মায়াবী চোখ গুলো

আমিঃ সমস্যা কি আপনার হ্যাঁ ? কাল সু*ই*সাইড করতে গেছালেন আজ আবার বাসা ছেড়ে চলে গেলেন মানে কি নাটক শুরু করছেন ? আরে বাবা মানলাম আপনাকে হয়তো আপনার মতামতের বিরুদ্ধে বিয়ে দেওয়া হয়েছে । কিন্তু আমি কি আপনার উপর কখনো কোনো বিষয় নিয়ে জোর করছি ? কখনো জোর করে অধিকার ফলানোর চেষ্টা করছি? তাহলে এসব নাটকের কারণ টা কি ?

রিদি শুধু চুপ করে মাথা নিচু করে আমার কথা শুনছে । তারপর আমি আবারও বলতে শুরু করলাম,,,,,,,

আমিঃ দেখেন আমি আপনাকে আমার শারীরিক চাহিদা মেটানোর জন্য বিয়ে করি নি । যদি শারীরিক চাহিদা মেটানোর জন্য বিয়ে করতাম তাহলে আপনার ইচ্ছে দেখার অপেক্ষায় থাকতাম না। আমি আপনার বাবার কথায় বিয়ে করছি ।

রিদিঃ মানে (অবাক হয়ে) ।

আমিঃ মানে আপনার বয়ফ্রেন্ড একটা চিট । আরো মেয়ের সাথে সম্পর্ক আছে । আর এটা তোমার বাবা জানতে পারে । তাই বিয়ে টা ভেঙে দেয় । বিশ্বাস না হলে এই ভিডিওটা দেখেন ।

তারপর আমি রিদির বয়ফ্রেন্ডের কুকীর্তির ভিডিওটা রিদিকে দেখালাম । আমি আবার বললাম,,,,,,

আমিঃ এরপরও যদি আপনি সু*ই*সা*ই*ড করতে চান তবে আমি আর বাঁধা দিবো না । আমি বাইরে যাচ্ছি আপনাকে সু*ই*সা*ই*ড করা থেকে কেউ আটকাবে না। যে নিজেকে ভালোবাসে না তার বেঁচে থাকার কোনো প্রয়োজন নেই ।

আমি কথা গুলো বলে বাইরে চলে আসলাম ।
রাগের মাথায় কি কি যে বললাম কিছুই বুঝতে পারছি না । সারাটা সময় পাশের একটা পার্কে বসে কাটিয়ে দিলাম ।

হঠাৎ করে ফোনে তাকিয়ে দেখি রিদির অনেক গুলো মিসড কল । তবুও আমল না দিয়ে বসেই রইলাম । বাসায় আসতে অনেক লেট করে ফেললাম ।

বাসায় এসে কলিং বেল বাজাতেই ভিতর থেকে আম্মু রিদিকে বললো,,,,,,

আম্মুঃ দেখো তো রিদি মামুনি কে আসছে ?

রিদি এসে দরজা খুলে দিলো ।

রিদিঃ আজকে এতো লেট করলে যে । কোথায় ছিলে এতোক্ষন ?

আমিঃ এমনিই ভালো লাগছিলো না ।

রিদিঃ গোসল করে আসো । আমি খাবার দিচ্ছি । আজ আমি নিজে তোমার জন্য রান্না করেছি ।

আমিঃ ঠিক আছে ।

তারপর আমি আমার রুমে এসে গোসল করে নিচে আসলাম । আমরা সবাই খেতে বসলাম । রিদি বেড়ে দিচ্ছে । আম্মু বললো,,,,,,

আম্মুঃ রিদি মামুনী তুমিও আমাদের সাথে খাবে বসো ।

রিদিঃ আমি এখন খাবো না আম্মু আপনারা আগে খেয়ে নেন ।

বলেই রিদি আমার দিকে তাকিয়ে আছে । তারপর আমি বললাম,,,,,,,,

আমিঃ বসতে বলছে বসেন । সকাল থেকে তো আপনিও কিছু খান নি ( কথাটা একটু রাগী সুরে বললাম)

আমি বসতে বলার পর রিদি খেতে বসলো।
আমি বুঝতে পারলাম রিদি আম্মুকে কি যেন একটা ইশারা করছে । তারপর আম্মু আমাকে বললো,,,,,,,

আম্মুঃ রাজ রান্না কেমন হইছে ?

( ওহহ আচ্ছা তাহলে এটাই ছিলো ইশারার কারণ)

আমিঃ খুব সুন্দর হয়েছে।

খাওয়া শেষ করে বসে কিছু সময় টিভি দেখলাম ।
টিভি দেখা শেষে উঠে রুমে এসে শুয়ে পড়লাম । আর আমি যদি দুপুরে একবার ঘুমাই তাহলে মাগরিবের আজানের আগে আর জাগনা পাই না।

ঘুম থেকে সন্ধ্যায় জাগলাম ।
বাইরে এসে দেখি রিদি কার্টুন দেখছে । আমাকে দেখে রিদি বললো,,,,,,,

রিদিঃ সারাদিন এতো ঘুম তোমার কই থেকে আসে ? অলস ছেলে একটা ।

আমিঃ হুম । আর আপনি তো খুব কর্মট ।

আমি রিদির সাথে কথা বলতে বলতে রান্না ঘরে আসলাম । একটু কফি বানাবো।

পানি গরমে দিলাম ।

রিদিঃ কি করছো ?

আমিঃ কফি বানাবো।

রিদিঃ আমায় বললেই তো বানিয়ে দিতাম ।

আমিঃ আপনি কার্টুন দেখছিলেন তাই ভাবলাম নিজেই বানিয়ে নেই ।

তখন আম্মু মজা করে বললো,,,,,

আম্মুঃ বাহহ কবে থেকে নিজের কফি নিজে বানাতে শিখলি । আর আমাকে তো কখনো বলিস নি তুমি কাজ করছো আমার কফি আমি বানাই ।

আম্মুর কথা শুনে একটু লজ্জাই পেলাম । তাই নিজের রুমে চলে আসলাম । এসে রিদির কাছে কিছুক্ষণ পরলাম ।

তারপর রিদি রাতের খাবার রেডি করতে গেল । কয়েকটা ঝাড়ি খাওয়ার পর মেয়েটা যে এতটা ভালো হয়ে যাবে আগে বুঝি নি। বুঝতে পারলে ঝাড়িটা অনেক আগেই দিতাম।

রাতে খাওয়া দাওয়া করে আমি আমি নিজের রুমে এসে দেখি রিদি রুমে নেই । হয়তো ছাদে গেছে । তাই আমিও ছাঁদে চলে আসলাম ।

ছাদে রিদি একা একা আনমনে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে ।

আমিঃ সকালে তোমার সাথে বাজে ব্যবহার করার জন্য সরি ।

আমার কন্ঠ শুনে একটু চমকে গেলো আর সাথে সাথে চোখ মুছলো । মনে হচ্ছে আবার কান্না করছে । তারপর রিদি বললো,,,,,,

রিদিঃ আরে না । তুমি তো ঠিকই করেছো ।

আমিঃ আপনি কান্না করছেন ?

রিদিঃ তোমাকে আমি কিছু কথা বলতে চাই ।

আমিঃ হ্যাঁ বলেন ।

রিদিঃ আমি জানি তুমি অনেক শান্ত মনের একজন মানুষ । কিন্তু আমার কথা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তুমি কোনো কথা বলবে না । প্রমিজ করো ।

আমিঃ কি এমন কথা?

রিদিঃ আগে প্রমিজ করো ।

আমিঃ আচ্ছা বাবা প্রমিজ ।

রিদিঃ আমি প্রেগন্যান্ট ।

এইটুকু বলেই রিদি থেমে গেলো । আমার ও চারপাশ টা মনে হয় ঘুরতে লাগলো । আকাশ থেকে এক টুকরো মেঘ মনে হয় আমার মাথায় এসে পড়লো। আমি কি ভুল শুনলাম,,,,,,,,,,,,
""
""
""
চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,

পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন । ধন্যবাদ ।