লন্ডনের হাইওয়েতে ঝিরঝির করে বৃষ্টি পড়ছে। অনেকে ছাতা অথবা রেইনকোট পরে যার যার গন্তব্যে যাচ্ছে।
এক হাতে ওয়াটার কালার ছাতা আরেক হাতে একটা অফিস ব্যাগ নিয়ে দৌড়ে হাটছে এমিলি। ব্রাউন কালার চুলগুলো এলোমেলো হয়ে উড়ছে হাওয়ায়। এমিলি লন্ডনের স্কয়লার হসপিটালের একজন ডক্টর। বাংলাদেশের একটা অনাথ আশ্রমে বড় হয়েছে এমিলি। লেখা পড়ায় গভীর আগ্ৰহের ফলেই লন্ডনের ভার্সিটিতে স্কলারশিপ পেয়েছে ও। পড়া লেখা শেষ করে গত এক বছর যাবত লন্ডনের হসপিটালে চাকরী করছে ও। নিজের কাজের প্রতি এমিলি অনেক প্যাশিনেট। সকালে একটা কল এসেছিল আর্জেন্টলি রোগীকে দেখার জন্য। সেখানেই যাচ্ছে এমিলি।
এমিলিঃ উফফ এই বৃষ্টি যখন তখন শুরু হয়ে যায়। যদি এমারজেন্সি না হতো তাহলে বাড়ি থেকেই বের হতাম না। ( দ্রুত হাটতে হাটতে)
সামনেই গন্তব্য। এমিলি এড্রেস চেক করে দেখে এই বাড়িতেই ওকে ডাকা হয়েছে। এটা বাড়ি কম বিশাল প্যালেস বেশি মনে হচ্ছে। প্যালেস এর সামনে আসতেই দারোয়ান গেইট খুলে দিল। এমিলি মুচকি হাসি দিয়ে ভিতরে ঢুকে পরলো। দারোয়ান টাকে অনেক আজীব লাগছিল এমিলির কাছে। লোকটার মুখে অদ্ভুত গম্ভীরতা।
এমিলি এসব গ্ৰাহ্য না করে ভিতরে প্রবেশ করলো। বাড়িটা পুরো নীরব আর আলো মিডিয়াম। অনেক রাজকীয় ভাবে সাজানো গোছানো বাড়িটা ব্রিটিশ রাজবাড়ির মতো।
এমিলিঃ হ্যালোওওও এনি ওয়ান দেয়ার,,, আ'ম ডক্টর এমিলি এহমাদ। সাম টাইম এ্যগো ইউ হেড কল মি টু সি দ্যা পেশেন্ট। হ্যালোওও!! ( আশে পাশে ঘুরতে ঘুরতে ডাকছে)
হঠাৎ দেয়ালে এক জনের পোট্রেট দেখে থমকে যায় এমিলি। ব্লাক শার্ট উইথ আ্যশ কালার ব্লেজার। চুল গুলো ঝাঁকড়ার মতো ঘন কপালে কয়েকটা চুল পরে আছে। নীল বর্ণের চোখ আর চেহারায় এটিটিউট ভাব।
এমিলিঃ রেইননন ( কাঁপাকাপা কন্ঠে)
( ইয়েস ইউর রেইন মাই প্যানকেক) এমিলির কানের কাছে মুখ নিয়ে রেইন ফিসফিসিয়ে বলল,,,
রেইনের কন্ঠ শুনেই চমকে ফিরে তাকালো এমিলি। ঠোঁটের কোণে বাকা হাসি নিয়ে এমিলির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে রেইন। এমিলি রেইনের বুক বরাবর কারন এমিলি 5.5 আর রেইন 6 ফুট।
রেইনকে দেখে ভয়ে ভয়ে ঢোক গিলল এমিলি। এক লাফে ছয় সাত কদম দূরে সরে গেল এমিলি রেইন থেকে।
এমিলিঃ ত তুমি এখানে?? আ আমার পেশেন্ট কোথায়?? ( ভয়ে ভয়ে)
রেইন আশেপাশে খোজার এক্টিং করে না জানার ভান করে বলে,,,
রেইনঃ পেশেন্ট তো তোমার সামনেই দাঁড়িয়ে আছে দেখতে পারছো না,,,,
এমিলিঃ ক ক কোথায় এখানে তো শুধু তুমিই আছো। আর কাউকেই দেখা যাচ্ছে না,,,
রেইনঃ আমিই তো পেশেন্ট এমিলি। এই যে এখানে ( বুকের বা পাশে হাত রেখে) এখানে অসুখ হয়েছে আমার। এমিলি নামক অসুখে আক্রান্ত হয়েছে পরেছি আমি। এই অসুখ সারাতেই তো তোমাকে ডেকেছি,,,
এমিলিঃ তার মানে তুমি কল করেছিলে সকালে,,,, ইউ চিটটট ( রেগে) মিথ্যা কথা বলে আমাকে এখানে আনার মানে কি রেইন?? ( রেগে ফায়ার হয়ে রেইনের দিকে তাকিয়ে)
রেইনঃ ওয়েললল তোমাকে সরাসরি বললে তো তুমি কখনোই আসতে রাজি হতে না তাই এই অপশনটা ইউজ করেছি মাই লাভ।
এমিলিঃ আমি থাকবো না এখানে। এক্ষুনি চলে যাবো,,
এমিলি রেগে দরজার সামনে যেতেই দরজা অটোমেটিকলি বন্ধ হয়ে যায়। এমিলি হাজার চেষ্টা করেও দরজা খুলতে পারছে না।
রেইন বাকা হেসে ঘুরে সোফায় বসে পরলো। পায়ের উপর পা তুলে সোফায় পিঠ ঠেকিয়ে আরামসে এমিলির দরজা খোলার ব্যার্থ চেষ্টা দেখছে ও।
রেইনঃ আমার অনুমতি ছাড়া এখানে আলো ও প্রবেশ করে না মাই লাভ এটাতো দরজা।
রেইনের কথায় এমিলি ভয়ে ভয়ে পেছনে ফিরে তাকালো রেইনের দিকে তারপর কাঁদোকাঁদো ফেস নিয়ে ভয়ার্ত কন্ঠে বলল,,,
এমিলিঃ প প প্লিজ রেইন আ আমাকে যেতে দাও,,, আমি কি ক্ষতি ক করেছি তোমার,, প্লিজ লেট মি গো,,, আই প্রমিস আমি কাওকে কিচ্ছু বলবো না ড ডোন্ট কিল মি,, ( কাঁপাকাপা কন্ঠে প্রায় কেঁদে কেঁদে)
এমিলির ভয়ার্ত দৃষ্টি ওর কথা গুলো সোজা বুকে তীরের মত বিঁধছে রেইনের। এমিলি ভাবলো কি করে ওর রেইন ওর ক্ষতি করতে চাইবে ওকে মারতে চাইবে,, ভাবছে রেইন।
রেইন এমিলিকে বুঝানোর জন্য উঠে ওর দিকে এগিয়ে যেতেই এমিলি ভয়ে ভয়ে পিছিয়ে যায়। রেইন এতে রেগে গিয়ে ঝরের গতীতে এমিলিকে দেয়ালের সাথে আটকে নিল,,, তারপর রাগে গজগজ করতে করতে বলতে শুরু করল,,,
রেইনঃ ভাবো কি করে এসব কথা তুমি হ্যাঁ। ভালোবাসি তোমাকে অনেক বেশী ভালোবাসি। তোমার কোন ক্ষতির কথা ভাবতেও রুহ কেঁপে ওঠে আমার,, আর তুমি ভাবো আমি তোমার ক্ষতি করবো তোমাকে মেরে ফেলবো। এই তোমার বিশ্বাস এই তোমার ভালোবাসা আমার প্রতি?
কি অপরাধ আমার এমিলি একবার বলবে প্লিজ,, আমার শুধু একটাই অপরাধ সেটা হচ্ছে আমি একজন ভ্যাম্পায়ার তাইনা,,,
আরেহ আমি ভ্যাম্পায়ার এটাকি আমার দোষ,, ভ্যাম্পায়ারদের কি কাওকে ভালোবাসার অধিকার নেই। আমি তোমাকে হাজার বার নিষেধ করেছি আমার কাছে আসতে। কিন্তু তুমি শোননি বারবার নিজের প্রতি আমাকে দূর্বল করেছো। যতই তোমার কাছ থেকে দূরে যেতে চেয়েছি ততই তুমি আমার কাছে এসেছো।
আমার অনুভূতি গুলো আমি নিজের মাঝেই লুকিয়ে রেখেছিলাম। কিন্তু তুমিই প্রথম ভালোবাসার দাবি নিয়ে আমার কাছে এসেছিলে,,,
কিন্তু এখন যখন আমার অস্তিত্ব জানতে পারলে তোমার ভালোবাসা শেষ হয়ে গেল। ভালোবাসার জায়গায় ভয় বাসা বেঁধে নিল তোমার মনে,,,
ওয়াওও তোমার ভালবাসার তারিফ না করে পারলাম না। আমার একটা খামির জন্য তুমি আমাকে নিজের থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছো। বিকজ অফ দ্যাট আমি ভ্যাম্পায়ার আমাকে নিজের থেকে আলাদা করে দিচ্ছো।
ভ্যাম্পায়ার হওয়া কি আমার এতোই বড় অপরাধ যার শাস্তি তুমি আমাকে এভাবে তিলে তিলে মেরে দিচ্ছো,,, (চিৎকার করে) টেল মি ড্যাম ইটটটটট( পাশের টেবিলে লাথি মারতেই টেবিল দ্বিখণ্ডক হয়ে গেল)
এমিলি ভয়ে চেঁচিয়ে উঠে তারপর বলে,,,
এমিলিঃ ভ্যাম্পায়ার হওয়া তোমার অপরাধ না রেইন,,, নিজের শক্তির ব্যবহার করে কারো হত্যা করা তোমার অপরাধ,, একজন নির্দোষ মানুষকে মেরে ফেলা তোমার অপরাধ,,, ( কড়া গলায়)
এমিলির কথা শুনে রেইনের হাতের বাধন ঢিলে হয়ে গেল। অস্ফুট কন্ঠে রেইন বলতে শুরু করল,,,
রেইনঃ জ্যাক নির্দোষ ছিল না এমিলি,, ও তোমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছিল,, তোমাকে খারাপ নজরে দেখেছিল,, হি ইজ ট্রাইং টু মলেস্ট ইউ,,,
আমি ওকে ওর যোগ্য শাস্তি দিয়েছি,,, আর এতে আমার কোন আফসোস নেই ( চোয়াল শক্ত করে)
এমিলিঃ ওকে শাস্তি দেওয়ার আরো উপায় ছিল,,, মৃত্যু সব কিছুর সমাধান না রেইন,,,
রেইনঃ রেইনের কাছে ভুলের একটাই শাস্তি আর সেটা হচ্ছে মৃত্যু,,,
এমিলিঃ এজন্যই তোমাকে নিজের থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছি রেইন,, আর যাই হোক একজন হিংস্র প্রাণীর সাথে থাকা যায় না ওকে ভালোবাসা যায় না।
এমিলির কথা শুনে রেইনের ঠোঁটের কোণে এক রহস্যময় হাসি ফুঁটে উঠলো। এমিলি এই হাসির কারন খুঁজে পাচ্ছে না। ও জানে এটা কোন স্বাভাবিক হাসি না। রেইনের মস্তিষ্কে কিছু একটা ঘুরপাক খাচ্ছে তা ও ঠিকই আন্দাজ করতে পারছে,,,
রেইনঃ এ জন্যই তোমাকে এখানে এনেছি,,, এখন থেকে সারাজীবন তুমি এই রেইনের কাছে বন্দী থাকবে। চাইলেও দূরে যেতে পারবে না। কারন এখান থেকে বের হওয়ার শুধু একটাই রাস্তা আর সেই রাস্তায় আমি দাঁড়িয়ে। এখন থেকে তুমি আমার কাছে বন্দী আমার #Forced_Love এ বন্দী। ( বাঁকা হেসে)
রেইনের কথায় মুখ হা হয়ে যায় এমিলির। এজন্যই রেইন সকালে প্লান করে ওকে ফোন করেছে আর এখানে আসতে বলেছে। ধীরে ধীরে সব কিছু স্পষ্ট হচ্ছে এমিলির কাছে,,,
এমিলিকে এভাবে অবাক হতে দেখে রেইন নিজের ডান হাত তুলে এমিলির গালে স্লাইড করতে করতে বলে,,,
রেইনঃ এখন থেকে আমি যা বলবো যে ভাবে বলবো সেভাবেই চলবে তুমি,,, এখান থেকে পালানোর চেষ্টা করবে না ভূলেও,,, তাহলে এর শাস্তি কি হবে তুমি কল্পনাও করতে পারবে না। অনেক তো ভ্যাম্পায়ার ভ্যাম্পায়ার করো এজন্য শাস্তি হিসেবে এই ভ্যাম্পায়ার তোমার শরীরের রক্ত শুষে নেবে,,,
রেইনের কথায় এমিলির শরীরে কাটা দিয়ে দেয়। ভয়ে ঘামতে শুরু করে ও।
রেইন এটাই চেয়েছিল,, রেইন মুচকি হেসে এমিলির ঘারে মুখ গুঁজে নাক দিয়ে স্লাইড করতে করতে বলে,,,
রেইনঃ উমমম তোমার ব্লাডের স্মেলটা জোশ এমিলি,, আচ্ছা তোমার ব্লাড কি চিনির মত সুইট নাকি লবনের মত সল্টি,,,যদি একটু টেস্ট করি মন্দ হবে না,,,( নেশা ভরা কন্ঠে)
রেইনের কথায় এমিলির চোখ বড় বড় হয়ে যায়,, এক ঝটকায় ও দূরে সরে যায় রেইন থেকে তারপর নিজের ঘার ঘষতে ঘষতে বলে,,,,,
এমিলিঃ আ আমি পালানোর চেষ্টা করবো না প্রমিস,,, কোথাও যাবো না প্লিজ কিছু করো না রেইন,,,, আর আ আমার ব্লাড তো পানসা এজন্য মশাও খেতে চায় না শুধু শুধু টেস্ট করে নিজের মুখের স্বাদ নষ্ট করো না,,,
রেইন এমিলির কোমর জড়িয়ে ওকে কাছে এনে ওর চুল গুলো কানের পেছনে গুঁজে দিতে দিতে বলে,,,
রেইনঃ উপরে গিয়ে চেঞ্জ করে নাও,,, ভিজে গিয়েছো ঠান্ডা লেগে যাবে,,, আর আমি কখন কি টেস্ট করবো সেটা নাহয় পরে বলবো,,,( চোখ মেরে)
এমিলি ভয়ে রেইনকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে উপরে দৌড় দেয়,,, এমিলির যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রেইন হাসতে হাসতে বলে,,
রেইনঃ উপরে গিয়ে লেফ্ট সাইডে রুমটা তোমার মাই প্যানকেক,, স্পেশালি তোমার জন্য রেডি করিয়েছি,,,
এমিলি উপরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগলো। এতক্ষন যেন বাঘের থাবায় ছিল এখন সেখান থেকে মুক্তি পেয়েছে,,,
এমিলি যেই হসপিটালে জব করে রেইন সেই হসপিটালের চিফ ডক্টর। রেইনের আন্ডারে এমিলেকে কাজ দেওয়া হয়েছিল। প্রথম দেখাতেই রেইনকে ভালোবেসে ফেলে এমিলি,,, কিন্তু রেইন সব সময় কিছু না বুঝার ভান করে থাকতো। একটা দূরত্ব বজায় রাখতো ও এমিলি থেকে। কিন্তু এমিলি হার মানে নি। নিজের ভালোবাসা দিয়ে জিতে নিয়েছিল ও রেইনকে। রেইনের রক্তে মিশে গিয়েছে এমিলি। পাগলের মতো ভালোবাসে রেইন এমিলিকে। সব কিছু ভালো যাচ্ছিল ওদের ভালোবাসা দুনিয়াতে অনেক সুখী ছিল ওরা।
কিন্তু রেইন সব সময় কিছু একটা ভাবতো। এমিলিকে হারানোর ভয় সর্বদা ওকে গ্ৰাস করতো। এটার কারন বুঝতে পারতো না এমিলি। রেইনকে জিজ্ঞেস করলে ও একটা কথাই বলতো,,,
রেইনঃ কখনো দূরে সরে যেও না এমিলি বাঁচতে পারবো না তোমাকে ছাড়া,,,
জবাবে এমিলি একটাই উত্তর দিত,,
এমিলিঃ নিঃশ্বাস নেওয়া ছাড়তে পারি কিন্তু তোমাকে না রেইনন,,,
এরি মাঝে একটা পার্টিতে জ্যাক নামের একটা ছেলে এমিলির সাথে বেয়াদবি করে। এমিলিকে মলেস্ট করার চেষ্টা করে,,, সেদিন রেইনের ভয়ঙ্কর রূপ সামনে আসে এমিলির।
রেইনের ভ্যাম্পায়ার রুপ সম্পূর্ণ কল্পনার বাইরে ছিল ওর। জ্যাককে নির্দয় ভাবে শেষ করে দিয়েছিল রেইন,,, সেদিনের পর থেকে রেইনের সাথে সব যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় এমিলি,,, বাড়ি থেকে বের হয় না ও , হসপিটালেও যায় না। রেইনের ফোন মেসেজ কিছুই রিপ্লাই করে না।
রেইনতো পাগল প্রায় এমিলির কাজে। তাই আজকে এই প্লান করে এমিলিকে এখানে আনিয়েছে ও।
এক দীর্ঘ নিশ্বাস নিল রেইন,,, ভালোবাসা জিনিস টা অনাকাঙ্ক্ষিত,,, যখন এটা থেকে দূরে থাকতে চায় তখন আরো বেশী করে কারো মায়ায় আটকে ফেলে। আর যখন ভালোবাসা জিনিসটা রক্তে মিশে যায় তখন মায়া কাটিয়ে কোথাও উধাও হয়ে যায়।
রেইনঃ আর যাই হোক তোমাকে হারানো আমার পক্ষে সম্ভব না এমিলি,,, ভালোবাসা দিয়ে না হোক জোর দিয়ে তোমাকে নিজের কাছে আটকে রাখবো আমি,,,,
To be continued.....!
ভ্যাম্পায়ার লাভার
অডিও মোড
00:00
00:00
গতি:
ভলিউম:
435
Views
10
Likes
1
Comments
4.0
Rating