আমি রুমে ঢোকার জন্য সালাম দিলাম।
সালামের উত্তর দিয়ে দরজা খোলামাত্রই...
আমার চোখ তো কপালে উঠে গেল। আমি এটা কী দেখলাম!
মিথিলা শাড়ি পরে দাঁড়িয়ে আছে। আসলে আমি মিথিলাকে কোনো দিন শাড়ি পরতে দেখিনি। একটা মানুষকে শাড়িতে এত সুন্দর লাগে তা আমার জানা ছিল না। নীল শাড়িতে মিথিলাকে যেন নীলপরী লাগছিল। আমি হাঁ হয়ে তাকিয়ে আছি। আমার ধ্যান ফিরলো মিথিলার ডাকে।
মিথিলা: কী হলো? এইভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?
নাইম: তোমাকে দেখছি।
মিথিলা: কিহ্! মানে কী?
নাইম: আরে বলছি, তোমার মাকে দেখছি না।
মিথিলা: মা রান্নাঘরে আছেন। আসেন, আপনি ভিতরে।
নাইম: ধন্যবাদ।
মিথিলা: কেন ধন্যবাদ?
নাইম: আমাকে রুমে ঢোকার অনুমতি দিয়েছ, তাই। আর হ্যাঁ, তুমি আমার বয়সে ছোট, তাই তুমি করে বলছি। কিছু মনে করছ তো না?
মিথিলা: আরে না, কোনো সমস্যা নেই।
নাইম: তোমার কোন কোন বিষয়গুলোতে সমস্যা হয়?
মিথিলা: আসলে আমার সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় ইংরেজিতে।
নাইম: ওহ, আচ্ছা। সমস্যা নেই। মন দিয়ে পড়বে, তাহলে আর কোনো সমস্যা হবে না।
মিথিলা: ওকে, স্যার।
নাইম: স্যার বলতে হবে না।
মিথিলা: তাহলে কী বলব আপনাকে?
নাইম: স্যার বাদে যা ইচ্ছা।
মিথিলা: ওকে, ভাইয়া।
(মনে মনে) দূর! আমাকে প্রথম দিনেই ভাইয়া বানিয়ে দিলো! নিজের জামাইকে কি কেউ ভাইয়া ডাকে?
কিছুক্ষণ পর আন্টি এসে চা নিয়ে আসলেন।
মিথিলার মা: এই নাও, বাবা, চা।
নাইম: আন্টি, মিথিলার বাবাকে যে দেখছি না?
মিথিলার মা: ওহ, ওর বাবা আর বড় বোন তার ফুফুর বাসায় গেছে ঢাকায়। কয়েক দিন পর আসবে।
নাইম: ওহ আচ্ছা, ঠিক আছে, আন্টি।
মিথিলার মা চলে গেলেন পাশের রুমে। আমি মিথিলাকে পড়াতে লাগলাম। আর তার মুখটা বারবার দেখছিলাম। আহা, কী মায়াবী চেহারা! মিথিলাও সুন্দর করে পড়ছে। প্রায় এক ঘণ্টা পড়ালাম। তারপর বাসায় যাওয়ার জন্য আন্টিকে বললাম।
আন্টি বললেন, "ঠিক আছে, কালও সময়মতো চলে আসো।"
আমি বললাম, "ঠিক আছে, আন্টি।"
সালাম দিয়ে চলে আসলাম।
আসার পথে রাস্তায় দেখা হলো আবিরের সাথে।
আবির: কী রে, নাইম! কোথায় গেছিলি?
নাইম: কোথাও না।
আবির: মিথ্যা বলিস কেন? এই তো দেখলাম, এই দিক থেকে আসছিস। আর এই দিকে তো মিথিলাদের বাড়ি।
নাইম: তো কী হয়েছে?
আবির: মিথিলাকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতে গেছিলি?
নাইম: আরে না, হাঁটতে গেছিলাম।
আবির: আর কত মিথ্যা বলবি?
নাইম: হ্যাঁ, গেছি। তোর কোনো সমস্যা?
আবির: আরে না, কোনো সমস্যা নেই। বললেই হয়, গেছিস।
নাইম: হুম, গেছি।
আবির: আচ্ছা, রাতে আসিস খেলার মাঠে। পার্টি করব আজ।
নাইম: ওকে, ঠিক আছে।
নাইম বাসায় ফিরে মাগরিবের নামাজ পড়ল। তারপর তার মায়ের কাছে গিয়ে বলল, "মা, আমাকে কিছু টাকা দাও তো।"
নাইমের মা: আমার কাছে টাকা নেই।
নাইম: আমি চাইলেই তোমার কাছে টাকা থাকে না।
নাইমের মা: এত বড় হয়েছিস, নিজে কামাই করে টাকা নষ্ট করবি। আমি কোনো টাকা দিতে পারব না।
নাইম: ঠিক আছে, লাগবে না তোমার টাকা।
এটা বলে নাইম বাসা থেকে বের হয়ে গেল। মাঠে গিয়ে দেখে আবির এসেছে, সঙ্গে সাকিব আর মিজান।
নাইম: কী রে, আবির! মাত্র তিন জন মিলে পার্টি দিবি নাকি?
আবির: আরে না, রাতুল আসবে। মাত্র ফোন দিল।
নাইম: ও আচ্ছা।
(সাকিব আর মিজানের সঙ্গে কথোপকথন হলো। সবাই আলহামদুলিল্লাহ বলে তাদের খবর জানালো।)
পরে তারা সবাই মিলে পার্টির কাজ শুরু করল। সব কিছু ঠিকঠাক হলো। খাবার খেতে যাবার সময় রাতুল এল।
রাতুল: কী রে, একাই খাবি নাকি?
নাইম: আরে না, তোর জন্যই অপেক্ষা করছিলাম।
আবির: কী রে, খাবার সামনে রেখে আর কথা বলতে ভালো লাগছে না।
মিজান: দূর! তোরা কথা বল। আমি খেতে শুরু করলাম।
সবাই মজা করছিল। হঠাৎ রাতুল বলল, "মিথিলা আসলে একটা জিনিস রে, মামা। আমারও ইচ্ছা মিথিলার সঙ্গে এক রাত থাকতে।"
এটা শুনেই নাইম রাগে রাতুলের গলা চেপে ধরে মারতে লাগল। সবাই ঠেকানোর চেষ্টা করল, কিন্তু পারল না। রাগের মাথায় রাতুল ছুরি নিয়ে নাইমকে আঘাত করতে যায়। তখনই সামনে মিজান চলে আসে। আর মিজানের পেটে ছুরি ঢুকে যায়। মিজান সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
চলবে...
অহংকারী মেয়ে
অডিও মোড
00:00
00:00
গতি:
ভলিউম:
216
Views
0
Likes
2
Comments
0.0
Rating