তোমায় ভালবাসবো কি করে (পর্ব ৭)

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
সকাল ৭ টা...............
ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে কিছু খেয়ে নিলাম। এর পর বাসার সবাই আমাকে হলুদ মাখাতে লাগলো মানে এখন আমাকে সবাই হলুদ দিয়ে গোসল করাবে।

আমি এখন হলুদ দিয়ে ভূত হয়ে গেছি। আমার দাদি নানীরা আমার সাথে দুষ্টামি করছিল। যা শুনতে আমার লজ্জা লাগছিল।

এরপর আমাকে আমার বোন পার্লারে নিয়ে গেল।

আজকে আর সকাল থেকে আমার রুবেলের সাথে কথা হয় নাই। আর বউ সাজার পর আমি ওকে ফোন এ দেখব না। একেবারে স্টেজের আয়না যে প্রোগ্রাম টা হয় ওই আয়নাতে দুইজন দুইজনকে দেখব।

সাজ প্রায় শেষের দিকে। আমার মাথায় ফুল দিয়ে সেটআপ করে দিচ্ছে। আমার তো আগের বিয়ের সাজ মানে কাবিনের থেকে এই বিয়ের সাজে আমাকে চেনাই যাচ্ছে না।

আমরা সবাই একে একে রেডি হয়ে গেছি ৷ আমরা এখান থেকে ডাইরেক্ট সেন্টারে চলে যাব ৷

সেন্টারে চলে আসছি ৷ আমার মা আর বাবা আমার হাত ধরে স্টেজে নিয়ে যাচ্ছে ৷ আর ক্যামেরা ম্যান আমাদের ভিডিও করচ্ছে ৷ স্টেজে নিয়ে বসানোর পর একে এক করে সব আত্মীয স্বজন রা এসে ছবি তুলছে ৷


শুনলাম রুবেলরা নাকি রওনা দিয়ে দিয়েছে । মনে মনে ত খুব খুশি হচ্ছিলাম।
এই প্রথম শ্বশুর বাড়ি যাবো। আগেও আমার শাশুড়ি মা আমাকে শ্বশুরবাড়ি ঘুরতে আসতে বলেছিল কিন্তু রুবেল মানা করেছিল রুবেল বলেছে যে একবার অনুষ্ঠান করেই গান বাজনা বাজিয়ে আমাকে এই বাসায় নিয়ে আসবে।
তাই আর শ্বশুর বাড়ি যাওয়া হয়নি অথচ আমার আম্মু আব্বু আমার বাসার সকলেই গিয়েছিল। শ্বশুর বাড়ি যাওয়ার ফিলিংসটাই আলাদা শ্বশুর বাড়ি সকলের দেখাশোনা করব সংসারের কাজ করব জামাইয়ের খেয়াল রাখবো। সবার মত আমিও বাপের বাড়িতে ঘুরতে আসব।

আজ এইসব ভেবে নিজেকে সব থেকে সুখী মানুষ মনে হচ্ছে ।

কিন্তু একটা দিনে তাও আমার বিয়ের দিনে আমার জীবনের সব থেকে দুঃস্বপ্নের মতো দুর্ঘটনা ঘটে যাবে ভাবতেও পারি নি

হঠাৎ আমার বাবার ফোন এ ফোন আসে। আমার কাকা শশুড় ফোন দিয়েছে

বাবা - আপনারা আর কত দূর। কতক্ষন লাগবে

কাকা শশুড় _ বেয়াই সাব আমাদের গাড়িটা একটা বাস এর সাথে এক্সিডেন্ট হয়ে গেছে

বাবা _ কিহ ।কি বলছেন আপনাদের এসব আপনারা এখন কোথায় আছেন

কাকা শশুড় _ আমাদের অবস্থা খুব খারাপ আমরা সামনে একটা হাসপাতালে এসেছি সবাই গুরুতর অসুস্থ হয়ে গেছে।

বাবা _ আমরা এক্ষুনি আসছি।

বাবা কাকা ভাই সকলে মিলে বেরিয়ে গেল হসপিটালে
আমার মায়ের চোখ পানিতে টলমল করছে
কিন্তু কেউ আমাকে বলছে না যে আসলে ওদের অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে।

কিন্তু বিয়ে বাড়ি বলে কথা বাবার এক কথা শুনে আত্মীয়-স্বজনে কানাকানি করতে শুরু করলো সেই কথা আমার কানে চলে আসতে বেশি সময় লাগলো না।

তা শোনা মাত্রই আমার মাথার উপর আকাশ ভেঙে পড়ল।

আমি কানা করতে শুরু করলাম

আমি যে দৌড়ে হসপিটালে আসতে যাব তখন আমার বাসার লোক আমাকে আসতে দেয় না

কিন্তু আমার মনের মধ্যে উথাল পাথাল করছে।
আমার রুবেল কেমন আছে । ও সুস্থ আছে তো আমি ফোন করছি কিন্তু রুবেল এর ফোন বন্ধ

আমি এই বউ সেজে বসে ছিলাম শুধু তার অপেক্ষায়
আমার সাথে কেন এমন ঘটলো।

হঠাৎ বাসায় ফোন আসলো বাবা ফোন দিয়েছিল। আর মাকে বলল আমাকে নিয়ে যেন হসপিটালে আসে । বলেই বাবা ফোন টা রেখে দিল

আমি বুঝতে পারছিলাম না যে বাবা আমাকে নিয়ে গেল না আর এখন বাবা ফোন দিয়ে আমাকে যেতে বলছে
শুধু মনে একটাই কথা আমার রুবেল ভালো আছে তো

হ্যাঁ আল্লাহ আমার রুবেলের আর আমার শশুড় বস্তির সকলে যাতে সুস্থ হয়ে যায়

আমার সি এন জি তে উঠে পড়লাম
আমার চোখের পানি যেন বন্ধই হচ্ছে না

কারণ আমার বুকে যে ভয়..........
211 Views
6 Likes
1 Comments
5.0 Rating
Rate this: