তুলির হত্যা,,

অডিও মোড

00:00 00:00
গতি:
ভলিউম:
ভালোবাসা যেমন সুন্দর তেমন ভয়ংকরও,,
আজকের গল্পে সেটাই তুলে ধরবো।

গল্পটা আমার এক প্রতিবেশি আন্টির মেয়ের,,,

মেয়েটির নাম তুলি, দেখতে ভীষণ সুন্দরী, দুধে আলতা গায়ের রং চেহারাটা মায়াবী দেখে মনে হয় আল্লাহ হয়তো নিজের হাতে খুব যত্নে বানিয়েছেন।
তুলি মেডিকেল কলেজের ছাত্রী ছিলো, মেধাবী ও ছিলো। কলেজে ওর রিয়াদ নামে একটা ছেলের সাথে পরিচয় হয়, রিয়াদ ওর ক্লোজ ফ্রেন্ড ছিলো, রিয়াদের একটা কাজিন আসিফের সাথে পরিচয় হয় তুলির আসিফ অনেক ভালো ছেলে, কী সুন্দর গুছিয়ে কথা বলতে পারে। মন খারাপ হলে সহজেই বুঝতে পারে,,
আসিফকে তুলির ভালো লাগে অনেক,, খুব ভালো বন্ধুও হয়,, তুলির মন খারাপ, ভালো লাগা, খারাপ লাগা সব কীছুই বুঝে যায় আবার সব ঠিকও করে দেই।
রাতে তুলি শুয়ে শুয়ে ভাবপ আচ্ছা আসিফ কী কোনো মানুষ নাকি ফেরেস্তা, একটা মানুষ এতটা ভালো কী করে হয়। এই ভালো লাগা ভালোবাসায় রুপ নেয়। কিন্তু তুলি কখনোই তার পরিবারের মতের বাহিরে যেতে চায় না। কীছু দিন রিলেশনের যাওয়ার পর আসিফ তুলিকে ওর সাথে রাত কাটানোর জন্য জোর দিতে থাকে। তুলি রাজি হয় না ভেঙে যায় রিলেশন,, বেশ কিছু দিন পর রিয়াদের জন্ম দিন তুলির পুরো পরিবারকে নিম্ন্ত্রন করে,, কিন্তু তুলির মা অসুস্থ হওয়ার কারণে যেতে পারে না। তুলি একাই চলে যায়,,
ওখানে যাওয়ার পর ঐখান থেকে আসিপ কীছু গুন্ডা নিয়ে তুলিকে নিজের গ্রামের বাড়ী ময়মনসিংহতে তুলে নিয়ে আসে। জোর করে বিয়ে করে,, এমনকি শারীরিক সম্পর্কও করে ২ দিন পর তুলি বাড়ী ফিরে আসে মন খারাপ করে সারাদিন রুমে কান্না কাটি করে। পরিবারের লোকেরা জিজ্ঞেস করেও তেমন কোনো কীছু জানতে পারে না। তুলির এক বোন অনেক জিজ্ঞেস করলে তুলি ওকে সব কীছু খুলে বলে।
মেয়েটি তুলির মাকে জানতে চাইলে তুলি বলে মা জানতে পারলে স্টক করবে।।
এর মাঝে একমাস কেটে যায়, আসিফের সাথে কোনো যোগাযোগ নেই তুলির,, ও কলেজে যাওয়া শুরু করে,, আসিফ খবর পেয়ে তুলিকে তুলে নিয়ে আসে। এনে ঘরে আটকে রাখে।
শারীরিক নির্যাতন করে, মারধরও করে, খেতে দেয়না। এদিকে মেয়েকে না পেয়ে পাগল পারা হয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করে। পুলিশ টাকা খায় ঠিকই কিন্তু কোন লাভ হয় না।
প্রায় ৩ দিন পর তুলির মায়ের কাছে একটা অচেনা নাম্বার থেকে কল আসে।
ওপাশের মহিলাটি সালাম দেয়।
পরিচয় জানতে চািলে বলে
বু,, আমি আসিফের ফুফু আপনি যেভাবেই হোক তুলিকে এখান থেকে নিয়ে যান। না হলে মেয়েটাকে অত্যাচার করে ওরা মেরে ফেলবে।।
ঠিকানা ও দেয়, সেদিনই রওনা হয় তুলির মা,
মাকে দেখে কেঁদে দেয় তুলি,, পুরো শরীরে কালশিটে দাগ পরে গেছে,, এই ৩ দিনে অসংখ্য বার শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে।
মেয়েকে নিয়ে আসে বাড়িতে ৬ মাস কেটে যায়,, তুলির বিয়ে ঠিক করে ওর পরিবার বিয়ের ৪ দিন আগে আসিফ কল করে বলে।
তোমার জন্য তোমার বাড়ীর সামনে অপেক্ষা করছি চলে এসো, না হলে তোমার পার্সোনাল ভিডিও নেটে ছেড়ে দিবো।বাধ্য হয়ে তুলি দেখা করতে চায়। যাওয়ার আগে মাকে বলে মা আমার খুব হালিম খেতে ইচ্ছে করছে নিয়ে এসো।
আসিফ ওকে নিয়ে যায় একটা পার্কে।
মেয়ের ফিরতে দেরি হচ্ছে দেখে মা কল করে বলে
মা তুই কোথায়? তুলি বলে মা আমি নানা বাড়ীতে আসছি।এটাি তুলির শেষ কথা ছিলো। রাত ৮ টায় কল আসে তুলির মায়ের কাছে থানা থেকে,, ওরা গিয়ে জানতে পারে তুলি হসপিটালে। হসপিটালে যাওয়ার পর দেখে সাদা কাফনে মোড়া তুলি কী সুন্দর ঘুমিয়ে আছে।
গলাটা দেহ থেকে আলাদা। জ্ঞান হারিয়ে ফেলে তুলির মা। ৩ দিন পর দাফন হয় তুলির। কিন্তু আসিফ এখনো জামিনে বাইরে আছে।
হয়তো অন্য কোনো তুলির জীবন নস্ট করছে।

এরকম হাজারো ঘটনা ঘটে প্রতিনিয়ত,,, কিন্তু আমরা সযেতন হই না। তুলির মতো অনেক নিস্পাপ মেয়েদের জীবন নস্ট হয়,, কেউ গুমরে মরে একলা ঘরে, কেউবা আত্ম হত্যা করে। আমরা মেয়েদের দোষ ধরি, নিজের মেয়েকে দোষী না ভেবে নিজের ছেলেকে শিখান, ভালোবাসা পবিত্র এক বন্ধন, কিন্তু এখন এটা এক ভয়ংকর রুপ নিয়েছে।

158 Views
1 Likes
0 Comments
3.0 Rating
Rate this: