চিঠি(১)

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
ইরাকের কুখ্যাত আবু গারিব কারাগারে বন্দি বোন ফাতিমার চিঠি

“বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইছি। পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।

ক্বুল হু ওয়াল্লাহু আহাদ (বল আল্লাহ এক)আল্লাহুস সমাদ (আল্লাহ অমুখাপেক্ষী)লাম ইয়ালিদ (তিনি কাউকে জন্ম দেননি)ওয়ালাম ইউলাদ (না তাঁকে কেউ জন্ম দিয়েছে)ওয়ালাম ইয়া কুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ (তাঁর সমকক্ষ কেউ নেই)—সুরা ইখলাসঃ ১-৪

আমি শুরুতে এই সুরার উদ্ধৃতি দিলাম, কেননা আমি মনে করি মহান আল্লাহর পরিচয় তুলে ধরার জন্য এই সুরাটিই সবচেয়ে ভালো, আর মুমিনদের অন্তরে এই সুরাটি দৃঢ়ভাবে গেঁথে আছে।

আল্লাহর পথে লড়াইরত আমার ইরাকী মুজাহিদ ভাইয়েরা,

আপনাদের কাছে আমার কিইবা বলার আছে? শুধু এতটুকুই বলি, আমার মতো এমন অসংখ্য ইরাকী বোনের গর্ভে এখন মার্কিন সেনারূপী পশুদের বাচ্চা। এরা আমদের অসংখ্যবার ধর্ষণ করেছে। তারা আমাদের শরীরকে নষ্ট করে দিয়েছে, আমাদের মুখে থুথু ফেলেছে আর যে কুরআনকে আমরা গলায় ঝুলিয়ে রাখি, সে কুরআনকে তারা ছিঁড়ে ফেলেছে।

আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার।

আপনারা কি আমাদের অবস্থা উপলব্ধি করতে পারছেন না? আপনারা কি এখানকার অবস্থা সম্পর্কে জাননে না?

আমরা আপনাদের মুসলিম বোন, আমরা আপনাদের মুসলিম বোন। আল্লাহ কাল এ ব্যাপারে আপনাদের কাছ থেকে হিসাব নেবেন।

আল্লাহর শপথ, আমরা এমন কোন রাত কাটাইনি, যে রাতে পশুরূপী মার্কিন সেনারা আমাদেরকে ধর্ষণ করার জন্য আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েনি। আমরা হচ্ছি তারা, যারা আল্লাহর ভয়ে নিজেদের সতীত্বকে রক্ষা করে চলতাম।

আল্লাহকে ভয় করুন। ও ভাই, আল্লাহকে ভয় করুন।

আমাদের সহ তাদেরকে মেরে ফেলুন। আমাদের সহ তাদেরকে ধ্বংস করে ফেলুন। আমাদের এখানে এভাবে ফেলে রাখবেন না। আমাদের এখানে এভাবে ফেলে রাখবেন না, যাতে তারা আমাদের ধর্ষণ করে আনন্দে থাকতে পারে। এটা আপনাদের জন্য আল্লাহর সান্নিধ্য পাবার একটা পথ হবে।

আমাদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করুন। মার্কিনদের ট্যাংক ও বিমানকে উপেক্ষা করুন। আবু গারিবে আমাদের কাছে আসুন। আবু গারিবে বন্দীদের কাছে আসুন। আমি আপনাদের মুসলিম বোন ফাতিমা। আমি আপনাদের মুসলিম বোন ফাতিমা। একদিন তারা আমাকে নয়বারেরও বেশি ধর্ষণ করেছে। নয়বারেরও বেশি………………

আপনারা কি উপলব্ধি করতে পারেন না? ও ভাই, আপনারা কি উপলব্ধি করতে পারেন না? কল্পনা করুন, আপনার আপন বোনকে যদি তা করা হতো………।

আপনারা কেন আমাকে বোন হিসাবে নিচ্ছেন না? আমি আপনাদের বোন, আপনারা কেন আমাকে বোন হিসাবে নিচ্ছেন না?

আমার মত এখানে আরো তেরোজন মেয়ে আছে, সবাই অবিবাহিতা। সবাইকেই প্রত্যেকের সামনে ধর্ষণ করা হয়েছে। তারা আমাদেরকে নামাজ পড়তে দেয় না। তারা আমাদের কাপড় কেড়ে নিয়েছে এবং আমাদের পোষাক পড়তে দেয় না।

আমি যখন এই চিঠি লিখছি, তখন একটি মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। তাকে বর্বরভাবে ধর্ষণ করা হয়েছিলো। একজন সৈন্য তাকে ধর্ষণ করার পর তার বুক ও উরুতে আঘাত করে। সেই সৈন্যটি তাকে অবিশ্বাস্যভাবে নির্যাতন করে। মেয়েটি এরপর দেয়ালের সাথে মাথা ঠুকতে শুরু করে। দেয়ালের সাথে মাথা ঠুকতে থাকে তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত………সে আর সহ্য করতে পারছিলো না।

যদিও আত্মহত্যা করা ইসলামে হারাম, আমি তাকে ক্ষমা করে দিয়েছি, আমি আশা করি আল্লাহও তাকে ক্ষমা করে দেবেন কারণ তিনি হলেন সর্বোত্তম ক্ষমাশীল।

মুসলিম ভাইয়েরা, আমি আপনাদের আবার বলি—আল্লাহকে ভয় করুন। আমাদের সহ তাদের মেরে ফেলুন যাতে আমরা শান্তি পেতে পারি।

আবু গারিব কারাগার থেকে আপনাদের বোন ফাতিমা…।”

পরিশিষ্টঃ

ফাতিমার চিঠি পাবার পর প্রায় একশ মুজাহিদ আবু গারিব কারাগারে হামলা চালায়। সামান্য রসদের এই অসামান্য দলটি আমেরিকান সেনাদের হাই ভোল্টেজ সিকিউরিটি সত্ত্বেও কারাগারের একটি দেয়াল ধ্বসিয়ে দিতে সক্ষম হয়। ইরাকী মুসলিম মুজাহিদদের একটি ওয়েব সাইটে ফাতিমার চিঠির জবাব দেয়া হয়েছে এভাবে—

“দুঃখিত বোন, আমরা সত্যিকার অর্থেই মানুষ নই। সত্যিই যদি মানুষ হতাম তাহলে তোমার চিঠি পাবার পর আবু গারিব কারাগার ধুলায় মিশিয়ে দিতাম।”

হ্যা,সত্যিকার অর্থেই আমরা মানুষ হতে পারিনি! আমরা ঠিকই দূরের মুসলিম ভাই-বোনদের বিপদে সাহায্য করতে না পারার জন্য খুবই আফসোস করি কিন্তু নিজ দেশের মুসলিম ভাই-বোনদের বিপদে কতটুকু তাদের পাশে দাঁড়াই প্রশ্নটা নিজেকেই করে গেলাম। আমাদের জন্যও লেখা হতে পারে এমন চিঠি যেহেতু গাজওয়াতুল হিন্দের যুদ্ধ কড়া নাড়ছে আপনার আমার দুয়ারে।

115 Views
0 Likes
0 Comments
5.0 Rating
Rate this: