নক্ষত্র

অবশেষে নিরু একটা ফুটফটে বাচ্চার মা হলো। বাচ্চাটা মেয়ে,, মেয়েটা কান্না করলো। কান্নার আওয়াজ নিরু কানে গেল।কান্নার আওয়াজ পেয়ে নিরু শত কষ্ট ভুলে মনে মনে খুশি হচ্ছিল। একজন নার্স বাচ্চাটাকে কোলে নিয়ে বাইরে বেরিয়ে এলো নার্স বললো,
নার্স :পেসেন্টের পরিবারের কেউ আছে এখানে??
রেনু বললো,
রেনু:জি আমি আছি।
তারপর নার্স বাচ্চাটাকে রেনুর কোলে দিয়ে চলে গেলো।রাত বেড়ে চলছিলো। আস্তে আস্তে ঝড় -বৃষ্টিও থেমে যাচ্ছিলো।কাকা বললো,
কাকা:রেনু তুই থাক এখানে। রাত হয়ে যাচ্ছে আবার বৃষ্টি শুরু হতে পারে বেশী রাত হলে আবার বাড়ি ফিরতে পারবো না,, রাতও হচ্ছে। আমি তাহলে বাড়িতে চলে যাই।কালকে সকালের দিকে আবার আসবোনে।
রেনু:আচ্ছা কাকা যান তাহলে, দেখে শুনে সাবধানে যাবেন।
কাকা:আচ্ছা ভালো থাকিস।
নিরুকে বেডে শিফট করা হলো।একটা নার্স রেনুকে বললো,
নার্স :পেসেন্টের ইমারজেন্সি কিছু ঔষধ আনতে হবে।
রেনু:আচ্ছা আমি আনার ব্যাবস্থা করছি।
নার্স :আচ্ছা
রেনু বাচ্চাটাকে নিরুর পাশে শুয়িয়ে রেখে নীচে গেলো ঔষধ আনতে।নিরু বাচ্চাটার দিকে তাকিয়ে আছে।বাচ্চাটা একটু একটু হাত পা নাড়াচ্ছে আর ঘুমের মধ্যে মুচকি মুচকি হাসছে।হঠাৎ,,বিদ্যুৎ চমকে উঠলো,,বাবাটা ভয় পেয়ে অনেক জোরে কান্না করছিলো।তারপর কেমন জানি শান্ত হয়ে গেলো।নিরু বাচ্চাটাকে ওরকম দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিলো।একটু পর রেনু এলো।নিরু রেনুকে বললো,
নিরু :দেখতো ও ঠিক আছে কি না?
রেনু :জি আপু একদম ঠিক আছে।
নিরু:আচ্ছা
নিরুর মন একটু শান্ত হলো। নিরু একটু স্বস্তি পেলো।চারদিক শান্ত হয়ে গেলো।বৃষ্টিও থেমে গিয়েছে কোন কোলাহল নেই ব্যাস্ত শহর একদম নিশ্চুপ। হসপিটালের পিছে নদী থেকে ব্যাঙের ডাক শুনা যাচ্ছে। নিরু বেডে শুয়ে আছে আর রেনু বাচ্চাটাকে কোলে নিয়ে বসে আছে।নিরু জানালা দিয়ে আকাশ দেখছে।আকাশে অনেক তারা মিটিমিটি করে জ্বলছে আর বাচ্চাটার মতো মুচকি হাসছে।নিরু ভাবতেছিলো এখন একটা ছোট্ট তারা আমার কাছে আছে।যদি আমি বাচ্চাটার নাম নক্ষত্র রাখতে পারতাম।এগুলা ভাবতে ভাবতেই রাত ১১:০০টা বজে গিয়েছে,, হঠাৎ দেখে রুমে রাতুল। নিরু বললো,
নিরু:রাতুল তুমি এখন এখানে,,এত ঝড়ের মধ্যে কিভাবে এলে?
রাতুল :কেউ ফোন ধরছিলে না আমার ওতো চিন্তা হয় নাকি?তাই চলে এলাম থাকতে না পেরে।আমার বাচ্চাটা কই?
নিরু: খুজে নাও কোথায় আছে।
রাতুল:ফ্রেশ হয়ে আসতেছি কোলে নিতে।
নিরু:আচ্ছা
এই বলে রাতুল ফ্রেশ হতে গেল।ফ্রেশ হয়ে এসে বাচ্চাটাকে কোলে নিয়ে বললো আমি তোমার নাম রাত্রি রাখতে চাইছিলাম আর তুমি রাতের বেলায়ই হইছো। মা তোমাড নাম আমি রাত্রি রাখলাম।তুৃমি আমার রাতের আলো এগুলা বলতিছে আদর করতিছে।বাচ্চাটা তাকিয়ে দেখতিছে কিন্তু কোন শব্দ করতিছে না। কিছুক্ষণ পর রাতুল বললো
রাতুল:ওর কোন সাড়া নেই কেনো। কান্নাও করতিছে না
নিরু:বাচ্চারা এরকমই হয়। সকালে তাকাবে কান্না করবে তোমার সাথে খেলবে।এখন চুপচাপ হয়ে আছে।
রাতিল :ওহ তুমি ঘুমাও।রেনুকে বললো তুইও একটু ঘুমিয়ে নে। আমি এখনেই আছি।
রেনু:আচ্ছা ভাইয়া।
দেখতে দেখতে রাত কেটে গেল।