অন্ধকারের ডানায়

গ্রামের প্রান্তে একটি পুরনো কবরস্থান ছিল, যেখানে দিনের বেলায়ও যেন অদ্ভুত এক ঠাণ্ডা অনুভূতি বিরাজ করত। সেখানে কিছু কবর ছিল, যেগুলো চিহ্নিত ছিল না, কিছুটা মুছে গেছে। এক রাতে, এক যুবক—জাহিদ, বন্ধুর সাথে এসে সেই কবরস্থানে ঢুকে পড়ে।

জাহিদ ছিল এক রোমাঞ্চপ্রেমী। সে শুনেছিল, এই কবরস্থানে রাতে এক অদ্ভুত আছর পড়ে—যে কেউ এখানে রাত কাটায়, তার জীবন বদলে যায়।

তাদের মতো কিছু যুবক বন্ধুরা ঠিক করেছিল, তারা রাত ৩টা পর্যন্ত এখানে থাকবে।

বছরের একটা বিশেষ রাতে, তাদের এক বন্ধুর সাথে জাহিদও কবরস্থানে ঢুকে গেল। প্রথমে একটু ভয় হলেও, একে অপরকে সাহস দিয়ে তারা হাঁটতে থাকল। কিন্তু যতই গভীরে ঢুকছিল, ততই অদ্ভুত এক অনুভূতি বাড়ছিল।
— "শোন, কি জানো?"
এটা ছিল তাদের বন্ধু রনি, তার মুখে ভয় স্পষ্ট।
— "এই কবরস্থানটা কখনো কেউ একা দেখতে যায় না। এখানে যারা একা গেছে, তারা ফিরে আসেনি!"

অথচ, জাহিদ হাসতে হাসতে বলল,
— "তোমরা সবাই শুধু গল্প বানিয়েছো। ভূত কিছুই নেই।"

সেই কথার পর থেকেই অদ্ভুত কিছু ঘটতে শুরু করল। কবরস্থানের বাতাস ভারি হতে লাগল, হঠাৎ করে মাটি থেকে উঠতে শুরু করল এক ধোঁয়া, তারপর দেখা দিল এক ছায়ামূর্তি।

এটি ছিল এক মহিলার চেহারা—কালো চুল, সাদা পোশাক, আর তার চোখ দুটি গভীর অন্ধকারে ঢাকা। হঠাৎ, সেই মহিলার মুখে শব্দ ভেসে এল,
— "আল্লাহর নামে, কেন এসেছো?"

জাহিদ হাঁফিয়ে উঠল, কিন্তু সে হেসে বলল,
— "মজা করার জন্য এসেছি, কিছু ভয় নেই।"

তবে তার সঙ্গীরা একে অপরকে ছুটে পালাতে লাগল, সবাই অন্ধকারে হারিয়ে গেল। কিন্তু জাহিদ, নিজের অজ্ঞতার কারণে, একেবারে ছুটে গিয়ে মহিলার সামনে দাঁড়িয়ে পড়ল।

মহিলা একটু ঠাণ্ডা হাসি দিয়ে বলল,
— "তুমি নিজে চলে যাবে না, কিন্তু তোমার ছায়া তো এখানে থাকবে চিরকাল!"

এরপর, মুহূর্তের মধ্যে, জাহিদ তার পেছনে কিছু অনুভব করল। এক অদ্ভুত শীতল অনুভূতি তার গায়ে বয়ে গেল। চোখ মেলে তাকিয়ে দেখল, তার পেছনে ছায়ার মতো এক আর্মি দাঁড়িয়ে রয়েছে। মুহূর্তের মধ্যে ছায়াগুলো তাকে ঘিরে ফেলল এবং...

আর কিছু মনে নেই।

পরের দিন, গ্রামের লোকেরা কবরস্থানে গিয়ে জাহিদকে খুঁজে পেল। তার শরীর নিঃসঙ্গ, পাথরের মতো শক্ত হয়ে গেছে, এবং তার চোখে ছিল অন্ধকারের ছায়া—যে ছায়া এখনো কবরস্থানের বাতাসে ঘুরে বেড়ায়।

তার বন্ধুরা আজও ভয়ে সেদিনের কথা মনে করে বলে,
— "তুমি কি কখনো তার ছায়া দেখতে চেয়েছিলে?"

শেষ। 👻🌑💀