ভূমিকা:
নতুন শহরে কাজের জন্য এক পরিবার, যাদের মধ্যে জননাথ নামের এক মধ্যবয়স্ক ব্যক্তি, তাঁর স্ত্রী তনিয়া, এবং তাদের কিশোরী মেয়ে মেঘা রয়েছে। একটি পুরনো, বিস্তৃত বাড়িতে ভাড়া থাকার জন্য তারা রাজি হন, যা শহরের বাইরে এক নির্জন এলাকায় অবস্থিত। বাড়িটির ইতিহাস খুব পুরনো এবং প্রাচীন। এটি দীর্ঘদিন ধরে অযত্নে পড়ে ছিল এবং স্থানীয়দের মধ্যে অনেক গুঞ্জন আছে যে, সেখানে রাতের অন্ধকারে কিছু অদ্ভুত ঘটনা ঘটে।
প্রথম অধ্যায়:
পরিবারটি বাড়িতে প্রবেশ করার পর থেকে অস্বস্তিকর ঘটনার শুরু হয়। রাতের অন্ধকারে নানা ধরনের অদ্ভুত আওয়াজ শোনা যায়—যেমন দরজার ক্রীপ, চিৎকার, এবং ভারী পদক্ষেপের শব্দ। প্রথম রাতেই, মেঘা তার ঘরের জানালায় এক অন্ধকার ছায়া দেখতে পায়, যা তার দৃষ্টির বাইরে চলে যায় যখন সে আলো জ্বালায়।
জননাথ বাড়ির নতুন অবস্থা বুঝতে থাকেন এবং প্রথমে এসব অদ্ভুত ঘটনার জন্য বাড়ির পুরনো কাঠামো এবং পরিবেশকে দায়ী করেন। কিন্তু সমস্যা আরও বাড়তে থাকে যখন তনিয়া এবং মেঘা রাতের অন্ধকারে ভয়ঙ্কর স্বপ্ন দেখতে শুরু করে, যেখানে তারা একই অন্ধকারে আটকে থাকে এবং কোনো ভাবে বেরিয়ে আসতে পারে না।
দ্বিতীয় অধ্যায়:
এক রাতে, মেঘার ঘরে একটি রহস্যময় প্যাকেট পড়ে থাকে। প্যাকেটটি খুলে, সে একটি পুরনো ডায়রি পায়, যা খুবই ময়লা এবং গন্ধযুক্ত। ডায়রির পাতায় লেখা রয়েছে এক ব্যক্তির ভীতিকর কাহিনী, যে ব্যক্তির বাড়িতে একই ধরনের অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছিল। ডায়রি পড়তে গিয়ে, মেঘা জানতে পারে যে, অতীতে এখানে বাস করা এক পরিবার রাতের অন্ধকারে হারিয়ে গিয়েছিল। তাদের আত্মারা এখন সেই বাড়ির অন্ধকারে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
মেঘার এই আবিষ্কার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করে। জননাথ সিদ্ধান্ত নেন যে তারা বাড়ি বদলাবে। কিন্তু, তাদের সৃষ্ট সমস্যার কোন সমাধান হচ্ছে না এবং রাতের অন্ধকারে ঘটনার সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে।
তৃতীয় অধ্যায়:
এক রাত, জননাথ পুরো বাড়ি তল্লাশি করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি জানালার ভিতরে এবং দরজার পিছনে এমন কিছু অদ্ভুত চিহ্ন দেখতে পান যা সম্পূর্ণ অস্বাভাবিক। বাড়ির পুরনো শেলভ থেকে কয়েকটি পুরনো বই এবং একটি গোপন কক্ষের খোঁজ পান। সেই গোপন কক্ষে, তিনি একটি ভয়ঙ্কর পুরনো ছবি খুঁজে পান, যেখানে একাধিক অন্ধকার ছায়া রয়েছে।
ফটো থেকে, তিনি জানতে পারেন যে, একটি প্রাচীন কাল্পনিক পুরাণের মাধ্যমে, যে আত্মাগুলি শান্তি পায়নি তাদের জন্য বিশেষ এক ধরনের অভিশাপ তৈরি করা হয়েছিল। অভিশাপটি রাতের অন্ধকারে ক্রমাগত তাদের উপস্থিতি শক্তিশালী করে দেয় এবং তাদের একটি নির্দিষ্ট সময় পর মরণ ফাঁদে ফেলে।
চতুর্থ অধ্যায়:
জননাথ, তনিয়া, এবং মেঘা একসাথে থাকেন এবং চেষ্টা করেন যে কিছু একটা করা যায়। তারা স্থানীয় এক পুরনো আধ্যাত্মিক গুরুকে সাহায্যের জন্য ডাকে। গুরু তাদেরকে বললেন, "অন্ধকার কেবলি ভাঙা যায় যদি তুমি শাশ্বত সত্যের মুখোমুখি হও।"
গুরু তাদেরকে সেই পুরনো অভিশাপের মূল উৎস সন্ধান করতে বলেন, যা বাড়ির গভীরতা থেকে বের করা যেতে পারে। রাতের অন্ধকারে তারা আবার সেই গোপন কক্ষে ফিরে যায় এবং সেখানে একটি পুরনো মূর্তি আবিষ্কার করে। মূর্তির চোখে একটি অদ্ভুত আলো বিকিরিত হয়।
পঞ্চম অধ্যায়:
মূর্তির সামনে এক ভয়াবহ রিচুয়াল সম্পন্ন করার মাধ্যমে, তারা আশা করেন যে অভিশাপের প্রভাব কাটানো যাবে। কিন্তু, রিচুয়াল সম্পন্ন করার সময়, এক অদৃশ্য শক্তি তাদেরকে ঘিরে ধরে এবং ভয়ঙ্করভাবে আক্রমণ করে। তাদের দৃষ্টি অন্ধকারে হারিয়ে যায় এবং মনে হয় যে তাদের জীবন এক ভয়াবহ পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
তনিয়া এবং মেঘা মূর্তির দিকে হাত বাড়িয়ে দেন, কিন্তু সেই অন্ধকার শক্তির মধ্যে হারিয়ে যান। জননাথ তখন শেষ চেষ্টা হিসেবে মূর্তির চোখে লাল আলো প্রবাহিত করে এবং সঙ্গতি পূর্ণ একটি মন্ত্র পাঠ করেন।
শেষ অধ্যায়:
রিচুয়াল সম্পন্ন হওয়ার পর, রাতের অন্ধকারে ভয়ঙ্কর শব্দ এবং শীতল বাতাস বন্ধ হয়ে যায়। যদিও তনিয়া ও মেঘা প্রাণে ফিরে আসেন, তাদের মানসিক অবস্থা ভেঙে পড়ে। বাড়ির শক্তি সরে যায়, এবং ঘটনাবলীর কাহিনী এখন একটি ভুতুড়ে গল্প হয়ে দাঁড়ায়।
পরিবারটি বাড়ি ছেড়ে চলে যায় এবং নতুন জায়গায় বসবাস শুরু করে। তবে, তারা তাদের অন্ধকার অভিজ্ঞতার কথা মেনে নেয় না। পুরনো বাড়িটি তার ভয়ঙ্কর ইতিহাসের সাথে রয়ে যায়, যেখানে রাতের অন্ধকারের মধ্যে ভয়াবহ শক্তির সাথে এক ভয়ঙ্কর লড়াইয়ের কাহিনী জমা হয়।
শেষ কথা:
"রাতের গুমোট অন্ধকার" একটি ভয়ের কাহিনী যা রাতের অন্ধকারে লুকানো এক ভয়ঙ্কর শক্তির সাথে মানুষের এক ভয়াবহ লড়াইকে তুলে ধরে। এটি আমাদের শেখায় যে, কিছু অন্ধকার রহস্যের সমাধান কেবল তখনই সম্ভব যখন আমরা সাহসিকতা এবং সত্যের দিকে মনোযোগী হই, কিন্তু কখনো কখনো এই রহস্যগুলো অমীমাংসিত থেকে যায়।
রাতের গুমোট অন্ধকার
অডিও মোড
00:00
00:00
গতি:
ভলিউম:
130
Views
1
Likes
1
Comments
3.0
Rating