অচেনা এক কন্ঠের সুর

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
** আমি তখন নবম শ্রেণীর ছাত্রী। আমার বান্ধবীরা সব কাঁধে পাঙ্খা লাগিয়ে উড়ে বেড়ানোর প্রেক্টিস করছে। আমিও তাদের দেখে দেখে উৎসাহি খুব।

রাস্তায় কোনো ছেলে তাকালে মিটি মিটি হাসি। কাউকে এটেনশন দিতে দেখলে একটা আনন্দ লাগে।তার সাথে আরেকটু মশলা মাখিয়ে সে গল্প বান্ধবীদের কাছে বলে খিলখিল করে হাসি।😊😊

গার্লস স্কুলে পড়ার সুবাদে সবাই মিলে বয়দের সাথে ক্যামিস্ট্রির ক্যামিক্যাল রিএকশন নিয়ে গবেষণায় ব্যস্ত।

ঠিক সেরকম এক রাতের কথা ,,,,
আমরা তখন থাকতাম পূর্ব রামপুরায়। আমাদের এলাকার রাস্তা খুব বেশি খারাপ না হলেও খুব ভালো না।

আশে পাশে পাঁচ তলার বেশি বিল্ডিং নেই। আমাদের বিল্ডিংটা চারতলা। ছাদে উঠলে বেশ আয়েশ করে বাতাস উপভোগ করা যায়।
যেহেতু উড়ু উড়ু বয়স ,, আমি সুযোগ পেলেই বিকেলে ছাদে চলে যেতাম।

এখনকার মতো আমরা সারাদিন মোবাইলে টিকটক আর ফেসবুকের রিলস দেখে সময় নষ্ট করতাম না। আমরা সময় নষ্ট করার কিছু অনন্য উপায় বের করে নিয়েছিলাম।

আমি ছাদে গেলে মাঝে মাঝে গিটারের টুংটাং আওয়াজ পেতাম। কিন্তু কোথা থেকে সে শব্দ আসতো তা বের করতে পারতাম না। ইতিউতি উঁকি দিয়ে ছাদগুলো পর্যবেক্ষণ করতাম।
ছাদে বসে গিটারের তার ঠিক করা কোনো ছেলে নজরে পড়তো না।

গিটারেস্টদের প্রতি আমাদের জেনারেশন এর প্রায় মেয়েদেরই বোধহয় দুর্বলতা ছিল।

সেই রাতে আমি বারান্দায় গিয়ে বসে ছিলাম।

আম্মু গিয়েছে গ্ৰামে নানুর বাড়ী।বড় আপু পরিক্ষার শেষে ফুপুর বাড়ি বেড়াতে গেছে।ফুপু
থাকে সেগুন বাগিচায়। আপুর সমবয়সী ফুফাতো বোন আছে।তারা সবাই মিলে মজা করবে।

আমি আটকে গেছি প্রক্টিক্যাল পরীক্ষার জন্য।
একটানা প্রক্টিক্যাল খাতায় লিখে রিলাক্স হতে বারান্দায় এসে বসেছিলাম ।

তখন শরৎ কাল চলছে । আকাশে শুক্লপক্ষের চাঁদের সাথে টুকরো টুকরো তুলোর মতো মেঘ
ভেসে বেড়াচ্ছে। মৃদুমন্দ বাতাসে আমি চুল খুলে দিলাম।
আজকে তেমন একটা গরম লাগছে না,, আমি সেখানে বসে চোখ বুজে গিটারের টুংটাং এর সাথে একটা পুরুষালি কন্ঠও পেলাম।

" " আজ তোমার মন খারাপ মেয়ে,,
তুমি আনমনে বসে আছো।
আকাশ পানে দৃষ্টি উদাস,,
আমি তোমার জন্য এনে দেবো মেঘ থেকে বৃষ্টির ঝিরি ঝিরি হাওয়া,,,
সে হাওয়ায় ভেসে যাবে তুমি,," "

আমার ভিতরে কি যেন নাড়া দিয়ে গেল। একি আমাকে নিয়ে গাইছে নাকি,,,??🤔🤔

আমাকে দেখতে পাচ্ছে,,,? অদ্ভুত তো ! কোথায় সে,,,



চলবে,,,,,,
430 Views
9 Likes
5 Comments
3.6 Rating
Rate this: