নাটকীয় এক শহরে, যেখানে সবকিছু সুনসান আর নিস্তব্ধ, সেখানে একটি ছোট্ট গ্রাম ছিল। গ্রামটির নাম ছিল শান্তিপুর। শান্তিপুরের মানুষজন একে অপরকে ভালোবাসা ও সহানুভূতির সাথে গড়ে তুলেছিল। সেখানে ছিল এক বিশেষ নিয়ম—“ভালোবাসা বারন।”
সারা গ্রাম জুড়ে ভালোবাসার প্রকাশ ছিল পুরোপুরি নিষিদ্ধ। কেউ কাউকে কোনোভাবে ভালোবাসার কথা বলতে পারত না, কিংবা চোখে চোখে ভালোবাসা প্রকাশ করত না। কেননা, গ্রামবাসীদের বিশ্বাস ছিল, ভালোবাসা প্রকাশ করলে তাদের সমাজের সাম্য এবং শান্তি নষ্ট হবে। ভালোবাসা, তারা মনে করত, এক ধরনের দুর্বলতা যা সমাজের স্থিতিশীলতা বিপন্ন করে।
তবে, একদিন, শান্তিপুরে আসেন এক তরুণ বৌদ্ধিক গবেষক, নাম তার রাহুল। রাহুলের হৃদয়ে এক গভীর ব্যথা ছিল। তার নিজ শহরেও ভালোবাসার নিষেধাজ্ঞা ছিল। সে শহর ছেড়ে এই গ্রামে এসেছিল, নতুন কিছু শিখতে, নতুন কিছু জানার জন্য।
রাহুল শান্তিপুরের নিয়মকানুনের প্রতি সম্মান দেখালেও, তার মনের গভীরে একটি কৌতূহল ছিল। তিনি দেখতে চেয়েছিলেন, এই নিষেধাজ্ঞার মধ্যে মানুষ কীভাবে সত্যিকারের ভালোবাসা অনুভব করে। গ্রামের এক তরুণী, নাম তার মেঘনা, তার চোখে চোখে আভাসের মতো কিছু দেখতে পেল রাহুল। কিন্তু, মেঘনা জানত না সে নিজেও কেমন করে তার অনুভূতিগুলো প্রকাশ করবে।
দিন গড়াতে লাগল। রাহুল ও মেঘনার মধ্যে এক অদৃশ্য সেতু গড়ে উঠল। তারা একে অপরকে খুব ভালভাবে বুঝতে পারছিল, তবে তাদের সম্পর্ক কখনো ভাষায় প্রকাশিত হয়নি। তারা মৃদু হাসি, লুকিয়ে রাখা চাহনি ও নিঃশব্দ সহানুভূতির মাধ্যমে একে অপরকে অনুভব করছিল।
একদিন, গ্রামের প্রধান মেঘনা ও রাহুলের বন্ধুত্বের কথা জানতে পারলেন। তাদের চুপচাপ ভাব ও একে অপরের প্রতি মৃদু স্নেহের ছাপ দেখে প্রধান তাদের সাথে একটি কঠিন কথা বললেন। “ভালোবাসা বারন, আর তুমি দুজনের মধ্যে কোনভাবেই তা প্রকাশ করা যাবে না। যদি এটি প্রকাশ পায়, তবে এর পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে।”
রাহুল ও মেঘনার হৃদয়ে তীব্র বেদনা অনুভূত হল। তারা একে অপরকে হারানোর ভয়ে ভীত হয়ে উঠল। তারা জানত, তাদের ভালোবাসা প্রকাশের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে যেতে হলে, তাদের এই সম্পর্কের জন্য বড় দাম দিতে হতে পারে।
ভালোবাসা বারণ
অডিও মোড
00:00
00:00
গতি:
ভলিউম:
607
Views
17
Likes
5
Comments
3.2
Rating