পেত্নী অভিশপ্ত জাদুর সন্ধানে

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
প্রাচীন এক গ্রামে, যেখানে চারপাশে পেঁচার ডাক ও গভীর অন্ধকার ছিল, একটি রহস্যময় পুরনো mansion দাঁড়িয়ে ছিল। এই mansionটি ছিল একটি পুরনো পরিবার, তামান্না পরিবারের আবাস। তাদের শৈশব থেকেই, গ্রামের লোকেরা বিশ্বাস করত যে mansionটির ভিতরে একটি পেত্নী বাস করে, যে একদিন গভীর জাদু ও অভিশাপের মধ্যে বন্দী হয়ে ছিল।

তামান্না পরিবারের একজন, আরিয়া, ছিল একজন সাহসী ও কৌতূহলী তরুণী। তার বাবা-মা এবং ভাইবোনদের হারানোর পর, তিনি শুধুমাত্র এই mansion এবং তার রহস্যের প্রতি গভীর আকর্ষণ অনুভব করতেন। যদিও গ্রামের লোকেরা তাকে সতর্ক করে দিয়েছিল, কিন্তু আরিয়া ঠিক করল যে সে mansionটির রহস্য উদঘাটন করবে।

এক সন্ধ্যায়, আরিয়া শহরের একটি পুরনো লাইব্রেরিতে প্রবেশ করল, যেখানে পুরনো পাণ্ডুলিপি ও গ্রন্থগুলি রাখা ছিল। সেখানে সে একটি প্রাচীন বই পেল, যা পেত্নীটির ইতিহাস এবং একটি জাদু প্রদর্শনের কথা বলছিল। বইটি বলছিল যে পেত্নীটির অভিশাপ একটি অদৃশ্য শক্তি দ্বারা তৈরি হয়েছিল, যা শুধুমাত্র একটি বিশেষ ধরনের জাদুর দ্বারা ভাঙা সম্ভব।

আরিয়া সিদ্ধান্ত নিল যে সে ওই বিশেষ জাদুর সন্ধানে বের হবে। বইটির নির্দেশ অনুসারে, তাকে একটি প্রাচীন রত্ন, "অন্ধকারের ক্রিস্টাল," খুঁজতে হবে। ক্রিস্টালটি একটি দুর্গম পাহাড়ের গুহায় লুকানো ছিল।

আরিয়া তার অভিযান শুরু করল। পাহাড়ে ওঠার পথে, সে বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হল—পাথরের ফাঁদ, অন্ধকার গুহা, এবং বিষাক্ত জঙ্গল। তবে তার অবিচল দৃঢ়তা এবং সাহস তাকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করল।

অবশেষে, আরিয়া গুহার গভীরে পৌঁছল এবং একটি সুন্দর, উজ্জ্বল ক্রিস্টাল দেখতে পেল। ক্রিস্টালটি ছিল কুয়াশায় ঢাকা, এবং এটি সজীব জাদুর আলোর মতো ছিল। ক্রিস্টালটি নিয়ে, আরিয়া ফিরে আসল mansion এ।

মansion এ ফিরে এসে, আরিয়া পুরনো বইয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী একটি জাদু প্রদর্শন আয়োজন করল। সে ক্রিস্টালটি ব্যবহার করে একটি বিশেষ রীতির মাধ্যমে পেত্নীটির অভিশাপ ভাঙার চেষ্টা করল। মন্ত্রটি উচ্চারণের সময়, mansionটি একটি অদ্ভুত আলোতে জ্বলে উঠল এবং একটি শক্তিশালী ঝঞ্ঝা শুরু হল।

আলো ধীরে ধীরে নিবিড় ও শান্ত হয়ে উঠল এবং পেত্নীটির আত্মা ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হলো। পেত্নীটি একটি সুন্দর মহিলারূপে প্রকাশিত হল, যার মুখে এক ধরনের দুঃখ ও শান্তির মিশ্রণ ছিল। পেত্নীটি আরিয়াকে বলল যে তার অভিশাপ দীর্ঘ সময় ধরে চলছিল এবং তার মুক্তির জন্য এটি একটি বিশেষ ধরনের জাদুর প্রয়োজন ছিল।

আরিয়া পেত্নীটির সঙ্গে কথা বলল এবং জানল যে পেত্নীটির আসল নাম ছিল এলিন। এলিনের গল্পটি ছিল যে সে একসময় একজন প্রভাবশালী জাদুকরী ছিল, কিন্তু তার সৎ উদ্দেশ্যকে ভুল বোঝা হয়েছিল এবং তাকে অভিশপ্ত করা হয়েছিল।

এলিন তার প্রতিশোধের স্বপ্ন দেখছিল না, বরং তার মৃত্যুর পর শান্তি লাভ করতে চেয়েছিল। আরিয়া বুঝতে পারল যে পেত্নীটির অভিশাপ শুধুমাত্র মুক্তির জন্য নয়, বরং একটি সঠিক উদ্দেশ্য ও ক্ষমার জন্য ছিল।

এলিনের আত্মা শান্তি লাভ করল এবং mansion এর চারপাশের অন্ধকার ধীরে ধীরে কেটে গেল। গ্রামে একটি নতুন আলো প্রবাহিত হলো এবং সারা গ্রাম শান্তি লাভ করল।

আরিয়া তার অভিযান শেষ করার পর, mansionটি একটি ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে পুনর্গঠিত হল এবং গ্রামে একটি নতুন পর্যটন আকর্ষণ তৈরি হলো।

এলিনের গল্প সারা গ্রামে একটি উদাহরণ হয়ে দাঁড়াল—যে কিভাবে একটি সাহসী মনোভাব, সঠিক জ্ঞান এবং ক্ষমার মাধ্যমে দীর্ঘদিনের অভিশাপকে ভাঙা যায়। আরিয়া জানল যে তার অভিযান শুধু একটি পেত্নীকে মুক্ত করার নয়, বরং নিজের আত্মা এবং গ্রামবাসীদের জন্য শান্তি এবং আলো এনে দেয়ার ছিল।

এভাবে, আরিয়া একটি নতুন জীবন শুরু করল, এবং পেত্নী এলিনের স্মৃতি ও শিক্ষা তার জীবনে চিরকাল প্রেরণার উৎস হয়ে থাকল।

147 Views
1 Likes
0 Comments
4.0 Rating
Rate this: