ফেসবুকে প্রেম অথপর বিয়ে

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
কয়েকটা বন্ধু ব্যতীত আমার আইডিতে তেমন কেউ মেসেজ দেয় না। তবে সেদিন ছিল শুক্রবার তখন সময়টা আনুমানিক রাত ১০ টার মতো হবে। জান্নাতুল বাকি নামে একটা ফেসবুক আইডি থেকে মেসেজ আসলো “আসসালামু আলাইকুম , কেমন আছেন " প্রথমে দেখে মনে করেছিলাম ফেক আইডি তবুও উত্তরে বললাম আলহামদুলিল্লাহ ভালো, আপনি কেমন আছেন

ওই পাশ থেকে উত্তর আসলো আলহামদুলিল্লাহ ভালো।
তারপর আমি জিজ্ঞেস করলাম আপনি কে চিনলাম না ত,,,,, এভাবে আমরা পরিচিত হলাম, কিছুক্ষন কথা বলার পর জিজ্ঞেস করলাম আচ্ছা তুই কে বল ত আশরাফুল নাকি অন্য কেউ , কয়েকটা বন্ধুর নাম বললাম, তখন সে বলল কি বলেন আপনি আমি বাকিয়া, আমি বললাম দেখ রবিন আমার সাথে মজা করিস না আমি জানি তুই রবিনে, তখন বাকি বলল আচ্ছা আপনার

যেহেতু বিশ্বাস হচ্ছে না আমি মেয়ে তাহলে আপনি ফোন দেন,,, আমি সরাসরি ভিডিও কল দিলাম, কল ধরতেই দেখি রূপবতী এক মেয়ে, দেখে যেন মনে হচ্ছে আসমান থেকে পরী ফোনের ভিতরে ডুকে গেছে, আমি ফোনের স্কিনে এক নজরে তাকিয়ে ছিলাম, হঠাত সে বলে উঠল এই যে মিস্টার এবার বিশ্বাস হলো ত আমি

ছেলে না মেয়ে। আমি বলতে যাব হ্যা তখনই ফোনটা কেটে দিল। আবারও একটা মেসেজ আসলো এবার বিশ্বাস হয়েছে ত আমি আপনার বন্ধু না, আমি বললাম হ্যা। আমি আবার বললাম, আপনাকে ত ভালো করে দেখতেই পারলাম না, তার আগে ফোন কেটে দিছেন।
তখন বাকি বলল এত দেখতে হবে না, বেশি দেখলে মায়াই পরে যাবেন। আমি উত্তরে বললাম, মায়াই ত এমনিতেই পরে গেছি, এভাবে প্রায় প্রতিদিনই কথা হতো, দুজনের মধ্যে খুব ভালো একটা বন্ধুত্তের সম্পর্ক তৈরি হলো। এক পর্যায়ে আমি ওরে ভালোবেসে ফেলি, তবে আমাদের সম্পর্কটা বন্ধুত্বেরই ছিল, কিন্তু আমার কেন জানি না মনে হতো বাকিও আমাকে ভালোবাসে।

একদিন আমি ওরে জিজ্ঞেস করলাম আচ্ছা বাকি তুমি আমাকে প্রথম দিন কেন মেসেজ দিয়েছিলে, তখন সে বলল এমনি, আমি বললাম না তোমাকে বলতে হবে, অনেক জোরাজুরি করার পর সে বলল, আসে আপনার একটা পোস্ট আমার কাছে ভালো লেগেছিল তাই আইডিতে ডুকেছিলাম, আপনার পোস্ট গুলো দেখে মনে হলো আপনি ভালো মজার মানুষ তাই মেসেজ দিছয়েছিলাম।


আমি ওকে মজার ছলে বললাম তুমি জান আমাকে মেসেজ দিয়ে তুমি আমার মন চুরি করে নিয়েছ, তখন সে বলল আপনি ত এক পোস্ট এর মাধ্যমেই আমার মন কেরে নিয়েছেন। এই কথা শুনে ত আমি মহা খুশি। এরপর থেকে আমাদের কথা বলার প্রবণতা আরো বেড়ে গেল।

প্রতিদিনই কথা হতো, বাকিয়াও আমার সাথে কথা না বলে থাকতে পারত না, এক কথায় ও আমার অভ্যাস এ পরিণত হয়ে গিয়েছিল, একদিন আমি ওরে বলি যে আচ্ছা আমরা ত কোন দিনও দেখা করি নি চল আমরা একদিন দেখা করি। বাকি বলল না আমি বাসা থেকে বের হতে পারব না। অনেক জোরাজুরি করার পর ও বলল আচ্ছা তাহলে আমি যেদিন বলব সেদিন আপনি আসবেন, এভাবে কিছু দিন কাটল, হঠাত বাকি একদিন বলল চলেন কালকে আমরা দেখা করি,

কালকে আমার ভাইয়া বাসায় থাকবে না , আমি জিজ্ঞেস করলাম কোথায় দেখা করবা, সে বলল আপনি আজিমপুর বট গাছের নিচে আসবেন ঠিক ১০ টাই, আমি আপনার জন্য অপেক্ষা করব। আমি বললাম ঠিক আছে। পরদিন নয়টার আগে আমি আজিমপুর বট গাছের নিচে চলে গেলাম, কিছুক্ষন অপেক্ষা করতেই দেখি বাকি কালো একটা বোড়কা পরে আসতেছে।

ওর চোখ দুটো দেখেই চিনে গিয়েছিলাম এটা বাকি। আমি জিজ্ঞেস করলাম এখন কোথায় যাবেন মেডাম। বাকি বলল ফুচকা খাওয়াতে নিয়ে যান স্যার। এরপর ওকে নিয়ে একটা ফুচকার দোকানে চলে গেলাম। একটা ছেলে এসে আমাদেরকে ফুচকা দিয়ে গেল, ফুচকা খাওয়ার জন্য বাকি তার হিজাবের ওরনা টা সরাতেই ওর মুখের দিকে এক নজরে তাকিয়ে রইলাম, বাকি জিজ্ঞেস করল কি দেখেন, আমি বললাম আপনারে মেডাম , ও বলল হইছে আর ডং করতে হবে না।

এরপর আরো কিছু জায়গা ঘুরঘুরি করার পর ও বাড়িতে চলে গেল, এভাবে কিছুদিন কেটে গেল, সবকিছু ঠিক ঠাকই চলতেছিল, হঠাত একদিন ওর ভাই আর ওর আব্বু ওকে বলে তোমার খালাত ভাইয়ের সাথে কালকে তোমার বিয়ে। ওর ভাই আর ওর আব্বুকে যদিও ভয়ে কিছু বলে নি তবে রুমে এসে সাথে সাথে আমাকে ফোন দিয়ে বলে আজকে সন্ধ্যায় আপনি এসে আমাকে নিয়ে যাবেন।

আমার বাবা আর ভাই আমার খালাত ভাইয়ের সাথে বিয়ে ঠিক করছে, আমি আপনাকে ছারা থাকতে পারব না প্লিজ আপনি এসে আমাকে নিয়ে যান। আমিও কোন কিছু না ভেবেই সন্ধ্যায় ওকে নিয়ে পালিয়ে যায় ।
আর আজ তিন মাস পূর্ণ হলো বাকি আমার স্ত্রী। বাকির বাবা আজকে ফোন দিয়েছিল বলেছে বাসায় চলে আসতে, যদিও তিনটা মাস আমাদের দুজনের অনেক কষ্টে কেটেছে। কিন্তু প্রিয় মানুষ কে সারাজীবনের জন্য আপন করে পাওয়ার কাছে এই কষ্ট কিছুই না।


শেষ শুধু একটা কথাই বলতে চাই যারা পরিবারের দোহাই দিয়ে তাদের প্রিয় মানুষকে ছেরে যায়। তারা আসলে ভালোইবাসতে জানে না। পরিবার কোন না কোন সময় মেনে নিবে ঠিকই, কিন্তু আপনার প্রিয় মানুষ কে হারালে তাকে আর কখনো ফিরে পাবেন না।
191 Views
12 Likes
3 Comments
0.0 Rating
Rate this: