সেদিনকাল রাত কোনরকম ভাবে গাড়িতে কাটিয়ে দিল পাপিয়ারা,,, সকাল বেলায় তাদের সবার ঘুম ভাঙলো গাড়িতে ,,,।
প্রিয়া : পাপিয়া খিদের কারণে আমার শরীর অনেক দুর্বল হয়ে যাচ্ছে ,, কোন একটি ব্যবস্থা কর বন্ধু ।
পাপিয়া : এখন খিদেতে তোর অবস্থা খারাপ হচ্ছে কিছুক্ষণ পর থেকে আমাদের অবস্থা খারাপ হবে ,,, আমাদের এই গাড়ির ভেতর পড়ে থাকার কোন মানে হয় না ,,,ঔ স্কুলটি দেখতে পাচ্ছিস ওই স্কুলের ছাদের উপর আমাদের উঠতে হবে সেটা যেভাবেই হোক ,,,
মিনা : এটা একদম অসম্ভব ওই ইস্কুলের ভেতর দৌড়িয়ে যেতেও আমাদের পাঁচ মিনিট টাইম লাগবে ,, আর এই পাঁচ মিনিটে জম্বি গুলো আমাদের কেউ জম্বি বানিয়ে ফেলবে ,, এর মধ্যে আমাদের কাছে ছোট একটি বাচ্চা আছে আমরা দৌড়ে যেতে পারলেও মনি দৌড়ে যেতে পারবেনা ।
পাপিয়া : পারবে না বললেই চলবে না ,,, আমাদেরকে পারতেই হবে অত্যন্ত চেষ্টা তো করতে হবে মরে যাওয়ার আগে বেঁচে থাকার জন্য ,,,।
মিনা : আর যদি কয়েকটি তলোয়ার থাকতো তাহলে হয়তো আমরা নিজেদেরকে রক্ষা করতে করতে ওই স্কুলের ভেতর চলে যেতে পারতাম ।
এগুলো বলছে তারা ,,তখনই তারা লক্ষ্য করতে পেল তাদের গাড়ির পেছনে আরো তিনটি তলোয়ার রাখা । সবাই তো অবাক হয়ে গেল ,, তারা তো জানে এখানে তারা ছাড়া আর কোন মানুষ নেই ,, এমনকি রাতে যখন এখানে পাপিয়া গাড়ি নিয়ে এসেছিল তখনো এখানে কোথাও তলোয়ার রাখা ছিল না ,,, সকাল বেলায় তাদের গাড়ির পেছনের দিকে তলোয়ার রাখা, তারা কিছু বুঝতে পারছে না ।
পাপিয়া : আমার মনে হচ্ছে আমাদের ছাড়াও এই বইমেলায় আরো মানুষ আছে ,,, তারা নিশ্চয়ই আমাদেরকে দেখতে পাচ্ছে ,,,
প্রিয়া : তাহলে আমাদেরকে রক্ষা করেছে না কেন ?
পাপিয়া : এটা আমি কিভাবে জানব সেই লোকটি কি আমার প্রেমিক নাকি আমাকে এসে বলে গিয়েছে । ওইগুলো কথা বাদ দিয়ে বল তোরা কি পারবি তলোয়ার দিয়ে নিজেদেরকে রক্ষা করতে ।
প্রিয়া, মিনা, সাবরিনা তারা একমত হলো ,,,
প্রিয়া : আমি তো নিজের শরীর নিয়ে নিজেই হাঁটতে পারিনা ,, জানিনা আমি পারব কিনা ,, তোরা আমাকে এখানে রেখেই চলে যা আমার জন্য তোদের বিপদ হতে পারে ।
জানিস আমি বেশি বেশি খাবার খেতাম বলে আমার মা আমাকে অনেক বকাবকি করতো ,, হয়তো আমার মা আমার ভালোর জন্যেই বকেছে । বেশি স্বাস্থ্যের জন্য আমাকে আমার মা বিয়ে দিতে পারছে না ,,
কোন পাএ পক্ষ আমাকে বিয়ে করতে রাজি হচ্ছে না ,, এরপরেও যেন আমার কোন টেনশন ছিল না । আমি আমার মায়ের কষ্ট বোঝার চেষ্টা করিনি ,, সব মানুষের কথা আমার মায়ের শুনতে হয়েছে আমার স্বাস্থ্যের জন্য । হ্যাঁ আমি যদি চেষ্টা করতাম তাহলে ডায়েট করে অল্প অল্প খেয়ে আমার শরীর স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করতে পারতাম কিন্তু আমি আমার মায়ের তেমন বাদ্য নিয়ে ছিলাম না ,,মায়ের কথা একদম শুনিনি ।
আজকে কেমন যেন ভীষণ মনে পড়ছে আমার মায়ের কথা ,,, আমার মনে হচ্ছে আমি আর কখনো আমার মাকে দেখতে পাবো না । আমি যদি এখানেই জম্বি হয়ে যাই তাহলে আমার হয়ে আমার মায়ের কাছে তোরা মাপ চেয়ে আসিস । এটাই আমার শেষ ইচ্ছে তোদের কাছে ।
এমনিতে এলিনার জন্য তোরা অনেক বিপদে পড়ে গিয়েছিস আমার জন্য আর বিপদে পরিস না । জানিস আমার মার যখন আমার প্রতি বেশি রাগ উঠে যেত তখন রাগের মাথায় আমাকে অভিশাপ দিত আমার শরীর আমার কাল হবে । একদিন না একদিন নাকি আমার এই মোটা শরীরের জন্য আমি বিপদে পড়বো ।
দেখছিস মায়ের দোয়া যেমন সন্তানের লাগে তেমনি মায়ের বরদোয়াও সন্তানের লাগে ,, আজ হয়তো আমার মায়ের বরদোয়াই আমার লেগে গিয়েছে । আমি যদি তোদের মত এমন থাকতাম তাহলে তোদের সাথে দৌড়ে যেতে পারতাম কিন্তু আমার শরীর অনেক ভারী একটু জুরে দৌড়ে কোথাও যেতে পারি না ,, বেশি হাঁটলেই আমার অনেক ক্লান্ত লাগে ,, এর মধ্যে আমি খাইনি আজকে । আমার শরীর আরো ক্লান্ত হয়ে পড়েছে ।
পাপিয়া : এভাবে ফালতু কথা বাদ দিয়ে নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা কর ,,, দেখবি ইনশাল্লাহ তুই পারবি । তুই আমাদের মাঝখানে থাকবি আমরা তিন পাশ থেকে জম্বি গুলোর মাথা কেটে ফেলবো তুই মনিকে নিয়ে শুধু হেঁটে যাবি আমাদের মাঝখান দিয়ে আর হাতে তলোয়ার রাখবি যদি কোন জম্বি কামড়ে দিতে আসে তাহলে তাদেরকে তোর তলোয়ার দিয়ে কেটে ফেলবি ,, তুই পারবি বন্ধু মানুষ পারেনা এমন কোন কাজ নেই । চেষ্টা করলেই সব কিছু করা যায় ।
প্রিয়া : সত্যিই আমি অনেক ভাগ্যবান তোদের মত বন্ধু পেয়েছি এর জন্য । আমার এতো স্বাস্থ্যের জন্য সবাই আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করেছে কিন্তু তোরা হাসাহাসি না করে বরং আমার সাথে বন্ধুত্ব করে নিয়েছিস ,, সুখ দুঃখ আমার সাথে ভাগাভাগি করে নিয়েছিস আমি অনেক কিছু পেয়ে গেয়েছি । আচ্ছা বলতো আমি মোটা বলে আমি কি ভালো মেয়ে না ,,,
মিনা : অবশ্যই তুই ভালো মেয়ে বরং আমাদের থেকে অনেক ভালো ,,, তুই অনেক ভদ্র সভ্য মেয়ে এমনকি অনেক মেধা তোর মধ্যে আছে লেখাপড়ার দিক দিয়েও তুই আমাদের থেকে অনেক ভালো ।
প্রিয়া : তাহলে কোন ছেলে আমাকে পছন্দ করে না কেন ?
পাপিয়া : এগুলো বাদ দে তো ,,, আমরা এখান থেকে বের হতে পারলে ,, তোর ক্রাশ সেই ছেলের সাথে তোর বিয়ের ব্যবস্থা করবো ,,, দরকার হলে আমরা সেই ছেলেকে তুলে নিয়ে আসব ।
প্রিয়া মুশকি একটি হাসি দিল,,,
প্রিয়ার ওজন অনেক বেশি ,, এই বয়সেই ৮৫ কেজি ওজন তার । বয়স তেমন না মাত্র ২৫ বছর ।
(" সব মোটা মেয়েরই হয়তো প্রিয়ার মত কষ্ট ,,, মোটা মানুষকে মানুষ কেন স্বাভাবিকভাবে মেনে নেয় না ,,, আসলে মানুষ যোগ্যতার দিকে তাকায় না মানুষ তাকায় রূপের দিকে সাদা চামড়ার দিকে,, মিডিয়াম স্বাস্থ্যের দিকে ।
মানুষের রুপ যৌবন সারা জীবন মানুষের মধ্যে থাকে না ,, ধরেন 40 থেকে 45 বয়স পর্যন্তই মানুষের সৌন্দর্য থাকে এরপর থেকে মানুষের সৌন্দর্য আস্তে আস্তে নষ্ট হতে থাকে ,,, কিন্তু একটি সুন্দর মন,, ভালো চরিত্র,, যোগ্যতা এই তিনটি জিনিস মরার আগ পর্যন্ত মানুষের মধ্যে থাকে । মানুষ যতই বলে কালোই ভালো ,, কিন্তু ওই মানুষগুলোই পাত্রী খোঁজার সময় আগে জিজ্ঞাসা করে মেয়েকি সুন্দর কিনা । আরে কত সুন্দর সুন্দর মেয়েরা তার স্বামীকে রেখে পর পুরুষের হাত ধরে চলে যাচ্ছে ,,, কিন্তু প্রিয়ার মতো এমন মোটা মেয়ে বা কালো মেয়ে তারা কখনো তাদের স্বামীকে রেখে অন্য ছেলের হাত ধরে চলে যায় না । কেউ কিছু মনে করিয়েন না হঠাৎ করে মন চাইলো এই কথাগুলো বলতে এর জন্য বললাম ")
পাপিয়া : তোরা শুন আমরা মনিকে কাটুনে করে নিব ,,, আমাদের সামনে রাখা পিকআপের উপরে অনেকগুলো বড় বড় কার্টুন আছে আর সেগুলো মজবুতও মনে হচ্ছে,,, জম্বি গুলোর কোন ক্ষমতা নেই ওই কাটুন ছিঁড়ে মনিকে বের করা ,,, কারন ঔ জম্বি গুলোর শক্তি শুধু তাদের দাঁতে এবং পায়ে তাদের হাতের মধ্যে আমার দেখা মতে তেমন কোন শক্তি নেই । কাটুন তাড়া তাদের দাত দিয়ে ছিঁড়তে পারবে না ,, কারণ কাটুনের উপরে লোহার সিক লাগিয়ে দিব ।
আজকে এই পর্যন্তই থাক ❤️ ❤️
চলবে,,,,,
,, ভয়ানক জম্বির আক্রমণ ,, পর্ব, ৯
অডিও মোড
00:00
00:00
গতি:
ভলিউম:
143
Views
6
Likes
1
Comments
5.0
Rating