ভুল সময়ের প্রেম

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
শ্রীজিত, একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, যার জীবনে প্রেমের কোনো জায়গা ছিল না। সে মূলত কাজের প্রতি নিবেদিত এবং একাকী জীবনযাপন করছিল। একদিন, সে একটি পুরনো অনলাইন প্ল্যাটফর্মে একটি অ্যাপ্লিকেশন খুঁজে পায়, যা ‘মেমরি লিংক’ নামে পরিচিত। অ্যাপ্লিকেশনটি অতীতের যোগাযোগ পুনরুদ্ধার এবং পুরনো সম্পর্কের তথ্য বের করতে সাহায্য করত।

অ্যাপ্লিকেশনটি ইনস্টল করার পর, শ্রীজিত একটি পুরনো প্রোফাইল খুঁজে পায়—নাম ছিল, "মায়া"। মায়া একজন মিষ্টি তরুণী ছিল, যার সাথে শ্রীজিতের কখনো পরিচয় ছিল না। প্রোফাইলটি দেখতে পেয়ে শ্রীজিতের মনে একটি অদ্ভুত কৌতূহল সৃষ্টি হয়। সে মায়ার সাথে যোগাযোগ শুরু করে এবং তাদের মধ্যে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মায়া তার জীবনের নানা বিষয় শেয়ার করতে শুরু করে এবং শ্রীজিত ধীরে ধীরে তার প্রতি আকর্ষণ অনুভব করতে থাকে।

একদিন, মায়া শ্রীজিতকে একটি অদ্ভুত কাহিনী শোনায়—একটি পুরনো প্রাসাদের কথা, যেখানে তার অতীতের স্মৃতি জড়িত। প্রাসাদটি একটি নাকি যাদুঘর, যেখানে একসময় একটি বিখ্যাত নাট্যকার বাস করতেন। মায়ার মতে, প্রাসাদটির মধ্যে অনেক অদ্ভুত ঘটনা ঘটে থাকে এবং সেখানে এক সময়কার প্রেমের কাহিনী আজও সজীব।

মায়া শ্রীজিতকে প্রাসাদটি দেখার আমন্ত্রণ জানায়। শ্রীজিত প্রথমে দ্বিধায় পড়ে, কিন্তু মায়ার প্রতি তার আকর্ষণ এবং কৌতূহলের জন্য সে সিদ্ধান্ত নেয় প্রাসাদে যাবে।

প্রাসাদে পৌঁছানোর পর, শ্রীজিত দেখতে পায় যে প্রাসাদটি সম্পূর্ণভাবে পুরনো এবং ভীতিকর। প্রাসাদের ভিতরে প্রবেশ করার পর, সে কিছু অদ্ভুত অনুভূতি অনুভব করতে থাকে এবং মায়ার সাথে যোগাযোগ করতে চেষ্টা করে, কিন্তু কোনো সাড়া পাওয়া যায় না।

প্রাসাদের বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে ঘুরতে, শ্রীজিত একটি পুরনো নাটকের স্ক্রিপ্ট এবং কিছু চিঠি খুঁজে পায়। চিঠিগুলি পড়ে, সে জানতে পারে যে মায়া আসলে প্রাসাদের প্রাক্তন মালিকের আত্মা। সে একটি প্রেমিকের সাথে একটি অভিশপ্ত সম্পর্কের মধ্যে ছিল, এবং প্রেমিকের মৃত্যু পর তার আত্মা প্রাসাদে বন্দী হয়ে গেছে।

মায়া তার প্রেমিকের মৃত্যুর পর প্রাসাদে বন্দী হয়ে যায় এবং তার প্রেমের কাহিনী কেবলমাত্র একটি আধ্যাত্মিক আবেগ হিসেবে রয়ে গেছে। শ্রীজিত বুঝতে পারে যে মায়ার সাথে তার সম্পর্ক আসলে একটি আধ্যাত্মিক প্রেমের অংশ ছিল, যা ভুল সময়ে হয়েছিল।

শ্রীজিত, মায়ার আত্মাকে মুক্তি দিতে সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নেয়। সে স্থানীয় আধ্যাত্মিক গুরুর সাথে যোগাযোগ করে এবং একটি বিশেষ পূর্ণিমার রাতের অনুষ্ঠান আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে, সে মায়ার প্রেমের কাহিনী শোনায় এবং তার আত্মার মুক্তির জন্য প্রার্থনা করে।

অনুষ্ঠানের পর, প্রাসাদের মধ্যে একটি মিষ্টি আলো ছড়িয়ে পড়ে এবং মায়ার আত্মা শান্তি লাভ করে। সে শ্রীজিতকে ধন্যবাদ জানায় এবং তার কাহিনী স্মরণীয় করে রাখার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।

শ্রীজিত তার অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি বই লেখার সিদ্ধান্ত নেয়, যা মায়ার কাহিনী এবং প্রাসাদের রহস্যের কথা বর্ণনা করবে। বইটি প্রেম এবং আত্মার মুক্তির একটি অসাধারণ উদাহরণ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে এবং এটি পাঠকদের মনে গভীর প্রভাব ফেলে।

এভাবে, মায়ার প্রেমের কাহিনী চিরকাল স্মরণীয় হয়ে রইল এবং শ্রীজিতের কাজ একটি অনন্য গল্প হিসেবে বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হলো।
153 Views
2 Likes
0 Comments
5.0 Rating
Rate this: