তুমি হীন পাট ৫
এলোমেলো সব দিন গুলো সাজাতে হবে মনের মতো করে। এটা ছিলো মুমমুমের সেরা ডাইলোক। যখনই কিছু হবে এটা বলবে আর জ্ঞান দিতে থাকেবে।
চোখ বন্ধ করে খুব করে ভাবতেছে নিলয় মুমমুম কে । সে যেনো বাসের সিটে বসে আছে মৃত কোনো ডেড বডি।। কোনো নড়াচড়া নেই চোখের পাতা গুলো ও নড়ে না। কিন্তু দেহ টা পড়ে থাকলে ও চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে আসতেছে। চোখের কোণো পানি এসে জমেছে। তবে গড়িয়ে পড়তেছেনা।
চোখের সাথেই আটকে আছে। এভাবে যদি মুমমুম ও আটকে থাকতো।
হঠাৎ বাস ব্রেক করলো।নিলয়ের বাস স্টেপ চলে আসে। নেমে গেলো একটুখানি হেঁটে গেলেই নিজ বাসা। বাসস্ট্যান্ডের এখানেই বাজার। তাই লাকি কে ফোন দিলো বাসায় কিছু লাগবে নাকি।
কয়েকবার রিং হওয়ার পর লাকি রিসিভ করলো।
লাকি: হ্যালো মহারাজ অনেক ক্ষণ তো হইলো কই আছেন
নিলয়: হুম। আমি তো বাজারে কিছু লাগবে নাকি বাসায়।
লাকি: না। আপনি বাসায় চলে আসেন। নি* আচ্ছা। ফোন পকেটে রেখে হাঁটা শুরু করলো বাসার দিকে। রাস্তায় চলছে কিন্তু নিজের মধ্যে নিজেই নাই।
বাসায় ও এসে গেলো। লাকি বের হয়ে ফ্রেশ হওয়ার জন্য তোয়ালি হাতে দিয়ে বাথরুমে যেতে বললো। আর নিলয় বাধ্য ছেলের মতো চলে ও গেলো।
রাত ১ টা বাজে। হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেলো। নিলয় দেখলো লাকি বুকের ওপর মাথা দিয়ে শুয়ে আছে। লাকির চুল গুলো নিলয়ের মুখে লেগে আছে। চুল সড়িয়ে লাকির মাথায় ছোট্ট করে একটা চুমু খেলো।
কি সুন্দর ভাবে শুয়ে আছে লাকি দেখে মনটাই ঠান্ডা হয়ে গেলো নিলয়ের। লাকির একটা বদ অভ্যাস আছে। নিলয়ের বুকে মাথা না রাখে ঘুমাতে পারেনা। নিলয় এপাশ ওপাশ করতে ইচ্ছে হলে ও করতে পারে না। কারণ লাকি জেগে যাবে। তার ঘুম ভেঙে যাবে। লাকিকে বুকে রেখে জড়িয়ে ধরে আবার ঘুমের দেশে পারি জমালো নিলয়।
কিন্তু কিছুতেই ঘুম আসতেছে না।
বার বার মনের মধ্যে মুমমুমের চিঠি টার কথা মনে পড়তেছে। সেই চিঠিটা এখনো পড়া হয়নাই। এখন কি পড়ে দেখবো। নিজের মধ্যেই ভাবতে লাগলো মনকে জিজ্ঞেসা করলো এখন কি পড়বে নাকি পড়বে না। লাস্ট ডিসিশন পড়তেই হবে।
না হলে আজকে আর ঘুম হবে না। লাকিকে আস্তে করে বালিশের উপর মাথা দিয়ে দিলো। বিছানা থেকে উঠে। ছাদে চলে গেলো সাথে চিঠিটা নিলো।
আজকে চাঁদটাকে ও অনেক সুন্দর লাগতেছে। মধ্যরাতের চাঁদ দেখতে অদ্ভুত সুন্দর লাগে বুঝি। জোছনা ও অনেক স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে সবকিছু। এ যেনো অদ্ভুত এক দুনিয়া। জোছনার আলোয় চারদিকটা কেমন হয়ে গেছে সবকিছু মনে হচ্ছে জীবন্ত হয়ে উঠছে।
এ-ই জোছনায় নিলয়ের ইচ্ছে হলো পুকুর পারের ঐদিকে যাওয়ার কিন্তু সেই সাহস নেই এই মধ্যরাতে পুকুরপারে যদি ভূত প্রেত থাকে।
ছাদে বসার জন্য একটা বেঞ্জ আছে। সেটা তে বসে পড়লো নিলয়। ফোনটা নিয়ে আসছিল টচ জ্বালিয়ে চিঠিটা পড়বে কিন্তু যে জোছনা উঠছে। জোছনার আলোতে স্পষ্ট পড়া যাবে চিঠিটা।
চিঠিটা হাতে নিয়ে আছে খুলবে কি খুলবে না। মনের মধ্যে এক অদ্ভুত কষ্ট অনুভব হচ্ছে। কি লেখা আছে। আর কোনো কিছু না ভেবে চিঠিটা খুললো।
প্রিয় নিলয়
আশা করি ভালো আছেন। হয়তো আমাকেও তো ভুলে গেছেন। তাই না। আগে তো একদিন কথা না বলে থাকতে পারতেন না। আর দেখেন আমার জায়গায় এখন অন্য কেউ আসছে। আমার শূন্যতা সে পূরণ করছে। হয়তো আমার সাথে দেখা স্বপ্ন গুলো এখন তাকে নিয়ে পূরণ করতেছেন।
পূরণ করবেন না কোনো আমার মতো বেঈমানের সাথে তো আর পূরণ করতে পারলেন না। আমি বুঝি আপনার কাছে এখনো বেঈমান, পতারক, ধোঁকা বাজ তাই না।
জানেন সেদিন আপনাকে ফোন করার জন্য সিমটা অন করি আর সাথে সাথেই আপনার ফোন আসছিলো। ভীষণ অবাক হয়েছিলাম এটাই বুঝি ভালোবাসা।
তারপর বলছিলাম সেদিন আমাক বাধ্য করে, জোর করে বিয়ে দেয়া হয়েছে। একটা সত্যি কথা বলবো আমার এখনো বিয়ে হয় না-ই।
সেদিন আপনাকে মিথ্যা বলছিলাম। জানেন একবার বলছিলাম আপনাক যে আপনি ছাড়া আমার মনে অন্য কেউ জায়গা নিতে পারবে না।
সেটাই হয়েছে। তবে দেখেন কি আজব ভাগ্য আমাদের। আপনিও অনেক ভালোবাসেন আর আমিও বাসি কিন্তু পরিস্থিতি ভাগ্য আমাদের এক হতে দিলো না।
অনেক ইচ্ছে ছিলো আপনার সাথে আপনার লাইফ পাটনার হয়ে থাকতে। তবে ভাগ্য আমাদের এক হতে দিলো না।
হয়তো যেদিন আমার এই চিঠিটা পরবেন সেদিন হয়তো আমি আর থাকবো না অনেক দুরে চলে যাবো। হাজার চেষ্টা করলেও খুঁজে পাবেন না। আর হয়তো আমাদের এই জনমেও দেখা হবে না।
একটা সত্যি কথা এখনো জানেন না আপনি। আর জানবেন বা কেমনে আমি সবাইকে বলে দিছি যেনো আপনি কোনোভাবে জানতে না পারেন।
কারণ আমিই নিজে বলবো আচ্ছা শুনেন তাহলে, আমি যখন হঠাৎ অদৃশ্য হয়ে যাই তখন কোথায় ছিলাম জানেন হাসপাতালে। সেদিনের ঘটনা আমার পুরো দুনিয়া উলট পালট করে দিছে।
সেদিন নিজের কথা ভেবে একটু কষ্ট ও হয়নাই কিন্তু আপনার কথা যখনই মনে পড়তো তখন কান্না করতাম। সেদিন থেকে সবসময় শুধু কান্না করতেই থাকি কেউ আমাক থামাইতে পারে না।
জানেন সেদিন আপনাকে ফোন করতে চাইছিলাম আর সব বলতে কিন্তু আপনি যে পাগলের পাগল আমার জীবন তো এমনই নষ্ট হয়ে যাবে সেই সাথে আপনার ও সেই কথা ভেবে আর ফোন দেয়নাই।
শুধু মেসেজ টাই লিখছিলাম। আর যেদিন ফোনে আপনার সাথে কথা হয় সেদিনেই ছিলো আমার লাস্ট দিন আপনার সাথে কথা বলা এমনকি এই দুনিয়ায় থাকা।
আর এই আজকে চিঠিটা লিখতেছি বাইরে তাসু দাড়িয়ে আছে। আমার কাছে আর বেশি সময় নাই। আপনার সাথে দেখা করার অনেকটা ইচ্ছে ছিল কিন্তু হলোনা। তাই ফোনটাই খুললাম। সাথে সাথে আপনার ফোন পেয়ে অনেক ভালো লাগতেছিল। কিন্তু সেইটা বেশিক্ষণ থাকলো না। এই আমাকে আপনার মতো কেউ এতো ভালোবাসতে পারবে না। কিন্তু আপনাকে ছেড়ে যেতে হবে। সেটা ভেবেই অনেক কষ্ট হচ্ছে।
আর শুনেন যদি কিছু ভুল করে থাকি তাহলে ক্ষমা করে দিয়েন। আর আপনার বউ কে নিয়ে সুখে থাকবেন। আমার জন্য আপনার বউকে কষ্ট দিবেন না। ভাববেন সেটা আমি। আমাক যে ভালোবাসাটা দিতেন সেই ভালোবাসাটা আপনার বউকে দিবেন। আমার বিশ্বাস আপনি আমার কথা রাখবেন। ভালো থাকিয়েন!!
ইতি আপনার মুমমুম। 😶😶
নিলয় কি করবে কি করা উচিত কি পড়লো এগুলো কিছু বুঝতেছেনা। কি মনে করছিল আর কি হয়ে গেলো।
সে কিছুই বুঝতে পারতেছেনা। এটা কি সত্যি মুমমুম আর এই নাই। নাকি মিথ্যা। আমি তো সেটা চাইনি হোক না সে অন্য কারো হয়ে তবুও আছে এই পৃথিবীতে দেখার ইচ্ছে হলে দেখতে পাইতাম। কথা বলার ইচ্ছে হলে ফোন দিতাম যতই সে না করুক তবুও।
এখন তো আর দেখতে পাবো না। কথা বলতে পারবো না।। নিলয় কান্না করতেছে.. মুমমুমের কথা ভাবতেছে সে কি সত্যি নাই। না এসব সবকিছু মিথ্যা। মুমমুম মজা করতেছে। কালকেই তাসফিয়ার দেখা করতে হবে। সত্যি ঘটনা কি!!
নিলয়ের চোখে পানি এক পলকে তাকিয়ে আছে চাঁদের দিকে। আর ভাবতেছে মুমমুম কি সত্যি 😶😔।
** লাকি ছাঁদে উঠতেছে পায়ের শব্দ কানে আসলো নিলয়ের। চোখ মুছে চিঠিটা পকেটে ঠুকিয়ে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করতেছে। কিন্তু চোখ মুছতেছে আবার পানি বের হচ্ছে।
চোখ গুলো ও ছন্য ছাড়া হয়ে গেছে নিজের মধ্যে থেকেও নিজের কথা নিজেই শুনে না
** লাকি- কি করতেছেন এখানে।
** কিছু না ঘুম ভেঙে গেলো তাই আসলাম।
** লাকি- আমাক ও ঠেকে দিতেন আমিও আসতাম!
** না! তোমার ঘুম কোনো ভাঙ্গবো তাই আর ডাকি নাই।
** ওও। আজকের চাঁদ টাও সুন্দর লাগতেছে না অনেক!
** হুম অনেক।
লাকি নিলয়ের পাশে গিয়ে বসলো। নিলয়ের কাঁধে মাথা রাখলো। নিলয় কিছু বললো না এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে চাঁদের দিকে। লাকিও কাঁধে মাথা রেখে জোছনা, চাঁদের আলো দেখতেছে। কারো মাঝে কোনো কথা নাই।
হঠাৎ লাকি বললো!!
** আপনার কি মন খারাপ।
** না তো।
** তো এভাবে কেনো আছেন। কিছু বলতেছেন না। চুপচাপ হয়ে আছেন কোনো।
** না এমনিতেই ভালো লাগতেছে না।
** ওও তাই তো মহারাজ মন ভালো করার জন্য কি করতে পারি।
** কিছু করতে হবে না। এভাবে বসে থাকো। না। চলেন পুকুর পাড়ে যাই। এই জোছনায় পুকুর পাড়টা অনেক সুন্দর দেখাবে।
** না।
** আরে চলেন তো।
লাকি জোর করে। হাত ধরে নিয়ে গেলো পুকুর পাড়ে। পুকুর পাড়টা সত্যি অনেক সুন্দর লাগতেছে।
জোছনায় চারদিকে ঘেড়া গাছ গুলো, পুকুরের পানিতে আকাশের মেঘগুলো সাথে চাঁদ টাও দেখা যাচ্ছে।
সবকিছু মিলিয়ে অদ্ভুত সুন্দর লাগতেছে। স্বপ্নের মতো। অদ্ভুত এক মায়া আছে এই জোছনার মধ্যে।
!! দুইদিন পার হয়ে গেলো। নিলয় তাসফিয়ার সাথে দেখা করার অনেক চেষ্টা করছে কিন্তু তার দেখা পাইনাই।
এবার শেষ রাস্তা তাসফিয়ার বাসায় যাওয়া।
ভেবে নিলো কালকে অফিস থেকে তাড়াতাড়ি ছুটি নিয়ে যাবে।
আজকে ছুটি নিয়ে নিল।
লাকিকে যেদিন হাসপাতালে নিয়ে আসছিল সেদিন যখন তাসফিয়ার দেখা হয় তখন তার বাসার কথা বলছিল হাসপাতালের পিছনের রোডে ৭নং গলিতে ওরা থাকে।
তাই আর খুব অসুবিধা হবে না।
যেই ভাবা সেই কাজ। হাসপাতালে যাওয়ার জন্য অটোতে উঠতে যাবে ঠিক তখনি তাসফিয়ার দেখা।
নিলয় দেখেই তাসফিয়া কে ডাক দিলো।
** নিলয় ভাইয়া আপনি কেমন আছেন
** জ্বী ভালো আছি আপনার কাছে যাইতেছিলাম। কিছু কথা জানার ছিলো।
*** হুম বলেন কি জানতে চান। আর আমি আপনার থেকে ছোট্ট তুমি করে বলতে পারেন।
*** ওকে চলো ঐপাশে গিয়ে বসি।
*** হুম এখন বলেন।
*** মুমমুম কেমন আছে।
তাসফিয়া মুমমুমের কথা শুনতেই কি বলবে কিছু বুঝতেছে না। চুপ করে বসে আছে।
নিলয় আবারও জিজ্ঞেসা করলো।
*** মুমমুম কোথায় আছে।তাসফিয়া কি বলবে কি বলা উচিত কিছু বুঝতেছে না।
তবুও বললো.
** ভাইয়া আপনাক কেমনে যে বলি।কিছু বুঝতেছিনা।আসলে মুমমুম আর নেই আমাদের মাঝে 😔😔
***নিয়লের বুকের বা পাশটা কাঁপুনি দিয়ে উঠলো উদ্ভূত এক কষ্ট অনুভব হচ্ছে। কিছু বলতেছে না চুপচাপ বসে আছে।
কারো মাঝে কোনো কথা নেই। দুইজনে চুপ করে আছে।
তারপর নিলয় বললো:
*** কিভাবে কি হলো আমাকে কি একটি বার জানানো উচিত ছিলো না। তাকে শেষ বারের মতো একটি বার দেখার ও সুযোগ পাইলাম না।
নিলয় কান্না করার মতো অবস্থা হয়ে গেছে অনেক কষ্টে কান্না চেপে রাখছ।
তাসফিয়া বললো
** ভাইয়া সেদিন মুমমুম এর শাস্ব কষ্ট হয়েছিল। তারপর ওকে নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসে কিন্তু এরা ঢাকায় নিয়ে যেতে বললো সেদিন রাতেই ঢাকায় নিয়ে যায়।
ডক্টর বললো অক্সিজেন ছাড়া এক সেকেন্ড ও না থাকতে। তাই সেখানেই রাখা হয়েছিল।
বাঁচার সম্ভবনা একদম নাই ডক্টর সময় দিছিল ৬ মাসের।
তার আগে যদি ভালো হতে পারে হবে। তারা অনেক চেষ্টা করার পর ও পারলো না।
আমি বারবার মুমমুম কে বলছিলাম আপনাকে জানাতে কিন্তু সে জানাতে দিলো না।
শুধু সবসময় বলতো যে আমার জীবন তো শেষ হয়েই গেছে। আর তো ফিরে পাবো না।
আর আপনি যে আবেগি মানুষ, পাগল হয়ে যাইতেন। আপনার জীবন টাও শেষ হয়ে যাইতো তাই আপনাকে জানাইতে চায়নি।
আর আপনি যেদিন ফোন দেন সেদিনেই ছিলো তার শেষ দিন। সেও আপনাকে দেখার জন্য অনেক ছটপট করছিল কিন্তু বলতে চেয়েও বলে নি। কারণ এতোদিন সহ্য করছে আর এটুকু সময় ও পারবে।
তার ফোনে আপনার পিক ছিলো সব সময় শুধু ফোনটা নিজের কাছে রাখতো আর আপনাকে দেখতো।
আর ভাবতো যদি আপনি জানতে পারেন তার এই অবস্থা তখন আপনিও তার থেকে আর ও ভেঙে পড়তেন। পাগলের মতো হয়ে যাইতেন।
আপনি নাকি তার সাথে থাকার জন্য সুইসাইড করতে ও দ্বিধা করতেন না।
নিজেকে শেষ করে দিতেন তার কথা ভেবে ভেবে। তাই।
আর পরে ও আপনাক জানাইতে দেয়নি। কারণ তখন ও অনেক ভেঙে পড়তেন। আপনাকে সামলানোর কেউ থাকতো না।
তাই আপনাকে বিয়ে করতে বলছে তার সাথে দেখা স্বপ্ন গুলো আপনার বউকে নিয়ে পূরণ করতে বলছে।
আর ওই চিঠি টা লিখছিল। চিঠিটা আপনার বিয়ের পর দিতে বলছে।কারণ এখন আপনার স্ত্রী আছে।
আপনাকে সামলানোর। কোনো কিছু হলে আপনার স্ত্রী সামলে নিবে। আপনাকে কেয়ার করবে।
**আর শুনেন আপনার স্ত্রীকে যেনো আপনি কখনো কষ্ট না দেন। মুমমুম বলতো সে যদি নাও হতে পারে অন্য কেউ তো হবে। আপনি জেনো সেই মেয়েটার মাঝে মুমমুম কে খুঁজে নেন। তার মনের মতো ভালোবাসবেন, আগলে রাখবেন। এটাই যেনো করেন কখনো কষ্ট দিবেন না আপনার স্ত্রীকে।
মুমমুম এর কথা ভেবে নিজেকে আনকন্ট্রোল করবেন না। কোনোকিছুতে ভেঙে পড়বেন না। নিজের খেয়াল রাখবে মুমমুম এর জন্য দোয়া করবেন। সে এখন আছে তাদের এলাকার জামে মসজিদ কবর গোরস্থানে।
!! নিলয় কিছু বলতেছে না। কোনো কথা মুখ থেকে বের হচ্ছে না। ভাবতেছে শুধু মুমমুম এর কথা। অনেক কষ্টে কান্না ও চেপে রাখছে!!
**আচ্ছা তো ভাইয়া আমি যাই বাসায় যেতে হবে। আপনি ঠিক মতো বাসায় চলে যান। মুমমুম এর জন্য মন খারাপ করিয়ন না। সে তো আর ফিরে আসবে না। এখন আপনার বউ আছে তাকে নিয়ে ভাববেন। তবুও নিলয় কিছু বললো না। তাসফিয়া উঠে চলে যেতো লাগলো।
নিলয় এখনো এক ধেয়ানে মাটির দিকে তাকিয়ে আছে। চোখের পাতা ও পড়তেছে না।
২০ মিনিট এভাবেই কেটে গেলো। পাশের দোকানের দোকানদার এসে নিলয় কে বললো। কি হয়ছে ভাই এভাবে আছেন কোনো কি হয়েছে আপনার অনেকক্ষণ থেকে লক্ষ করতেছি।
** নিলয় চমকে উঠলো স্বাভাবিক হয়ে বললো কিছু না ভাইয়া। বলেই হাঁটা শুরু করলো। হেঁটে চলেছেই । আজকে আর বাসস্ট্যান্ডে বাস এর অপেক্ষায় থাকলো না।
হেঁটে চলেছে মুমমুম কে দেখার জন্য তাদের কবর গোরস্থানের উদেশ্যে। আর চোখ দিয়ে পানি পড়তেছে। সে যোনো এই দুনিয়ায় নাই। ভাবনায় শুধু মুমমুম।
আর একটু হলেই এখনি সেও মুমমুম এর সাথে চলে যাইতো। কিন্তু না ট্রাক ড্রাইভার ব্রেক মারলো সাথে কিছু গালি দিয়ে তার গন্তব্যে চলে গেলো।
আর একটু গেলে কবর গোরস্থান।
যতই সামনে এগুচ্ছে বুকটা ততই কেঁপে উঠতেছে নিশ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে। চোখের পানিও আর বাধা মানলো না তার মতোই বেয়ে চলেছে।
সামনে মুমমুম শুয়ে আছে। তার পাশেই নিলয় দারিয়ে আছে। এক দৃষ্টিতে কবরের দিকে তাকায় আছে। চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পড়তেছে। বুকের ধপধপ শব্দ টাও বেড়ে গেছে।
নিশ্বাস নিতেও কেমন কষ্ট হচ্ছে। ইচ্ছে করতেছে এখুনি মাটি খুঁড়ে মুমমুম কে দেখি। নিলয় আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলো না। বসে পড়লে। মুমমুম এর পাশে।
কান্না ভরা কন্ঠে বলতেছে!!
**কেমন আছো। এমনটা করলে কোনো, একটি বার জানানোর ও প্রয়োজন মনে করলে না। সত্যি বলতে তুমি ছেড়ে চলে গেছো তার সাথে নিয়ে গেছো সমস্ত অধিকার, তাই তোমার খোঁজ খবর নেওয়ার অধিকার ও আমার ছিল না।
জানো তো আমরা যতদিন একসাথে ছিলাম। সেই সময়টুকুর মধ্যে তুমি আমার অভ্যাসে পরিণত হয়েছিলে। সেই অভ্যাস টা এখনো কাটিয়ে উঠতে পারিনি। আগে যতই কান্না করে ভেঙে পড়তাম সেদিনই তুমি আমার স্বপ্নে এসে সান্ত্বনা দিতে।
তোমাকে ভুলে যাই কেমনে। তোমার জন্যই আমি বেঁচে ছিলাম। ভাবছিলাম তুমি অন্য কারো হয়ে গেছো অন্য কাউকে নিয়ে সুখেই আছো। আমি কোনো থাকবো, তোমার জন্য কোনো কষ্ট পাবো। খুব অভিমানে তোমাকে ভুলবার চেষ্টা করি। আর আমার ভালোবাসায় কেমন ছিল অন্য কাউকে পেয়ে তোমার প্রতি মায়াটা কাটে গেলো।
কিন্তু কোনো কোনো সময় জানো তোমাকে দেখার জন্য বুকটা কেপে উঠতো, নিশ্বাস নিতেও কষ্ট হতো। মনে হচ্ছিল তোমাকে দেখতে না পেলে মরেই যাবো। আর তখনি লাকি আসতো আমার এই অবস্থা দেখে সেও আর ঠিক থাকতে পারে না। কি করবে কি না করবে।
তোমার প্রতি অনেক রাগ হতো কত তোমাক খারাপ ভাবছি আর দেখো তুমি আমার ভালোর জন্যই সবকিছু করছো।
আমি এখন কেমনে থাকবো, তোমাকে একটি বার দেখতে পাবো না। তোমার কন্ঠ শুনতে পারবো না। বলেই নিলয় কান্না করতে থাকে। কান্না করতেছেই। কান্না করতে করতে সেও অজ্ঞান হয়ে গেলো।
শুয়ে আছে মুমমুম এর সাথে। তার বুকের উপর মাথা দিয়ে।কল্পনায় যেনো মুমমুম তাকে জড়িয়ে ধরছে। তাকে সান্ত্বনা দিচ্ছে।
‼️সমাপ্ত ‼️
ভালো থাকবেন সবাই। ফলো দিয়ে পাশে থাকবেন।
⚠️ভালোবাসার মানুষকে ভালো রাখবেন। এই ছোট্ট জীবনে একজন কেই ভালোবাসবেন, ভালো থাকবেন🖤☺️‼️
তুমি হীন
অডিও মোড
00:00
00:00
গতি:
ভলিউম:
260
Views
5
Likes
2
Comments
5.0
Rating