...

একটি ছেলের আত্মকথা (পর্ব ২)

...
রাকিব হোসেন
...
...
30-Aug-2024, 05:41 PM
...

134

...

13

...

5.0(9)

ক্যাটাগরি : কষ্টের গল্প

স্যারঃ শার্ট কিনতে পারিস না তাহলে পড়তে আসিস কেন । কাজ করলেই তো পারিস । ফকির আসছে কলেজে । তোদের মতো ছেলেদের কলেজে পড়ার মানেই হয় না । ফকির কোথাকার ।
তোর জন্য অন্য স্টুডেন্টরাও ঠিক মতো আসতে চায় না

তারপর আমি কিছুই আর বললাম না । ক্লাসের একদম ব্যাক বেঞ্চে গিয়ে বসে পড়লাম । আসলে এসব অপমান আমার গায়ে আর লাগে না । পেটে ভাত না থাকলে মান সম্মান দিয়ে কি করবো ।

তারপর আমি চুপচাপ ক্লাস করে বাসায় চলে এলাম । আম্মারে এগুলো কিছুই বলি না ।

তারপর গ্যারেজে চলে আসালাম । মনে মনে ভাবছি যদি এখন আব্বু বেঁচে থাকতো তাহলে আমার আর এতো অপমানিত হতে হতো না। আচ্ছা টাকা ভালো কাপড় দিয়েই কি বংশ পরিচয় পাওয়া যায় ।

এসব ভাবতে ভাবতে চোখ থেকে একফোঁটা পানি পড়ে গেল । এমন সময় একটা গাড়ি গ্যারেজে আসলো ঠিক করতে । তারপর দেখলাম কলেজের সেই অহংকারী স্যার কবীর ।

উনি আমাকে দেখেই বলতে লাগলো,,,,,,

স্যারঃ কিরে তুই এখানে কেন,,,? এই গ্যারেজে কাজ করিস ?

আমিঃ জ্বি স্যার ।

আমিঃ গাড়িটা দেখতেছি ।

কথাটি না বলতেই স্যার বলল,,,,

স্যারঃ চাচা একি আমার গাড়ি ঠিক করতে পারবে ।

চাচাঃ হ্যাঁ স্যার । রাকিব খুব ভালো কাজ যানে । ওই আপনার গাড়ি ঠিক করে দিতে পারবে ।

তারপর স্যার আমাকে বললো,,,,,,,

স্যারঃ এতোই যখন ভালো কাজ যানিস তাহলে কলেজে যাস কেন লেখাপড়া করতে । তোদের মতো গরীবরা যদি লেখাপড়া করে তাহলে আমাদের মতো ধনীদের কামলা কে খাটবে বল ।

আমি সেই কথায় কান না দিয়ে কাজ করতে লাগলাম । আল্লাহ্ কান দিয়েছে দুটো । একটা দিয়ে শুনি আর একটা দিয়ে বের করে দিই ।

আমিঃ স্যার আজকে গ্যারেজে কেউ নাই । আমি যদি গাড়িটা না দেখি তাহলে আজ গাড়িটা এখানেই পড়ে থাকবে ।

স্যারঃ ঠিক আছে যা করার তাড়াতাড়ি কর । আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে ।

গাড়িটা দেখার পর ভাড়াটা দিয়ে স্যার চলে গেছে । কত দিলো দেখি নি । তারপর দেখলাম 500 টাকা দিয়েছে । আমি চাচাকে বললাম,,,,

আমিঃ চাচা এই নেন ।

চাচাঃ আরে রাকিব 500 টাকা তুই কই পাইলি ।

আমিঃ কই আর পাবো । বড়লোক স্যার দিয়ে গেছে ।

চাচাঃ উনি কে ? তোর সাথে এমন ব্যবহার করলো কেন ?

আমিঃ যার গাড়ি ঠিক করলাম সে ?

চাচাঃ হুমম

আমিঃ আমাদের কলেজের অহংকারী স্যার । যে আমাদের মতো গরীবদের দেখতে পারে না । ঘৃণা করে ।

চাচাঃ এখন কি করবি ।

আমিঃ জানি না । কিন্তু যেমন করেই হোক চাচা আমাকে লেখাপড়া করতেই হবে ।

চাচাঃ হুম । তোর বাবা থাকলে তো আর তোকে কাজ করে লেখাপড়া করতে হতো না । কি আর করবি সবই আল্লাহর ইচ্ছা ।

আমিঃ আচ্ছা চাচা তাহলে এখন আমি যাই ।

চাচাঃ হুম যা ।

তারপর চাচার ওখান থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় চলে এলাম ।

এসে গোসল করে রান্না করে নিলাম । আমি একাই থাকি তাই আমিই রান্না করি । খুব একটা যে ভালো পারি তা না । তবে আমি নিজে খেতে পারি ।

যাইহোক তারপর খাওয়া দাওয়া করে শুয়ে পড়লাম । মাথাটা খুব ব্যাথা করছে । মাঝে মধ্যেই এমন মাথা করে ।

জানি না কেন । তবে আজকের ব্যাথাটা খুব বেশি । তাই ঘুমানোর চেষ্টা করলাম । সারাদিন শুয়েই ছিলাম । রাতেও কিছু না খেয়ে শুয়েই থাকলাম ।

এভাবেই আমার কষ্টের দিন গুলো যেতে লাগলো । একবেলা খেয়ে দুই বেলা না খেয়ে পড়াশোনাটা চালিয়ে গেলাম ।

কিছু দিন পরের কথা,,,,

আমার ছোট বোনের ইন্টারের রেজাল্ট বের হয় । খুব ভালো রেজাল্ট করে । সে আরো পড়াশোনা করতে চায় ।

তাই তাকে সরকারি আজিজুল হক কলেজে বগুড়াতেই ভর্তি করিয়ে দিলাম ।

অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে এভাবে এক বছর পেরিয়ে যায় । আমি অনার্স ৪র্থ বর্ষে আমার আমার বোন ১ম বর্ষে ।

সে আমাকে জানালো সামনে তার পরীক্ষা । পরীক্ষার ফর্ম ফিলাপ সাত দিনের মধ্যেই করতে হবে । তাই টাকা দিতে হবে ।

তাই আমিও কয়েকদিন আর কলেজে গেলাম না । অনেক কষ্টে একটা গ্যারেজ থেকে রিকশা জোগাড় করলাম ।

সকাল থেকে বিকাল অবধি রিকশা চালায় আর বিকাল থেকে রাত অবধি গ্যারেজে কাজ করি ।
একদিন দুপুর বেলা আমি রিকশা নিয়ে দাড়িয়ে আছি । হঠাৎ দেখি,,,,,,,,,,,,,,,,,

চলবে,,,,,,,,,,
To be continue,,,,,,,,,,,,,

ভালো লাগলে অবশ্যই রেসপন্স করবেন । পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন । ধন্যবাদ ।


মন্তব্য

রেটিং দিন

সকল মন্তব্যগুলো (1)
user
Jahid

wow

সকল পর্ব