মন্দারমনী থেকে ফেরার দু'দিন পর.......
আজ নাইট ডিউটি পরেছে মেহেদীর। পৃথার মাস্টার্সের ফাইনাল পরিক্ষা আগামী সপ্তাহ থেকে শুরু হচ্ছে, তাই আজ সন্ধ্যে থেকে মেহেদী বাড়ি না থাকা স্বত্বেও পড়াশোনায় কোনও ফাঁক রাখছে না সে।
রাত ১টা বাজে......
আপাতত একটু ফ্রি হয়েছে মেহেদী। পর পর দু'টো O.T. র পর এখন সে খুবই ক্লান্ত। তাই এখন চেয়ারে বসে একটু জিরিয়ে নেওয়া। হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠায় বেশ বিরক্তই বোধ করে মেহেদী। ফোনটা হাতে নিয়েই দেখতে পায় পুলিশ অফিসার ফোন করেছে।
"হ্যাঁ অফিসার বলুন, হঠাৎ এতো রাতে ফোন? কিছু জানতে পারলেন?"
" কি করব ডা. হাসান, ব্যপার টা এমন হয়েছে যে এতো রাতে ফোন না করে থাকতে পারলাম না। "
" কি হয়েছে অফিসার, আপনাকে বেশ চিন্তিত লাগছে?"
" আসলে পৃথার কাকিমা খুন হয়েছেন ডা.হাসান আর ওর কাকুর মাথায় আঘাত করে খুনিরা পালিয়ে গেছে। "
" What !!!!!! আপনি কি বলছেন কি? কি করে হলো এসব? মানে আপনি কি বলছেন কিছুই তো বুঝতে পারছি না..... "
"I'm confused too Dr. Hasan." যাদের সন্দেহ করলাম তাদের মধ্যে একজন খুন হলেন আরেকজন গুরুতর আহত হয়েছেন। আমি কিছুই বুঝতে পারছি না ডা.হাসান। "
"হুঁ,....... আমিও খুব অবাক হচ্ছি এ বিষয়ে বাইরের আর কে হতে পারে? "
"আচ্ছা এখন তাহলে রাখছি পরে আপনাকে ফোন করবো ডা. হাসান, আর পৃথা কেমন আছে? "
"ওই আছে একরকম.....কি আর বলব আপনাকে? এখন এই খবরটাই বা কিভাবে দিবো জানিনা।"
সকাল হতেই হসপিটালের যাবতীয় কার্জক্রম মিটিয়ে বাড়ি ফেরে মেহেদী। বাড়ি ফিরেই সোজা আসে পৃথার ঘরে কিন্তু সেখানে পৃথাকে দেখতে না পেয়ে নিজের ঘরে যায় সে। দরজা খুলতেই দেখতে পায় পৃথা ওর পড়ার টেবিলে বসে বইয়ের উপর উপুর হয়ে ঘুমাচ্ছে। আস্তে আস্তে পৃথার পাশে এসে দাঁড়ায় মেহেদী। পৃথার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে দেখতে পায় ওর (মেহেদীর) candid ছবি, যেই ছবিটা ওর শোকেসে ফটো ফ্রেমো সাজানো ছিল। স্মিত হেসে পৃথাকে নিজের কোলে তুলে নিয়ে পৃথার রুমে এসে যত্ন সহাকারে খাটের শুইয়ে দিয়ে নিজের রুমে চলে আসে মেহেদী। ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পরে মেহেদী।
ঘুম ভাঙে পৃথার ডাকে৷ breakast সেরে দু'জনে যে যার কাজে ব্যস্ত হয়ে যায় পৃথা পড়াশোনা নিয়ে আর মেহেদী রান্নাঘরে। দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর পৃথা নিজের রুমে বসে পড়াশোনা শুরু করে। এরই মধ্যে হঠাৎ করে বৃষ্টি নামে। জানালা দিয়ে বৃষ্টি দেখতে দেখতে একসময় বৃষ্টিতে ভেজার খুব ইচ্ছে হয় ওর, ছোটবেলায় বাবার সাথে কতবার বৃষ্টিতে ভিজে আনন্দ করেছে সে। সেই দিনগুলোর কথা মনে হতেই মন খারাপ হয়ে যায় ওর। তিন তলার ছাঁদে এসে চুপচাপ দাঁড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজতে থাকে।
পৃথাকে রুমে খুঁজে না পেয়ে এদিক ওদিক খুঁজে না পেয়ে ছাঁদে আসে মেহেদী। পৃথাকে ভিজতে দেখে ওর চোখ ঘোর লাগতে থাকে। 😳 পৃথার কাছে এসে ওকে পেছন থেকে জরিয়ে ধরে ঘারে চুম্বন করে। কেঁপে ওঠে পৃথা। চোখ বন্ধ করে মেহেদীর আদর উপভোগ করতে থাকে। ☺️
পৃথাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে ওর বৃষ্টি -স্নাত নরম পেলাব রক্তিম আভা বিশিষ্ট আধর থেকে সুধা পান করতে থাকে। উত্তেজনায় সেও মেহেদীকে নিজের সাথে আঁকড়ে ধরে মেহেদীর প্রেমে সারা দেয়।
রাত্রিবেলায় মেহেদী নিজের রুমের সঙ্গে attached balcony তে চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল। বৃষ্টি হওয়াতে চারপাশটা বেশ ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব। হঠাৎ একটা নরম হাতের ছোঁয়ায় ভাবনায় ছেদ ঘটে। পৃথা তার দুহাত দিয়ে পেছন থেকে শক্ত করে জরিয়ে ধরেছে মেহেদীর উন্মুক্ত বুক। একপানে পৃথাকে নিজের সামনে এনে ওর কপালে এক স্নেহের চুম্বনের স্পর্শ দেয়।
"আপনার কি কিছু হযেছে? সেই সকাল থেকেই আপনাকে বেশ চিন্তিত দেখছি?"
"না, না সেরকম কিছুই হয়নি। তুমি অতো চিন্তা করো না " বলেই পৃথার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে অন্য দিকে তাকায় মেহেদী। "
"আমাকে বলবে না তো? কি হয়েছে বলো না? "
"অফিসার ফোন করেছিল.......এই তুমি কি বললে? আমাকে তুমি করে বললে তাই না? "
লজ্জা পেয়ে পৃথা বলে ," sorry, এবার বলুন কি হয়েছে?"
"না sorry একদম নয়, তুমি করেই বলবে বুঝলে? "
"আচ্ছা তাই হবে। এবা বলো কি হয়েছে?"
সব কথা খুলে বলে মেহেদী পৃথাকে। পাথরের মতো স্থির হয়ে যায় পৃথা। মেহেদী ওকে ঘরে এনে খাটে শুইয়ে চলে যেতে গেলে মেহেদীর হাত টেনে ধরে পৃথা। মেহেদী পৃথার মাথাটা নিজের কোলর উপর রেখে হাত বোলাতে থাকে। তাতেই কয়েক ফোঁটা নোনা জল গরিয়ে পরে পৃথার দুচোখ বেয়ে।
[ সত্যিকারের ভালোবাসায় কখনো স্বার্থপরতা থাকে না....!!🦋🥀.....]
প্রথম দেখা (পর্ব ৪)
অডিও মোড
00:00
00:00
গতি:
ভলিউম:
358
Views
22
Likes
4
Comments
4.9
Rating