লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর থানার চর জাঙ্গালিয়া—এ এক ছোট্ট গ্রাম, যেখানে রহস্য আর অশুভ শক্তির গল্প ঘুরে বেড়ায়। গ্রামের প্রত্যেক কোণে শোনা যায় এক অদ্ভুত কাহিনি। মায়াবতী, নামটা আজও লোকের মুখে মুখে ঘুরে। কেউ জানে না, সে আসলে ছিল এক তরুণী, যার সৌন্দর্য আর চোখের মায়াজালে পুরো গ্রামকে নিজের ভেতরে আঁকড়ে রেখেছিল। কিন্তু হঠাৎ একদিন সে অদৃশ্য হয়ে যায়। তার পর থেকে শুরু হয় অদ্ভুত ঘটনা, যা এখনো অনেকের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
গ্রামের ছেলে রাকিব, রাজু, ইলিয়াস, এবং তাদের বন্ধুদের একদিন মাঠে খেলা চলছিল। তারা সব সময় একসঙ্গে দুষ্টুমি করত, কিন্তু সেদিন রাকিবের মন ছিল অন্য কোথাও। মাঠের প্রান্তে, হঠাৎ তার চোখে পড়ে এক তরুণী, যার চোখে ছিল এক রহস্যময় দীপ্তি। সে মায়াবতীর মতোই দেখতে, আর যেন কোথাও এক অদৃশ্য আভা ছড়িয়ে রয়েছে তার চারপাশে। রাকিবের মধ্যে এক অদ্ভুত আকর্ষণ জন্ম নেয়।
রাকিব তার বন্ধুদের নিয়ে সেই তরুণীকে অনুসরণ করতে থাকে, কিন্তু সে তরুণী অদৃশ্য হয়ে যায়। তারা কিছু বুঝে ওঠার আগেই, রাকিব তার সামনে গিয়ে দাঁড়ায় এবং বলেই ফেলে, "তুমি কি আমাকে ভালোবেসেছিলে?"
তরুণী মৃদু হাসে, তারপর বলে, "হ্যাঁ, ভালোবেসেছিলাম, কিন্তু সে ছিল আমার একমাত্র ভুল।"
পরদিন, রাকিব যখন ঘুমাচ্ছিল, এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটে। রাকিব রাতে তার বিছানায় শুয়ে ছিল, হঠাৎ জানালার কাঁচে ঠান্ডা বাতাস আসে, আর সেই বাতাসে ভেসে আসে এক অশুভ আওয়াজ। আওয়াজটা ছিল যেন মায়াবতীর কন্ঠস্বর—"তুমি আমাকে ভুলতে পারবে না, রাকিব। আমি তোমার মধ্যে আছি, আমি তোমার মনে আছি।"
এরপর থেকে শুরু হয় এক ভয়ের অধ্যায়। রাকিব, রাজু এবং ইলিয়াস—তাদের কাছে স্পষ্ট হতে থাকে যে মায়াবতী শুধুই এক সাধারণ মেয়ে নয়। সে আসলে এক আত্মা, যার মৃত্যুর পর তার ক্ষোভ আর আবেগ আজও চর জাঙ্গালিয়ার প্রতিটি কোণে ছড়িয়ে আছে।
গ্রামবাসীরা বলত, মায়াবতী কখনোই মরে না। তার আত্মা আজও ছড়িয়ে আছে, যারা তাকে ভুলে যেতে চায়, তারা ভয়ানক পরিণতির শিকার হয়। কিন্তু রাকিব জানত না, যে মায়াবতীকে সে ভালোবেসেছিল, সে এক ভয়ঙ্কর ভূতের অবতার। সে বুঝতে শুরু করেছিল, তার আর কোনো উদ্ধার নেই।
শেষ। দ্বিতীয় পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন ।