শুভ্র ছিল গ্রামের একটি ছোট স্কুলের ছাত্র। তিনি সবসময়ই পড়াশোনায় ভালো ছিলেন না, কিন্তু স্কুলে নিয়মিত উপস্থিত থাকতেন। তার বাবা-মা তার লেখাপড়া নিয়ে খুবই চিন্তিত ছিলেন। শুভ্র বারবার পরীক্ষায় ফেল করত। একবার সে অষ্টম শ্রেণির পরীক্ষায় পুনরায় ফেল করল। সে নিজের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছিল এবং ভেবেছিল যে তার জীবনে আর কিছুই হবে না। তার বন্ধু-বান্ধব, শিক্ষক-শিক্ষিকাও তাকে নিয়ে চিন্তিত ছিলেন।
শুভ্রর বাবা-মা তখন তাকে শহরের একটি ভাল স্কুলে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নেন। নতুন স্কুলে প্রথমদিকে শুভ্র আরও বেশি হতাশ হয়ে পড়েছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে শুভ্র বুঝতে পারল যে তার জীবনে পরিবর্তনের জন্য সে নিজেকেই উদ্যোগ নিতে হবে।
নতুন স্কুলের শিক্ষকরা শুভ্রকে সাহায্য করার জন্য বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করতে শুরু করলেন। তারা শুভ্রকে বিভিন্ন নতুন পদ্ধতিতে পড়াশোনা করানোর চেষ্টা করলেন। তারা শুভ্রকে বুঝালেন যে পরীক্ষায় ফেল করা মানেই জীবনের শেষ নয়। তারা শুভ্রকে তার আগ্রহের বিষয়ে পড়াশোনা করতে উৎসাহিত করলেন।
শুভ্র প্রথমে বিজ্ঞান বিষয়টা বেশ কঠিন মনে করত। কিন্তু একদিন বিজ্ঞান শিক্ষক শুভ্রকে বোঝালেন যে বিজ্ঞান শুধু মুখস্থ করার বিষয় নয়, বরং বোঝার বিষয়। সেই দিন থেকেই শুভ্র বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠল। শুভ্র রাত দিন এক করে পড়াশোনা করতে লাগল। শিক্ষকরা তাকে নানাভাবে উৎসাহিত করতে থাকলেন।
একদিন শুভ্রর বিজ্ঞান শিক্ষক তাকে একটি প্রকল্প তৈরির কাজ দিলেন। প্রকল্পটি ছিল একটি বিজ্ঞান প্রদর্শনীর জন্য। শুভ্র নিজের সমস্ত মেধা এবং শ্রম দিয়ে প্রকল্পটি তৈরি করল। প্রদর্শনীর দিন তার প্রকল্পটি সবার প্রশংসা কুড়াল। সে প্রথম পুরস্কার পেল। সেই দিন শুভ্রর আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে গেল।
শুভ্র এরপর থেকে আর কখনো পিছনে ফিরে তাকায়নি। সে প্রতিটি বিষয়েই মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করতে লাগল। এক সময় সে স্কুলের শ্রেষ্ঠ ছাত্র হয়ে উঠল। পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করতে শুরু করল। তার বাবা-মা এবং শিক্ষক-শিক্ষিকারা তার এই পরিবর্তন দেখে খুবই খুশি হলেন।
শুভ্র এরপর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায়ও ভালো ফলাফল করল। সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেল। সেখানে গিয়েও শুভ্র নিজেকে আরও উন্নত করার চেষ্টা করতে লাগল।
শুভ্রর এই সফলতার পেছনে তার পরিশ্রম, ধৈর্য এবং আত্মবিশ্বাসের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। এছাড়াও তার শিক্ষকদের নিরন্তর উৎসাহ এবং সহায়তা তাকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছিল।
শুভ্র এখন একজন সফল বিজ্ঞানী। সে তার নিজের গ্রামে একটি স্কুল স্থাপন করেছে, যেখানে সে নিজেই ছাত্রদের বিজ্ঞান শেখায় ।
ফেল
অডিও মোড
00:00
00:00
গতি:
ভলিউম:
211
Views
4
Likes
0
Comments
3.0
Rating