#তোমার_অপেক্ষায়
#পর্ব ৮
পূর্ণতা এসে নিধির পাশে দাঁড়ালো। নাইম তারা দিয়ে বললো_
_ওরাতো এসেই পরেছে এখন চল যাওয়া যাক।বাড়ির সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ওরা রওনা হলো।দুইটা গাড়ি নিয়েছে ওরা।এক গাড়িতে...ফায়াদ ফাহাদ নিধি আরাফ আর পূর্ণতা।অন্য গাড়িতে.. নাইম অনিক আকাশ ফারিন নিতি আর জান্নাত।
________________________________________
গাড়ি চলছে তার নিজ গতিতে।ফায়াদ ড্রাইভ করছে ফায়াদের পাশে আরাফ বসে আছে।দুইজন টুকটাক কথা বলছে।ফায়াদ আর আরাফ সমবয়সী হওয়ায় ছোট থেকেই বন্ধু শুলভ সম্পর্ক ওদের মধ্যে।
__আমার কেমন বমি বমি পাচ্ছে নিধি আপু।পূর্ণতার কথায় নিধি ফায়াদকে গাড়ি থামাতে বললো।ফায়াদ রাস্তার এক পাশে গাড়ি থামালো।
_কী হয়েছে নিধি? আরাফ এর প্রশ্নে নিধি বললো __
__পূর্ণতার নাকি বমি পাচ্ছে।
__তুই বসেছিস জানালার পাশে। ফাহাদও বসেছে জানালার পাশে। ওকেতো বসিয়েছিস তোদের মাঝখানে বমিতো পাবেই।ফায়াদের কথায় নিধি পূর্ণতাকে জানালার পাশে বসতে দিলো।পাঁচ মিনিট পর ফায়াদ পূর্ণতাকে জিজ্ঞেস করলো __
__এখন ঠিক আছো?গাড়ি স্টার্ট দিবো?কোনো সমস্যা হবে নাতো তোমার?
_নাহ কোনো সমস্যা নেই ভাইয়া। এখন ঠিক আছি।
_ফায়াদ পূনরায় গাড়ি স্টার্ট দিলো।গন্তব্যের উদ্দেশ্য যাএা ধরলো।
________________________________________
ফায়াদের গাড়িটা দেখা যাচ্ছে না এখন আর।অনিক এর কথায় নাইম বললো_
_কোনো বিপদ হলোনাতো আবার।এই বলে ফায়াদকে দুইবার ফোন করলো।ফোন সাইলেন্ট থাকায় ফায়াদ আর ফোন ধরতে পারলো না।
_ফোনটাও ধরছে না।নাইমের কথায় ফারিন বললো _
_গাড়ি ড্রাইভ করছে তাই হয়তো ফোন ধরতে পারছে না।আকাশ বললো _
_তাই হবে।
_____________________________________
পাক্কা তিন ঘন্টা লম্বা জার্নির পর ওরা রেসোর্টটে এসে পৌঁছেছে।ফায়াদরা অনিকদের কিছুসময় পরি এসেছে।
রেসোর্ট এর চারিদিকে গাছপালা দিয়ে আবৃত।জায়গাটা পুরোপুরি জনশূন্য। বেশ নিরিবিলি পরিবেশ। রেসোর্টে মোট ছয়টা কটেজ। তারমধ্য মেয়েরা তিনটা কটেজ নিয়েছে আর বাকি তিনটা কটেজ ছেলেদের জন্য।
লম্বা জার্নির পর সবাই নেতিয়ে গিয়েছে আপাতত সবাই ফ্রেশ হয়ে বিশ্রাম নিচ্ছে।
_____________________________________
কটেজ আলাদা হলেও খাওয়ার সময় সবাই একসাথে জমায়েত হয়।
টেবিলে গরম গরম ধোয়া ওঠা ভাত, গরুর মাংস, চিংড়ি মাছ, ভাজি, ডাল।
সবাইকে খাবার সার্ভ করে দিচ্ছে নিধি।সবাই সবার মতো খাচ্ছে। এতগুলো মানূষের সামনে পূর্ণতার খেতে বেশ অস্বস্থি হলো।
_কি হলো পূর্ণতা খাচ্ছিস না কেনো?আারাফের কথায় পূর্ণতা মিনমিনিয়ে জবাব দিলো_
_খাচ্ছিতো।
_তুমি এত সরম পাও কেন?আমরা আমরাইতো।নিধির কথায় পূর্ণতা জোরপূর্বক হাসি টেনে বললো_
_নাহ সরমের কী আাছে আপু খাচ্ছিতো।
_______________________________________
রেসোর্ট এর এক পাশে ছাউনি দিয়ে ছোট্ট একটি ঘর আছে, যেখানে এখন ওরা আড্ডা দিতে ব্যাস্ত।ওদের গল্পের মধ্যে পূর্ণতা হুট করে দাড়িয়ে পরে_
_কী হলো পূর্ণতা?নিধির প্রশ্নে পূর্ণতা বললো_
_তোমরা গল্প করো। আমি একটু ওইদিকটায় ঘুরে আসি।বসে থাকতে আর ভালোলাগছে না।আরাফ বললো_
_ঠিক আছে কিন্তু বেশি দূর যাস না কেমন??
_ঠিক আছে। এই বলে পূর্ণতা চলে গেলো।
_________________________________________
সূর্যী মামা ডুবে যাচ্ছে। ধরনী লালচে বর্ণ ধারণ করছে।পূর্ণতা নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে আছে। আকাশটা দেখতে কী যে সুন্দর লাগছে।চারিদিকে নিস্তব্ধ নিরবতা।শো শো বাতাসের আওয়াজ পূর্ণতার কানে বাজছে।প্রকৃতির বাতাসে পূর্ণতার শরীর মন দুইটাই ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে।। মূহুর্তটা বেশ উপভোগ করছে পূর্ণতা।ঠিক সেই সময় পূর্ণতারপাশে এসে দাড়ালো ফায়াদ।
_আজকের আবহাওয়াটা বেশ সুন্দর তাই না?পুরুষালি কন্ঠ পেয়ে পাশ ফিরে তাকালো পূর্ণতা।ফের সামনে তাকিয়ে জবাব দিলো পূর্ণতা_
_হুম।
_একলা একলা দাড়িয়ে আছো যে।
_একলা থাকতেই বেশি পছন্দ করি।বেশ কিছুখন চুপ থেকে ফায়াদকে পাল্টা প্রশ্ন করলো পূর্ণতা_
_আপনি কি সবসময় এমন কম কথা বলেন? না মানে আপনাদের বন্ধুদের মধ্যে আপনি সবার চাইতে কম কথা বলেন।
_প্রয়োজন ছাড়া বেশি কথা বলতে পছন্দ করি না।
_ওহ।
_মামা মামির কাছ থেকে শুনলাম তুমি নাকি পড়ালেখায় বেশ আগ্রহী? তো ভবিষ্যতে কিছু হওয়ার ইচ্ছে আছে নাকি??
পূর্ণতার চোখ চিক চিক করে উঠলো।বললো_
_হ্যা আছেতো।
_আচ্ছা কী হওয়ার ইচ্ছে আছে?
_,আইনজীবী। আমি সপ্ন দেখতে ভীষণ ভালোবাসি জানেন।আমার ছোট থেকে ইচ্ছে আমি আইনজীবী হবো।তার জন্যেই তো মন দিয়ে লেখাপড়া করছি।কিন্তু পরখনেই মন খারাপ করে বললো আমার ইচ্ছে যদি পূরন না হয়?পূর্ণতার কথা শুনে ফায়াদ বললো_
_ওইজে একটা কথা আছে না ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়।তেমনি তোমার যদি মনে প্রানে আইনজীবী হওয়ার ইচ্ছে থাকে তাহলে নিশ্চয়ই হবে।এই দেখো আমাকেই, ছোট থেকে তো ডক্টর হওয়ার কতো সপ্ন দেখেছি, নিজের ইচ্ছে কে প্রাধন্য দিয়ে দিনরাত এক করে পরেছি।আর ফল হিসেবে দেখো আমার ইচ্ছে পূরন হয়ছে।তেমনি তোমার যদি আইনজীবী হওয়ার প্রখর ইচ্ছে থাকে তাহলে তুমি অন্যের মতামতকে ময় নিজের মতামত কে প্রাধন্য দিবে।তোমার মাথায় শুধু একটা কথাই থাকবে যে তোমার আইনজীবী হতেই হবে।
পূর্ণতা এক দৃষ্টিতে ফায়াদের দিকে তাকিয়ে আছে। কী সুন্দর করে কথা বলে লোকটা।কী সুন্দর করে পূর্ণতা সবটা বুঝিয়ে দিলে।কথার ধারনও কী সুন্দর।
_বুঝেছো?ফাউয়াদের কথায় পূর্ণতার ধ্যানভাংলো।নিজের করা কাজে নিজেই লজ্জিত।ছিহ ছিহ কেমন ব্যাহায়ার মতো তাকিয়ে ছিলো?কী ভাববে লোকটা?মনে মনে কথাগুলে বলে মুখে বললো_
_হ্যা।
_ফায়াদ প্রসঙ্গ পালটিয়ে বললো_
_চলো।ওখানে সবাই ডাকছে।পূর্ণতাও বললো_
_ওহ হ্যা চলেন।
চলবে...... 🦋
তোমার অপেক্ষায় (পর্ব ৮)
অডিও মোড
00:00
00:00
গতি:
ভলিউম:
253
Views
2
Likes
1
Comments
5.0
Rating