#তোমার_অপেক্ষায়
#পর্ব ১১
পূর্ণতা গাড়ির সিটে হেলান দিয়ে বাইরের পরিবেশ দেখতে ব্যাস্ত।এই কয়েকদিনে নিধিদের সাথে খুব ভালে ভাব হয়ে গিয়েছে পূর্ণতার কিন্তু আফসোস এই মানুষগুলো আর কয়েকদিন পরেই চলে যাবে এই ভেবে পূর্ণতা দ্বীর্ঘশ্বাস ছাড়লো।
_তুমি ঠিক আছো?নিধির কথায় পূর্ণতা বললো_
_হ্যা আপু ঠিক আছি।আজকেও তোর বমি পাচ্ছে নাকি?আরাফের কথায় পূর্ণতা বললো_
_না। তোমার জন্য জানালার পাশের সিটে বসলাম না তাহলে বুঝো আমি তোমাকে কতো পছন্দ করি??ফাহাদের কথায় পূর্ণতা হেসে ফাহাদের গাল টেনে বললো_
_আর আমি বুঝি পছন্দ করি না?
_সত্যিই করে বলোতো জাদু করেছো নাকি আমারে নাহলে তোমার জন্য এত পাগল কেন আমি??ফাহাদের কথায় এবার পূর্ণতা শব্দ করেই হেসে দিলে।কী চমৎকার সেই হাসি আরাফ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার শখের নারীর দিকে।পূর্ণতা খেয়াল করতেই আরাফ দ্রুত দৃষ্টি সরিয়ে নিলো।
________________________________________
বাড়ির সামনে গাড়ি থামতেই পূর্ণতা দ্রুত নেমে গেল। উদ্দেশ্য তার আরিফ শেখ এর সাথে দেখা করা।
_কেমন আছো দাদুভাই?আরিফ শেখ কারো সাথে ফোনে কথা বলছিলেন নিজের আদোরের নাতির কন্ঠ পেয়ে ফোন রেখে জবাব দিলেন_
_তোমাদের ছাড়া ভালো থাকি কিভাবে??পূর্ণতা এসে আরিফ শেখ এর পাশে বসলেন।
_কখন আসলে দাদুভাই?
_মাএই আসছি এসেই তোমার সাথে দেখা করতে চলে এসেছি।আরিফ শেখ নাতির মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন_
_কেমন কাটলো এই দুইদিন?
_খুব ভালো দাদুভাই।আচ্ছা দাদু এখন আমি যাই।আসার পর আর ফ্রেশ হই নাই।
_ঠিক আছে যাও।পূর্ণতা চলে গেলো। পূর্ণতা দেখতে তার মরহুম দাদি মরিয়ম এর মতো হয়েছে যার জন্য আরিফ শেখ সব নাতির চাইতে পূর্ণতাকেই বেশে আদর করে।
_______________________________________
আরিফ শেখ এর ভাতিজার মেয়ে বিয়ে গত চারদিন পর। নাজিম শেখ এসে আরিফ শেখ কে সহ সুরাইয়া বেগম কেও দাওয়াত দিয়ে গিয়েছে।ফায়াদ চলে যেতে চাইলে আরিফ শেখ এর অনুরোধে আর যাওয়া হয়নি।তাই ফায়াদ আরো কিছুদিন ছুটি বাড়িয়েছে।দেখতে দেখতে তিনদিন চলে গেল।আজকে সিনথিয়ার হলুদ সন্ধ্যা।পূর্ণতা আর সিনথিয়া একই বয়সী এবং একই শ্রেনীতে পরে দুজন।তারা দুজন খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু বললেই চলে।পূর্ণতা হলুদের অনুষ্ঠানে যেতে না চাইলে সিনথিয়া সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছে যে পূর্ণতা না আসলে সে হলুদি লাগাবে না।তাই পূর্ণতাও রাজি হয়েছে। তার উপর বাড়ির সাথে বাড়ি না গিয়ে কিভাবে থাকে??
_________________________________________
নিতি ফারিনতো সেই বিকেল থেকে সাজগোজ করছে।জান্নাত নিজে নিজে সাজতে পারে না বিধায় নিধি জান্নাত কে তৈরি করে তারপর নিজে তৈরি হবে।আর পূর্ণতা নিজে নিজে তৈরি হবে।
আকাশ সেই কখন থেকে ফারিন কে জালাচ্ছে। আর ফারিন একটু পর পর চিৎকার করে উঠছে আকাশের উপর।
_হয়েছে হয়েছে আর কতো আটাময়দা লাগাবি?তুই জানিস তোকে কেমন ভুতনি দেখাচ্ছে??
_তাতে তোমার কী??ফারিন এর কথায় আকাশ বলে _
_তাতে আমার কী মানে? তোকে এই অবস্থায় যে কেও ভুতনি ভেবে স্ট্রোক করতে পারে।ফারিন এবার না পেরে আকাশের মুখে পাউডার মেখে দিলে।আকাশতো পুরাই ভ্যাবাচেকা খেয়ে গিয়েছে।কী হলে এটা??নিজের চেহারা নিজে আয়নায় দেখে নিজেই আতকে উঠছে,, আকাশের এই অবস্থা দেখে বাকি সবাই হাসতে হাসতে শেষ।আকাশ রাগে দুঃখে ফারিনকে বকতে বকতে রুম থেকে বের হয়ে যেতে লাগবে ওমনেই নাইমের সাথে দেখা হয়ে যায়। নাইমতে ভয়ে ওমাগো বলে চিৎকার করে উঠেছে।
_ভাই চিৎকার করিস না আমি,, আমি আকাশ।
_তোর এই অবস্থা কেন শা**লা, দিন দুপুরে ভুত সেজে মানুষ কে ভয় দেখাচ্ছিস কেন??
_ওই ফারিন এর বাচ্চায় এই অবস্থা করেছে আমার।
_নিশ্চয়ই তুই মেয়েটাকে বিরক্তি করেছিস তার জন্য এমন করেছে।আচ্ছা বাদ দে আয় একটা সেলফি তুলি।নাইমের কথা আগুনে ঘি ডালার মতোই ছিলো আকাশ আরো রেগে বোম হয়ে ওখান থেকে চলে গেলো।আর নাইম হাসতে হাসতে রুমের ভেতরে চলে গেলে।
___________________________________________
পূর্ণতা হলুদ শাড়ীর সাথে হলুদ ব্লাউজ পরেছে।হাটু অবদি চুলগুলে ছেরে দিয়েছে।হাত ভরতি কাচের চুরি পরেছে।টানা টানা চোখে কাজল লাগিয়েছে।গোলাপি ওষ্ঠদ্বয় আজকে লাল রঙে সাজিয়েছে। হালকা পাতলা মেকআপ করেছে।এই একটু সাজেই মেয়েটাকে ভয়ংকর সুন্দর লাগসে। নিজেকে আয়নায় বার বার খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে পূর্ণতা,,পরমূহর্তে মনে হলো কানেতো দুল পরা হয় নাই।কানে দুল পরতে গিয়ে বার বার ব্যার্থ হয় পূর্ণতা।শেষমেশ না পেরে মাহমুদার কাছে যাওয়ার জন্য রুম থেকে বের হলো পূর্ণতা।সিড়ি দিয়ে যাওয়ার সময় আরাফের সাথে দেখা হয় পূর্ণতার।পূর্ণতা পাশ কাটিয়ে যেতে চাইলে আরাফ বাধা দেয়
_এত সেজেছিস কেনো?আরাফের কথায় পূর্ণতা বললে_
_কই এতো সেজেছি?আর মানুষ অনুষ্ঠানে গেলে কী ওমন সাদামাটাভাবে যায় নাকি??
_তুই এমনিতেই অনেক সুন্দর। সাজার প্রয়োজন নেই।যাইহোক তোকে খুব সুন্দর লাগছে মাশাল্লাহ। আরাফের কথায় পূর্ণতা বললে_
_ধন্যবাদ ভাইয়া। এই বলে পূর্ণতা চলে যেতে নিলে আরাফ আবারো ডাক দেয় পূর্ণতা মনে মনে বিরক্ত হয় কিন্তু মুখে বলে_
_জ্বী ভাইয়া?
_নজর টিকা লাগিয়ে যাস।নাহলে আবার মানুষ নজর লাগিয়ে দিবে।
পূর্ণতার চলে যাওয়ার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আরাফ আর বির বির করে বলছে_
_কবে হবি আমার?আর কত #অপেক্ষা করাবি আমাকে??
.
.
.
চলবে...... 🦋
তোমার অপেক্ষায় (পর্ব ১১)
অডিও মোড
00:00
00:00
গতি:
ভলিউম:
255
Views
1
Likes
1
Comments
3.0
Rating