মারিয়ার হুজুর বর

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
ছোটবেলা থেকেই আমি অনেক ধার্মিক ছিলাম,কিন্তু!যত বড়ো হতে লাগলাম আমার ভিতর নাস্তিকতা ঢুকতে লাগলো।আমি অবিশ্বাসী হয়ে উঠলাম।
আমার মা-বাবা,বড়ো বোন আর বড়ো ভাই আমাকে বোঝাতে লাগলো,কিন্তু আমি এসবে পাত্তা দিতাম না।

আমি মারিয়া।আজ নিজের জীবনের কিছু ঘটনা আপনাদের বলবো।আসুন,,চলুন ঘুরে আসি আমার কিছু অতীত থেকে!


মারিয়া,এই মারিয়া!ওঠ মা।সেহেরি খাবি না?কাল থেকে তো রোজা।
নিজের মায়ের ডাকে চোখ খুললাম আমি।আমার মায়ের নাম হালিমা চৌধুরী।

উফ্!মা এই রাত অর্ধেকে তুমি আমাকে সেহেরি খাওয়ার জন্য ডাকতে এসেছো।আমি ওসব খাবো না।(আমি)

এরকম করিস না মা,উঠ।(মা)

উফ্!তুমি গিয়ে খাও না।আমি খেতে চাই না।(আমি)

মা চলে গেলে আমি আবার ঘুমিয়ে পড়লাম।
আবার আমার ঘুম ভাঙলো সকালে।আমার কলেজ আছে তাড়াতাড়ি ব্রেকফাস্ট করতে নিচে নামলাম।
মা রান্নাঘরে কাজ করছে।বাবা,ভাই আর আপু সোফায় বসে আছে।
মা,খাবার দাও।(আমি)

মা,টেবিলে খাবার দিয়ে আবার রান্নাঘরে কাজ করতে চলে গেলো।আমি সবার উদ্দেশ্যেই বললাম-তোমরা খাবে না?

আজ রোজা,মারিয়া।(বাবা)

ও হ্যাঁ,তাই তো আমি একদম ভুলে গেছিলাম আজ থেকে রোজা।আর কিছু বললাম না,চুপচাপ খেতে শুরু করলাম।খাওয়া শেষ হলে কলেজের জন্য তৈরি হয়ে বেরিয়ে পড়লাম।
বাবা আর ভাইয়া আগেই নিজেদের কাজে চলে গেছে।
আপু আর মা বাড়িতে থাকবে।

★★★★
কলেজে গিয়ে নিজের বেস্ট ফ্রেন্ড আফিয়ার সাথে দেখা করলাম।আফিয়া আমার ঠিক উল্টো।বেশ ধার্মিক।আফিয়াও আমাকে অনেক বোঝায় ধর্ম কর্ম নিয়ে।কিন্তু আমি তাকেও পাত্তা দিই না।
এতে আফিয়া বেশ বিরক্ত হয়।কিন্তু ও আমার ছোট বেলার বন্ধু তাই আমাকে ছাড়া থাকতে পারে না।

কিরে কী অবস্থা?আন্টি।(আমি)

আমি আন্টি না।(আফিয়া)

দেখেতো তাই মনে হয়।(আমি)

মারিয়া কালো বোরখা পড়ে কলেজে আসে বলে আমি তাকে আন্টি ডাকি।

এইভাবেই কেটে গেলো পুরোটা দিন।আমিও বেশ আনন্দ করলাম ওর সাথে।


রাতের বেলা,,
আমার সবাই খাবার টেবিলে।মা সবাইকে খাবার পরিবেশন করা শেষে নিজেও খেতে বসলেন।

আমার একটা কথা বলার আছে।বাবার এমন কথায় সবাই আমরা তার দিকে তাকালাম।

কি কথা বাবা?(ভাইয়া)

কালকে তোমাদের ফুফু,আমিন আর আরিফা আসবে।(বাবা)


আমার বাবারা এক ভাই এক বোন।বাবাই বড়ো।
আর আমার ছোট ফুফুর এক ছেলে এক মেয়ে।ছেলের নাম আমীর।আর মেয়ের নাম আরিফা।আমিন ভাইয়া আমার ভাইয়ার ছোট ও আপুর সমান‌।অন্যদিকে,,আরিফা আমার থেকে দুই বছরের ছোট।

আমিন আসছে!(ভাইয়া)

হুম।ওরা তিনজনেই আসছে।(বাবা)

আমারও ভালো লাগলো,কেননা আরিফার সাথে আমার খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে।



সকালে ঘুমিয়ে আছি মায়ের ডাকে ঘুমা ভাঙলো।

মারিয়া,,দেখ তোর আপু আমাকে কিভাবে সাহায্য করছে।তুইও তো আমাকে সাহায্য করতে পারিস।(মা)

সাহায্য?কিসের সাহায্য লাগবে তোমার?(মারিয়া)

আজ তো তোর ফুফুরা আসবে।রান্না করতে হবে না?(মা)

মা তুমি জানো,আমি রান্না করা পছন্দ করি না।(মারিয়া)

বিয়ে করলে যে তোর কী হবে।(মা)

সেটা তখন দেখা যাবে,চলো তাও সাহায্য করি।আচ্ছা ফুফু রা কয়দিন থাকবে।(মারিয়া)

জানিনা।(মা)


দুপুরের দিকে ফুফু রা আসলো।সাথে নিয়ে আসলো কয়েক রকমের ফল।আমি ফুফু আর আফিফাকে দেখে পুরোই চমকে গেলাম।এমনিতে ফুফা মারা যাওয়ার পরে ওনারা আমাদের বাসায় খুব একটা আসতো না।শেষবার এসেছিলো তাও ২বছর আগে।
আমি স্তব্ধ হয়ে দেখলাম ফুফু ও আরিফা বোরখা নেকাব পড়ে এসেছে।
তাদের আগে কখনো নেকাব পড়তে দেখিনি।আর দেখলাম আমিন ভাইয়া একটা সাদা পাঞ্জাবি পড়ে এসেছে।
পরে জানতে পারলাম আমিন ভাইয়া মসজিদের হুজুর হয়ে গেছে দুই বছরে।সাথে ফুফার বিজনেসও দেখছে।

দুই বছরে এতো চেঞ্জ!আমি বেশ অবাক হলাম।

396 Views
10 Likes
1 Comments
4.3 Rating
Rate this: