পেতনি অন্ধকারের রাজত্ব

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
ভূমিকা:

এক শান্তিপূর্ণ গ্রামের পাশে একটি প্রাচীন, পরিত্যক্ত কেল্লা রয়েছে, যা স্থানীয়দের মধ্যে “পেতনি” নামে পরিচিত। কেল্লার ইতিহাসের মধ্যে একটি গভীর এবং ভীতিকর রহস্য রয়েছে। গ্রামবাসীরা দাবি করে যে, কেল্লায় রাতের অন্ধকারে অদ্ভুত ঘটনাবলি ঘটে এবং সেখানে এক ভীতিকর প্রেতের রাজত্ব রয়েছে। কেল্লার অভ্যন্তরে অন্ধকারে মিশে থাকা এক ভয়ঙ্কর শক্তি গোপন রয়েছে যা কেউ একবার প্রবেশ করলে সহজে বেরিয়ে আসতে পারে না।

প্রথম অধ্যায়:

শহরের এক বিখ্যাত অতিপ্রাকৃত গবেষক, ড. সায়েদ, পেতনির রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য গ্রামে আসেন। তিনি তার সহকর্মী সারা এবং নিক, এক প্রাচীন ইতিহাসবিদ, কে নিয়ে কেল্লায় প্রবেশ করার সিদ্ধান্ত নেন। কেল্লার সামনে এসে তারা দেখেন, পুরনো কেল্লার ভেতর থেকে অদ্ভুত গাঢ় আওয়াজ এবং ঠাণ্ডা বাতাস বের হচ্ছে। কেল্লার প্রাচীন দরজা খুলতেই একটি ভীতিকর অন্ধকার তাদেরকে গ্রাস করে।

ড. সায়েদ, সারা, এবং নিক কেল্লার ভেতরে প্রবেশ করে এক এক করে বিভিন্ন কক্ষ পরিদর্শন করতে শুরু করেন। তারা দেখতে পায়, কেল্লার দেয়ালে প্রাচীন চিহ্ন এবং রেকর্ডিং রয়েছে যা প্রেতাত্মার সঙ্গে সম্পর্কিত। এক প্রাচীন দরজায় তারা একটি অদ্ভুত অক্ষর দেখতে পায় যা তাদেরকে সতর্ক করে দেয় যে, এই জায়গায় প্রবেশ করলে তারা কখনো ফিরে আসবে না।

দ্বিতীয় অধ্যায়:

বিভিন্ন কক্ষ পরিদর্শনের পর, তারা একটি গোপন কক্ষে পৌঁছে যা এক বড় পাথরের পাটাতন দিয়ে বন্ধ। পাটাতনের উপরে কিছু প্রাচীন অক্ষর লেখা রয়েছে, যা তাদের গবেষণার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। তারা বুঝতে পারে যে, কেল্লার মূল রহস্য এই পাটাতনের সাথে সম্পর্কিত। পাটাতনের ভিতরে একটি প্রাচীন মূর্তি রয়েছে যা একটি ভয়ঙ্কর প্রেতের প্রতীক। মূর্তির চোখে একটি অদ্ভুত আলো জ্বলছে, যা তাদের মনে ভয় ঢেলে দেয়।

এক রাত, কেল্লার অন্ধকারে কিছু অদ্ভুত আওয়াজ শোনা যায় এবং সারা এক অদ্ভুত ছায়ার মুখোমুখি হন। ছায়াটি যেন তাকে কিছু বলতে চায়, কিন্তু কণ্ঠস্বর শোনা যায় না। সারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এবং ড. সায়েদ এবং নিককে জানান। তারা সিদ্ধান্ত নেয় যে, পাটাতনের রহস্য উদঘাটনের জন্য তারা একটি বিশেষ পরীক্ষা চালাবে।

তৃতীয় অধ্যায়:

ড. সায়েদ, সারা এবং নিক পাটাতনের উপর একটি বিশেষ মন্ত্র প্রয়োগ করে এবং দেখা যায় যে, মন্ত্রটি কেল্লার অন্ধকার শক্তির উৎসকে জাগিয়ে তোলে। এক ভয়ঙ্কর আওয়াজ ওঠে এবং কেল্লার দেয়ালে অদ্ভুত উজ্জ্বল চিহ্ন দেখা দেয়। প্রেতাত্মার শক্তি আরও তীব্র হয়ে ওঠে এবং অন্ধকার শক্তি কেল্লার ভিতর এক ভয়ঙ্কর চাপ সৃষ্টি করে।

কেল্লার অভ্যন্তরে ভয়ঙ্কর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। প্রেতাত্মারা তাদের চারপাশে ঘুরতে শুরু করে এবং একের পর এক অদ্ভুত ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়। তারা দেখতে পায় যে, প্রেতের অন্ধকার শক্তি তাদের মনস্তাত্ত্বিক এবং শারীরিক অবস্থাকে অত্যন্ত খারাপ করে দিয়েছে। কেল্লার ভেতরে থাকা প্রাচীন অক্ষর ও চিহ্ন তাদেরকে ভয়ের মধ্যে রেখে দেয়।

চতুর্থ অধ্যায়:

এক রাতে, তারা দেখতে পায় যে, কেল্লার অন্ধকারে এক ভয়ঙ্কর প্রেতের উপস্থিতি স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে। প্রেতের চোখে এক ভয়ঙ্কর লাল আলো জ্বলছে এবং এটি তাদের দিকে এগিয়ে আসছে। তারা বুঝতে পারে যে, প্রেতের রাজত্ব কেল্লার অভ্যন্তরে বিরাজ করছে এবং তার শক্তি কেবল বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ড. সায়েদ এবং তার দল কেল্লার ভেতরেই এক জটিল মন্ত্র পাঠ করতে শুরু করে, যা প্রেতের শক্তিকে কমিয়ে আনার চেষ্টা করে। কিন্তু প্রেতের প্রতিশোধ এতটাই ভয়ঙ্কর যে, তাদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়। কেল্লার অন্ধকার কোণ থেকে এক ভয়ঙ্কর সত্তা বের হয়ে আসে এবং তাদের জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।

পঞ্চম অধ্যায়:

ড. সায়েদ এবং তার দলের সদস্যরা তাদের শেষ চেষ্টা করে প্রেতের শক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়াতে। তারা কেল্লার অভ্যন্তরের প্রাচীন মূর্তির সামনে গিয়ে একটি বিশেষ মন্ত্র উচ্চারণ করে। কিন্তু প্রেতের শক্তি এতটাই বিপর্যস্ত যে, তাদের সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়। কেল্লার অভ্যন্তরীণ অন্ধকারে এক ভয়ঙ্কর ঝড় শুরু হয়, যা তাদেরকে ধ্বংস করে দেয়।

শেষ অধ্যায়:

অবশেষে, কেল্লার ভেতর থেকে ড. সায়েদ এবং তার দলের সদস্যদের মৃতদেহ পাওয়া যায়। গ্রামবাসীরা দেখেন যে, কেল্লার অভ্যন্তরীণ অন্ধকার এবং শক্তি এখনও অব্যাহত আছে। কেল্লাটি এখন এক ভীতিকর স্থান হিসেবে পরিচিত, যেখানে কেউ আর প্রবেশের সাহস করে না। গ্রামবাসীরা সতর্ক হয়ে কেল্লার কাছ দিয়ে চলে যায়, কারণ তারা জানে যে, সেখানে একটি ভয়ঙ্কর প্রেতের রাজত্ব বিরাজ করছে।

শেষ কথা:
একটি গভীর ও ভয়াবহ কাহিনী যা প্রমাণ করে যে, কিছু প্রেতাত্মা এবং অভিশাপ এতটাই ভয়ঙ্কর যে, মানুষের জীবনকে সম্পূর্ণভাবে বিপন্ন করতে পারে। এটি আমাদের শেখায় যে, কিছু অন্ধকার শক্তি এবং প্রেতের উপস্থিতি অপ্রতিরোধ্য হতে পারে এবং তাদের রহস্যের মোকাবিলা করা সর্বদা ভয়ঙ্কর হতে পারে।
157 Views
1 Likes
0 Comments
5.0 Rating
Rate this: