে dance practice এর জন্য নির্ধারিত স্হানে গেল।কিছুটা দূরে গিয়ে একটা জায়গায় বসে তারা practice দেখতে লাগল। দেখল লিসা বাচ্চাদের নাচ শেখাচ্ছে। এই মূহুর্তে ওর আচার আচরণ দেখে ওকে সম্পূর্ণ বাচ্চাদের মতো লাগছে। সে খিলখিলিয়ে হাসছে, লাফাচ্ছে, আবার বাচ্চাদের সাথে বাচ্চাদের মত করে কথাও বলছে। লিওন বিমোহিত নেত্রে লিসাকে দেখতে দেখতে বলল-
- দেখ,লিসা কী সুন্দর হাসিমুখে হাত-পা নেড়ে বাচ্চাদের নাচ শেখাচ্ছে। পুরো বাচ্চাদের মতো লাগছে। ওকে দেখে কে বলবে ও হাউজপ্রিফেক্ট। কত কিউট লাগছে না!! (লিওন লিসার দিকে তাকিয়ে)
অনি আকাশ আর লিওনকে খুঁজতে খুঁজতে এখানে চলে এসেছিলো। আর এসেই লিওনের কথা শুনতে পায়। সে আকাশরা যে টেবিলে বসেছিল,সেই টেবিলে একটু ঝুঁকে গালে হাত দিয়ে লিওনের দিকে তাকিয়ে থাকে। আকাশও চোখ ছোট করে সন্দিগ্ধপূর্ণ দৃষ্টি নিয়ে লিওনের দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু লিওনের সেদিকে কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই। সে লিসাকে দেখতে ব্যস্ত। আকাশ অনির কানে কানে বলে-
- লাগতা হ্যা ডাল মে কুছ কালা হ্যা। (আকাশ)
- মুঝে তো লাগতাহে পুরা ডাল হি কালা হ্যায়। (অনি)
লিওনের স্তম্ভিত ফেরে আকাশের নকল কাশির শব্দে।
- অহুম অহুম। (আকাশ)
লিওন হকচকিয়ে যায়। সে অনিকে ওভাবে থাকতে দেখে বলল-
- তুই আবার কখন এলি? আর আমার দিকে ওভাবে দেখছিস কেন? আমার মুখে কি তোর এক্স গার্লফ্রেন্ডকে দেখতে পাচ্ছিস? (লিওন)
লিওনের এহেন কথায় অনি নিজেই এবার হকচকিয়ে যায়।
- তুই এখন দেখলি ওকে? অথচ ও দশমিনিট আগে এসেছে। (আকাশ)
- এ..এসেছে হ..হয়তো। আমি খেয়াল করিনি৷ (লিওন তুতলিয়ে)
- মানে এমন খেয়ালে মনটা ডুবিয়েছিস যে তোর সামনে কে আছে সেটাই খেয়াল করিসনি। (আকাশ)
- আকাশ, আমি না লাভেলা আইসক্রিমের গন্ধা পাচ্ছি। (অনি)
- তোর নাকের সমস্যা হয়েছে,ডাক্তার দেখা। (অনি)
- আরে না আমিও তো পাচ্ছি। (আকাশ)
- কৈ আমি তো পাচ্ছিনা। (লিওন ভ্রূ কূচকে)
- আরে গন্ধটা তো তোর কাছ থেকেই আসছে তুই পাবি কীভাবে?(অনি)
- কী সব আবোল-তাবোল মতো বকছিস আমার কাছ থেকে লাভেলা আইসক্রিমের গন্ধ আসবে কেন?(লিওন)
- Because you are in love..........(অনি)
- What!! (লিওন চেঁচিয়ে)
- এই ভাই সত্যি করে বল তো, তুই আবার লিসার প্রেমে পড়িসনি তো? (আকাশ ভ্রূ কূচকে)
- আরে না, আমাকে প্রেমে পড়ানোর মতো মেয়ে এখনও জন্মায়নি। (লিওন)
- এটা তো আমার ডায়লগ। তুইও দেখছি কপি করে নিয়েছিস। যাই হোক, না পড়লেই ভালো। আচ্ছা, এখন চল। ঐদিকটা দেখে আসি। (আকাশ)
- তোরা যা। আমি যাব না। (লিওন)
- দেখ আকাশ ও নাকি প্রেমে পড়েনি। অথচ লিসাকে দেখার জন্য এখান থেকে উঠছে না। (অনি)
- তোকে কে বললো আমি লিসাকে দেখার জন্য এখানে আছি? (লিওন)
- বাচ্চা না আমরা, সব বুঝি বুঝলি। তোকে যেতে হবে না, তুই আমার বোনকে দেখ। অনি, তুই আয় (আকাশ)
- নারে ভাই, আমি মেয়ে খুঁজতে যাব। দু সপ্তাহ হলো আগেরটার সাথে ব্রেকআপ হয়েছে। এখন পর্যন্ত নতুন একটাকেও জোটাতে পারলাম না। এই দু:খ আর লজ্জা আমি কোথায় রাখি বলতো? (অনি)
- একগ্লাস পানিতে রেখে সেখানে ডুবে মর। তাহলে না তুই থাকবি, না তোর দু:খ থাকবে, না লজ্জা। (আকাশ)
- ধূর বিয়ে করিনি এখনও। এখনই মরব নাকি? তাছাড়া আমার এখনও সেঞ্চুরি হয়নি। এভাবে মরলে তো আমার আত্নাও শান্তি পাবে না। (অনি)
- দেখ, আমি লিসার দিকে একটু তাকালেই তোরা আমাকে চিরাস। আর এই বেটা যে সারাক্ষণ মেয়েদের পেছনে পড়ে থাকে সেটা কিছু না, না? (লিওন)
- দেখ ভাই। বেড়াল ইঁদুর খায় এটা স্বাভাবিক। কিন্তু হঠাৎ যদি শুনিস ইঁদুর বেড়ালকে খেয়েছে সেটা শুনে তোর অবাক লাগবে না? ব্যাপারটা ঠিক সেরকম। আমি তো জন্মগতই লাভগুরু। কিন্তু তুই শান্তশিষ্ট মানুষটা যদি হঠাৎ টুপুস করে প্রেমে পড়ে যাস, তাহলে ব্যাপারটা কেমন লাগে না?যাই হোক আমি গেলাম।তোরা যে যা পারিস কর (বলে অনি চলে গেল)
- হায়রে explanation! এর explanation শুনলে ব্রেইনও কয়েকমিনিট কনফিউসড হয়ে যায়। (আকাশ)
- যা বলেছিস।ও মানুষটাই এরকম।(লিওন)
- হুম, আচ্ছা আমি গেলাম, তুই প্রাণভরে লিসাকে দেখতে থাক, আর দেখা শেষ হলে আসিস, কেমন? (আকাশ)
- মানে তোদের তো একটা topic পেলেই হয়, লেগফুল একটা সুযোগও ছাড়িস না। (লিওন)
আকাশ অল্প হেসে চলে যায়।
লিওন লিসার দিকে তাকায়। না চাইতেও তার দৃষ্টি বিমোহিত হতে বাধ্য হয়। সে ভাবতে থাকে- "আমি কী সত্যি ওর প্রেমে পড়ে গেলাম? আজকাল ওর সাথে ঝগড়া করতেও ভালো লাগে। ওর বাচ্চামোগুলোকে সারাজীবন দেখে যেতে ইচ্ছে করে। এসব নতুন অনুভূতি কেন হচ্ছে আমার?"
____________________
আকাশ আবার এসে উপস্হিত হয় প্যারেটের প্র্যাক্টিসের জায়গায়। দেখে অরিন ছুটি দিয়ে দিচ্ছে মেয়েগুলোকে।তবে অরিনের মাথায় আকাশকে দেখেই দপ করে আগুন জ্বলে উঠে।
- আপনি কী আবার এখানে সার্কাস দেখতে এসেছেন?(অরিন)
-(ভাব দেখিয়ে) আমি H.C. আমি যেখানে খুশি যেতে পারি। আর না এখানে সার্কাস হচ্ছে, না আমি তা দেখতে এসেছি। আমি দেখতে এসেছি যে তুমি বাচ্চাগুলোকে ছুটি দিয়েছ কিনা।(আকাশ)
- আমি আপনার মতো না যে আবার আধঘন্টা এক্সট্রা টাইম নিয়ে practice করাব। (অরিন)
- দেখ আমি যা করেছি,হাউজের ভালোর জন্য করেছি।(আকাশ)
- আচ্ছা সেটা বুঝলাম।কিন্তু আপনার না সবার সামনে আমায় আপনি বলে ডাকার matter টা বুঝলাম না। (অরিন)
- নিজেকে অত special ভেবো না।আমি শুধু তোমাকেই নয় সবাইকেই আপনি বলে ডাকি।কারণ আমি H.C. শুধু তুমি কেন,একটা নার্সারীর বাচ্চাকেও আমায় আপনি বলতে হবে। (আকাশ)
- (মুখ ভেংচিয়ে) H.C হয়ে যেন মাথা কিনে নিয়েছে।(অরিন)
- তুমি যদি তা মনে কর তাহলে তাই। (আকাশ)
এরপর আর তর্ক করার কোনো শব্দ খুঁজে পেল না অরিন। তাই সে কিছু না বলেই মানে মানে ওখান থেকে কেটে পড়ল। আর তা দেখে আকাশ অট্টহাসিতে ফেটে পড়ল। আর বলল-
- Oh Allah! এই মেয়েটা এত ঝগরুটে কেন? আর যখন ঝগড়া করার মতো কোনো কিছু পেল না, তখন কেটে পড়ল। আমারও যে কেন ওকে রাগাতে ভালো লাগে কে জানে?
এই বলে আকাশ নিজে নিজের চুল ঘেটে দিল এবং নিচের দিকে তাকিয়ে ঠোঁট কামড়ে হাসল।
চলবে..............
সবাইকে রমাদান মুবারক...🌙✨
রমজান উপলক্ষ্যে আরেকটি নতুন উপন্যাস চান নাকি?
শুধু তোমারই জন্য
অডিও মোড
00:00
00:00
গতি:
ভলিউম:
187
Views
4
Likes
3
Comments
5.0
Rating